Ajker Patrika

গোপালগঞ্জ-৩: আ.লীগের দুর্গে উত্তাপহীন মাঠ

মো. জাহিদুল ইসলাম, কোটালীপাড়া ও সজল সরকার, টুঙ্গিপাড়া
Thumbnail image

গোপালগঞ্জ-৩ (কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া) সংসদীয় আসনটি স্থানীয়দের কাছে পরিচিত আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে। বরাবরের মতো আসন্ন নির্বাচনেও এখানে দলটির সম্ভাব্য প্রার্থী শেখ হাসিনা। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে শক্ত লড়াই করতে চান জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এস এম জিলানী।
শেখ হাসিনা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি হওয়ায় এ আসনে আওয়ামী লীগের আর কারও প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র। অন্যদিকে এস এম জিলানী বলেছেন, তিনি প্রার্থী হতে চান, তবে সে ক্ষেত্রে ‘যদি’র ব্যাপার আছে; তা হলো দলের নির্বাচনে অংশ নেওয়া।

১৯৮১ সালের উপনির্বাচনে এ আসনে বিএনপি এবং ১৯৮৬ সালের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী জয়ী হন। এরপর পঞ্চম থেকে একাদশ (ষষ্ঠ বাদে) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন শেখ হাসিনা। এসব নির্বাচনে জাপা, বিএনপি, ইসলামী ঐক্যজোট ও খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থীরা অংশ নিলেও ভোট পান অনেক কম। বিএনপির হয়ে এস এম জিলানী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ২০০৮ ও সবশেষ ২০১৮ সালের নির্বাচনে।

স্থানীয় ভোটার ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এ আসনে ভোটাররা উন্নয়নবঞ্চিত হন। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে। তাই দেশের অন্যান্য আসনের তুলনায় গোপালগঞ্জ-৩ একটু ব্যতিক্রম। এখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান। স্বাভাবিকভাবেই আসনটি আওয়ামী লীগের দুর্গ।

বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। আর তাই নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হতে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেমন ‘লবিং’ হয়, এখানকার চিত্র তেমন না। এককথায় উত্তাপবিহীন। স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন, দলের তৃণমূল পর্যায় থেকে শেখ হাসিনাকে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগের অন্য কোনো প্রার্থী নেই। 

কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, এবারও এই আসনে শেখ হাসিনা নির্বাচন করবেন। তাঁকে নির্বাচিত করতে দলীয় নেতা-কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন।

অপর দিকে বিএনপি থেকে প্রার্থী হিসেবে এস এম জিলানীর নাম শোনা যাচ্ছে। এর আগে ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি জামানত হারিয়েছিলেন। রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক কারণে ঢাকায় অবস্থান করা জিলানী মাঝেমধ্যে এলাকায় আসেন বলে দলীয় নেতারা জানিয়েছেন। স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের কাছে তিনি বেশ জনপ্রিয়। 

নিজের প্রার্থিতা বিষয়ে এস এম জিলানী বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে অংশগ্রহণ করব। যদি নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন না হয়, তাহলে প্রার্থী হব না।’

অন্য দলগুলোর মধ্যে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ দুজনের নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছে। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মারুফ শেখ বলেন, তাঁর ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি মজিবুর রহমানের নাম পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্র চূড়ান্ত প্রার্থী বাছাই করবে। প্রস্তুতি হিসেবে ইতিমধ্যে মাঠ গোছানোর কাজ শুরু হয়েছে।

কোটালীপাড়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গোপালগঞ্জ-৩ আসন গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৯৭ হাজার ৫১৯ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৮৭ এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩২ জন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত