Ajker Patrika

হঠাৎ রোটা ভাইরাসের প্রকোপ

নেত্রকোনা ও কলমাকান্দা প্রতিনিধি
হঠাৎ রোটা ভাইরাসের প্রকোপ

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় বমি ও পাতলা পায়খানা নিয়ে শতাধিক শিশু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। গত ১০ দিনে এসব শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়। প্রতিদিনই নতুন ১২-১৫ শিশু  ভর্তি হচ্ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিশুরা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। প্রতিবছরই শীতের সময় এ রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। তবে এবার এ রোগের প্রকোপ একটু বেশি। আক্রান্ত শিশু সুস্থ হয়ে উঠতে তিন-পাঁচ দিন সময় লাগে। কিছু ক্ষেত্রে এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। তবে কিছুদিনের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাবে। তাই এ নিয়ে শঙ্কিত না হতে বলেছেন চিকিৎসকেরা।

কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরে গতকাল দেখা গেছে, কলমাকান্দা ও মধ্যনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ডায়রিয়া আক্রান্ত প্রায় অর্ধশত শিশু ভর্তি করা হয়েছে। তাদের সবাই বমি ও পাতলা পায়খানার রোগী। ভর্তিকৃত শিশুদের মায়েদের অনেকেই জানান, শুরুতে শিশুর বমি ও পাতলা পায়খানা দেখা দেওয়ার পর স্থানীয়রা বলছেন, বাতাস লেগেছে। ফলে শুরুতে তারা গ্রামে কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক দিয়েছেন শিশুদের। কিন্তু এতে কোনো কাজ তো হয়নি, উল্টো শিশুদের অবস্থা খারাপ হয়। পরিস্থিতি বেশি খারাপ হওয়ার পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। তারা আরও বলেন, দুই দিন আগে হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত আরও অনেক শিশু ভর্তি ছিল।বিছানায় জায়গা ছিল না। অনেকে ফ্লোরে চাদর বিছিয়ে থেকেছেন। সুস্থ হয়ে অনেকে চলে গেছেন।

কলমাকান্দা উপজেলার নলচাপরা গ্রামের আনোয়ার খাতুন তার এক বছর বয়সী ছেলে তৌহিদকে পাতলা পায়খানাজনিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। তিনি জানান, তিন-চার দিন আগে প্রথমে জ্বর হয়। পরে বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। স্থানীয়রা বলেছেন, বাতাস লেগেছে। তাই কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক দিয়েছি।

রংছাতি গ্রামের কুলসুমা বলেন, তিন-চার দিন আগে ১৫ মাস বয়সী বাচ্চা রায়হানের বমি ও পতলা পায়খানা শুর হয়। প্রথমে কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক দিয়েছি। পরে স্থানীয় ফার্মেসি থেকে ওষুধ খাইয়েছি কোনো কাজ হয়নি। শেষে শনিবার সকালে এখানে ভর্তি করেছি।

কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স ঋণী গাগড়া বলেন, প্রতিদিন অনেক শিশু বমি ও পাতলা পায়খানাজনিত 
সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তাদের খাবার স্যালাইন, জিংক ও কোনো ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকও দেওয়া হচ্ছে।

জরুরি বিভাগে কর্মরত উপসহকারী মেডিকেল অফিসার আরিফুল ইসলাম বলেন, গত ১০ দিন ধরে বমি ও পাতলা পায়খানা নিয়ে শতাধিক শিশু এ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে। অনেকে আবার ভর্তি না হয়ে চিকিৎসা নিয়ে চলে যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) আল মামুন বলেন,  রোটা ভাইরাসের কারণে এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। গত ১০ দিনে এ পর্যন্ত শতাধিক শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। প্রতিদিন ১০-১৫ শিশু এ সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তিন-পাঁচ দিন লাগে এ রোগ সারতে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত