চিররঞ্জন সরকার

আমাদের রাজনীতিতে যেমন কোনো সুসংবাদ নেই, অর্থনীতিতেও নেই। করোনা মহামারির পর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকট চলছে। সেই সংকটের ঢেউ আছড়ে পড়ছে আমাদের অর্থনীতিতেও। ডলারসংকট চলছে তো চলছেই। আমদানি ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে। আর এই ব্যয় মেটাতে টান পড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। চলছে মুদ্রাস্ফীতি আর মূল্যস্ফীতি।
মূল্যবৃদ্ধির চাপে সাধারণ মানুষের জীবন নাভিশ্বাস। এর মধ্যে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যহ্রাসের খবর কিছুটা স্বস্তি বয়ে এনেছিল। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে তেলের দাম সরকারিভাবে কিছুটা কমানোও হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ১০৯ থেকে ৭৫ পয়সা কমে ১০৮ টাকা ২৫ পয়সা, অকটেনের দাম লিটারপ্রতি ১৩০ থেকে ৪ টাকা কমে ১২৬ টাকা এবং পেট্রলের দাম ১২৫ থেকে ৩ টাকা কমে ১২২ টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরকার গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মূল্য নির্ধারণের নির্দেশিকার প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ মার্চ প্রাইসিং ফর্মুলা অনুসারে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের সর্বশেষ মূল্য সমন্বয় হয় ২৯ আগস্ট, ২০২২। এরপর করোনা মহামারি-উত্তর সরবরাহ-সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে সমুদ্রপথে জ্বালানি পণ্যের প্রিমিয়াম, পরিবহন ভাড়া, বিমা ও ব্যাংক সুদের হার ব্যাপক পরিমাণে বেড়েছে। উল্লিখিত সময়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে দেশীয় মুদ্রা অবমূল্যায়িত হয়েছে এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের (প্রধানত ডিজেল) মূল্যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ জ্বালানি তেলের ওপর থেকে ভর্তুকি তুলে নেওয়ার জন্য সরকারকে চাপ দিয়ে আসছিল। সরকারকে আইএমএফ যে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ দিয়েছে তার অন্যতম শর্ত হচ্ছে জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ থেকে সব ভর্তুকি তুলে দিতে হবে।
জ্বালানি বিভাগ বলছে, আইএমএফ গত নভেম্বর থেকেই স্বয়ংক্রিয় এই মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি কার্যকর করার বিষয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। তবে নির্বাচনের আগে সরকার তেলের দামের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার পক্ষে ছিল না।
প্রতিবেশী দেশ ভারত জ্বালানি তেলের মূল্য না কমালেও বাংলাদেশ জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করে একটা সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে।ভারতের কলকাতায় বর্তমানে ডিজেল লিটারপ্রতি ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি বা ১৩৩ টাকা ৫৭ পয়সা (১ রুপি= ১.৪৪ টাকা) এবং পেট্রল ১০৬ দশমিক শূন্য ৩ রুপি বা ১৫২ টাকা ৬৮ পয়সা বিক্রি হচ্ছে। এটা বাংলাদেশ থেকে যথাক্রমে প্রায় ২৪ টাকা ৫৭ পয়সা ও ২৭ টাকা ৬৮ পয়সা বেশি।
আইএমএফের শর্তের কারণে হোক, আর সরকারের সদিচ্ছার কারণেই, জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়টি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। আমাদের দেশে কোনো কিছুর দাম কখনো কমে না। একবার বাড়লে তা কেবল বাড়তেই থাকে।
সেদিক থেকে জ্বালানির দাম কমানোটা একটা ব্যতিক্রমী ঘটনা। জ্বালানির দাম কমলে পরিবহন খরচসহ সব খরচ কমে। তাতে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে আসার একটা সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু আমাদের পোড়া কপাল। জ্বালানি তেলের দাম কমার সুফল ভোগ করার আগেই আবার বিশ্ববাজারে এর দাম বেড়ে যাওয়ার আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ক্রমাগত কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তেল উৎপাদনকারী দেশের জোট ওপেক ও এর সহযোগী দেশগুলো হঠাৎ করেই তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই খবরে আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে গেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। ওপেক এবং রাশিয়াসহ ওপেকের সহযোগী দেশগুলোর এক ভার্চুয়াল বৈঠকে তেল উৎপাদন হ্রাসের এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের জোগান কমানোর সময়সীমা আগামী জুন মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে চলেছে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদক ও রপ্তানিকারী দেশগুলোর সংগঠন ‘ওপেক’ এবং রাশিয়াসহ তাদের সহযোগী দেশগুলোর একাংশ।
এই সূত্রে দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল উৎপাদন হ্রাস করা হচ্ছে। সরবরাহ কমিয়ে জ্বালানির দরকে ঠেলে তুলতে তেলের উৎপাদন কমাচ্ছে ওপেক এবং এর সহযোগীরা। এই হ্রাসের অনেকাংশই বহন করছে ওপেকের নেতৃত্বদানকারী সৌদি আরব, যে গত জুলাই থেকে উৎপাদন দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল করে কমিয়ে আসছে। আপাতত সেই মাত্রার ছাঁটাই বহাল রাখা হলো। রাশিয়াও দৈনিক ৪ দশমিক ৭৭ লাখ ব্যারেল উৎপাদন কমাচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক এবং কুয়েতের মতো বৃহত্তর ওপেকের বেশ কিছু সদস্যও সৌদি আরবের পথেই হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের ৪০ শতাংশের কাছাকাছি অপরিশোধিত তেল উৎপাদিত হয় বৃহত্তর ওপেকের দ্বারা। তেলের বাজারের ভারসাম্য বজায় রাখতে সময়ে-সময়ে চাহিদা-জোগানও নিয়ন্ত্রণ করে তারা। ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে বহু দেশ যখন লকডাউন পরিস্থিতির জেরে বিপর্যস্ত, তখন ক্রেতার অভাবে হ্রাস পেয়েছিল তেলের দাম।
সেই সময় তেলের দাম জোরদার করতে উৎপাদনের মাত্রা বহু গুণ কমিয়েছিল এই সংগঠন। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ে বাজারে চাহিদার বিপর্যয়ের আশঙ্কায় এক ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের (ব্রেন্ট ক্রুড) দাম ১৩০ ডলারে পৌঁছে যায়। যদিও গত বছরের মার্চে দামের পতন ঘটে প্রতি ব্যারেলে ৭০ ডলারের কাছাকাছি।
ফলে অপরিশোধিত তেলের বাজারে একদিকে স্থিতাবস্থা কায়েম এবং অন্যদিকে তেলের দাম জোরদার করতে ওপেক ধারাবাহিকভাবে উৎপাদন হ্রাসের পথ নিয়েছে। যার জেরে ব্রেন্ট ক্রুড সম্প্রতি প্রতি ব্যারেল ৮৩ দশমিক ৫৫ ডলারে বিক্রি হয়েছে, যা ছিল গত চার মাসে সর্বাধিক। কিন্তু সংগঠনটি এযাবৎ যে মূল্যবৃদ্ধির আশা করেছিল, তা সম্ভব হয়নি বিবিধ কারণে।
যার অন্যতম মহামারি এবং তৎপরবর্তী সময়ে যুদ্ধের জেরে উন্নত দেশগুলোয় অর্থনৈতিক মন্দা; বিশেষ করে বিশ্বের বৃহত্তম তেল আমদানিকারী রাষ্ট্র চীনে তেলের চাহিদা যথেষ্ট থাকলেও, মহামারি-পরবর্তী সময়ে মন্দা-আক্রান্ত দেশটির অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের ধারা কতখানি বজায় থাকবে, তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া মুদ্রাস্ফীতি রোধে বহু দেশে ব্যাংকের চড়া সুদের হারের জেরে মানুষের ব্যবহারযোগ্য আয় (ডিসপোজিবল ইনকাম) প্রভাবিত হওয়ায়, তেলের চাহিদা কমার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
জ্বালানি তেলের দামে মোটামুটি একটি স্থিতিশীল অবস্থার কারণে কয়েক মাসে উন্নত দেশসহ বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে। তাতে বিশ্ব অর্থনীতি যখন আশার আলো দেখতে শুরু করেছিল, তখন ওপেক ও তার মিত্রদের এই তেল উৎপাদন হ্রাসের খবরে আতঙ্কিত হওয়ার সমূহ কারণ রয়েছে। এতে মূল্যস্ফীতির হার আবার বেড়ে যেতে পারে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সাধারণত বহুমাত্রিক হয়। প্রথমত, এতে পণ্য পরিবহন খরচ বাড়ে, এর সঙ্গে বাড়ে উৎপাদন খরচ। এতে সব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে যেসব দেশ আমদানিনির্ভর, সেই সব দেশ দুর্দশার মধ্যে পড়ে। আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে তাদের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে টান পড়ে। তখন ফেডারেল রিজার্ভসহ বিশ্বের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদ বৃদ্ধির হার বাড়িয়ে দিতে পারে। তাতে মন্দার আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৭০ লাখ টন পেট্রোলিয়াম পণ্যের চাহিদা আছে। অপর্যাপ্ত পরিশোধন সুবিধার কারণে এর ৮০ শতাংশ পরিশোধিত আকারে আমদানি করা হয়। বিশ্ববাজারে তেলের মূল্যের ওঠাপড়ার ওপর আমাদের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল।
মুদ্রাস্ফীতির চাপ ছাড়াও এই আমদানির খরচ বাড়ার জেরে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলাফল (ট্রেড ব্যালেন্স), বৈদেশিক মুদ্রাভান্ডার, টাকার দাম হ্রাস, পেট্রল ও ডিজেলের বাজারমূল্য বাড়লে ঘরোয়া অর্থনীতির ওপর চাপ—অর্থনীতির নানা দিকে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই আশঙ্কা থেকে বাংলাদেশকে তেল আমদানির পথটি বহুমুখী করার চেষ্টা করতে হবে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে যদি বিকল্প পথ বেরোয়ও, কিছু স্বল্পমেয়াদি সংকট আপাতত এড়ানো কঠিন, এ কথা মেনে নিয়েই এগোতে হবে সরকারকে।
দেশের মানুষ এমনিতেই ভালো নেই। অনেক তোড়জোড়ের পরও রমজান শুরু হওয়ার আগেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম না বাড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য সুচিন্তিত উদ্যোগ নিতে হবে।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট

আমাদের রাজনীতিতে যেমন কোনো সুসংবাদ নেই, অর্থনীতিতেও নেই। করোনা মহামারির পর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকট চলছে। সেই সংকটের ঢেউ আছড়ে পড়ছে আমাদের অর্থনীতিতেও। ডলারসংকট চলছে তো চলছেই। আমদানি ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে। আর এই ব্যয় মেটাতে টান পড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। চলছে মুদ্রাস্ফীতি আর মূল্যস্ফীতি।
মূল্যবৃদ্ধির চাপে সাধারণ মানুষের জীবন নাভিশ্বাস। এর মধ্যে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যহ্রাসের খবর কিছুটা স্বস্তি বয়ে এনেছিল। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে তেলের দাম সরকারিভাবে কিছুটা কমানোও হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ১০৯ থেকে ৭৫ পয়সা কমে ১০৮ টাকা ২৫ পয়সা, অকটেনের দাম লিটারপ্রতি ১৩০ থেকে ৪ টাকা কমে ১২৬ টাকা এবং পেট্রলের দাম ১২৫ থেকে ৩ টাকা কমে ১২২ টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরকার গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মূল্য নির্ধারণের নির্দেশিকার প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ মার্চ প্রাইসিং ফর্মুলা অনুসারে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের সর্বশেষ মূল্য সমন্বয় হয় ২৯ আগস্ট, ২০২২। এরপর করোনা মহামারি-উত্তর সরবরাহ-সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে সমুদ্রপথে জ্বালানি পণ্যের প্রিমিয়াম, পরিবহন ভাড়া, বিমা ও ব্যাংক সুদের হার ব্যাপক পরিমাণে বেড়েছে। উল্লিখিত সময়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে দেশীয় মুদ্রা অবমূল্যায়িত হয়েছে এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের (প্রধানত ডিজেল) মূল্যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ জ্বালানি তেলের ওপর থেকে ভর্তুকি তুলে নেওয়ার জন্য সরকারকে চাপ দিয়ে আসছিল। সরকারকে আইএমএফ যে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ দিয়েছে তার অন্যতম শর্ত হচ্ছে জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ থেকে সব ভর্তুকি তুলে দিতে হবে।
জ্বালানি বিভাগ বলছে, আইএমএফ গত নভেম্বর থেকেই স্বয়ংক্রিয় এই মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি কার্যকর করার বিষয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। তবে নির্বাচনের আগে সরকার তেলের দামের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার পক্ষে ছিল না।
প্রতিবেশী দেশ ভারত জ্বালানি তেলের মূল্য না কমালেও বাংলাদেশ জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করে একটা সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে।ভারতের কলকাতায় বর্তমানে ডিজেল লিটারপ্রতি ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি বা ১৩৩ টাকা ৫৭ পয়সা (১ রুপি= ১.৪৪ টাকা) এবং পেট্রল ১০৬ দশমিক শূন্য ৩ রুপি বা ১৫২ টাকা ৬৮ পয়সা বিক্রি হচ্ছে। এটা বাংলাদেশ থেকে যথাক্রমে প্রায় ২৪ টাকা ৫৭ পয়সা ও ২৭ টাকা ৬৮ পয়সা বেশি।
আইএমএফের শর্তের কারণে হোক, আর সরকারের সদিচ্ছার কারণেই, জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়টি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। আমাদের দেশে কোনো কিছুর দাম কখনো কমে না। একবার বাড়লে তা কেবল বাড়তেই থাকে।
সেদিক থেকে জ্বালানির দাম কমানোটা একটা ব্যতিক্রমী ঘটনা। জ্বালানির দাম কমলে পরিবহন খরচসহ সব খরচ কমে। তাতে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে আসার একটা সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু আমাদের পোড়া কপাল। জ্বালানি তেলের দাম কমার সুফল ভোগ করার আগেই আবার বিশ্ববাজারে এর দাম বেড়ে যাওয়ার আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ক্রমাগত কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তেল উৎপাদনকারী দেশের জোট ওপেক ও এর সহযোগী দেশগুলো হঠাৎ করেই তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই খবরে আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে গেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। ওপেক এবং রাশিয়াসহ ওপেকের সহযোগী দেশগুলোর এক ভার্চুয়াল বৈঠকে তেল উৎপাদন হ্রাসের এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের জোগান কমানোর সময়সীমা আগামী জুন মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে চলেছে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদক ও রপ্তানিকারী দেশগুলোর সংগঠন ‘ওপেক’ এবং রাশিয়াসহ তাদের সহযোগী দেশগুলোর একাংশ।
এই সূত্রে দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল উৎপাদন হ্রাস করা হচ্ছে। সরবরাহ কমিয়ে জ্বালানির দরকে ঠেলে তুলতে তেলের উৎপাদন কমাচ্ছে ওপেক এবং এর সহযোগীরা। এই হ্রাসের অনেকাংশই বহন করছে ওপেকের নেতৃত্বদানকারী সৌদি আরব, যে গত জুলাই থেকে উৎপাদন দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল করে কমিয়ে আসছে। আপাতত সেই মাত্রার ছাঁটাই বহাল রাখা হলো। রাশিয়াও দৈনিক ৪ দশমিক ৭৭ লাখ ব্যারেল উৎপাদন কমাচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক এবং কুয়েতের মতো বৃহত্তর ওপেকের বেশ কিছু সদস্যও সৌদি আরবের পথেই হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের ৪০ শতাংশের কাছাকাছি অপরিশোধিত তেল উৎপাদিত হয় বৃহত্তর ওপেকের দ্বারা। তেলের বাজারের ভারসাম্য বজায় রাখতে সময়ে-সময়ে চাহিদা-জোগানও নিয়ন্ত্রণ করে তারা। ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে বহু দেশ যখন লকডাউন পরিস্থিতির জেরে বিপর্যস্ত, তখন ক্রেতার অভাবে হ্রাস পেয়েছিল তেলের দাম।
সেই সময় তেলের দাম জোরদার করতে উৎপাদনের মাত্রা বহু গুণ কমিয়েছিল এই সংগঠন। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ে বাজারে চাহিদার বিপর্যয়ের আশঙ্কায় এক ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের (ব্রেন্ট ক্রুড) দাম ১৩০ ডলারে পৌঁছে যায়। যদিও গত বছরের মার্চে দামের পতন ঘটে প্রতি ব্যারেলে ৭০ ডলারের কাছাকাছি।
ফলে অপরিশোধিত তেলের বাজারে একদিকে স্থিতাবস্থা কায়েম এবং অন্যদিকে তেলের দাম জোরদার করতে ওপেক ধারাবাহিকভাবে উৎপাদন হ্রাসের পথ নিয়েছে। যার জেরে ব্রেন্ট ক্রুড সম্প্রতি প্রতি ব্যারেল ৮৩ দশমিক ৫৫ ডলারে বিক্রি হয়েছে, যা ছিল গত চার মাসে সর্বাধিক। কিন্তু সংগঠনটি এযাবৎ যে মূল্যবৃদ্ধির আশা করেছিল, তা সম্ভব হয়নি বিবিধ কারণে।
যার অন্যতম মহামারি এবং তৎপরবর্তী সময়ে যুদ্ধের জেরে উন্নত দেশগুলোয় অর্থনৈতিক মন্দা; বিশেষ করে বিশ্বের বৃহত্তম তেল আমদানিকারী রাষ্ট্র চীনে তেলের চাহিদা যথেষ্ট থাকলেও, মহামারি-পরবর্তী সময়ে মন্দা-আক্রান্ত দেশটির অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের ধারা কতখানি বজায় থাকবে, তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া মুদ্রাস্ফীতি রোধে বহু দেশে ব্যাংকের চড়া সুদের হারের জেরে মানুষের ব্যবহারযোগ্য আয় (ডিসপোজিবল ইনকাম) প্রভাবিত হওয়ায়, তেলের চাহিদা কমার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
জ্বালানি তেলের দামে মোটামুটি একটি স্থিতিশীল অবস্থার কারণে কয়েক মাসে উন্নত দেশসহ বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে। তাতে বিশ্ব অর্থনীতি যখন আশার আলো দেখতে শুরু করেছিল, তখন ওপেক ও তার মিত্রদের এই তেল উৎপাদন হ্রাসের খবরে আতঙ্কিত হওয়ার সমূহ কারণ রয়েছে। এতে মূল্যস্ফীতির হার আবার বেড়ে যেতে পারে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সাধারণত বহুমাত্রিক হয়। প্রথমত, এতে পণ্য পরিবহন খরচ বাড়ে, এর সঙ্গে বাড়ে উৎপাদন খরচ। এতে সব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে যেসব দেশ আমদানিনির্ভর, সেই সব দেশ দুর্দশার মধ্যে পড়ে। আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে তাদের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে টান পড়ে। তখন ফেডারেল রিজার্ভসহ বিশ্বের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদ বৃদ্ধির হার বাড়িয়ে দিতে পারে। তাতে মন্দার আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৭০ লাখ টন পেট্রোলিয়াম পণ্যের চাহিদা আছে। অপর্যাপ্ত পরিশোধন সুবিধার কারণে এর ৮০ শতাংশ পরিশোধিত আকারে আমদানি করা হয়। বিশ্ববাজারে তেলের মূল্যের ওঠাপড়ার ওপর আমাদের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল।
মুদ্রাস্ফীতির চাপ ছাড়াও এই আমদানির খরচ বাড়ার জেরে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলাফল (ট্রেড ব্যালেন্স), বৈদেশিক মুদ্রাভান্ডার, টাকার দাম হ্রাস, পেট্রল ও ডিজেলের বাজারমূল্য বাড়লে ঘরোয়া অর্থনীতির ওপর চাপ—অর্থনীতির নানা দিকে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই আশঙ্কা থেকে বাংলাদেশকে তেল আমদানির পথটি বহুমুখী করার চেষ্টা করতে হবে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে যদি বিকল্প পথ বেরোয়ও, কিছু স্বল্পমেয়াদি সংকট আপাতত এড়ানো কঠিন, এ কথা মেনে নিয়েই এগোতে হবে সরকারকে।
দেশের মানুষ এমনিতেই ভালো নেই। অনেক তোড়জোড়ের পরও রমজান শুরু হওয়ার আগেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম না বাড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য সুচিন্তিত উদ্যোগ নিতে হবে।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট
চিররঞ্জন সরকার

আমাদের রাজনীতিতে যেমন কোনো সুসংবাদ নেই, অর্থনীতিতেও নেই। করোনা মহামারির পর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকট চলছে। সেই সংকটের ঢেউ আছড়ে পড়ছে আমাদের অর্থনীতিতেও। ডলারসংকট চলছে তো চলছেই। আমদানি ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে। আর এই ব্যয় মেটাতে টান পড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। চলছে মুদ্রাস্ফীতি আর মূল্যস্ফীতি।
মূল্যবৃদ্ধির চাপে সাধারণ মানুষের জীবন নাভিশ্বাস। এর মধ্যে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যহ্রাসের খবর কিছুটা স্বস্তি বয়ে এনেছিল। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে তেলের দাম সরকারিভাবে কিছুটা কমানোও হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ১০৯ থেকে ৭৫ পয়সা কমে ১০৮ টাকা ২৫ পয়সা, অকটেনের দাম লিটারপ্রতি ১৩০ থেকে ৪ টাকা কমে ১২৬ টাকা এবং পেট্রলের দাম ১২৫ থেকে ৩ টাকা কমে ১২২ টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরকার গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মূল্য নির্ধারণের নির্দেশিকার প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ মার্চ প্রাইসিং ফর্মুলা অনুসারে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের সর্বশেষ মূল্য সমন্বয় হয় ২৯ আগস্ট, ২০২২। এরপর করোনা মহামারি-উত্তর সরবরাহ-সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে সমুদ্রপথে জ্বালানি পণ্যের প্রিমিয়াম, পরিবহন ভাড়া, বিমা ও ব্যাংক সুদের হার ব্যাপক পরিমাণে বেড়েছে। উল্লিখিত সময়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে দেশীয় মুদ্রা অবমূল্যায়িত হয়েছে এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের (প্রধানত ডিজেল) মূল্যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ জ্বালানি তেলের ওপর থেকে ভর্তুকি তুলে নেওয়ার জন্য সরকারকে চাপ দিয়ে আসছিল। সরকারকে আইএমএফ যে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ দিয়েছে তার অন্যতম শর্ত হচ্ছে জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ থেকে সব ভর্তুকি তুলে দিতে হবে।
জ্বালানি বিভাগ বলছে, আইএমএফ গত নভেম্বর থেকেই স্বয়ংক্রিয় এই মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি কার্যকর করার বিষয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। তবে নির্বাচনের আগে সরকার তেলের দামের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার পক্ষে ছিল না।
প্রতিবেশী দেশ ভারত জ্বালানি তেলের মূল্য না কমালেও বাংলাদেশ জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করে একটা সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে।ভারতের কলকাতায় বর্তমানে ডিজেল লিটারপ্রতি ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি বা ১৩৩ টাকা ৫৭ পয়সা (১ রুপি= ১.৪৪ টাকা) এবং পেট্রল ১০৬ দশমিক শূন্য ৩ রুপি বা ১৫২ টাকা ৬৮ পয়সা বিক্রি হচ্ছে। এটা বাংলাদেশ থেকে যথাক্রমে প্রায় ২৪ টাকা ৫৭ পয়সা ও ২৭ টাকা ৬৮ পয়সা বেশি।
আইএমএফের শর্তের কারণে হোক, আর সরকারের সদিচ্ছার কারণেই, জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়টি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। আমাদের দেশে কোনো কিছুর দাম কখনো কমে না। একবার বাড়লে তা কেবল বাড়তেই থাকে।
সেদিক থেকে জ্বালানির দাম কমানোটা একটা ব্যতিক্রমী ঘটনা। জ্বালানির দাম কমলে পরিবহন খরচসহ সব খরচ কমে। তাতে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে আসার একটা সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু আমাদের পোড়া কপাল। জ্বালানি তেলের দাম কমার সুফল ভোগ করার আগেই আবার বিশ্ববাজারে এর দাম বেড়ে যাওয়ার আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ক্রমাগত কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তেল উৎপাদনকারী দেশের জোট ওপেক ও এর সহযোগী দেশগুলো হঠাৎ করেই তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই খবরে আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে গেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। ওপেক এবং রাশিয়াসহ ওপেকের সহযোগী দেশগুলোর এক ভার্চুয়াল বৈঠকে তেল উৎপাদন হ্রাসের এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের জোগান কমানোর সময়সীমা আগামী জুন মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে চলেছে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদক ও রপ্তানিকারী দেশগুলোর সংগঠন ‘ওপেক’ এবং রাশিয়াসহ তাদের সহযোগী দেশগুলোর একাংশ।
এই সূত্রে দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল উৎপাদন হ্রাস করা হচ্ছে। সরবরাহ কমিয়ে জ্বালানির দরকে ঠেলে তুলতে তেলের উৎপাদন কমাচ্ছে ওপেক এবং এর সহযোগীরা। এই হ্রাসের অনেকাংশই বহন করছে ওপেকের নেতৃত্বদানকারী সৌদি আরব, যে গত জুলাই থেকে উৎপাদন দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল করে কমিয়ে আসছে। আপাতত সেই মাত্রার ছাঁটাই বহাল রাখা হলো। রাশিয়াও দৈনিক ৪ দশমিক ৭৭ লাখ ব্যারেল উৎপাদন কমাচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক এবং কুয়েতের মতো বৃহত্তর ওপেকের বেশ কিছু সদস্যও সৌদি আরবের পথেই হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের ৪০ শতাংশের কাছাকাছি অপরিশোধিত তেল উৎপাদিত হয় বৃহত্তর ওপেকের দ্বারা। তেলের বাজারের ভারসাম্য বজায় রাখতে সময়ে-সময়ে চাহিদা-জোগানও নিয়ন্ত্রণ করে তারা। ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে বহু দেশ যখন লকডাউন পরিস্থিতির জেরে বিপর্যস্ত, তখন ক্রেতার অভাবে হ্রাস পেয়েছিল তেলের দাম।
সেই সময় তেলের দাম জোরদার করতে উৎপাদনের মাত্রা বহু গুণ কমিয়েছিল এই সংগঠন। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ে বাজারে চাহিদার বিপর্যয়ের আশঙ্কায় এক ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের (ব্রেন্ট ক্রুড) দাম ১৩০ ডলারে পৌঁছে যায়। যদিও গত বছরের মার্চে দামের পতন ঘটে প্রতি ব্যারেলে ৭০ ডলারের কাছাকাছি।
ফলে অপরিশোধিত তেলের বাজারে একদিকে স্থিতাবস্থা কায়েম এবং অন্যদিকে তেলের দাম জোরদার করতে ওপেক ধারাবাহিকভাবে উৎপাদন হ্রাসের পথ নিয়েছে। যার জেরে ব্রেন্ট ক্রুড সম্প্রতি প্রতি ব্যারেল ৮৩ দশমিক ৫৫ ডলারে বিক্রি হয়েছে, যা ছিল গত চার মাসে সর্বাধিক। কিন্তু সংগঠনটি এযাবৎ যে মূল্যবৃদ্ধির আশা করেছিল, তা সম্ভব হয়নি বিবিধ কারণে।
যার অন্যতম মহামারি এবং তৎপরবর্তী সময়ে যুদ্ধের জেরে উন্নত দেশগুলোয় অর্থনৈতিক মন্দা; বিশেষ করে বিশ্বের বৃহত্তম তেল আমদানিকারী রাষ্ট্র চীনে তেলের চাহিদা যথেষ্ট থাকলেও, মহামারি-পরবর্তী সময়ে মন্দা-আক্রান্ত দেশটির অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের ধারা কতখানি বজায় থাকবে, তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া মুদ্রাস্ফীতি রোধে বহু দেশে ব্যাংকের চড়া সুদের হারের জেরে মানুষের ব্যবহারযোগ্য আয় (ডিসপোজিবল ইনকাম) প্রভাবিত হওয়ায়, তেলের চাহিদা কমার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
জ্বালানি তেলের দামে মোটামুটি একটি স্থিতিশীল অবস্থার কারণে কয়েক মাসে উন্নত দেশসহ বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে। তাতে বিশ্ব অর্থনীতি যখন আশার আলো দেখতে শুরু করেছিল, তখন ওপেক ও তার মিত্রদের এই তেল উৎপাদন হ্রাসের খবরে আতঙ্কিত হওয়ার সমূহ কারণ রয়েছে। এতে মূল্যস্ফীতির হার আবার বেড়ে যেতে পারে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সাধারণত বহুমাত্রিক হয়। প্রথমত, এতে পণ্য পরিবহন খরচ বাড়ে, এর সঙ্গে বাড়ে উৎপাদন খরচ। এতে সব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে যেসব দেশ আমদানিনির্ভর, সেই সব দেশ দুর্দশার মধ্যে পড়ে। আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে তাদের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে টান পড়ে। তখন ফেডারেল রিজার্ভসহ বিশ্বের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদ বৃদ্ধির হার বাড়িয়ে দিতে পারে। তাতে মন্দার আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৭০ লাখ টন পেট্রোলিয়াম পণ্যের চাহিদা আছে। অপর্যাপ্ত পরিশোধন সুবিধার কারণে এর ৮০ শতাংশ পরিশোধিত আকারে আমদানি করা হয়। বিশ্ববাজারে তেলের মূল্যের ওঠাপড়ার ওপর আমাদের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল।
মুদ্রাস্ফীতির চাপ ছাড়াও এই আমদানির খরচ বাড়ার জেরে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলাফল (ট্রেড ব্যালেন্স), বৈদেশিক মুদ্রাভান্ডার, টাকার দাম হ্রাস, পেট্রল ও ডিজেলের বাজারমূল্য বাড়লে ঘরোয়া অর্থনীতির ওপর চাপ—অর্থনীতির নানা দিকে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই আশঙ্কা থেকে বাংলাদেশকে তেল আমদানির পথটি বহুমুখী করার চেষ্টা করতে হবে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে যদি বিকল্প পথ বেরোয়ও, কিছু স্বল্পমেয়াদি সংকট আপাতত এড়ানো কঠিন, এ কথা মেনে নিয়েই এগোতে হবে সরকারকে।
দেশের মানুষ এমনিতেই ভালো নেই। অনেক তোড়জোড়ের পরও রমজান শুরু হওয়ার আগেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম না বাড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য সুচিন্তিত উদ্যোগ নিতে হবে।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট

আমাদের রাজনীতিতে যেমন কোনো সুসংবাদ নেই, অর্থনীতিতেও নেই। করোনা মহামারির পর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকট চলছে। সেই সংকটের ঢেউ আছড়ে পড়ছে আমাদের অর্থনীতিতেও। ডলারসংকট চলছে তো চলছেই। আমদানি ব্যয় ক্রমাগত বাড়ছে। আর এই ব্যয় মেটাতে টান পড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। চলছে মুদ্রাস্ফীতি আর মূল্যস্ফীতি।
মূল্যবৃদ্ধির চাপে সাধারণ মানুষের জীবন নাভিশ্বাস। এর মধ্যে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যহ্রাসের খবর কিছুটা স্বস্তি বয়ে এনেছিল। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে তেলের দাম সরকারিভাবে কিছুটা কমানোও হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ১০৯ থেকে ৭৫ পয়সা কমে ১০৮ টাকা ২৫ পয়সা, অকটেনের দাম লিটারপ্রতি ১৩০ থেকে ৪ টাকা কমে ১২৬ টাকা এবং পেট্রলের দাম ১২৫ থেকে ৩ টাকা কমে ১২২ টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরকার গত ২৯ ফেব্রুয়ারি জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মূল্য নির্ধারণের নির্দেশিকার প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ মার্চ প্রাইসিং ফর্মুলা অনুসারে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের সর্বশেষ মূল্য সমন্বয় হয় ২৯ আগস্ট, ২০২২। এরপর করোনা মহামারি-উত্তর সরবরাহ-সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার কারণে সমুদ্রপথে জ্বালানি পণ্যের প্রিমিয়াম, পরিবহন ভাড়া, বিমা ও ব্যাংক সুদের হার ব্যাপক পরিমাণে বেড়েছে। উল্লিখিত সময়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে দেশীয় মুদ্রা অবমূল্যায়িত হয়েছে এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের (প্রধানত ডিজেল) মূল্যে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ জ্বালানি তেলের ওপর থেকে ভর্তুকি তুলে নেওয়ার জন্য সরকারকে চাপ দিয়ে আসছিল। সরকারকে আইএমএফ যে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ দিয়েছে তার অন্যতম শর্ত হচ্ছে জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ থেকে সব ভর্তুকি তুলে দিতে হবে।
জ্বালানি বিভাগ বলছে, আইএমএফ গত নভেম্বর থেকেই স্বয়ংক্রিয় এই মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি কার্যকর করার বিষয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। তবে নির্বাচনের আগে সরকার তেলের দামের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার পক্ষে ছিল না।
প্রতিবেশী দেশ ভারত জ্বালানি তেলের মূল্য না কমালেও বাংলাদেশ জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করে একটা সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে।ভারতের কলকাতায় বর্তমানে ডিজেল লিটারপ্রতি ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি বা ১৩৩ টাকা ৫৭ পয়সা (১ রুপি= ১.৪৪ টাকা) এবং পেট্রল ১০৬ দশমিক শূন্য ৩ রুপি বা ১৫২ টাকা ৬৮ পয়সা বিক্রি হচ্ছে। এটা বাংলাদেশ থেকে যথাক্রমে প্রায় ২৪ টাকা ৫৭ পয়সা ও ২৭ টাকা ৬৮ পয়সা বেশি।
আইএমএফের শর্তের কারণে হোক, আর সরকারের সদিচ্ছার কারণেই, জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়টি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। আমাদের দেশে কোনো কিছুর দাম কখনো কমে না। একবার বাড়লে তা কেবল বাড়তেই থাকে।
সেদিক থেকে জ্বালানির দাম কমানোটা একটা ব্যতিক্রমী ঘটনা। জ্বালানির দাম কমলে পরিবহন খরচসহ সব খরচ কমে। তাতে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে আসার একটা সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু আমাদের পোড়া কপাল। জ্বালানি তেলের দাম কমার সুফল ভোগ করার আগেই আবার বিশ্ববাজারে এর দাম বেড়ে যাওয়ার আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ক্রমাগত কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তেল উৎপাদনকারী দেশের জোট ওপেক ও এর সহযোগী দেশগুলো হঠাৎ করেই তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই খবরে আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে গেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। ওপেক এবং রাশিয়াসহ ওপেকের সহযোগী দেশগুলোর এক ভার্চুয়াল বৈঠকে তেল উৎপাদন হ্রাসের এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের জোগান কমানোর সময়সীমা আগামী জুন মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে চলেছে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদক ও রপ্তানিকারী দেশগুলোর সংগঠন ‘ওপেক’ এবং রাশিয়াসহ তাদের সহযোগী দেশগুলোর একাংশ।
এই সূত্রে দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল উৎপাদন হ্রাস করা হচ্ছে। সরবরাহ কমিয়ে জ্বালানির দরকে ঠেলে তুলতে তেলের উৎপাদন কমাচ্ছে ওপেক এবং এর সহযোগীরা। এই হ্রাসের অনেকাংশই বহন করছে ওপেকের নেতৃত্বদানকারী সৌদি আরব, যে গত জুলাই থেকে উৎপাদন দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল করে কমিয়ে আসছে। আপাতত সেই মাত্রার ছাঁটাই বহাল রাখা হলো। রাশিয়াও দৈনিক ৪ দশমিক ৭৭ লাখ ব্যারেল উৎপাদন কমাচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক এবং কুয়েতের মতো বৃহত্তর ওপেকের বেশ কিছু সদস্যও সৌদি আরবের পথেই হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের ৪০ শতাংশের কাছাকাছি অপরিশোধিত তেল উৎপাদিত হয় বৃহত্তর ওপেকের দ্বারা। তেলের বাজারের ভারসাম্য বজায় রাখতে সময়ে-সময়ে চাহিদা-জোগানও নিয়ন্ত্রণ করে তারা। ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে বহু দেশ যখন লকডাউন পরিস্থিতির জেরে বিপর্যস্ত, তখন ক্রেতার অভাবে হ্রাস পেয়েছিল তেলের দাম।
সেই সময় তেলের দাম জোরদার করতে উৎপাদনের মাত্রা বহু গুণ কমিয়েছিল এই সংগঠন। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ে বাজারে চাহিদার বিপর্যয়ের আশঙ্কায় এক ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের (ব্রেন্ট ক্রুড) দাম ১৩০ ডলারে পৌঁছে যায়। যদিও গত বছরের মার্চে দামের পতন ঘটে প্রতি ব্যারেলে ৭০ ডলারের কাছাকাছি।
ফলে অপরিশোধিত তেলের বাজারে একদিকে স্থিতাবস্থা কায়েম এবং অন্যদিকে তেলের দাম জোরদার করতে ওপেক ধারাবাহিকভাবে উৎপাদন হ্রাসের পথ নিয়েছে। যার জেরে ব্রেন্ট ক্রুড সম্প্রতি প্রতি ব্যারেল ৮৩ দশমিক ৫৫ ডলারে বিক্রি হয়েছে, যা ছিল গত চার মাসে সর্বাধিক। কিন্তু সংগঠনটি এযাবৎ যে মূল্যবৃদ্ধির আশা করেছিল, তা সম্ভব হয়নি বিবিধ কারণে।
যার অন্যতম মহামারি এবং তৎপরবর্তী সময়ে যুদ্ধের জেরে উন্নত দেশগুলোয় অর্থনৈতিক মন্দা; বিশেষ করে বিশ্বের বৃহত্তম তেল আমদানিকারী রাষ্ট্র চীনে তেলের চাহিদা যথেষ্ট থাকলেও, মহামারি-পরবর্তী সময়ে মন্দা-আক্রান্ত দেশটির অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবনের ধারা কতখানি বজায় থাকবে, তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া মুদ্রাস্ফীতি রোধে বহু দেশে ব্যাংকের চড়া সুদের হারের জেরে মানুষের ব্যবহারযোগ্য আয় (ডিসপোজিবল ইনকাম) প্রভাবিত হওয়ায়, তেলের চাহিদা কমার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
জ্বালানি তেলের দামে মোটামুটি একটি স্থিতিশীল অবস্থার কারণে কয়েক মাসে উন্নত দেশসহ বিভিন্ন দেশে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে। তাতে বিশ্ব অর্থনীতি যখন আশার আলো দেখতে শুরু করেছিল, তখন ওপেক ও তার মিত্রদের এই তেল উৎপাদন হ্রাসের খবরে আতঙ্কিত হওয়ার সমূহ কারণ রয়েছে। এতে মূল্যস্ফীতির হার আবার বেড়ে যেতে পারে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সাধারণত বহুমাত্রিক হয়। প্রথমত, এতে পণ্য পরিবহন খরচ বাড়ে, এর সঙ্গে বাড়ে উৎপাদন খরচ। এতে সব পণ্যের দাম বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে যেসব দেশ আমদানিনির্ভর, সেই সব দেশ দুর্দশার মধ্যে পড়ে। আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে তাদের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে টান পড়ে। তখন ফেডারেল রিজার্ভসহ বিশ্বের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদ বৃদ্ধির হার বাড়িয়ে দিতে পারে। তাতে মন্দার আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৭০ লাখ টন পেট্রোলিয়াম পণ্যের চাহিদা আছে। অপর্যাপ্ত পরিশোধন সুবিধার কারণে এর ৮০ শতাংশ পরিশোধিত আকারে আমদানি করা হয়। বিশ্ববাজারে তেলের মূল্যের ওঠাপড়ার ওপর আমাদের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল।
মুদ্রাস্ফীতির চাপ ছাড়াও এই আমদানির খরচ বাড়ার জেরে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলাফল (ট্রেড ব্যালেন্স), বৈদেশিক মুদ্রাভান্ডার, টাকার দাম হ্রাস, পেট্রল ও ডিজেলের বাজারমূল্য বাড়লে ঘরোয়া অর্থনীতির ওপর চাপ—অর্থনীতির নানা দিকে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এই আশঙ্কা থেকে বাংলাদেশকে তেল আমদানির পথটি বহুমুখী করার চেষ্টা করতে হবে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে যদি বিকল্প পথ বেরোয়ও, কিছু স্বল্পমেয়াদি সংকট আপাতত এড়ানো কঠিন, এ কথা মেনে নিয়েই এগোতে হবে সরকারকে।
দেশের মানুষ এমনিতেই ভালো নেই। অনেক তোড়জোড়ের পরও রমজান শুরু হওয়ার আগেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম না বাড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য সুচিন্তিত উদ্যোগ নিতে হবে।
লেখক: গবেষক, কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আমাদের রাজনীতিতে যেমন কোনো সুসংবাদ নেই, অর্থনীতিতেও নেই। করোনা মহামারির পর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকট চলছে। সেই সংকটের ঢেউ আছড়ে পড়ছে আমাদের অর্থনীতিতেও।
১২ মার্চ ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আমাদের রাজনীতিতে যেমন কোনো সুসংবাদ নেই, অর্থনীতিতেও নেই। করোনা মহামারির পর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকট চলছে। সেই সংকটের ঢেউ আছড়ে পড়ছে আমাদের অর্থনীতিতেও।
১২ মার্চ ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আমাদের রাজনীতিতে যেমন কোনো সুসংবাদ নেই, অর্থনীতিতেও নেই। করোনা মহামারির পর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকট চলছে। সেই সংকটের ঢেউ আছড়ে পড়ছে আমাদের অর্থনীতিতেও।
১২ মার্চ ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আমাদের রাজনীতিতে যেমন কোনো সুসংবাদ নেই, অর্থনীতিতেও নেই। করোনা মহামারির পর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতিতে সংকট চলছে। সেই সংকটের ঢেউ আছড়ে পড়ছে আমাদের অর্থনীতিতেও।
১২ মার্চ ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫