Ajker Patrika

এখনো টিকা নেননি ম্রোরা

বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৩৬
Thumbnail image

বান্দরবানে মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষ করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। আর দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করেছেন ৩৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এখন তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ দেওয়ার কার্যক্রম চলমান থাকলেও ম্রো জনগোষ্ঠীসহ আরও কিছু সম্প্রদায়ের মানুষ এখনো টিকা নেননি। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে বান্দরবানে করোনা সংক্রমণ এক দিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০১ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছে ৩৬ জন। শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এদের সবাই ৩৬ সদর উপজেলার বাসিন্দা। গতকাল শনিবার দুপুরে সিভিল সার্জন অংসুই প্রু মারমা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সিভিল সার্জন বলেন, দুর্গম এলাকাগুলোতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অনেক সদস্য টিকাগ্রহণে আগ্রহী নন। এখনো বিশেষ করে ম্রো জনগোষ্ঠীসহ আরও কিছু সম্প্রদায়ের লোকজন টিকা গ্রহণ করেননি। তবে জেলায় টিকাদান চলছে। দ্বিতীয় ডোজের কার্যক্রমের মধ্যে কেউ প্রথম ডোজ দিতে এলে তাঁকেও টিকা দেওয়া হবে। আপাতত বান্দরবানে করোনার টিকার সংকট নেই।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবানে মোট জনসংখ্যা ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৮৮৬। এদের মধ্যে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ২ লাখ ৪২ হাজার ২৯৪ জন। এ হিসাবে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৫২ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ মানুষ। দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করেছেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫০৮ জন। এ পর্যন্ত বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ১ হাজার ৭৯০ জন।

অংসুই প্রু মারমা বলেছেন, মোট জনসংখ্যার হিসাবে প্রথম ডোজ নেওয়া ব্যক্তি ৫২ শতাংশ হলেও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। সবাই তো টিকার আওতায় আসবেন না। এ ছাড়া ৩৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আলাদা হিসেবে টিকা নিয়েছে। এই সংখ্যা একসঙ্গে করলে প্রথম ডোজ দেওয়ার সংখ্যা সন্তোষজনক বলা যেতে পারে।

এদিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গত শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৬ জনের শনাক্ত হয়েছে। তবে এই সময় জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাননি। নতুন করে কোনো করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়নি।

এর আগে শুক্রবার সকালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রকাশিত করোনা প্রতিবেদনে জানা যায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ৩৮ জন। এতে শনাক্তের হার ছিল ৫৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

অংসুই প্রু মারমা জানান, বর্তমানে জেলায় মোট ১৯২ জন রোগী আছে। এর মধ্যে ১৬৮ জনই সদর উপজেলার। এ ছাড়া লামায় ১৩, নাইক্ষ্যংছড়িতে ৭, আলীকদম ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় ২ জন করে রোগী আছেন। তবে আগে থেকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা ছয়জনের মধ্যে পাঁচজন সদর হাসপাতালে ও একজন লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন। বাকিরা নিজ বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, করোনার শুরু থেকে জেলায় ১৩ হাজার ৪০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২ হাজার ৫৩৬ জনের শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৩৬২ এবং মারা গেছেন ১৪ জন।

এদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে গতকাল দুপুরে জেলা সদরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন। সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অমিত রায়ের নেতৃত্বে বান্দরবান বাজার, মধ্যমপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় সচেতনতামূলক প্রচারসহ লোকজনকে বিনা মূল্যে মাস্ক দেওয়া হয়েছে।

অমিত রায় বলেন, ‘সতর্ক করার পরও কেউ যদি ঘোরাফেরার সময় মাস্ক ব্যবহার না করেন, তাহলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণবিধি মোতাবেক শাস্তির আওতায় আনা হবে।’

সিভিল সার্জন বলেন, ‘বান্দরবান পর্যটন জেলা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন এখানে আসেন। তাঁরা পর্যটনকেন্দ্র এলাকায় ঘুরে বেড়ান। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা না হলে বান্দরবানে করোনা মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত