Ajker Patrika

সরু গলি, ঝামেলা ‘ভারী’

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ৩৫
Thumbnail image

গলিটি ৫-৬ ফুট মাত্র চওড়া। এর বেশির ভাগে আবার লোহাসহ বিভিন্ন ভারী মালামাল স্তূপ করে রাখা। যে কারণে সরু এই গলিটি দেড়-দুই ফুট মাত্র চলাচলযোগ্য। এ নিয়ে বছর তিরিশেক আগে একটি খুনও হয়েছে। এরপর কিছুদিন সেখান থেকে ওই সব মালামাল সরিয়ে রাখা হয়। তবে বর্তমানে পুরোনো রূপেই ফিরেছে নগরীর বিবিরহাটের সাব মিয়া রোড নামে পরিচিত গলিটি। এতে সেখান দিয়ে চলাচলকারী ৪২টি পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের শেষ নেই।

বিষয়টির সুরাহার জন্য গত শুক্রবার ভুক্তভোগীদের উদ্যোগে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালিত হয়। বেশ কয়েক দফায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। গত রোববার বিরোধপূর্ণ সড়কের সামনেই মানববন্ধন পালন করেন এলাকাবাসী।

মানববন্ধনে বক্তারা সড়কটি দখল মুক্ত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সাব মিয়া রোডে লোহার স্ক্র্যাপ ও মালামাল সড়কে রেখে স্থানীয় আবু তাহের নামের এক ব্যক্তি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছেন। চলাচলের আর কোনো পথ না থাকায় অন্তত ৪২টি পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে রয়েছেন।

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা গেছে, পাঁচলাইশ থানাধীন বিবিরহাট কাঁচাবাজারের ২ নম্বর গলিতে ঢুকতেই ডান পাশে আরেকটি ছোট্ট গলি সামনে চলে গেছে। একজন পথচারী চলতে পারে এমনভাবে গলির একটি ছোট্ট রাস্তা সেখানে চালু রয়েছে। গলির রাস্তাটি ৫-৬ ফুট চওড়া। কিন্তু লোহাসহ বিভিন্ন ভারী মালামালের স্ক্র্যাপ সেখানে স্তূপ করে রাখায় সেটি বর্তমানে দেড়-দুই ফুটে দাঁড়িয়েছে।

গলির ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়ে একটি ভবন। ওই ভবনটির সামনেই সড়কটি শেষ মনে হলেও এর বাম পাশ দিয়ে দেড় থেকে দুই ফুট জায়গা দিয়ে আরেকটি গলি সামনে বেরিয়ে গেছে। সেটা ধরে এগিয়ে গেলে আরও দেখা যাবে একটি বিশালাকার জায়গা জুড়ে রয়েছে কয়েকটি বহুতল ভবন। এর আশপাশে রয়েছে বেশ কিছু কাঁচা-পাকা বসতঘর।

মো. কামাল নামের একজন বলেন, এই সড়ক দিয়ে একজন মানুষের চলাচলও কষ্টকর। বড় মালামাল আনা-নেওয়া তো দূরের কথা কেউ মারা গেলে লাশ বের করাও খুবই কষ্টসাধ্য। লাশ কাঁধে করে নিয়ে যেতে পারেন না স্বজনেরা। হাতে করে নিয়ে লাশ বের করতে হয়।

এর আগে বাসিন্দাদের কয়েক জন আবু তাহেরের বিরুদ্ধে সিডিএ বরাবরে একটি অভিযোগ দেন। এরপরও কোনো প্রতিকার না মেলেনি। ২০১৯ সালের নভেম্বরে স্থানীয় কাউন্সিলরের বরাবরে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোবারক আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অভিযোগটি অনেক আগে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তাঁদের পক্ষ থেকে আর যোগাযোগ না করায় বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেওয়া হয়নি।’

কাউন্সিলর বলেন, চলাচলের রাস্তার মালিকানা নিয়ে সেখানে বিরোধ থাকতে পারে। এরপরও জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে সড়কটি দখলমুক্তের জন্য যা যা করণীয় তাই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মোবারক আলী আরও বলেন, ‘বিবিরহাট কাঁচাবাজার ২ নম্বর গলির যে রাস্তাটি রয়েছে সেখানে বিভিন্ন সময় মালামাল স্তূপ করে রাখা ছিল। পরে জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে আমরা সংশ্লিষ্ট মালিকদের নোটিশ করেছিলাম।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবু তাহের আজকের পত্রিকার কাছে দাবি করেন, ‘বিরোধপূর্ণ জায়গাটি চলাচলের রাস্তা নয়। এটা আমার ব্যক্তিগত জায়গা। নিজের জায়গার ওপরেই আমি মালামাল রেখেছি। আমার কাছে টাকা না থাকায় সেখানে এখন ভবন নির্মাণ করতে পারছি না।’

জায়গাটি যে তাঁর এ বিষয়ে তাঁর কাছে সমস্ত নথিপত্র রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। দাবি করেন, ‘এখানকার কয়েকজন মালিক রাস্তার নাম করে আমাকে জায়গা থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করছেন। আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত