ড. সৈয়দ ইজাজ আহসান

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গবেষণাকে অনেকটা বিলাসিতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। অন্য একটা কারণও খুবই স্পষ্ট, আর তা হলো আর্থিক সংগতি। উন্নত দেশগুলো প্রতিবছর শত সহস্র কোটি ডলার ব্যয় করে গবেষণা খাতে। কিন্তু কেন? কেননা, গবেষণার মাধ্যমেই পৃথিবী এগিয়ে চলছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থালির ব্যবহার্য জিনিসপত্র থেকে মহাকাশ যান ও কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ পর্যন্ত—সব ক্ষেত্রেই রয়েছে গবেষণার অবদান। বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তি চীনের উত্থানের পেছনেও রয়েছে গবেষণার অবদান। বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের ঈর্ষণীয় উন্নয়ন নিবিড় গবেষণারই ফল। চীন কিছু কিছু ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে গবেষণার অনেক ক্ষেত্রে। যে দেশ যত উন্নত, সেই দেশের গবেষণায় বিনিয়োগ তত বেশি।
গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করা এবং নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা। এই নতুন জ্ঞান প্রয়োগ করে বর্তমান অবস্থা থেকে অধিকতর উন্নত পর্যায়ে প্রবেশ করা। কৃষি, চিকিৎসাশাস্ত্র, যোগাযোগ, প্রযুক্তি—প্রতিটি ক্ষেত্রে গবেষণা তার প্রত্যাশিত অবদান রেখে চলেছে। কিন্তু এ প্রসঙ্গে এখানে আর একটা প্রশ্ন দেখা দেয়, এই গবেষণা ও উন্নতি কার জন্য এবং দ্বিতীয়ত, গবেষণার উদ্দেশ্য মানবসভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেবে কি না। উদাহরণস্বরূপ, পরমাণু গবেষণা একটা বিশাল দিগন্ত খুলে দিয়েছে মানবসভ্যতার জন্য। পরমাণু শক্তি উৎপাদন থেকে কৃষি, শিল্প, চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রতিটি ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছে পরমাণু গবেষণা। কিন্তু এই পরমাণু গবেষণা দ্বারা আবার পরমাণু বোমার ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করে পৃথিবীকে নিয়ে যাওয়া যায় এক অন্ধকার জগতে। হিরোশিমা-নাগাসাকি তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত।
আর একটা বিষয় হলো, কার উপকারে এই গবেষণার ফল ব্যবহৃত হবে। এ জন্য বলছি যে অনেক দেশে, বিশেষ করে প্রাচীন মিসরে বিজ্ঞানে অনেক উৎকর্ষ সাধিত হয়েছিল। কিন্তু তার সবই ছিল রাজা-বাদশাহ ও তাঁদের অনুচরদের জন্য। মিসরের পিরামিড, ফেরাউনের মমি কিংবা আগ্রার তাজমহল—এর কোনোটাই সাধারণ জনগণের কল্যাণের জন্য নির্মিত হয়নি। আর তাই রাজা-বাদশাহদের তিরধানের সঙ্গে সঙ্গেই এই প্রগতি বা অগ্রগতি যা-ই বলি না কেন, সেখানেই পরিসমাপ্তি ঘটে। গবেষণার আর একটি বিষয় হলো, এটা ধাপে ধাপে উৎকর্ষ লাভ করে। কোনো একপর্যায়ে যদি কোনো ছেদ পড়ে, তবে পরবর্তী ধাপে প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়ে অথবা একেবারেই স্থবির হয়ে যেতে পারে। যেমনটা পিরামিড মমি বা সমসাময়িক অন্যান্য বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে হয়। শোনা যায়, তাজমহল নির্মাতা স্থপতিদের নাকি হাত কেটে ফেলা হয়েছিল, যাতে তাঁরা এ রকম স্থাপনা আর একটা তৈরি করতে না পারেন। এভাবেই বিজ্ঞান ও গবেষণার অনেক যুগান্তকারী আবিষ্কার কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে।
কিন্তু পরবর্তীকালে দেশে দেশে বিজ্ঞান ও গবেষণার ফসল সাধারণ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে খুব সহজে। আর দ্বিতীয়ত, ধীরে ধীরে বিশ্ববাণিজ্যের সুবিশাল ব্যাপ্তি গবেষণার ফলকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য আরও অবারিত করে দিয়েছে। এ কারণে যেসব দেশ গবেষণায় যত বেশি বিনিয়োগ করেছে, ফলস্বরূপ তারাই তত উন্নতি লাভ করতে পেরেছে। সুতরাং যেকোনো দেশ উন্নতি ও অগ্রগতি লাভ করতে চাইলে তাকে অবশ্যই গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে।
এবারে আসা যাক আমাদের দেশের কথায়। অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। কিন্তু এখন সেভাবে গবেষণায় বিনিয়োগ হয়নি বা হচ্ছে না বলা চলে। তবে একটা ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম দেখা গিয়েছে, তা হলো কৃষি। এর ফলও খুবই পরিষ্কার সবার কাছে। ৫৫ হাজার বর্গমাইলের দেশে যেখানে ১৮ কোটি লোকের বাস, সেখানে খাদ্য ঘাটতি নেই। এটা সম্ভব হয়েছে শুধু কৃষি গবেষণায় অভাবনীয় সাফল্যের জন্য। এর সঙ্গে মৎস্য, পশুপালন এবং ফলমূল, শাকসবজির উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ। কৃষি গবেষকদের অক্লান্ত নিষ্ঠা ও শ্রম বাংলাদেশকে খাদ্যনিরাপত্তা দান করেছে, যা কিনা আফ্রিকার অনেক দেশ বিপুল চাষযোগ্য ভূমি থাকা সত্ত্বেও নিশ্চিত করতে পারেনি। তাই বাংলাদেশ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। অন্যান্য ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু গবেষণা যে হয়নি তা নয়; তবে তা উল্লেখযোগ্য বা যথেষ্ট নয়, তা বলাই বাহুল্য। প্রযুক্তি, চিকিৎসা, উৎপাদনব্যবস্থা, সামুদ্রিক ও খনিজসম্পদ আহরণ এবং বিশেষ করে বাজার ও বিপণন ব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে গবেষণায় বিনিয়োগ এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে বহুদূর।
এখন প্রশ্ন হলো, তাহলে কি বাংলাদেশে প্রতিভাবান গবেষকের অভাব? তা মনে করার কোনো কারণ নেই। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বিজ্ঞানী জুট জিনোম গবেষণায় বিশ্বব্যাপী সম্মান ও স্বীকৃতি লাভ করেছেন। এ ছাড়া গবেষণার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশি গবেষকেরা দেশে-বিদেশে যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষেত্র চিহ্নিত করে গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে। আঞ্চলিকতার গণ্ডি পেরিয়ে বাজার এখন বিশ্ববাজারে পরিণত হয়েছে।
এই বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া বিশ্ববাজারকে করে তুলেছে তীব্র প্রতিযোগিতামূলক। অন্যদিকে বিশ্ববাজার অবারিত করেছে অপার সম্ভাবনা। অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদার সীমাবদ্ধতা উৎপাদনের সীমাবদ্ধতা এনে দেয়। বিশ্ববাজারে প্রবেশের সুযোগ এই সীমাবদ্ধতা দূর করে দিয়েছে দেশগুলোর জন্য। বর্তমান বিশ্বে নতুন অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হওয়া দেশগুলো বিশ্বায়নের এই প্রক্রিয়াকে খুব ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগিয়েছে চীন। বিশ্ববাজার দখলের মধ্য দিয়ে চীন অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর দেশগুলোর উন্নতি নির্ভর করে রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর। যে যত বেশি রপ্তানি করতে পারবে, তার উন্নতি তত দ্রুত হবে—এটাই স্বাভাবিক। এই রপ্তানির ওপর কর্মসংস্থান, প্রবৃদ্ধি, বাণিজ্যের ভারসাম্য— সবই একান্তভাবে নির্ভরশীল। সুতরাং অর্থনৈতিক উন্নতি লাভ করতে গেলে বিশ্ববাজারে সুবিধাজনক জায়গা করে নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ এই অর্থে যে এখানে কৃষি, শিল্প, পর্যটন, খনিজ ও সমুদ্রসম্পদ—সব ক্ষেত্রেই অনেক সম্ভাবনা বিরাজমান। সেই সঙ্গে রয়েছে বিপুল কর্মক্ষম জনশক্তি। কিন্তু এই সম্ভাবনাগুলো কি প্রকৃত অর্থে ব্যবহৃত হচ্ছে? হলে সম্ভবত বাংলাদেশের অর্থনীতি দক্ষিণ কোরিয়া বা মালয়েশিয়াকে ছাড়িয়ে যেত। অন্যান্য দেশে গবেষণার কেন্দ্র হলো বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু আমাদের দেশে এর বিপরীত। এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও গবেষণার সুযোগ খুবই সীমিত। যেহেতু এই গবেষণা খুব কম গুরুত্ব পায়, তাই আর্থিক বরাদ্দও কম। সরকারিভাবে না পেলে বেসরকারিভাবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সহজেই অর্থ সংস্থান করা যেত।
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আয়ের একটা অংশ করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি হিসেবে ব্যয় করে প্রতিবছর। দেখা যায় প্রতিষ্ঠানগুলো এই অর্থ হাসপাতাল, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্রতিষ্ঠায় ব্যয় করে, যা কিনা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। কেননা, ব্যবসায়িকভাবেও এগুলো প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যদি এই অর্থের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ গবেষণার কাজে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকত, তবে গবেষণায় অন্তত আর্থিক সমস্যা থাকত না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর গবেষণার একটা বিরাট অংশ এভাবেই আসে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এ ক্ষেত্রে বাজার এবং পণ্য উন্নয়নের গবেষণালব্ধ ফল তাদের ব্যবসায়িক উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারে।
আমরা যদি আমাদের আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখব, আমাদের রপ্তানি বাজার শুধু কয়েকটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ; বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপ। আবার আমরা যে পণ্যগুলো রপ্তানি করি, সেগুলোও গার্মেন্টস ও এ-জাতীয় পণ্য। অপ্রত্যাশিত ঝুঁকি তো আছেই, যেমন কোভিড-১৯। এর ফলে পৃথিবীর অর্থনৈতিক অবস্থা কী হয়েছে, তা আমরা সবাই জানি।
সুতরাং বাজার সম্প্রসারণ, পণ্য বহুমুখীকরণ ও প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জন করতে হলে প্রয়োজন গবেষণায় বিনিয়োগ। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে যেমন আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া ও লাতিন আমেরিকান দেশগুলোতে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এসব সুযোগের সদ্ব্যবহারের জন্য যে গবেষণার প্রয়োজন, তার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। সুতরাং নীতিনির্ধারকদের গবেষণার বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে সক্রিয়ভাবে। তবে গবেষণা হতে হবে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক, মানসম্পন্ন ও প্রায়োগিক, যা দেশের কাজে আসবে সার্থকভাবে। আশা করি, গবেষণায় বিনিয়োগ দেশকে উন্নত দেশের তালিকায় যুক্ত করবে অদূর ভবিষ্যতে।
ড. সৈয়দ ইজাজ আহসান, সিনিয়র ফ্যাকাল্টি, ডারল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গবেষণাকে অনেকটা বিলাসিতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। অন্য একটা কারণও খুবই স্পষ্ট, আর তা হলো আর্থিক সংগতি। উন্নত দেশগুলো প্রতিবছর শত সহস্র কোটি ডলার ব্যয় করে গবেষণা খাতে। কিন্তু কেন? কেননা, গবেষণার মাধ্যমেই পৃথিবী এগিয়ে চলছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থালির ব্যবহার্য জিনিসপত্র থেকে মহাকাশ যান ও কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ পর্যন্ত—সব ক্ষেত্রেই রয়েছে গবেষণার অবদান। বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তি চীনের উত্থানের পেছনেও রয়েছে গবেষণার অবদান। বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের ঈর্ষণীয় উন্নয়ন নিবিড় গবেষণারই ফল। চীন কিছু কিছু ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে গবেষণার অনেক ক্ষেত্রে। যে দেশ যত উন্নত, সেই দেশের গবেষণায় বিনিয়োগ তত বেশি।
গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করা এবং নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা। এই নতুন জ্ঞান প্রয়োগ করে বর্তমান অবস্থা থেকে অধিকতর উন্নত পর্যায়ে প্রবেশ করা। কৃষি, চিকিৎসাশাস্ত্র, যোগাযোগ, প্রযুক্তি—প্রতিটি ক্ষেত্রে গবেষণা তার প্রত্যাশিত অবদান রেখে চলেছে। কিন্তু এ প্রসঙ্গে এখানে আর একটা প্রশ্ন দেখা দেয়, এই গবেষণা ও উন্নতি কার জন্য এবং দ্বিতীয়ত, গবেষণার উদ্দেশ্য মানবসভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেবে কি না। উদাহরণস্বরূপ, পরমাণু গবেষণা একটা বিশাল দিগন্ত খুলে দিয়েছে মানবসভ্যতার জন্য। পরমাণু শক্তি উৎপাদন থেকে কৃষি, শিল্প, চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রতিটি ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছে পরমাণু গবেষণা। কিন্তু এই পরমাণু গবেষণা দ্বারা আবার পরমাণু বোমার ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করে পৃথিবীকে নিয়ে যাওয়া যায় এক অন্ধকার জগতে। হিরোশিমা-নাগাসাকি তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত।
আর একটা বিষয় হলো, কার উপকারে এই গবেষণার ফল ব্যবহৃত হবে। এ জন্য বলছি যে অনেক দেশে, বিশেষ করে প্রাচীন মিসরে বিজ্ঞানে অনেক উৎকর্ষ সাধিত হয়েছিল। কিন্তু তার সবই ছিল রাজা-বাদশাহ ও তাঁদের অনুচরদের জন্য। মিসরের পিরামিড, ফেরাউনের মমি কিংবা আগ্রার তাজমহল—এর কোনোটাই সাধারণ জনগণের কল্যাণের জন্য নির্মিত হয়নি। আর তাই রাজা-বাদশাহদের তিরধানের সঙ্গে সঙ্গেই এই প্রগতি বা অগ্রগতি যা-ই বলি না কেন, সেখানেই পরিসমাপ্তি ঘটে। গবেষণার আর একটি বিষয় হলো, এটা ধাপে ধাপে উৎকর্ষ লাভ করে। কোনো একপর্যায়ে যদি কোনো ছেদ পড়ে, তবে পরবর্তী ধাপে প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়ে অথবা একেবারেই স্থবির হয়ে যেতে পারে। যেমনটা পিরামিড মমি বা সমসাময়িক অন্যান্য বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে হয়। শোনা যায়, তাজমহল নির্মাতা স্থপতিদের নাকি হাত কেটে ফেলা হয়েছিল, যাতে তাঁরা এ রকম স্থাপনা আর একটা তৈরি করতে না পারেন। এভাবেই বিজ্ঞান ও গবেষণার অনেক যুগান্তকারী আবিষ্কার কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে।
কিন্তু পরবর্তীকালে দেশে দেশে বিজ্ঞান ও গবেষণার ফসল সাধারণ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে খুব সহজে। আর দ্বিতীয়ত, ধীরে ধীরে বিশ্ববাণিজ্যের সুবিশাল ব্যাপ্তি গবেষণার ফলকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য আরও অবারিত করে দিয়েছে। এ কারণে যেসব দেশ গবেষণায় যত বেশি বিনিয়োগ করেছে, ফলস্বরূপ তারাই তত উন্নতি লাভ করতে পেরেছে। সুতরাং যেকোনো দেশ উন্নতি ও অগ্রগতি লাভ করতে চাইলে তাকে অবশ্যই গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে।
এবারে আসা যাক আমাদের দেশের কথায়। অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। কিন্তু এখন সেভাবে গবেষণায় বিনিয়োগ হয়নি বা হচ্ছে না বলা চলে। তবে একটা ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম দেখা গিয়েছে, তা হলো কৃষি। এর ফলও খুবই পরিষ্কার সবার কাছে। ৫৫ হাজার বর্গমাইলের দেশে যেখানে ১৮ কোটি লোকের বাস, সেখানে খাদ্য ঘাটতি নেই। এটা সম্ভব হয়েছে শুধু কৃষি গবেষণায় অভাবনীয় সাফল্যের জন্য। এর সঙ্গে মৎস্য, পশুপালন এবং ফলমূল, শাকসবজির উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ। কৃষি গবেষকদের অক্লান্ত নিষ্ঠা ও শ্রম বাংলাদেশকে খাদ্যনিরাপত্তা দান করেছে, যা কিনা আফ্রিকার অনেক দেশ বিপুল চাষযোগ্য ভূমি থাকা সত্ত্বেও নিশ্চিত করতে পারেনি। তাই বাংলাদেশ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। অন্যান্য ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু গবেষণা যে হয়নি তা নয়; তবে তা উল্লেখযোগ্য বা যথেষ্ট নয়, তা বলাই বাহুল্য। প্রযুক্তি, চিকিৎসা, উৎপাদনব্যবস্থা, সামুদ্রিক ও খনিজসম্পদ আহরণ এবং বিশেষ করে বাজার ও বিপণন ব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে গবেষণায় বিনিয়োগ এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে বহুদূর।
এখন প্রশ্ন হলো, তাহলে কি বাংলাদেশে প্রতিভাবান গবেষকের অভাব? তা মনে করার কোনো কারণ নেই। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বিজ্ঞানী জুট জিনোম গবেষণায় বিশ্বব্যাপী সম্মান ও স্বীকৃতি লাভ করেছেন। এ ছাড়া গবেষণার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশি গবেষকেরা দেশে-বিদেশে যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষেত্র চিহ্নিত করে গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে। আঞ্চলিকতার গণ্ডি পেরিয়ে বাজার এখন বিশ্ববাজারে পরিণত হয়েছে।
এই বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া বিশ্ববাজারকে করে তুলেছে তীব্র প্রতিযোগিতামূলক। অন্যদিকে বিশ্ববাজার অবারিত করেছে অপার সম্ভাবনা। অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদার সীমাবদ্ধতা উৎপাদনের সীমাবদ্ধতা এনে দেয়। বিশ্ববাজারে প্রবেশের সুযোগ এই সীমাবদ্ধতা দূর করে দিয়েছে দেশগুলোর জন্য। বর্তমান বিশ্বে নতুন অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হওয়া দেশগুলো বিশ্বায়নের এই প্রক্রিয়াকে খুব ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগিয়েছে চীন। বিশ্ববাজার দখলের মধ্য দিয়ে চীন অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর দেশগুলোর উন্নতি নির্ভর করে রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর। যে যত বেশি রপ্তানি করতে পারবে, তার উন্নতি তত দ্রুত হবে—এটাই স্বাভাবিক। এই রপ্তানির ওপর কর্মসংস্থান, প্রবৃদ্ধি, বাণিজ্যের ভারসাম্য— সবই একান্তভাবে নির্ভরশীল। সুতরাং অর্থনৈতিক উন্নতি লাভ করতে গেলে বিশ্ববাজারে সুবিধাজনক জায়গা করে নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ এই অর্থে যে এখানে কৃষি, শিল্প, পর্যটন, খনিজ ও সমুদ্রসম্পদ—সব ক্ষেত্রেই অনেক সম্ভাবনা বিরাজমান। সেই সঙ্গে রয়েছে বিপুল কর্মক্ষম জনশক্তি। কিন্তু এই সম্ভাবনাগুলো কি প্রকৃত অর্থে ব্যবহৃত হচ্ছে? হলে সম্ভবত বাংলাদেশের অর্থনীতি দক্ষিণ কোরিয়া বা মালয়েশিয়াকে ছাড়িয়ে যেত। অন্যান্য দেশে গবেষণার কেন্দ্র হলো বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু আমাদের দেশে এর বিপরীত। এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও গবেষণার সুযোগ খুবই সীমিত। যেহেতু এই গবেষণা খুব কম গুরুত্ব পায়, তাই আর্থিক বরাদ্দও কম। সরকারিভাবে না পেলে বেসরকারিভাবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সহজেই অর্থ সংস্থান করা যেত।
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আয়ের একটা অংশ করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি হিসেবে ব্যয় করে প্রতিবছর। দেখা যায় প্রতিষ্ঠানগুলো এই অর্থ হাসপাতাল, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্রতিষ্ঠায় ব্যয় করে, যা কিনা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। কেননা, ব্যবসায়িকভাবেও এগুলো প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যদি এই অর্থের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ গবেষণার কাজে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকত, তবে গবেষণায় অন্তত আর্থিক সমস্যা থাকত না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর গবেষণার একটা বিরাট অংশ এভাবেই আসে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এ ক্ষেত্রে বাজার এবং পণ্য উন্নয়নের গবেষণালব্ধ ফল তাদের ব্যবসায়িক উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারে।
আমরা যদি আমাদের আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখব, আমাদের রপ্তানি বাজার শুধু কয়েকটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ; বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপ। আবার আমরা যে পণ্যগুলো রপ্তানি করি, সেগুলোও গার্মেন্টস ও এ-জাতীয় পণ্য। অপ্রত্যাশিত ঝুঁকি তো আছেই, যেমন কোভিড-১৯। এর ফলে পৃথিবীর অর্থনৈতিক অবস্থা কী হয়েছে, তা আমরা সবাই জানি।
সুতরাং বাজার সম্প্রসারণ, পণ্য বহুমুখীকরণ ও প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জন করতে হলে প্রয়োজন গবেষণায় বিনিয়োগ। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে যেমন আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া ও লাতিন আমেরিকান দেশগুলোতে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এসব সুযোগের সদ্ব্যবহারের জন্য যে গবেষণার প্রয়োজন, তার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। সুতরাং নীতিনির্ধারকদের গবেষণার বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে সক্রিয়ভাবে। তবে গবেষণা হতে হবে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক, মানসম্পন্ন ও প্রায়োগিক, যা দেশের কাজে আসবে সার্থকভাবে। আশা করি, গবেষণায় বিনিয়োগ দেশকে উন্নত দেশের তালিকায় যুক্ত করবে অদূর ভবিষ্যতে।
ড. সৈয়দ ইজাজ আহসান, সিনিয়র ফ্যাকাল্টি, ডারল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল
ড. সৈয়দ ইজাজ আহসান

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গবেষণাকে অনেকটা বিলাসিতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। অন্য একটা কারণও খুবই স্পষ্ট, আর তা হলো আর্থিক সংগতি। উন্নত দেশগুলো প্রতিবছর শত সহস্র কোটি ডলার ব্যয় করে গবেষণা খাতে। কিন্তু কেন? কেননা, গবেষণার মাধ্যমেই পৃথিবী এগিয়ে চলছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থালির ব্যবহার্য জিনিসপত্র থেকে মহাকাশ যান ও কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ পর্যন্ত—সব ক্ষেত্রেই রয়েছে গবেষণার অবদান। বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তি চীনের উত্থানের পেছনেও রয়েছে গবেষণার অবদান। বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের ঈর্ষণীয় উন্নয়ন নিবিড় গবেষণারই ফল। চীন কিছু কিছু ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে গবেষণার অনেক ক্ষেত্রে। যে দেশ যত উন্নত, সেই দেশের গবেষণায় বিনিয়োগ তত বেশি।
গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করা এবং নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা। এই নতুন জ্ঞান প্রয়োগ করে বর্তমান অবস্থা থেকে অধিকতর উন্নত পর্যায়ে প্রবেশ করা। কৃষি, চিকিৎসাশাস্ত্র, যোগাযোগ, প্রযুক্তি—প্রতিটি ক্ষেত্রে গবেষণা তার প্রত্যাশিত অবদান রেখে চলেছে। কিন্তু এ প্রসঙ্গে এখানে আর একটা প্রশ্ন দেখা দেয়, এই গবেষণা ও উন্নতি কার জন্য এবং দ্বিতীয়ত, গবেষণার উদ্দেশ্য মানবসভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেবে কি না। উদাহরণস্বরূপ, পরমাণু গবেষণা একটা বিশাল দিগন্ত খুলে দিয়েছে মানবসভ্যতার জন্য। পরমাণু শক্তি উৎপাদন থেকে কৃষি, শিল্প, চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রতিটি ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছে পরমাণু গবেষণা। কিন্তু এই পরমাণু গবেষণা দ্বারা আবার পরমাণু বোমার ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করে পৃথিবীকে নিয়ে যাওয়া যায় এক অন্ধকার জগতে। হিরোশিমা-নাগাসাকি তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত।
আর একটা বিষয় হলো, কার উপকারে এই গবেষণার ফল ব্যবহৃত হবে। এ জন্য বলছি যে অনেক দেশে, বিশেষ করে প্রাচীন মিসরে বিজ্ঞানে অনেক উৎকর্ষ সাধিত হয়েছিল। কিন্তু তার সবই ছিল রাজা-বাদশাহ ও তাঁদের অনুচরদের জন্য। মিসরের পিরামিড, ফেরাউনের মমি কিংবা আগ্রার তাজমহল—এর কোনোটাই সাধারণ জনগণের কল্যাণের জন্য নির্মিত হয়নি। আর তাই রাজা-বাদশাহদের তিরধানের সঙ্গে সঙ্গেই এই প্রগতি বা অগ্রগতি যা-ই বলি না কেন, সেখানেই পরিসমাপ্তি ঘটে। গবেষণার আর একটি বিষয় হলো, এটা ধাপে ধাপে উৎকর্ষ লাভ করে। কোনো একপর্যায়ে যদি কোনো ছেদ পড়ে, তবে পরবর্তী ধাপে প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়ে অথবা একেবারেই স্থবির হয়ে যেতে পারে। যেমনটা পিরামিড মমি বা সমসাময়িক অন্যান্য বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে হয়। শোনা যায়, তাজমহল নির্মাতা স্থপতিদের নাকি হাত কেটে ফেলা হয়েছিল, যাতে তাঁরা এ রকম স্থাপনা আর একটা তৈরি করতে না পারেন। এভাবেই বিজ্ঞান ও গবেষণার অনেক যুগান্তকারী আবিষ্কার কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে।
কিন্তু পরবর্তীকালে দেশে দেশে বিজ্ঞান ও গবেষণার ফসল সাধারণ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে খুব সহজে। আর দ্বিতীয়ত, ধীরে ধীরে বিশ্ববাণিজ্যের সুবিশাল ব্যাপ্তি গবেষণার ফলকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য আরও অবারিত করে দিয়েছে। এ কারণে যেসব দেশ গবেষণায় যত বেশি বিনিয়োগ করেছে, ফলস্বরূপ তারাই তত উন্নতি লাভ করতে পেরেছে। সুতরাং যেকোনো দেশ উন্নতি ও অগ্রগতি লাভ করতে চাইলে তাকে অবশ্যই গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে।
এবারে আসা যাক আমাদের দেশের কথায়। অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। কিন্তু এখন সেভাবে গবেষণায় বিনিয়োগ হয়নি বা হচ্ছে না বলা চলে। তবে একটা ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম দেখা গিয়েছে, তা হলো কৃষি। এর ফলও খুবই পরিষ্কার সবার কাছে। ৫৫ হাজার বর্গমাইলের দেশে যেখানে ১৮ কোটি লোকের বাস, সেখানে খাদ্য ঘাটতি নেই। এটা সম্ভব হয়েছে শুধু কৃষি গবেষণায় অভাবনীয় সাফল্যের জন্য। এর সঙ্গে মৎস্য, পশুপালন এবং ফলমূল, শাকসবজির উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ। কৃষি গবেষকদের অক্লান্ত নিষ্ঠা ও শ্রম বাংলাদেশকে খাদ্যনিরাপত্তা দান করেছে, যা কিনা আফ্রিকার অনেক দেশ বিপুল চাষযোগ্য ভূমি থাকা সত্ত্বেও নিশ্চিত করতে পারেনি। তাই বাংলাদেশ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। অন্যান্য ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু গবেষণা যে হয়নি তা নয়; তবে তা উল্লেখযোগ্য বা যথেষ্ট নয়, তা বলাই বাহুল্য। প্রযুক্তি, চিকিৎসা, উৎপাদনব্যবস্থা, সামুদ্রিক ও খনিজসম্পদ আহরণ এবং বিশেষ করে বাজার ও বিপণন ব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে গবেষণায় বিনিয়োগ এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে বহুদূর।
এখন প্রশ্ন হলো, তাহলে কি বাংলাদেশে প্রতিভাবান গবেষকের অভাব? তা মনে করার কোনো কারণ নেই। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বিজ্ঞানী জুট জিনোম গবেষণায় বিশ্বব্যাপী সম্মান ও স্বীকৃতি লাভ করেছেন। এ ছাড়া গবেষণার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশি গবেষকেরা দেশে-বিদেশে যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষেত্র চিহ্নিত করে গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে। আঞ্চলিকতার গণ্ডি পেরিয়ে বাজার এখন বিশ্ববাজারে পরিণত হয়েছে।
এই বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া বিশ্ববাজারকে করে তুলেছে তীব্র প্রতিযোগিতামূলক। অন্যদিকে বিশ্ববাজার অবারিত করেছে অপার সম্ভাবনা। অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদার সীমাবদ্ধতা উৎপাদনের সীমাবদ্ধতা এনে দেয়। বিশ্ববাজারে প্রবেশের সুযোগ এই সীমাবদ্ধতা দূর করে দিয়েছে দেশগুলোর জন্য। বর্তমান বিশ্বে নতুন অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হওয়া দেশগুলো বিশ্বায়নের এই প্রক্রিয়াকে খুব ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগিয়েছে চীন। বিশ্ববাজার দখলের মধ্য দিয়ে চীন অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর দেশগুলোর উন্নতি নির্ভর করে রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর। যে যত বেশি রপ্তানি করতে পারবে, তার উন্নতি তত দ্রুত হবে—এটাই স্বাভাবিক। এই রপ্তানির ওপর কর্মসংস্থান, প্রবৃদ্ধি, বাণিজ্যের ভারসাম্য— সবই একান্তভাবে নির্ভরশীল। সুতরাং অর্থনৈতিক উন্নতি লাভ করতে গেলে বিশ্ববাজারে সুবিধাজনক জায়গা করে নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ এই অর্থে যে এখানে কৃষি, শিল্প, পর্যটন, খনিজ ও সমুদ্রসম্পদ—সব ক্ষেত্রেই অনেক সম্ভাবনা বিরাজমান। সেই সঙ্গে রয়েছে বিপুল কর্মক্ষম জনশক্তি। কিন্তু এই সম্ভাবনাগুলো কি প্রকৃত অর্থে ব্যবহৃত হচ্ছে? হলে সম্ভবত বাংলাদেশের অর্থনীতি দক্ষিণ কোরিয়া বা মালয়েশিয়াকে ছাড়িয়ে যেত। অন্যান্য দেশে গবেষণার কেন্দ্র হলো বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু আমাদের দেশে এর বিপরীত। এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও গবেষণার সুযোগ খুবই সীমিত। যেহেতু এই গবেষণা খুব কম গুরুত্ব পায়, তাই আর্থিক বরাদ্দও কম। সরকারিভাবে না পেলে বেসরকারিভাবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সহজেই অর্থ সংস্থান করা যেত।
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আয়ের একটা অংশ করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি হিসেবে ব্যয় করে প্রতিবছর। দেখা যায় প্রতিষ্ঠানগুলো এই অর্থ হাসপাতাল, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্রতিষ্ঠায় ব্যয় করে, যা কিনা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। কেননা, ব্যবসায়িকভাবেও এগুলো প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যদি এই অর্থের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ গবেষণার কাজে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকত, তবে গবেষণায় অন্তত আর্থিক সমস্যা থাকত না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর গবেষণার একটা বিরাট অংশ এভাবেই আসে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এ ক্ষেত্রে বাজার এবং পণ্য উন্নয়নের গবেষণালব্ধ ফল তাদের ব্যবসায়িক উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারে।
আমরা যদি আমাদের আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখব, আমাদের রপ্তানি বাজার শুধু কয়েকটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ; বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপ। আবার আমরা যে পণ্যগুলো রপ্তানি করি, সেগুলোও গার্মেন্টস ও এ-জাতীয় পণ্য। অপ্রত্যাশিত ঝুঁকি তো আছেই, যেমন কোভিড-১৯। এর ফলে পৃথিবীর অর্থনৈতিক অবস্থা কী হয়েছে, তা আমরা সবাই জানি।
সুতরাং বাজার সম্প্রসারণ, পণ্য বহুমুখীকরণ ও প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জন করতে হলে প্রয়োজন গবেষণায় বিনিয়োগ। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে যেমন আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া ও লাতিন আমেরিকান দেশগুলোতে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এসব সুযোগের সদ্ব্যবহারের জন্য যে গবেষণার প্রয়োজন, তার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। সুতরাং নীতিনির্ধারকদের গবেষণার বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে সক্রিয়ভাবে। তবে গবেষণা হতে হবে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক, মানসম্পন্ন ও প্রায়োগিক, যা দেশের কাজে আসবে সার্থকভাবে। আশা করি, গবেষণায় বিনিয়োগ দেশকে উন্নত দেশের তালিকায় যুক্ত করবে অদূর ভবিষ্যতে।
ড. সৈয়দ ইজাজ আহসান, সিনিয়র ফ্যাকাল্টি, ডারল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গবেষণাকে অনেকটা বিলাসিতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। অন্য একটা কারণও খুবই স্পষ্ট, আর তা হলো আর্থিক সংগতি। উন্নত দেশগুলো প্রতিবছর শত সহস্র কোটি ডলার ব্যয় করে গবেষণা খাতে। কিন্তু কেন? কেননা, গবেষণার মাধ্যমেই পৃথিবী এগিয়ে চলছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থালির ব্যবহার্য জিনিসপত্র থেকে মহাকাশ যান ও কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ পর্যন্ত—সব ক্ষেত্রেই রয়েছে গবেষণার অবদান। বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তি চীনের উত্থানের পেছনেও রয়েছে গবেষণার অবদান। বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের ঈর্ষণীয় উন্নয়ন নিবিড় গবেষণারই ফল। চীন কিছু কিছু ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে গবেষণার অনেক ক্ষেত্রে। যে দেশ যত উন্নত, সেই দেশের গবেষণায় বিনিয়োগ তত বেশি।
গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করা এবং নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা। এই নতুন জ্ঞান প্রয়োগ করে বর্তমান অবস্থা থেকে অধিকতর উন্নত পর্যায়ে প্রবেশ করা। কৃষি, চিকিৎসাশাস্ত্র, যোগাযোগ, প্রযুক্তি—প্রতিটি ক্ষেত্রে গবেষণা তার প্রত্যাশিত অবদান রেখে চলেছে। কিন্তু এ প্রসঙ্গে এখানে আর একটা প্রশ্ন দেখা দেয়, এই গবেষণা ও উন্নতি কার জন্য এবং দ্বিতীয়ত, গবেষণার উদ্দেশ্য মানবসভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে দেখা দেবে কি না। উদাহরণস্বরূপ, পরমাণু গবেষণা একটা বিশাল দিগন্ত খুলে দিয়েছে মানবসভ্যতার জন্য। পরমাণু শক্তি উৎপাদন থেকে কৃষি, শিল্প, চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রতিটি ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছে পরমাণু গবেষণা। কিন্তু এই পরমাণু গবেষণা দ্বারা আবার পরমাণু বোমার ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করে পৃথিবীকে নিয়ে যাওয়া যায় এক অন্ধকার জগতে। হিরোশিমা-নাগাসাকি তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত।
আর একটা বিষয় হলো, কার উপকারে এই গবেষণার ফল ব্যবহৃত হবে। এ জন্য বলছি যে অনেক দেশে, বিশেষ করে প্রাচীন মিসরে বিজ্ঞানে অনেক উৎকর্ষ সাধিত হয়েছিল। কিন্তু তার সবই ছিল রাজা-বাদশাহ ও তাঁদের অনুচরদের জন্য। মিসরের পিরামিড, ফেরাউনের মমি কিংবা আগ্রার তাজমহল—এর কোনোটাই সাধারণ জনগণের কল্যাণের জন্য নির্মিত হয়নি। আর তাই রাজা-বাদশাহদের তিরধানের সঙ্গে সঙ্গেই এই প্রগতি বা অগ্রগতি যা-ই বলি না কেন, সেখানেই পরিসমাপ্তি ঘটে। গবেষণার আর একটি বিষয় হলো, এটা ধাপে ধাপে উৎকর্ষ লাভ করে। কোনো একপর্যায়ে যদি কোনো ছেদ পড়ে, তবে পরবর্তী ধাপে প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়ে অথবা একেবারেই স্থবির হয়ে যেতে পারে। যেমনটা পিরামিড মমি বা সমসাময়িক অন্যান্য বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে হয়। শোনা যায়, তাজমহল নির্মাতা স্থপতিদের নাকি হাত কেটে ফেলা হয়েছিল, যাতে তাঁরা এ রকম স্থাপনা আর একটা তৈরি করতে না পারেন। এভাবেই বিজ্ঞান ও গবেষণার অনেক যুগান্তকারী আবিষ্কার কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে।
কিন্তু পরবর্তীকালে দেশে দেশে বিজ্ঞান ও গবেষণার ফসল সাধারণ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে খুব সহজে। আর দ্বিতীয়ত, ধীরে ধীরে বিশ্ববাণিজ্যের সুবিশাল ব্যাপ্তি গবেষণার ফলকে বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য আরও অবারিত করে দিয়েছে। এ কারণে যেসব দেশ গবেষণায় যত বেশি বিনিয়োগ করেছে, ফলস্বরূপ তারাই তত উন্নতি লাভ করতে পেরেছে। সুতরাং যেকোনো দেশ উন্নতি ও অগ্রগতি লাভ করতে চাইলে তাকে অবশ্যই গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে।
এবারে আসা যাক আমাদের দেশের কথায়। অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। কিন্তু এখন সেভাবে গবেষণায় বিনিয়োগ হয়নি বা হচ্ছে না বলা চলে। তবে একটা ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম দেখা গিয়েছে, তা হলো কৃষি। এর ফলও খুবই পরিষ্কার সবার কাছে। ৫৫ হাজার বর্গমাইলের দেশে যেখানে ১৮ কোটি লোকের বাস, সেখানে খাদ্য ঘাটতি নেই। এটা সম্ভব হয়েছে শুধু কৃষি গবেষণায় অভাবনীয় সাফল্যের জন্য। এর সঙ্গে মৎস্য, পশুপালন এবং ফলমূল, শাকসবজির উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণ। কৃষি গবেষকদের অক্লান্ত নিষ্ঠা ও শ্রম বাংলাদেশকে খাদ্যনিরাপত্তা দান করেছে, যা কিনা আফ্রিকার অনেক দেশ বিপুল চাষযোগ্য ভূমি থাকা সত্ত্বেও নিশ্চিত করতে পারেনি। তাই বাংলাদেশ অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। অন্যান্য ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু গবেষণা যে হয়নি তা নয়; তবে তা উল্লেখযোগ্য বা যথেষ্ট নয়, তা বলাই বাহুল্য। প্রযুক্তি, চিকিৎসা, উৎপাদনব্যবস্থা, সামুদ্রিক ও খনিজসম্পদ আহরণ এবং বিশেষ করে বাজার ও বিপণন ব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। এসব ক্ষেত্রে গবেষণায় বিনিয়োগ এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে বহুদূর।
এখন প্রশ্ন হলো, তাহলে কি বাংলাদেশে প্রতিভাবান গবেষকের অভাব? তা মনে করার কোনো কারণ নেই। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বিজ্ঞানী জুট জিনোম গবেষণায় বিশ্বব্যাপী সম্মান ও স্বীকৃতি লাভ করেছেন। এ ছাড়া গবেষণার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশি গবেষকেরা দেশে-বিদেশে যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ক্ষেত্র চিহ্নিত করে গবেষণায় বিনিয়োগ করতে হবে। আঞ্চলিকতার গণ্ডি পেরিয়ে বাজার এখন বিশ্ববাজারে পরিণত হয়েছে।
এই বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া বিশ্ববাজারকে করে তুলেছে তীব্র প্রতিযোগিতামূলক। অন্যদিকে বিশ্ববাজার অবারিত করেছে অপার সম্ভাবনা। অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদার সীমাবদ্ধতা উৎপাদনের সীমাবদ্ধতা এনে দেয়। বিশ্ববাজারে প্রবেশের সুযোগ এই সীমাবদ্ধতা দূর করে দিয়েছে দেশগুলোর জন্য। বর্তমান বিশ্বে নতুন অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হওয়া দেশগুলো বিশ্বায়নের এই প্রক্রিয়াকে খুব ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগিয়েছে চীন। বিশ্ববাজার দখলের মধ্য দিয়ে চীন অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর দেশগুলোর উন্নতি নির্ভর করে রপ্তানি বাণিজ্যের ওপর। যে যত বেশি রপ্তানি করতে পারবে, তার উন্নতি তত দ্রুত হবে—এটাই স্বাভাবিক। এই রপ্তানির ওপর কর্মসংস্থান, প্রবৃদ্ধি, বাণিজ্যের ভারসাম্য— সবই একান্তভাবে নির্ভরশীল। সুতরাং অর্থনৈতিক উন্নতি লাভ করতে গেলে বিশ্ববাজারে সুবিধাজনক জায়গা করে নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ এই অর্থে যে এখানে কৃষি, শিল্প, পর্যটন, খনিজ ও সমুদ্রসম্পদ—সব ক্ষেত্রেই অনেক সম্ভাবনা বিরাজমান। সেই সঙ্গে রয়েছে বিপুল কর্মক্ষম জনশক্তি। কিন্তু এই সম্ভাবনাগুলো কি প্রকৃত অর্থে ব্যবহৃত হচ্ছে? হলে সম্ভবত বাংলাদেশের অর্থনীতি দক্ষিণ কোরিয়া বা মালয়েশিয়াকে ছাড়িয়ে যেত। অন্যান্য দেশে গবেষণার কেন্দ্র হলো বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু আমাদের দেশে এর বিপরীত। এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও গবেষণার সুযোগ খুবই সীমিত। যেহেতু এই গবেষণা খুব কম গুরুত্ব পায়, তাই আর্থিক বরাদ্দও কম। সরকারিভাবে না পেলে বেসরকারিভাবে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সহজেই অর্থ সংস্থান করা যেত।
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আয়ের একটা অংশ করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি হিসেবে ব্যয় করে প্রতিবছর। দেখা যায় প্রতিষ্ঠানগুলো এই অর্থ হাসপাতাল, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল প্রতিষ্ঠায় ব্যয় করে, যা কিনা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। কেননা, ব্যবসায়িকভাবেও এগুলো প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যদি এই অর্থের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ গবেষণার কাজে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকত, তবে গবেষণায় অন্তত আর্থিক সমস্যা থাকত না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর গবেষণার একটা বিরাট অংশ এভাবেই আসে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এ ক্ষেত্রে বাজার এবং পণ্য উন্নয়নের গবেষণালব্ধ ফল তাদের ব্যবসায়িক উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারে।
আমরা যদি আমাদের আন্তর্জাতিক বাজার বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখব, আমাদের রপ্তানি বাজার শুধু কয়েকটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ; বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপ। আবার আমরা যে পণ্যগুলো রপ্তানি করি, সেগুলোও গার্মেন্টস ও এ-জাতীয় পণ্য। অপ্রত্যাশিত ঝুঁকি তো আছেই, যেমন কোভিড-১৯। এর ফলে পৃথিবীর অর্থনৈতিক অবস্থা কী হয়েছে, তা আমরা সবাই জানি।
সুতরাং বাজার সম্প্রসারণ, পণ্য বহুমুখীকরণ ও প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জন করতে হলে প্রয়োজন গবেষণায় বিনিয়োগ। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে যেমন আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া ও লাতিন আমেরিকান দেশগুলোতে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এসব সুযোগের সদ্ব্যবহারের জন্য যে গবেষণার প্রয়োজন, তার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। সুতরাং নীতিনির্ধারকদের গবেষণার বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে সক্রিয়ভাবে। তবে গবেষণা হতে হবে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক, মানসম্পন্ন ও প্রায়োগিক, যা দেশের কাজে আসবে সার্থকভাবে। আশা করি, গবেষণায় বিনিয়োগ দেশকে উন্নত দেশের তালিকায় যুক্ত করবে অদূর ভবিষ্যতে।
ড. সৈয়দ ইজাজ আহসান, সিনিয়র ফ্যাকাল্টি, ডারল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গবেষণাকে অনেকটা বিলাসিতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। অন্য একটা কারণও খুবই স্পষ্ট, আর তা হলো আর্থিক সংগতি। উন্নত দেশগুলো প্রতিবছর শত সহস্র কোটি ডলার ব্যয় করে গবেষণা খাতে। কিন্তু কেন? কেননা, গবেষণার মাধ্যমেই
২৯ মে ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গবেষণাকে অনেকটা বিলাসিতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। অন্য একটা কারণও খুবই স্পষ্ট, আর তা হলো আর্থিক সংগতি। উন্নত দেশগুলো প্রতিবছর শত সহস্র কোটি ডলার ব্যয় করে গবেষণা খাতে। কিন্তু কেন? কেননা, গবেষণার মাধ্যমেই
২৯ মে ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গবেষণাকে অনেকটা বিলাসিতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। অন্য একটা কারণও খুবই স্পষ্ট, আর তা হলো আর্থিক সংগতি। উন্নত দেশগুলো প্রতিবছর শত সহস্র কোটি ডলার ব্যয় করে গবেষণা খাতে। কিন্তু কেন? কেননা, গবেষণার মাধ্যমেই
২৯ মে ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গবেষণাকে অনেকটা বিলাসিতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়। অন্য একটা কারণও খুবই স্পষ্ট, আর তা হলো আর্থিক সংগতি। উন্নত দেশগুলো প্রতিবছর শত সহস্র কোটি ডলার ব্যয় করে গবেষণা খাতে। কিন্তু কেন? কেননা, গবেষণার মাধ্যমেই
২৯ মে ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫