জাহীদ রেজা নূর

মার্চ মাস মানেই আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনের বাঁকবদলের মাস। এ মাসটি এলেই নতুন করে ভাবতে হয় ইয়াহিয়া-ভুট্টোর নৃশংসতার কথা। এ মাসেই, অর্থাৎ ৭ মার্চ এক অনন্য ভাষণে ঋদ্ধ হয়েছিল বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্ব। শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের এ মাসেই যে বজ্রকণ্ঠ ভাষণ দিলেন, তা বিশ্বের সেরা ভাষণগুলোর একটি হয়ে উঠল। এ মাসেই ইয়াহিয়া এলেন ঢাকায়, ভুট্টো এলেন ঢাকায় এবং বৈঠকের ছলে বাঙালিদের হত্যা করার পরিকল্পনা করলেন।
শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের প্রাণের অংশ হয়ে উঠেছিলেন তত দিনে।
কিন্তু সেই শেখ মুজিবুর রহমানের নামে যে কুৎসা রটনা হয়েছে, তা ধরে ধরে উত্তর হয়তো দেওয়া যায়, কিন্তু তার আগে যেটা করা দরকার তা হলো, এই রটনাকারীদের স্বরূপ উদ্ঘাটন।
অনেকেই হয়তো লক্ষ করেছেন, ইদানীং কেউ কেউ ধূর্ততার সঙ্গে এমন কিছু কথা বলছেন, যার উদ্দেশ্য প্রচলিত বিশ্বাসকে আঘাত করা। আঘাতের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে অন্তত দুজন বাঙালিকে বেছে নেওয়া হয়। তাঁরা হলেন রবীন্দ্রনাথ ও শেখ মুজিবুর রহমান।
এই দুরভিসন্ধির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কেউ লড়াই করছে না। তবে যে দুজনের নাম বলা হলো, তাঁদের বিরুদ্ধে লাগাতার মিথ্যা বয়ান তৈরি করলে একসময় মানুষ সেটা বিশ্বাস করবে—এ রকম গোয়েবলসীয় ভাবনা দিয়েই হয়তো তাড়িত হচ্ছেন এই কালিমা রটনাকারী লোকেরা।
এমন যদি হতো, এটা শুধু পাতিনেতা ধরনের লোকদের হিংসা আর কুচুটেপনা থেকে উত্থিত, তাহলে তা অগ্রাহ্য করা যেত। কিন্তু যাঁরা বলছেন, তাঁদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য শিক্ষকেরাও রয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ যখন অন্যকে ছোট করার প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামেন, তখন দেখা যায়, সত্যের সঙ্গে মিথ্যা মিলিয়ে-মিশিয়ে এমন এক বয়ান তাঁরা তৈরি করেছেন, যা শুনে দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েন শ্রোতা। বলা কথার মধ্যে কিছু সত্য থাকায় এই দ্বন্দ্ব শ্রোতার মনে প্রগাঢ় হয় এবং একসময় তা বিশ্বাস করতে শুরু করে দেন তিনি।
রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে এ রকম বেশ কিছু কুৎসা রচনা করা হয়েছে। কুৎসা রচনা করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়েও।
২.
এর বিপরীতে আছে আরেকটি শক্তি, যাঁরা তাঁদের ধ্যান-জ্ঞানের সবটাই উৎসর্গ করে দেন রবীন্দ্রনাথ বা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নামে। বলে রাখা ভালো, রক্ত-মাংসের মানুষ রবীন্দ্রনাথ বা শেখ মুজিবকে যখন এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়, যেন তাঁরা কোনোভাবেই কোনো ভুল করতে পারেন না, তাঁদের কোনো সিদ্ধান্তই ভুল হতে পারে না, তখন সংকটের সৃষ্টি হয়। যেহেতু সেই বর্ণনায় সত্যের সঙ্গে ভক্তি মিশে যায়, সেহেতু তাতে অতিকথন দৃশ্যমান হয়। তারই ফায়দা নেয় কুৎসাকারীরা। কারণ, মানুষের ওপর দেবত্ব আরোপ করলে তাতে মানুষটি বিতর্কিত হয়ে পড়েন, এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে সর্বত্রই। অথচ কোনো রকম অতিকথন ছাড়াই যে তাঁদের জীবন বিস্ময়করভাবে মহৎ, সে কথা বুঝতে পারেন না এই ভক্তরা।
আমার সৌভাগ্য কি দুর্ভাগ্য হয়েছিল, তা আমি জানি না, কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নে যে ১০ বছর আমি ছিলাম, সে সময়টির প্রথম পাঁচ বছর আমি সোভিয়েত শাসন দেখেছি, পরের পাঁচ বছর দেখেছি গণতান্ত্রিক রাশিয়ার জীবন। বলা বাহুল্য, সমাজতান্ত্রিক দেশটিতে ব্যক্তি-বন্দনা সেই ব্যক্তির ইমেজকে একেবারেই ধ্বংস করে দিয়েছিল। আমি লেনিনের কথাই বলছি। লেনিন নিজে কখনো চাননি, তাঁকে দেবতা বানানো হোক। কিন্তু লেনিনের ওপর দেবত্ব চাপিয়ে দিয়ে বাহ্যিকভাবে হয়তো লাভবান হয়েছে সোভিয়েত সরকার, কিন্তু সাধারণ মানুষের অন্তরে লেনিনকে সেভাবে আর পাওয়া যায়নি। এ জন্য লেনিন নিজে দায়ী ছিলেন না। দায়ী ছিল কমিউনিস্ট পার্টি এবং সেই পার্টির নেতৃত্ব।
৩.
রবীন্দ্রনাথের জমিদারি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধিতাকারী হিসেবে যেভাবে রবীন্দ্রনাথকে কেউ কেউ উপস্থাপন করেছেন, তা শুধু একদেশদর্শীই নয়, একেবারে ডাহা মিথ্যা। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে প্রচুর কাজ করা একজন বিশিষ্ট অধ্যাপক অকারণেই একসময় রবীন্দ্রনাথের নামে কালিমা লেপন করার চেষ্টা করেছিলেন। বামপন্থী সেই অধ্যাপকের তথ্য-উপাত্তগুলো একেবারেই ভ্রান্ত ছিল, কিন্তু সে সময় অনেকে তা বিশ্বাস করেছিল স্রেফ এই কারণে যে, এই অধ্যাপক বাংলা ভাষা ও বাঙালির ইতিহাস নিয়ে ঈর্ষণীয় কাজ করেছেন। কিন্তু কী কারণে তাঁর মনে রবীন্দ্রবিদ্বেষ জায়গা করে নিয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর আমি আজও খুঁজে পাই না। তাঁরই অসমাপ্ত কাজটি সম্পন্ন করার দায়িত্ব নিয়েছেন আরেক জনপ্রিয় অধ্যাপক। তিনি সুযোগ পেলেই রবীন্দ্রনাথকে অসম্মান করে থাকেন।
রবীন্দ্রনাথের সাফাই গাওয়ার জন্য এই লেখা নয়। এই লেখা হলো অকারণ ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানো মানুষদের ব্যাপারে পাঠককে সতর্ক করে দেওয়া।
৪.
হাতে এসেছিল অধ্যাপক নুরুল ইসলামের একটি বই। এই অর্থনীতিবিদ আমাদের ছয় দফা আন্দোলনের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত, সেটা বোধ হয় ইতিহাসে উৎসাহী প্রতিটি মানুষেরই জানা। তিনি সদ্যোজাত বাংলাদেশের পরিকল্পনা কমিশনের প্রথম ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশ যখন সংকটকাল অতিক্রম করছে, সে সময়টি তিনি বঙ্গবন্ধুর খুব কাছে থেকে দেশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁর পর্যবেক্ষণ নিয়েই অল্প কয়েকটি কথা বলা যাক।
অনেকেই বলে থাকেন, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো শেখ মুজিব একা নিতেন; অর্থাৎ শেখ মুজিবুর রহমানকে একজন স্বৈরশাসক হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়। শেখ মুজিব কোনো কোনো ক্ষেত্রে মন্ত্রীদের চেয়ে সচিবদের সরাসরি নির্দেশনা দিতেন। তাতে মন্ত্রীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর ওপর দিয়ে দিতেন। কিন্তু এ ব্যাপারটা সিনিয়র মন্ত্রীদের সঙ্গেও ঘটত, এটা সত্য নয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মনসুর আলী, কামারুজ্জামান, খন্দকার মোশতাকদের মতো সিনিয়রদের সঙ্গে পরামর্শ করেই সিদ্ধান্ত নিতেন শেখ মুজিব। আইন ও পররাষ্ট্র-সংক্রান্ত ব্যাপারে নির্ভর করতেন ড. কামাল হোসেনের ওপর। গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্রে তিনি আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতেন। এ ঘটনার আলোকেই বাকশাল গঠন করার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে এবং তখন দেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থাও ফুটে উঠবে।
পরিকল্পনা কমিশনের কাজে শেখ মুজিবুর রহমান সরাসরি হস্তক্ষেপ কি করেছিলেন কখনো? নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীরা ব্যাপকভাবে হস্তক্ষেপ করেন বলে যে রটনা ছিল, সে ব্যাপারে নুরুল ইসলাম কী বলছেন? তিনি যা বলছেন, তা সমালোচনাকারীদের খুশি করবে না। তিনি বলছেন, কমিশনের সদস্যদের নিয়ে তিনি বিশেষজ্ঞ নিয়োগের প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন। প্রশাসনিক নিয়োগের দায়িত্বও তখন পালন করেছেন কমিশনের সচিব ও সদস্যরা।
এই নির্বাচন-প্রক্রিয়া ও কোনো কর্মচারী নিয়োগের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে নুরুল ইসলামের কাছে কোনো অনুরোধ আসেনি। কোনো মন্ত্রীও কোনো তদবির করেননি। অন্য কোনো কমিশন সদস্যের কাছেও অনুরোধ এসেছে বলে নুরুল ইসলাম কোনো অভিযোগ পাননি। পরিকল্পনা কমিশন মন্ত্রণালয়গুলো থেকে পেশ করা প্রস্তাব অনুমোদন করত। সেই পরিকল্পনাগুলো অনুমোদনের ব্যাপারে শেখ মুজিব কখনো হস্তক্ষেপ করেননি এবং পরিকল্পনা পরিষদের কোনো সিদ্ধান্ত তিনি বাতিল করে দিয়েছেন—এমন কোনো ঘটনাও ঘটেনি।
৫.
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও গণভবন নিয়ে একটি ঘটনা বলে আজকের আলোচনা শেষ করব। প্রধানমন্ত্রীর অফিস ও বাসা, অর্থাৎ গণভবন নির্মাণের ব্যাপারে পূর্ত মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প জমা দিয়েছিল। দেশে সম্পদের স্বল্পতা ছিল তখন। তাই পরিকল্পনা কমিশন থেকে পূর্ত মন্ত্রণালয়কে প্রাক্কলিত ব্যয় কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। মূলত বঙ্গবন্ধুকে খুশি করার জন্য পূর্ত মন্ত্রণালয় প্রকল্পটির ডিজাইন ও নির্মাণ মানের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে ফেলে। বঙ্গবন্ধুও প্রকল্পের কাগজপত্র দেখেছিলেন আগে। তারপরও পরিকল্পনা কমিশন এই কাটছাঁটের পরামর্শ দিয়েছিল। মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছিল এ কথা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর অফিস থেকে এই ঘটনার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে কুৎসা রটনাকারীদের দিকে। আর হ্যাঁ, উল্টোদিকে এটাও মনে রাখতে হবে, অতি ভক্তি বড় মানুষদের ক্ষতি করে।
লেখক: জাহীদ রেজা নূর, উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

মার্চ মাস মানেই আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনের বাঁকবদলের মাস। এ মাসটি এলেই নতুন করে ভাবতে হয় ইয়াহিয়া-ভুট্টোর নৃশংসতার কথা। এ মাসেই, অর্থাৎ ৭ মার্চ এক অনন্য ভাষণে ঋদ্ধ হয়েছিল বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্ব। শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের এ মাসেই যে বজ্রকণ্ঠ ভাষণ দিলেন, তা বিশ্বের সেরা ভাষণগুলোর একটি হয়ে উঠল। এ মাসেই ইয়াহিয়া এলেন ঢাকায়, ভুট্টো এলেন ঢাকায় এবং বৈঠকের ছলে বাঙালিদের হত্যা করার পরিকল্পনা করলেন।
শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের প্রাণের অংশ হয়ে উঠেছিলেন তত দিনে।
কিন্তু সেই শেখ মুজিবুর রহমানের নামে যে কুৎসা রটনা হয়েছে, তা ধরে ধরে উত্তর হয়তো দেওয়া যায়, কিন্তু তার আগে যেটা করা দরকার তা হলো, এই রটনাকারীদের স্বরূপ উদ্ঘাটন।
অনেকেই হয়তো লক্ষ করেছেন, ইদানীং কেউ কেউ ধূর্ততার সঙ্গে এমন কিছু কথা বলছেন, যার উদ্দেশ্য প্রচলিত বিশ্বাসকে আঘাত করা। আঘাতের লক্ষ্যবস্তু হিসেবে অন্তত দুজন বাঙালিকে বেছে নেওয়া হয়। তাঁরা হলেন রবীন্দ্রনাথ ও শেখ মুজিবুর রহমান।
এই দুরভিসন্ধির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কেউ লড়াই করছে না। তবে যে দুজনের নাম বলা হলো, তাঁদের বিরুদ্ধে লাগাতার মিথ্যা বয়ান তৈরি করলে একসময় মানুষ সেটা বিশ্বাস করবে—এ রকম গোয়েবলসীয় ভাবনা দিয়েই হয়তো তাড়িত হচ্ছেন এই কালিমা রটনাকারী লোকেরা।
এমন যদি হতো, এটা শুধু পাতিনেতা ধরনের লোকদের হিংসা আর কুচুটেপনা থেকে উত্থিত, তাহলে তা অগ্রাহ্য করা যেত। কিন্তু যাঁরা বলছেন, তাঁদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য শিক্ষকেরাও রয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ যখন অন্যকে ছোট করার প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামেন, তখন দেখা যায়, সত্যের সঙ্গে মিথ্যা মিলিয়ে-মিশিয়ে এমন এক বয়ান তাঁরা তৈরি করেছেন, যা শুনে দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েন শ্রোতা। বলা কথার মধ্যে কিছু সত্য থাকায় এই দ্বন্দ্ব শ্রোতার মনে প্রগাঢ় হয় এবং একসময় তা বিশ্বাস করতে শুরু করে দেন তিনি।
রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে এ রকম বেশ কিছু কুৎসা রচনা করা হয়েছে। কুৎসা রচনা করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে নিয়েও।
২.
এর বিপরীতে আছে আরেকটি শক্তি, যাঁরা তাঁদের ধ্যান-জ্ঞানের সবটাই উৎসর্গ করে দেন রবীন্দ্রনাথ বা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নামে। বলে রাখা ভালো, রক্ত-মাংসের মানুষ রবীন্দ্রনাথ বা শেখ মুজিবকে যখন এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়, যেন তাঁরা কোনোভাবেই কোনো ভুল করতে পারেন না, তাঁদের কোনো সিদ্ধান্তই ভুল হতে পারে না, তখন সংকটের সৃষ্টি হয়। যেহেতু সেই বর্ণনায় সত্যের সঙ্গে ভক্তি মিশে যায়, সেহেতু তাতে অতিকথন দৃশ্যমান হয়। তারই ফায়দা নেয় কুৎসাকারীরা। কারণ, মানুষের ওপর দেবত্ব আরোপ করলে তাতে মানুষটি বিতর্কিত হয়ে পড়েন, এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে সর্বত্রই। অথচ কোনো রকম অতিকথন ছাড়াই যে তাঁদের জীবন বিস্ময়করভাবে মহৎ, সে কথা বুঝতে পারেন না এই ভক্তরা।
আমার সৌভাগ্য কি দুর্ভাগ্য হয়েছিল, তা আমি জানি না, কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নে যে ১০ বছর আমি ছিলাম, সে সময়টির প্রথম পাঁচ বছর আমি সোভিয়েত শাসন দেখেছি, পরের পাঁচ বছর দেখেছি গণতান্ত্রিক রাশিয়ার জীবন। বলা বাহুল্য, সমাজতান্ত্রিক দেশটিতে ব্যক্তি-বন্দনা সেই ব্যক্তির ইমেজকে একেবারেই ধ্বংস করে দিয়েছিল। আমি লেনিনের কথাই বলছি। লেনিন নিজে কখনো চাননি, তাঁকে দেবতা বানানো হোক। কিন্তু লেনিনের ওপর দেবত্ব চাপিয়ে দিয়ে বাহ্যিকভাবে হয়তো লাভবান হয়েছে সোভিয়েত সরকার, কিন্তু সাধারণ মানুষের অন্তরে লেনিনকে সেভাবে আর পাওয়া যায়নি। এ জন্য লেনিন নিজে দায়ী ছিলেন না। দায়ী ছিল কমিউনিস্ট পার্টি এবং সেই পার্টির নেতৃত্ব।
৩.
রবীন্দ্রনাথের জমিদারি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধিতাকারী হিসেবে যেভাবে রবীন্দ্রনাথকে কেউ কেউ উপস্থাপন করেছেন, তা শুধু একদেশদর্শীই নয়, একেবারে ডাহা মিথ্যা। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে প্রচুর কাজ করা একজন বিশিষ্ট অধ্যাপক অকারণেই একসময় রবীন্দ্রনাথের নামে কালিমা লেপন করার চেষ্টা করেছিলেন। বামপন্থী সেই অধ্যাপকের তথ্য-উপাত্তগুলো একেবারেই ভ্রান্ত ছিল, কিন্তু সে সময় অনেকে তা বিশ্বাস করেছিল স্রেফ এই কারণে যে, এই অধ্যাপক বাংলা ভাষা ও বাঙালির ইতিহাস নিয়ে ঈর্ষণীয় কাজ করেছেন। কিন্তু কী কারণে তাঁর মনে রবীন্দ্রবিদ্বেষ জায়গা করে নিয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর আমি আজও খুঁজে পাই না। তাঁরই অসমাপ্ত কাজটি সম্পন্ন করার দায়িত্ব নিয়েছেন আরেক জনপ্রিয় অধ্যাপক। তিনি সুযোগ পেলেই রবীন্দ্রনাথকে অসম্মান করে থাকেন।
রবীন্দ্রনাথের সাফাই গাওয়ার জন্য এই লেখা নয়। এই লেখা হলো অকারণ ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়ানো মানুষদের ব্যাপারে পাঠককে সতর্ক করে দেওয়া।
৪.
হাতে এসেছিল অধ্যাপক নুরুল ইসলামের একটি বই। এই অর্থনীতিবিদ আমাদের ছয় দফা আন্দোলনের সঙ্গে কীভাবে যুক্ত, সেটা বোধ হয় ইতিহাসে উৎসাহী প্রতিটি মানুষেরই জানা। তিনি সদ্যোজাত বাংলাদেশের পরিকল্পনা কমিশনের প্রথম ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন। বাংলাদেশ যখন সংকটকাল অতিক্রম করছে, সে সময়টি তিনি বঙ্গবন্ধুর খুব কাছে থেকে দেশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। তাঁর পর্যবেক্ষণ নিয়েই অল্প কয়েকটি কথা বলা যাক।
অনেকেই বলে থাকেন, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো শেখ মুজিব একা নিতেন; অর্থাৎ শেখ মুজিবুর রহমানকে একজন স্বৈরশাসক হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়। শেখ মুজিব কোনো কোনো ক্ষেত্রে মন্ত্রীদের চেয়ে সচিবদের সরাসরি নির্দেশনা দিতেন। তাতে মন্ত্রীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর ওপর দিয়ে দিতেন। কিন্তু এ ব্যাপারটা সিনিয়র মন্ত্রীদের সঙ্গেও ঘটত, এটা সত্য নয়। সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মনসুর আলী, কামারুজ্জামান, খন্দকার মোশতাকদের মতো সিনিয়রদের সঙ্গে পরামর্শ করেই সিদ্ধান্ত নিতেন শেখ মুজিব। আইন ও পররাষ্ট্র-সংক্রান্ত ব্যাপারে নির্ভর করতেন ড. কামাল হোসেনের ওপর। গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারণী ক্ষেত্রে তিনি আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতেন। এ ঘটনার আলোকেই বাকশাল গঠন করার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে এবং তখন দেশের আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থাও ফুটে উঠবে।
পরিকল্পনা কমিশনের কাজে শেখ মুজিবুর রহমান সরাসরি হস্তক্ষেপ কি করেছিলেন কখনো? নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীরা ব্যাপকভাবে হস্তক্ষেপ করেন বলে যে রটনা ছিল, সে ব্যাপারে নুরুল ইসলাম কী বলছেন? তিনি যা বলছেন, তা সমালোচনাকারীদের খুশি করবে না। তিনি বলছেন, কমিশনের সদস্যদের নিয়ে তিনি বিশেষজ্ঞ নিয়োগের প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন। প্রশাসনিক নিয়োগের দায়িত্বও তখন পালন করেছেন কমিশনের সচিব ও সদস্যরা।
এই নির্বাচন-প্রক্রিয়া ও কোনো কর্মচারী নিয়োগের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে নুরুল ইসলামের কাছে কোনো অনুরোধ আসেনি। কোনো মন্ত্রীও কোনো তদবির করেননি। অন্য কোনো কমিশন সদস্যের কাছেও অনুরোধ এসেছে বলে নুরুল ইসলাম কোনো অভিযোগ পাননি। পরিকল্পনা কমিশন মন্ত্রণালয়গুলো থেকে পেশ করা প্রস্তাব অনুমোদন করত। সেই পরিকল্পনাগুলো অনুমোদনের ব্যাপারে শেখ মুজিব কখনো হস্তক্ষেপ করেননি এবং পরিকল্পনা পরিষদের কোনো সিদ্ধান্ত তিনি বাতিল করে দিয়েছেন—এমন কোনো ঘটনাও ঘটেনি।
৫.
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও গণভবন নিয়ে একটি ঘটনা বলে আজকের আলোচনা শেষ করব। প্রধানমন্ত্রীর অফিস ও বাসা, অর্থাৎ গণভবন নির্মাণের ব্যাপারে পূর্ত মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প জমা দিয়েছিল। দেশে সম্পদের স্বল্পতা ছিল তখন। তাই পরিকল্পনা কমিশন থেকে পূর্ত মন্ত্রণালয়কে প্রাক্কলিত ব্যয় কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। মূলত বঙ্গবন্ধুকে খুশি করার জন্য পূর্ত মন্ত্রণালয় প্রকল্পটির ডিজাইন ও নির্মাণ মানের ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে ফেলে। বঙ্গবন্ধুও প্রকল্পের কাগজপত্র দেখেছিলেন আগে। তারপরও পরিকল্পনা কমিশন এই কাটছাঁটের পরামর্শ দিয়েছিল। মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছিল এ কথা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর অফিস থেকে এই ঘটনার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে কুৎসা রটনাকারীদের দিকে। আর হ্যাঁ, উল্টোদিকে এটাও মনে রাখতে হবে, অতি ভক্তি বড় মানুষদের ক্ষতি করে।
লেখক: জাহীদ রেজা নূর, উপসম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

মার্চ মাস মানেই আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনের বাঁকবদলের মাস। এ মাসটি এলেই নতুন করে ভাবতে হয় ইয়াহিয়া-ভুট্টোর নৃশংসতার কথা। এ মাসেই, অর্থাৎ ৭ মার্চ এক অনন্য ভাষণে ঋদ্ধ হয়েছিল বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্ব। শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের এ মাসেই যে বজ্রকণ্ঠ ভাষণ দিলেন, তা বিশ্বের সেরা ভাষণগুলোর একটি হয়ে উঠল। এ মাসেই
১৮ মার্চ ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

মার্চ মাস মানেই আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনের বাঁকবদলের মাস। এ মাসটি এলেই নতুন করে ভাবতে হয় ইয়াহিয়া-ভুট্টোর নৃশংসতার কথা। এ মাসেই, অর্থাৎ ৭ মার্চ এক অনন্য ভাষণে ঋদ্ধ হয়েছিল বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্ব। শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের এ মাসেই যে বজ্রকণ্ঠ ভাষণ দিলেন, তা বিশ্বের সেরা ভাষণগুলোর একটি হয়ে উঠল। এ মাসেই
১৮ মার্চ ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

মার্চ মাস মানেই আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনের বাঁকবদলের মাস। এ মাসটি এলেই নতুন করে ভাবতে হয় ইয়াহিয়া-ভুট্টোর নৃশংসতার কথা। এ মাসেই, অর্থাৎ ৭ মার্চ এক অনন্য ভাষণে ঋদ্ধ হয়েছিল বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্ব। শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের এ মাসেই যে বজ্রকণ্ঠ ভাষণ দিলেন, তা বিশ্বের সেরা ভাষণগুলোর একটি হয়ে উঠল। এ মাসেই
১৮ মার্চ ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

মার্চ মাস মানেই আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনের বাঁকবদলের মাস। এ মাসটি এলেই নতুন করে ভাবতে হয় ইয়াহিয়া-ভুট্টোর নৃশংসতার কথা। এ মাসেই, অর্থাৎ ৭ মার্চ এক অনন্য ভাষণে ঋদ্ধ হয়েছিল বাংলাদেশ এবং সারা বিশ্ব। শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের এ মাসেই যে বজ্রকণ্ঠ ভাষণ দিলেন, তা বিশ্বের সেরা ভাষণগুলোর একটি হয়ে উঠল। এ মাসেই
১৮ মার্চ ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫