Ajker Patrika

খনন করা খালের পাড়ে ধস

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২১, ১০: ২৯
খনন করা খালের পাড়ে ধস

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম তেনাপঁচা এলাকায় খালপাড়ে ধস দেখা দিয়েছে। সড়ক ও বসতভিটা খালে হারিয়ে যেতে শুরু করেছে। অপরিকল্পিতভাবে খাল খননের কারণে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ খালপাড়ের বাসিন্দাদের। এতে ভোগান্তি ও ক্ষতির মুখে পড়েছেন খালের পাড়ে বসবাসকারী বহু পরিবার।

তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অভিযোগ অস্বীকার কর বলেছে, খাল খননের জন্য নয়, বরং খালের ওপর অপরিকল্পিতভাবে সেতু নির্মাণের কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

জানা গেছে, রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে গত বছর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নে পদ্মা নদী থেকে বয়ে আসা ফরিদপুর পর্যন্ত দীর্ঘ খালটি খনন করে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু খননকালে খালের অনেক জায়গায় পর্যাপ্ত ঢাল রাখা হয়নি। এ ছাড়া সেতুসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে গার্ডার, সিসি ব্লক, জিও ব্যাগসহ প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজন থাকলেও সে সব করা হয়নি। এতে করে চলতি বর্ষা মৌসুমে ওই খাল দিয়ে তীব্র স্রোত প্রবাহিত হওয়ায় খালের বহু স্থানে দুই পাড়ে ধসের সৃষ্টি হয়।

গতকাল শুক্রবার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম তেনাপঁচা ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খাল দিয়ে তীব্র গতিতে স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে ইতিমধ্যে সেখানে বেশ কিছু এলাকা জুড়ে ধসে গেছে। গ্রামের লোকজনের চলাচল করা ও গোরস্থানে লাশ নিয়ে যাওয়ার একমাত্র কাঁচা রাস্তাটির অনেকাংশ ধসে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। খালের ওপর দিয়ে যাওয়া আরসিসি সেতুর পাশ থেকে মাটি ধসে যাওয়ায় সেতুর কার্পেটিংসহ অনেকটা অংশ দেবে গেছে। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আলাপকালে ভুক্তভোগী ইসলাম সরদার বলেন, ‘গত বছরও খালটি আমার ঘর থেকে নিরাপদ দূরত্বে ছিল। ঘরের পাশ দিয়ে গ্রামের লোকজনের চলাচলের জন্য বেশ চওড়া একটা কাঁচা রাস্তা ছিল। কিন্তু ঢাল না রেখে খাড়াখাড়ি খাল খনন করায় এবার মাটির রাস্তাসহ আমার ঘরের ভিটার অনেকটা ধসে গেছে। এখন বাধ্য হয়ে ঘরটা ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হচ্ছে।’ এই গ্রামে তাঁর মতো অন্ত ১০–১২টি পরিবারের ঘরবাড়ি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

গ্রামের গৃহবধূ ঝরনা বেগম বলেন, ‘আমরা খুবই গরিব মানুষ। বিপদের মুখে থাকলেও ঘরবাড়ি সরিয়ে নেওয়ার মতো আর্থিক সামর্থ্যও আমাদের নেই।’

আইয়ুব সরদার, মোহন মোল্লা, ইসলাম সরদারসহ অনেকেই জানান, গত বছর তাঁদের এলাকায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার জন্য কয়েকটি ট্রাক ভর্তি করে বালু আনা হয়েছিল। কিন্তু ১০০ এর মতো বস্তা ফেলার পর সমস্ত বালু ও বস্তা এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। ঠিকমতো বস্তা ফেললে আজকে এই ভাঙন ও ধসের মুখে পড়তে হতো না।

দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ভাঙন ও ধসে যাওয়া এলাকায় দ্রুত মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী ও গোয়ালন্দের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল সরদার বলেন, ‘খাল খননে কোনো অনিয়ম হয়নি। সঠিক নিয়মেই খালটি খনন করা হয়েছে।’

মো. ইকবাল সরদার আরও বলেন, ‘খাল কাজে জিও ব্যাগ, সিসি ব্লক বা এমন কিছুর জন্য বরাদ্দ ছিল না। খালের পাড় ঘেঁষে রাস্তা তৈরি বা ঘরবাড়ি তৈরির বিষয়ে আমরা আগে থেকেই নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু কেউ কথা শোনেনি। খালের চওড়া অনুপাতে সেতু সঠিক মাপে না করে ছোট করে তৈরি করায় পশ্চিম তেনাপঁচা এলাকায় তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হচ্ছে। সেতুটি বাঁকা করে তৈরি করায় স্রোত গিয়ে সরাসরি লাগছে বসতভিটার দিকে। এতে সেখানে ভাঙন ও ধসের সৃষ্টি হয়েছে। তবুও জনস্বার্থে কি করা যায় আমরা দেখব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত