Ajker Patrika

বাইরে তালা, ভেতরে তৈরি হতো জাল টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২২, ১৪: ০২
বাইরে তালা, ভেতরে তৈরি হতো জাল টাকা

একটি কম্পিউটার ও স্ক্যানার কাম প্রিন্টার মেশিন দিয়ে তৈরি করত লাখ লাখ জাল টাকার নোট। হুবহু আসল নোটের মতো দেখতে জাল টাকাগুলো পরে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হতো। চক্রটি কুতুবদিয়ার মতো দ্বীপ এলাকায় দোকানে বসে এই কারবার করত। দোকানটির বাইরে থাকত তালা মারা, ভেতরে চলত জাল টাকা তৈরি।

গত রোববার কক্সবাজার কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নে জাল টাকা তৈরির সিন্ডিকেটের হোতাসহ চারজনকে আটক করে র‍্যাব-৭। গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় র‍্যাব-৭ এর প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়।

র‍্যাব-৭ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মো. মোস্তফা জামান বলেন, চক্রটি পাঁচ বছর ধরে জাল টাকা তৈরি করত। এরপর বাজারে ছড়িয়ে দিত। অভিযানে চক্রটির কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকার জাল নোট (১০০০ টাকার নোট), কয়েকটি ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও কালার প্রিন্টারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। আটক করা হয় চক্রটির হোতা ছাইফুদ্দীন আহাম্মদ মিজান (২৫), সাইফুল ইসলাম (২৪), মিসবাহ্ উদ্দিন (৩২) ও জিয়াউদ্দিনকে (২০)। এঁরা সবাই কুতুবদিয়া উপজেলার বাসিন্দা।

মেজর মোস্তফা জামান বলেন, মূলত চক্রটি অস্ত্র ও মাদক বেচাকেনার কাজে জাল টাকা ব্যবহার করত। বিভিন্ন বান্ডিলের ভেতর জাল টাকা ঢুকিয়ে দিত। এবারের রমজান ও ঈদ সামনে রেখে বাজারে জাল টাকা ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনায় ছিল তাঁরা। এর আগে তাঁরা বিপুল পরিমাণে জাল টাকা তৈরি করলেও কখনো ধরা পড়েননি। এবারই প্রথম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তাঁরা ধরা পড়লেন।

র‍্যাব কর্মকর্তা বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে গিয়ে রাবেয়া এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ডিজিটাল স্টুডিও নামের একটি দোকান থেকে প্রথমে দুজনকে আটক করা হয়। দোকানটির বাইরে তালা মারা ছিল। পরে তালা ভেঙে ভেতর থেকে জাল টাকা তৈরির সময় তাঁদের হাতেনাতে আটক করা হয়। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হোতাসহ আরও দুজনকে আটক করা হয়।

মেজর মোস্তফা জামান, এঁদের মূল হোতা হলেন ছাইফুদ্দীন আহাম্মদ। তাঁর অন্যতম সহযোগী ছিলেন সাইফুল। সাইফুলের কাজ ছিল কম্পিউটারে জাল টাকা তৈরি করে প্রিন্ট করা। মিসবাহ ছিলেন জাল টাকার মার্কেটিং বিভাগের দায়িত্বে। জিয়াউদ্দিনের কাজ ছিল যখন দোকানে জাল টাকা তৈরি করা হবে, তখন বাইরে থেকে দোকানের ওপর নজরদারি রাখা। যাতে কেউ বুঝতে না পারে এখানে কোনো অপকর্ম চলছে। জাল টাকা ছাপানো শেষে চক্রের নির্ধারিত অন্য সদস্যেদের মাধ্যমে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হতো।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন র‍্যাব-৭ জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. নুরুল আবছার ও আইন কর্মকর্তা আবুল খায়ের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত