Ajker Patrika

নিরাময়যোগ্য নয়  তবে উপশম হয়

অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০২২, ১১: ৪৩
নিরাময়যোগ্য নয়  তবে উপশম হয়

ঝালঝোল, অম্বল খেয়ে পেটে সমস্যা বা মলত্যাগের সমস্যা হতে পারে। অনিয়মিত আহার, ব্যায়াম করেই খাবার খাওয়া, মাদকদ্রব্য সেবন ইত্যাদিতে আইবিএসের (ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম) সমস্যা হতে পারে।  

আইবিএস আমাদের পরিপাকতন্ত্রের একটি কার্যগত সমস্যা। আইবিএসের সঠিক কারণ ভালোভাবে জানা যায়নি। তবে পরিপাকনালির পেশির অস্বাভাবিক সংকোচন, প্রসারণ, স্নায়ুর সংকেতজনিত সমস্যা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপ, পরিপাকতন্ত্রের সহজাত ও উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিবর্তন ইত্যাদি কারণে আইবিএস হতে পারে।

আমাদের শরীরের সব অঙ্গ স্নায়ুর মাধ্যমে মগজের সঙ্গে যুক্ত। পেটে সমস্যা হলে মগজে সংকেত পৌঁছায়, তেমনি মগজে সমস্যা হলে পেটে সমস্যা দেখা দেয়। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এই সংযোগকে বলেন ‘গাট ব্রেন কানেকশন’। রাগ, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ এ রকম আবেগের প্রভাব মানুষের অন্ত্রে পড়ে। দীর্ঘদিন একে অবহেলা করলে এ থেকে হতে পারে ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা আইবিএসের মতো রোগ।

এই ক্রনিক পাচক নালির সমস্যায় আক্রান্ত ৩৫ মিলিয়ন আমেরিকান। অবাক হবেন না, গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের পল্লিগ্রামের মানুষের মধ্যেও একটি বড় অংশ আইবিএসে আক্রান্ত । ২ হাজার ৪২৬ জন কৃষক ও গৃহবধূর মধ্যে করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, পুরুষদের মধ্যে ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ এবং নারীদের মধ্যে ২৭ দশমিক ৭ শতাংশ আইবিএসে আক্রান্ত। অন্যদিকে নগরবাসী পুরুষের মধ্যে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ ও  নারীর মধ্যে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ আইবিএসের সমস্যায় ভুগছে।

রোগের ধরন
তিন ধরনের আইবিএস রয়েছে। ডায়রিয়াসহ আইবিএস, কোষ্ঠবদ্ধতাসহ আইবিএস ও মিশ্র বাওয়েল।

উপসর্গ

আইবিএসের সাতটি উপসর্গ অবহেলা করা উচিত নয়। উপসর্গের ব্যাপারে সচেতন হলে উপশম খোঁজা সহজ।

উপসর্গ আসে হয়তো ঢেউয়ের মতো, অনেকের থাকে কয়েক দিন বা সপ্তাহ। অনেকের থাকে প্রতিদিন।

  • তলপেটে নাভির নিচে ব্যথা। সঙ্গে ডায়রিয়া বা কোষ্ঠবদ্ধতা।
  • তরল বা পানি পানি মল; এক-চতুর্থাংশ শক্ত। পেটব্যথা ও মলত্যাগের তাগিদ অনুভব। 
  • কোষ্ঠবদ্ধতা। কোষ্ঠ পরিষ্কার হয় না, পেটব্যথা, পেট ফাঁপা।
  • যাদের মিশ্র বাওয়েল, তাদের ডায়রিয়া আর কোষ্ঠবদ্ধতা দুটোই থাকে আর সঙ্গে থাকে ব্যথা।
  • গ্যাস, পেটে মোচড় দিয়ে বেদনা, পেট ফাঁপা। 
    সাবধানতা
    আইবিএস নিরাময় হয় না; তবে উপশমের জন্য ডায়েট ও জীবনশৈলীতে পরিবর্তন এবং প্রোবায়োটিক গ্রহণ করার বিষয়ে নজর দিতে 
    হবে। যেসব খাবার আইবিএস উসকে দেয় 
    সেগুলো বাদ দিতে হবে।গ্যাস তৈরি করে যেসব খাবার, যেমন বিন, বাঁধাকপি, মুলা, আপেল, গ্রিন পেপার, ঝাল মসলাযুক্ত খাবার, সোডা, চুইংগাম, ক্যানডি, হাই ফ্যাটযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত চা, কফি, পান ইত্যাদি এড়িয়ে যেতে হবে।

যা করতে হবে
কার্ডেও ব্যায়াম, শ্বাসের ব্যায়াম, ধ্যান, যোগব্যায়াম নিয়মিত করতে পারলে উপকার পাওয়া যায়। পাশাপাশি ধূমপান ও মদ্যপান বর্জন করতে হবে। রোজ আদাকুচি চিবোতে পারেন বা আদা চা পান করতে পারেন। তবে সবার আগে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত