Ajker Patrika

‘যা ৫ টাকায় খেয়েছি এখন তা ১০ টাকা’

সনি আজাদ, চারঘাট 
আপডেট : ১৮ জুন ২০২২, ১৪: ৩৭
Thumbnail image

‘হোটেলে ডালপুরি, শিঙাড়া ও পরোটার দাম দ্বিগুণ হয়েছে। কয়েক দিন আগে যা ৫ টাকায় খেয়েছি, এখন তা ১০ টাকায় খেতে হচ্ছে। রোজগার তো আগের মতোই আছে। সীমিত আয়ের মানুষ আমি। এখন অবাক হয়ে যাই। মুখ বুজে আর্তনাদ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।’ কথাগুলো বলেন চারঘাট উপজেলার মিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা সাজ্জাদ হোসেন।

চাল-আটা, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় চারঘাটে বেকারির পণ্য ও হোটেলে খাবারের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। নিত্যপণ্যের দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৫ টাকা মূল্যের বেকারির রুটি ও কেক আকার একটু বাড়িয়ে ১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। বিস্কুট-চানাচুরসহ বেকারির সব পণ্যের দাম বেড়েছে। রেস্তোরাঁয় ৫ টাকার পরোটা, শিঙাড়া ও ডালপুরি এখন ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ভাত, রুটি, সবজি, রান্না করা ডিম, মাছসহ সব ধরনের খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে, যা সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।

উপজেলার বেকারি ও রেস্তোরাঁ মালিকেরা বলছেন, ‘আগে ৫০ কেজির আটার বস্তার দাম ছিল দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা। এখন আড়াই হাজার টাকারও বেশি। এ ছাড়া ডিম, তেল, ঘি ও চিনির দাম বাড়ায় বেকারির পণ্য ও রেস্তোরাঁয় খাবারের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।

অপরদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে, এটা ঠিক। কিন্তু হোটেল-বেকারি মালিকেরা নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম দ্বিগুণ করেছেন। প্রশাসনকে বাজার তদারক করে খাবারের দাম সমন্বয়ের দাবি জানান তাঁরা।

উপজেলার রাওথা গ্রামের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতিমা খাতুন বলে, ‘সকালে বাসা থেকে বের হয়ে ক্লাস শেষ করে বিকেলে বাসায় ফিরি। আগে দোকান-হোটেল থেকে রুটি কিংবা পুরি-সমুসা খেতাম। এখন যাতায়াতের গাড়ি ভাড়াও দ্বিগুণ, কয়েক দিনের ব্যবধানে খাবারের দামও দ্বিগুণ। ইচ্ছে থাকলেও সব সময় খাবার বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয় না। বাধ্য হয়ে না খেয়ে থাকতে হয়।’

উপজেলার নন্দনগাছী এলাকার বেকারির মালিক খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘সব পণ্যের দাম বেড়েছে। আটা, তেল, ঘি, চিনি—এসব পণ্য বেকারির জন্য খুবই জরুরি। তবে এসব পণ্যের দাম অনেক আগেই বেড়েছে। এরপরও আমরা দাম বাড়াইনি। বেকারির শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করতে হয়েছে। এসব দিক বিবেচনা করে বেকারির পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে।’

উপজেলা সদরের একটি রেস্তোরাঁর মালিক আরমান আলী বলেন, ‘আমরা গত মাসের শুরুতেও পরোটা, পুরি ও শিঙাড়া প্রতিটি ৫ টাকা বিক্রি করেছি। কিন্তু তেল-আটার দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় দাম বাড়ানো ছাড়া উপায় ছিল না।’

রাজশাহী জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মাসুম আলী বলেন, ‘চারঘাট উপজেলাসহ সব উপজেলার বাজারগুলোতে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়িয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত