Ajker Patrika

কাঙ্ক্ষিত দাম নেই, রসুন চাষ কমেছে ১৭ শতাংশ

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২২, ১৫: ২৭
কাঙ্ক্ষিত দাম নেই, রসুন চাষ কমেছে ১৭ শতাংশ

দিনাজপুরে গত দুই বছরে কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় রসুন চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন চাষিরা। জেলার প্রতিটি উপজেলায় কম-বেশি রসুন আবাদ হলেও সবচেয়ে বেশি চাষ হয় খানসামায়। উৎপাদিত রসুন রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।

জেলা কৃষি অফিসের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. খালেদুর রহমান জানান, গত বছরের তুলনায় জেলায় এক বছরেই রসুনের ফলন কমেছে ১৭ শতাংশ। রসুনের কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় কৃষকেরা ভুট্টা, সরিষাসহ অন্য অর্থকরী ফসলের দিকে ঝুঁকছেন।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে উৎপাদিত রসুনের ৫ শতাংশ দিনাজপুরে উৎপাদন হয়। জেলায় গত মৌসুমে রসুনের আবাদ হয়েছিল ৫ হাজার ৮৩ হেক্টর জমিতে। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় উৎপাদন কমেছে ৮৩৩ হেক্টর। চলতি বছর আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ২৫০ হেক্টরে।

খানসামার কাচিনিয়া এলাকায় দেখা যায়, মাঠ থেকে রসুন ওঠানোর উপযোগী অবস্থায় চলে এসেছে। আবাদ কমলেও গত বছরের তুলনায় ফলন ভালো হয়েছে।

চাষিরা জানান, অল্পদিনের মধ্যেই রসুন ঘরে তুলবেন। আর যাঁরা উঁচু জমিতে রসুন আগে লাগিয়েছিলেন, তাঁরা রসুন তুলতে শুরু করেছেন। তবে এবার ফলন ভালো হলেও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা।

কৃষকেরা আরও জানান, কয়েক বছর আগে প্রতি কেজি রসুন ৭০-৮০ টাকা হলেও এখন ১৫-২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত বাজারে রসুনের দাম না থাকলে কৃষকেরা খরচ তুলতে হিমশিম খাবেন। কারণ এক বিঘা জমিতে রসুন চাষ করতে খরচ প্রায় ৪০ হাজার টাকা। আর রসুন উৎপাদন হয় ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ মণ।

ওই এলাকার আগ্রা গ্রামের কৃষক হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘দুই বছর ধরে রসুনের দাম নেই। আগে আমরা রসুন পাইকারি বাজারে তিন থেকে চার হাজার টাকা দরে মণ বিক্রি করতাম। আর এখন মাত্র ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় পাইকারি বিক্রি করছি।’

চাষি আব্দুল জব্বার বলেন, ‘রসুনের ফলন ভালো হয়েছে; কিন্তু বাজার নেই। বাজার না থাকায় আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো কৃষক, ফসল ফলানো ছাড়া আমাদের আর কিছু জানা নেই। আমাদের কৃষিকাজ করেই সংসার চলে। তাই বাধ্য হয়ে ক্ষতি হলেও রসুন, আলু ও ধান লাগাই।’

রসুনচাষি নাসির উদ্দিন বলেন, প্রায় তিন একর জমিতে এবার রসুনের আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে; কিন্তু সার, বীজ, কীটনাশক ও পরিচর্যা খরচ মিলিয়ে এক বিঘায় প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ। কিন্তু বাজারের যে অবস্থা, তাতে খরচ তুলতে পারব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত