Ajker Patrika

অন্ধত্বকে জয় কেসিং মারমা র সংশয় ভবিষ্যৎ নিয়ে

পানছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৪৯
Thumbnail image

দৃষ্টি না থাকলেও আলো দেখিয়েছেন খাগড়াছড়ির কেসিং মারমা। এবার পানছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি। প্রতিবন্ধীদের যেখানে অনুগ্রহ নিয়ে বাঁচতে হয়, সেখানে অন্ধত্বকে জয় করে শিক্ষার জন্য কেসিং মারমার অদম্য চেষ্টায় মুগ্ধ সবাই। তবে ভবিষ্যতে পড়ালেখা চালিয়ে নেওয়া নিয়ে শঙ্কায় তাঁর পরিবার।

জেলার মহালছড়ি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা সিঙ্গিনালায় জন্ম কেসিং মারমার। প্রাথমিকের পড়ালেখা শেষ হয়েছে মাটিরাঙ্গা উপজেলার বাইল্লাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। পরে মাটিরাঙ্গা পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে অন্যের সহযোগিতা নিয়ে পড়ালেখা করে মানবিক বিভাগে এসএসসি উত্তীর্ণ হন। এবার একই বিভাগে পানছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় ২ দশমিক ৪২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।

কেসিং মারমা বলেন, ‘বাবার অনুপ্রেরণা, শিক্ষক ও বন্ধুদের উৎসাহে এত দূর এসেছি। ছোটবেলা থেকে একজন শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন আমার।’

কেসিং মারমার বাবা কৃষক, মা গৃহিণী। দরিদ্র পরিবারের দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনিই পড়ালেখা করছেন। লেখাপড়া চালিয়ে নিতে পরিবারের বাইরে কেউ কেউ সহযোগিতা করেছেন। পানছড়ি সরকারি ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা তাঁকে মেমোরি কার্ডসহ একটি ব্লুটুথ সাউন্ড ডিভাইস উপহার দিয়েছিলেন। এ ছাড়াও নানাভাবে উৎসাহ ও বিনা বেতনে লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন তিনি।

এদিকে কেসিং মারমা শিক্ষায় এত দূর এলেও ভবিষ্যৎ প্রায় অন্ধকার দেখছে তাঁর পরিবার। ভবিষ্যতে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই তাদের। কেসিং মারমা বলেন, ‘এখন বিত্তবানেরা যদি সুদৃষ্টি দেন, তাহলে আমার পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সহজ হবে। সবার সহযোগিতায় সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।’

অধ্যক্ষ সমীর দত্ত চাকমা বলেন, ‘আমাদের কলেজে দীপানন্দী শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও জিপিএ-৫ অর্জন করেছে, অন্যদিকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কেসিং মারমা পাস করেছে। তাদের সাফল্যে আমরা আনন্দিত। প্রতিবন্ধিতা মানে প্রতিবন্ধকতা নয়, এটা তারা আবারও প্রমাণ করল।’

পানছড়ি থানার ওসি মো. আনচারুল করিম বলেন, ‘কেসিং মারমা খুব আত্মবিশ্বাসী একজন ছাত্র। সে এইচএসসি পরীক্ষায় সফল হওয়ায় তাকে অভিনন্দন।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়। তাদের একটু উৎসাহ ও সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে সবার মতো সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।’ কেসিংকে সাধ্যানুযায়ী সহযোগিতা করবেন বলে তিনি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত