হাসান মামুন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে, তাতে মনে হয় গতবারের চেয়ে কমপক্ষে দ্বিগুণ ব্যয় করতে হবে। গতবার, অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭০০ কোটি টাকা। বাস্তবে ব্যয় আরও বেশি হয়েছিল। এবারও ব্যয় অনুমিত অঙ্ক ছাড়িয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া ভালো। সিংহভাগ ব্যয় নাকি হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেছনে।
এবার যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেটি দ্বাদশ। তার মানে, এগারোটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। তবে প্রতিবার নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় নিয়ে আলাপ তেমন হয়নি। এবার হবে। তার একটা কারণ হলো, সরকার অর্থসংকটে রয়েছে। টাকা ছাপিয়ে এবং অব্যাহতভাবে ঋণ করে চলতে হচ্ছে। এরই মধ্যে নির্বাচন এসে যাওয়ায় তাতেও বিপুল ব্যয় করতে হচ্ছে। আর ইসির চাহিদা অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ করতেই হয় সরকারকে।
পাঁচ বছরে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও একেবারে দ্বিগুণ ব্যয় কেন করতে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অবশ্য স্বাভাবিক। সেটা হয়তো তীব্রভাবে উঠত না–নির্বাচনটি স্বাভাবিক পরিবেশে গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত হলে। নিবন্ধিত দলগুলোর অধিকাংশ মনোনয়নপত্র জমা দিলেও এই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও অর্থবহ বলা যাচ্ছে না কেন, সেটা নতুন করে ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না সুনির্দিষ্ট দাবির ভিত্তিতে। এ বিষয়ে কোনো ধরনের সমঝোতার দিকে না গিয়ে সরকারপক্ষ সমমনা দলগুলোকে নিয়েই নির্বাচন সেরে ফেলার পথে এগিয়েছে। ইসিও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নেমে পড়েছে কাজে।
২০১৪ সালের মতোই একটা একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যাতে বিরোধী দল-সমর্থক বিপুলসংখ্যক ভোটারও এটা বর্জন করবেন। এমন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের জয় সুনিশ্চিত থাকে বলে তার সমর্থকেরাও কম হারে ভোট দিতে আসেন। নির্বাচন বর্জনকারীদের তৎপরতার কারণে গোলযোগের আশঙ্কায়ও অনেকে ভোটকেন্দ্র এড়ান। এ অবস্থায় রাজনৈতিক দল ও জনগণের স্বাভাবিক অংশগ্রহণে নির্বাচনটি অর্থবহ না হলেও রাষ্ট্রীয় অর্থ কিন্তু ব্যয় করতেই হয়। রাষ্ট্রীয় অর্থ মানে তো জনগণের অর্থ।
জনগণের অর্থ বিপুলভাবে ব্যয় হচ্ছে, অথচ নির্বাচনটি সব দল-মতের মানুষের অবাধ অংশগ্রহণে ধন্য হচ্ছে না–এটা অগ্রহণযোগ্য পরিস্থিতি। এটা এড়ানোই কাম্য। কিন্তু বারবারই দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। নির্বাচন সময়মতো অনুষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে এবং আইনগত বৈধতা পেতেও তার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। একতরফা বা ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনে গঠিত সরকার দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছে রাজনৈতিক ও নৈতিক গ্রহণযোগ্যতা ছাড়া। বছরের পর বছর বাজেট দিয়ে যাচ্ছে। তার আকারও নির্বাচনী ব্যয়ের মতোই বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
আর সেটা নির্বাহ করা হচ্ছে জনগণের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করে; দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অব্যাহতভাবে ঋণ করে। এর ভেতর দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন যে হচ্ছে না, তা কিন্তু নয়। ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়নের দাবি করা হচ্ছে বরং। তবে এ কথা ঠিক, রাজনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে না, কিংবা সে ক্ষেত্রে আমরা বরং পিছিয়ে পড়ছি।
গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলেই সব হয়ে যায়–গণতন্ত্র ও সুশাসন হয়ে যায়, রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন ঘটে যায়, তা অবশ্যই নয়। তা সত্ত্বেও নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার প্রয়োজন উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নির্বাচন হলো গণতন্ত্রচর্চার ন্যূনতম শর্ত এবং ভোটাধিকার হলো নাগরিকের ন্যূনতম প্রাপ্তি। এটা খর্ব হলে গণতন্ত্র, সুশাসন ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিকাশের দিকে এগোনোই যায় না। তখন এগিয়ে যেতে হয় বিপরীত দিকে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয় না বা নামকাওয়াস্তে হয়, এমন কিছু দেশ অবশ্য রয়েছে।
আমরা নিশ্চয়ই ওই সব দেশের কাতারে গিয়ে দাঁড়াতে চাই না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করুক, সেটা নিশ্চয়ই চাই না। সে জন্যই একটা ন্যূনতম মানসম্পন্ন নির্বাচন দেশের সিংহভাগ মানুষ চায়। গণতান্ত্রিক দেশগুলো, যাদের সঙ্গে আমাদের সুদীর্ঘ বহুমাত্রিক সম্পর্ক–তারাও চায় এখানে এবার একটা নির্বাচন হোক সব দল-মতের মানুষের অবাধ অংশগ্রহণে।
সেটা যে হতে যাচ্ছে না বা নির্বাচনের পরিবেশ যে ইতিমধ্যে অগ্রহণযোগ্য হয়ে পড়েছে, তা-ও কি অজানা? তারপরও কেন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হচ্ছে? অতিসম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে নতুন করে ব্যক্ত করা হয়েছে এমন প্রত্যাশা। সমমনাদের নির্বাচনে এনে সরকার যতই এটাকে ‘অংশগ্রহণমূলক’ দেখাতে চাক–নির্বাচনটি যে একতরফা, তা বুঝতে কারও কষ্ট হচ্ছে না।
নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে ক্ষমতাসীন দল (এমনকি গঠনতন্ত্র অমান্য করে) নিজ বিদ্রোহী প্রার্থীদের ‘স্বতন্ত্র’ বলে অনুমোদন দেবে, এমনটাও জানিয়েছে। আন্দোলনরত দলগুলো ভেঙে তাদের নির্বাচনে আনার চেষ্টাও ছিল। সেটা সফল হলেও তাতে সরকারপক্ষের গৌরব বাড়ত না। রাজনীতি তো কেবল যেনতেনভাবে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করার বিষয় নয়। এতে নীতির চর্চা আর গৌরব অর্জনের ব্যাপারও রয়েছে।
যেকোনো উপায়ে নির্বাচন সেরে ফেলে পুনরায় সরকার গঠনই যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে কিন্তু এত রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়েরও প্রয়োজন নেই। সামনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ রয়েছে। সরকারপক্ষ চাইলে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে তিন শ আসনেই ‘পছন্দের প্রার্থী’ রেখে বাকি সবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করিয়ে নির্বাচনটা সেরে ফেলতে পারে। তাতে ৭ জানুয়ারির ভোটাভুটিতেও যেতে হয় না। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনে যাঁরা কেবল সংসদ সদস্য হতে চান এবং সেটা ব্যবহার করে আরও ক্ষমতাবান হয়ে উঠতে উদ্গ্রীব, তাঁদের কেউ মনে হয় না এতে আপত্তি করবেন।
নির্বাচনও ‘অবৈধ’ হবে না। আংশিকভাবে এমনটা কিন্তু নিকট অতীতেই ঘটেছে–২০১৪ সালের নির্বাচনে। ‘আংশিকভাবে’ই বা বলি কেন! সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ তথা ১৫৩ আসনেই বিনা ভোটে তখন নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রার্থীরা। এভাবে ‘নির্বাচিত’ একজনও কি পরে পদত্যাগ করেছিলেন লজ্জিত হয়ে? তবে এবার নাকি তেমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধেই নেওয়া হয়েছে নিজ দল থেকে ‘ডামি প্রার্থী’ রাখার ব্যবস্থা!
প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার নির্বাচনে ভোটারের অংশগ্রহণ বাড়ানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। একতরফা নির্বাচন অনাকর্ষণীয় বলে ভোটার উপস্থিতি কম হবে, এটা ধরে নিয়েই নেওয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা। অন্তত নিজ দলের সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসার কিছু ‘প্রকল্পের’ কথাও শোনা যাচ্ছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সমমনা দলগুলোর মধ্যে কেবল জাতীয় পার্টিরই রয়েছে কিছু ভোট। তবে গত ১০ বছরে রাজনীতিতে তাদের যে ভূমিকা, তাতে মনে হয় এ দলের ভোটও কমে এসেছে। জাপার তৃণমূলের অধিকাংশ নেতাও কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাওয়ার বিরোধিতা করে বক্তব্য রেখেছিলেন দলীয় সভায়।
শেষতক তাঁরা নির্বাচনে থাকলেও সে কারণে ভোটের হার বাড়ার তেমন সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে যা করার ক্ষমতাসীন দলকেই করতে হবে। তবে ভোটের হার বাড়িয়ে দেখাতে ব্যাপকভাবে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা হলে তা গোপন করা সহজ হবে না। মানসম্মত নির্বাচন হচ্ছে না বলে জাতিসংঘসহ পশ্চিমা পর্যবেক্ষকেরা আসছেন না বটে; তবে দূর থেকেও একধরনের পর্যবেক্ষণ এখন সম্ভব। দেশের সচেতন মানুষও সব লক্ষ করবে।
নির্বাচন আসলে শুরু হয়ে যায় তফসিল ঘোষণার মুহূর্ত থেকেই। সংবিধানের নির্দেশনা হলো, সংসদ ভেঙে যাওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। সেই অনুযায়ী ‘নির্বাচন’ কিন্তু শুরু হয়ে গেছে অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের শুরু থেকেই। নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা ওই সময় থেকেই এর পরিবেশ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন। তখন থেকেই কিন্তু স্পষ্ট হয়ে গেছে, এবারও একটা একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে দেশে। একতরফা নির্বাচন মানে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে সক্ষম কোনো দল এতে অংশগ্রহণ না করা। আওয়ামী লীগও যদি কোনো নির্বাচন বর্জন করে, সেটা হবে একতরফা। সেনাশাসক এরশাদের সময় একটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিলেও বিএনপি নেয়নি। সেটাও একতরফা বলে বিবেচিত হয়েছিল এবং নির্বাচনটি রাজনৈতিক ও নৈতিক গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
এখন দেখা যাক, গণ্য করার মতো ভোটার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন কি না। সেটা নিশ্চিত করা গেলেও বিপুলসংখ্যক ভোটার কিন্তু কেন্দ্রের আশপাশ দিয়েও যাবেন না। তাঁরাও এ দেশের নাগরিক। এদিকে দেশের অন্যতম প্রধান একটি দল মাঠছাড়া। তাদের একাংশ কারাগারে। দেশটা তাদেরও এবং নির্বাচনে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, এর একাংশ তাদের কাছ থেকেও আদায় করা হবে। এই যে অপূর্ণতার জায়গা–যেভাবে হোক, সেটা ‘অ্যাড্রেস’ করতে হবে। নইলে দেশের বাইরে থেকেও কী দুর্যোগ নেমে আসতে পারে, তার আলামত ইতিমধ্যে স্পষ্ট। বিরোধী দল এবং তার সমর্থকেরাও এর প্রভাব এড়াতে পারবেন না। আমরা তো রয়েছি একই নৌকায়!
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে, তাতে মনে হয় গতবারের চেয়ে কমপক্ষে দ্বিগুণ ব্যয় করতে হবে। গতবার, অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭০০ কোটি টাকা। বাস্তবে ব্যয় আরও বেশি হয়েছিল। এবারও ব্যয় অনুমিত অঙ্ক ছাড়িয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া ভালো। সিংহভাগ ব্যয় নাকি হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেছনে।
এবার যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেটি দ্বাদশ। তার মানে, এগারোটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। তবে প্রতিবার নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় নিয়ে আলাপ তেমন হয়নি। এবার হবে। তার একটা কারণ হলো, সরকার অর্থসংকটে রয়েছে। টাকা ছাপিয়ে এবং অব্যাহতভাবে ঋণ করে চলতে হচ্ছে। এরই মধ্যে নির্বাচন এসে যাওয়ায় তাতেও বিপুল ব্যয় করতে হচ্ছে। আর ইসির চাহিদা অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ করতেই হয় সরকারকে।
পাঁচ বছরে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও একেবারে দ্বিগুণ ব্যয় কেন করতে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অবশ্য স্বাভাবিক। সেটা হয়তো তীব্রভাবে উঠত না–নির্বাচনটি স্বাভাবিক পরিবেশে গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত হলে। নিবন্ধিত দলগুলোর অধিকাংশ মনোনয়নপত্র জমা দিলেও এই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও অর্থবহ বলা যাচ্ছে না কেন, সেটা নতুন করে ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না সুনির্দিষ্ট দাবির ভিত্তিতে। এ বিষয়ে কোনো ধরনের সমঝোতার দিকে না গিয়ে সরকারপক্ষ সমমনা দলগুলোকে নিয়েই নির্বাচন সেরে ফেলার পথে এগিয়েছে। ইসিও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নেমে পড়েছে কাজে।
২০১৪ সালের মতোই একটা একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যাতে বিরোধী দল-সমর্থক বিপুলসংখ্যক ভোটারও এটা বর্জন করবেন। এমন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের জয় সুনিশ্চিত থাকে বলে তার সমর্থকেরাও কম হারে ভোট দিতে আসেন। নির্বাচন বর্জনকারীদের তৎপরতার কারণে গোলযোগের আশঙ্কায়ও অনেকে ভোটকেন্দ্র এড়ান। এ অবস্থায় রাজনৈতিক দল ও জনগণের স্বাভাবিক অংশগ্রহণে নির্বাচনটি অর্থবহ না হলেও রাষ্ট্রীয় অর্থ কিন্তু ব্যয় করতেই হয়। রাষ্ট্রীয় অর্থ মানে তো জনগণের অর্থ।
জনগণের অর্থ বিপুলভাবে ব্যয় হচ্ছে, অথচ নির্বাচনটি সব দল-মতের মানুষের অবাধ অংশগ্রহণে ধন্য হচ্ছে না–এটা অগ্রহণযোগ্য পরিস্থিতি। এটা এড়ানোই কাম্য। কিন্তু বারবারই দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। নির্বাচন সময়মতো অনুষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে এবং আইনগত বৈধতা পেতেও তার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। একতরফা বা ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনে গঠিত সরকার দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছে রাজনৈতিক ও নৈতিক গ্রহণযোগ্যতা ছাড়া। বছরের পর বছর বাজেট দিয়ে যাচ্ছে। তার আকারও নির্বাচনী ব্যয়ের মতোই বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
আর সেটা নির্বাহ করা হচ্ছে জনগণের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করে; দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অব্যাহতভাবে ঋণ করে। এর ভেতর দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন যে হচ্ছে না, তা কিন্তু নয়। ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়নের দাবি করা হচ্ছে বরং। তবে এ কথা ঠিক, রাজনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে না, কিংবা সে ক্ষেত্রে আমরা বরং পিছিয়ে পড়ছি।
গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলেই সব হয়ে যায়–গণতন্ত্র ও সুশাসন হয়ে যায়, রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন ঘটে যায়, তা অবশ্যই নয়। তা সত্ত্বেও নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার প্রয়োজন উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নির্বাচন হলো গণতন্ত্রচর্চার ন্যূনতম শর্ত এবং ভোটাধিকার হলো নাগরিকের ন্যূনতম প্রাপ্তি। এটা খর্ব হলে গণতন্ত্র, সুশাসন ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিকাশের দিকে এগোনোই যায় না। তখন এগিয়ে যেতে হয় বিপরীত দিকে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয় না বা নামকাওয়াস্তে হয়, এমন কিছু দেশ অবশ্য রয়েছে।
আমরা নিশ্চয়ই ওই সব দেশের কাতারে গিয়ে দাঁড়াতে চাই না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করুক, সেটা নিশ্চয়ই চাই না। সে জন্যই একটা ন্যূনতম মানসম্পন্ন নির্বাচন দেশের সিংহভাগ মানুষ চায়। গণতান্ত্রিক দেশগুলো, যাদের সঙ্গে আমাদের সুদীর্ঘ বহুমাত্রিক সম্পর্ক–তারাও চায় এখানে এবার একটা নির্বাচন হোক সব দল-মতের মানুষের অবাধ অংশগ্রহণে।
সেটা যে হতে যাচ্ছে না বা নির্বাচনের পরিবেশ যে ইতিমধ্যে অগ্রহণযোগ্য হয়ে পড়েছে, তা-ও কি অজানা? তারপরও কেন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হচ্ছে? অতিসম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে নতুন করে ব্যক্ত করা হয়েছে এমন প্রত্যাশা। সমমনাদের নির্বাচনে এনে সরকার যতই এটাকে ‘অংশগ্রহণমূলক’ দেখাতে চাক–নির্বাচনটি যে একতরফা, তা বুঝতে কারও কষ্ট হচ্ছে না।
নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে ক্ষমতাসীন দল (এমনকি গঠনতন্ত্র অমান্য করে) নিজ বিদ্রোহী প্রার্থীদের ‘স্বতন্ত্র’ বলে অনুমোদন দেবে, এমনটাও জানিয়েছে। আন্দোলনরত দলগুলো ভেঙে তাদের নির্বাচনে আনার চেষ্টাও ছিল। সেটা সফল হলেও তাতে সরকারপক্ষের গৌরব বাড়ত না। রাজনীতি তো কেবল যেনতেনভাবে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করার বিষয় নয়। এতে নীতির চর্চা আর গৌরব অর্জনের ব্যাপারও রয়েছে।
যেকোনো উপায়ে নির্বাচন সেরে ফেলে পুনরায় সরকার গঠনই যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে কিন্তু এত রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়েরও প্রয়োজন নেই। সামনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ রয়েছে। সরকারপক্ষ চাইলে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে তিন শ আসনেই ‘পছন্দের প্রার্থী’ রেখে বাকি সবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করিয়ে নির্বাচনটা সেরে ফেলতে পারে। তাতে ৭ জানুয়ারির ভোটাভুটিতেও যেতে হয় না। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনে যাঁরা কেবল সংসদ সদস্য হতে চান এবং সেটা ব্যবহার করে আরও ক্ষমতাবান হয়ে উঠতে উদ্গ্রীব, তাঁদের কেউ মনে হয় না এতে আপত্তি করবেন।
নির্বাচনও ‘অবৈধ’ হবে না। আংশিকভাবে এমনটা কিন্তু নিকট অতীতেই ঘটেছে–২০১৪ সালের নির্বাচনে। ‘আংশিকভাবে’ই বা বলি কেন! সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ তথা ১৫৩ আসনেই বিনা ভোটে তখন নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রার্থীরা। এভাবে ‘নির্বাচিত’ একজনও কি পরে পদত্যাগ করেছিলেন লজ্জিত হয়ে? তবে এবার নাকি তেমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধেই নেওয়া হয়েছে নিজ দল থেকে ‘ডামি প্রার্থী’ রাখার ব্যবস্থা!
প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার নির্বাচনে ভোটারের অংশগ্রহণ বাড়ানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। একতরফা নির্বাচন অনাকর্ষণীয় বলে ভোটার উপস্থিতি কম হবে, এটা ধরে নিয়েই নেওয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা। অন্তত নিজ দলের সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসার কিছু ‘প্রকল্পের’ কথাও শোনা যাচ্ছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সমমনা দলগুলোর মধ্যে কেবল জাতীয় পার্টিরই রয়েছে কিছু ভোট। তবে গত ১০ বছরে রাজনীতিতে তাদের যে ভূমিকা, তাতে মনে হয় এ দলের ভোটও কমে এসেছে। জাপার তৃণমূলের অধিকাংশ নেতাও কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাওয়ার বিরোধিতা করে বক্তব্য রেখেছিলেন দলীয় সভায়।
শেষতক তাঁরা নির্বাচনে থাকলেও সে কারণে ভোটের হার বাড়ার তেমন সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে যা করার ক্ষমতাসীন দলকেই করতে হবে। তবে ভোটের হার বাড়িয়ে দেখাতে ব্যাপকভাবে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা হলে তা গোপন করা সহজ হবে না। মানসম্মত নির্বাচন হচ্ছে না বলে জাতিসংঘসহ পশ্চিমা পর্যবেক্ষকেরা আসছেন না বটে; তবে দূর থেকেও একধরনের পর্যবেক্ষণ এখন সম্ভব। দেশের সচেতন মানুষও সব লক্ষ করবে।
নির্বাচন আসলে শুরু হয়ে যায় তফসিল ঘোষণার মুহূর্ত থেকেই। সংবিধানের নির্দেশনা হলো, সংসদ ভেঙে যাওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। সেই অনুযায়ী ‘নির্বাচন’ কিন্তু শুরু হয়ে গেছে অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের শুরু থেকেই। নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা ওই সময় থেকেই এর পরিবেশ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন। তখন থেকেই কিন্তু স্পষ্ট হয়ে গেছে, এবারও একটা একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে দেশে। একতরফা নির্বাচন মানে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে সক্ষম কোনো দল এতে অংশগ্রহণ না করা। আওয়ামী লীগও যদি কোনো নির্বাচন বর্জন করে, সেটা হবে একতরফা। সেনাশাসক এরশাদের সময় একটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিলেও বিএনপি নেয়নি। সেটাও একতরফা বলে বিবেচিত হয়েছিল এবং নির্বাচনটি রাজনৈতিক ও নৈতিক গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
এখন দেখা যাক, গণ্য করার মতো ভোটার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন কি না। সেটা নিশ্চিত করা গেলেও বিপুলসংখ্যক ভোটার কিন্তু কেন্দ্রের আশপাশ দিয়েও যাবেন না। তাঁরাও এ দেশের নাগরিক। এদিকে দেশের অন্যতম প্রধান একটি দল মাঠছাড়া। তাদের একাংশ কারাগারে। দেশটা তাদেরও এবং নির্বাচনে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, এর একাংশ তাদের কাছ থেকেও আদায় করা হবে। এই যে অপূর্ণতার জায়গা–যেভাবে হোক, সেটা ‘অ্যাড্রেস’ করতে হবে। নইলে দেশের বাইরে থেকেও কী দুর্যোগ নেমে আসতে পারে, তার আলামত ইতিমধ্যে স্পষ্ট। বিরোধী দল এবং তার সমর্থকেরাও এর প্রভাব এড়াতে পারবেন না। আমরা তো রয়েছি একই নৌকায়!
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক
হাসান মামুন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে, তাতে মনে হয় গতবারের চেয়ে কমপক্ষে দ্বিগুণ ব্যয় করতে হবে। গতবার, অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭০০ কোটি টাকা। বাস্তবে ব্যয় আরও বেশি হয়েছিল। এবারও ব্যয় অনুমিত অঙ্ক ছাড়িয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া ভালো। সিংহভাগ ব্যয় নাকি হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেছনে।
এবার যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেটি দ্বাদশ। তার মানে, এগারোটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। তবে প্রতিবার নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় নিয়ে আলাপ তেমন হয়নি। এবার হবে। তার একটা কারণ হলো, সরকার অর্থসংকটে রয়েছে। টাকা ছাপিয়ে এবং অব্যাহতভাবে ঋণ করে চলতে হচ্ছে। এরই মধ্যে নির্বাচন এসে যাওয়ায় তাতেও বিপুল ব্যয় করতে হচ্ছে। আর ইসির চাহিদা অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ করতেই হয় সরকারকে।
পাঁচ বছরে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও একেবারে দ্বিগুণ ব্যয় কেন করতে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অবশ্য স্বাভাবিক। সেটা হয়তো তীব্রভাবে উঠত না–নির্বাচনটি স্বাভাবিক পরিবেশে গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত হলে। নিবন্ধিত দলগুলোর অধিকাংশ মনোনয়নপত্র জমা দিলেও এই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও অর্থবহ বলা যাচ্ছে না কেন, সেটা নতুন করে ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না সুনির্দিষ্ট দাবির ভিত্তিতে। এ বিষয়ে কোনো ধরনের সমঝোতার দিকে না গিয়ে সরকারপক্ষ সমমনা দলগুলোকে নিয়েই নির্বাচন সেরে ফেলার পথে এগিয়েছে। ইসিও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নেমে পড়েছে কাজে।
২০১৪ সালের মতোই একটা একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যাতে বিরোধী দল-সমর্থক বিপুলসংখ্যক ভোটারও এটা বর্জন করবেন। এমন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের জয় সুনিশ্চিত থাকে বলে তার সমর্থকেরাও কম হারে ভোট দিতে আসেন। নির্বাচন বর্জনকারীদের তৎপরতার কারণে গোলযোগের আশঙ্কায়ও অনেকে ভোটকেন্দ্র এড়ান। এ অবস্থায় রাজনৈতিক দল ও জনগণের স্বাভাবিক অংশগ্রহণে নির্বাচনটি অর্থবহ না হলেও রাষ্ট্রীয় অর্থ কিন্তু ব্যয় করতেই হয়। রাষ্ট্রীয় অর্থ মানে তো জনগণের অর্থ।
জনগণের অর্থ বিপুলভাবে ব্যয় হচ্ছে, অথচ নির্বাচনটি সব দল-মতের মানুষের অবাধ অংশগ্রহণে ধন্য হচ্ছে না–এটা অগ্রহণযোগ্য পরিস্থিতি। এটা এড়ানোই কাম্য। কিন্তু বারবারই দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। নির্বাচন সময়মতো অনুষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে এবং আইনগত বৈধতা পেতেও তার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। একতরফা বা ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনে গঠিত সরকার দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছে রাজনৈতিক ও নৈতিক গ্রহণযোগ্যতা ছাড়া। বছরের পর বছর বাজেট দিয়ে যাচ্ছে। তার আকারও নির্বাচনী ব্যয়ের মতোই বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
আর সেটা নির্বাহ করা হচ্ছে জনগণের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করে; দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অব্যাহতভাবে ঋণ করে। এর ভেতর দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন যে হচ্ছে না, তা কিন্তু নয়। ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়নের দাবি করা হচ্ছে বরং। তবে এ কথা ঠিক, রাজনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে না, কিংবা সে ক্ষেত্রে আমরা বরং পিছিয়ে পড়ছি।
গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলেই সব হয়ে যায়–গণতন্ত্র ও সুশাসন হয়ে যায়, রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন ঘটে যায়, তা অবশ্যই নয়। তা সত্ত্বেও নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার প্রয়োজন উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নির্বাচন হলো গণতন্ত্রচর্চার ন্যূনতম শর্ত এবং ভোটাধিকার হলো নাগরিকের ন্যূনতম প্রাপ্তি। এটা খর্ব হলে গণতন্ত্র, সুশাসন ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিকাশের দিকে এগোনোই যায় না। তখন এগিয়ে যেতে হয় বিপরীত দিকে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয় না বা নামকাওয়াস্তে হয়, এমন কিছু দেশ অবশ্য রয়েছে।
আমরা নিশ্চয়ই ওই সব দেশের কাতারে গিয়ে দাঁড়াতে চাই না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করুক, সেটা নিশ্চয়ই চাই না। সে জন্যই একটা ন্যূনতম মানসম্পন্ন নির্বাচন দেশের সিংহভাগ মানুষ চায়। গণতান্ত্রিক দেশগুলো, যাদের সঙ্গে আমাদের সুদীর্ঘ বহুমাত্রিক সম্পর্ক–তারাও চায় এখানে এবার একটা নির্বাচন হোক সব দল-মতের মানুষের অবাধ অংশগ্রহণে।
সেটা যে হতে যাচ্ছে না বা নির্বাচনের পরিবেশ যে ইতিমধ্যে অগ্রহণযোগ্য হয়ে পড়েছে, তা-ও কি অজানা? তারপরও কেন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হচ্ছে? অতিসম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে নতুন করে ব্যক্ত করা হয়েছে এমন প্রত্যাশা। সমমনাদের নির্বাচনে এনে সরকার যতই এটাকে ‘অংশগ্রহণমূলক’ দেখাতে চাক–নির্বাচনটি যে একতরফা, তা বুঝতে কারও কষ্ট হচ্ছে না।
নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে ক্ষমতাসীন দল (এমনকি গঠনতন্ত্র অমান্য করে) নিজ বিদ্রোহী প্রার্থীদের ‘স্বতন্ত্র’ বলে অনুমোদন দেবে, এমনটাও জানিয়েছে। আন্দোলনরত দলগুলো ভেঙে তাদের নির্বাচনে আনার চেষ্টাও ছিল। সেটা সফল হলেও তাতে সরকারপক্ষের গৌরব বাড়ত না। রাজনীতি তো কেবল যেনতেনভাবে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করার বিষয় নয়। এতে নীতির চর্চা আর গৌরব অর্জনের ব্যাপারও রয়েছে।
যেকোনো উপায়ে নির্বাচন সেরে ফেলে পুনরায় সরকার গঠনই যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে কিন্তু এত রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়েরও প্রয়োজন নেই। সামনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ রয়েছে। সরকারপক্ষ চাইলে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে তিন শ আসনেই ‘পছন্দের প্রার্থী’ রেখে বাকি সবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করিয়ে নির্বাচনটা সেরে ফেলতে পারে। তাতে ৭ জানুয়ারির ভোটাভুটিতেও যেতে হয় না। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনে যাঁরা কেবল সংসদ সদস্য হতে চান এবং সেটা ব্যবহার করে আরও ক্ষমতাবান হয়ে উঠতে উদ্গ্রীব, তাঁদের কেউ মনে হয় না এতে আপত্তি করবেন।
নির্বাচনও ‘অবৈধ’ হবে না। আংশিকভাবে এমনটা কিন্তু নিকট অতীতেই ঘটেছে–২০১৪ সালের নির্বাচনে। ‘আংশিকভাবে’ই বা বলি কেন! সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ তথা ১৫৩ আসনেই বিনা ভোটে তখন নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রার্থীরা। এভাবে ‘নির্বাচিত’ একজনও কি পরে পদত্যাগ করেছিলেন লজ্জিত হয়ে? তবে এবার নাকি তেমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধেই নেওয়া হয়েছে নিজ দল থেকে ‘ডামি প্রার্থী’ রাখার ব্যবস্থা!
প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার নির্বাচনে ভোটারের অংশগ্রহণ বাড়ানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। একতরফা নির্বাচন অনাকর্ষণীয় বলে ভোটার উপস্থিতি কম হবে, এটা ধরে নিয়েই নেওয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা। অন্তত নিজ দলের সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসার কিছু ‘প্রকল্পের’ কথাও শোনা যাচ্ছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সমমনা দলগুলোর মধ্যে কেবল জাতীয় পার্টিরই রয়েছে কিছু ভোট। তবে গত ১০ বছরে রাজনীতিতে তাদের যে ভূমিকা, তাতে মনে হয় এ দলের ভোটও কমে এসেছে। জাপার তৃণমূলের অধিকাংশ নেতাও কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাওয়ার বিরোধিতা করে বক্তব্য রেখেছিলেন দলীয় সভায়।
শেষতক তাঁরা নির্বাচনে থাকলেও সে কারণে ভোটের হার বাড়ার তেমন সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে যা করার ক্ষমতাসীন দলকেই করতে হবে। তবে ভোটের হার বাড়িয়ে দেখাতে ব্যাপকভাবে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা হলে তা গোপন করা সহজ হবে না। মানসম্মত নির্বাচন হচ্ছে না বলে জাতিসংঘসহ পশ্চিমা পর্যবেক্ষকেরা আসছেন না বটে; তবে দূর থেকেও একধরনের পর্যবেক্ষণ এখন সম্ভব। দেশের সচেতন মানুষও সব লক্ষ করবে।
নির্বাচন আসলে শুরু হয়ে যায় তফসিল ঘোষণার মুহূর্ত থেকেই। সংবিধানের নির্দেশনা হলো, সংসদ ভেঙে যাওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। সেই অনুযায়ী ‘নির্বাচন’ কিন্তু শুরু হয়ে গেছে অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের শুরু থেকেই। নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা ওই সময় থেকেই এর পরিবেশ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন। তখন থেকেই কিন্তু স্পষ্ট হয়ে গেছে, এবারও একটা একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে দেশে। একতরফা নির্বাচন মানে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে সক্ষম কোনো দল এতে অংশগ্রহণ না করা। আওয়ামী লীগও যদি কোনো নির্বাচন বর্জন করে, সেটা হবে একতরফা। সেনাশাসক এরশাদের সময় একটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিলেও বিএনপি নেয়নি। সেটাও একতরফা বলে বিবেচিত হয়েছিল এবং নির্বাচনটি রাজনৈতিক ও নৈতিক গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
এখন দেখা যাক, গণ্য করার মতো ভোটার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন কি না। সেটা নিশ্চিত করা গেলেও বিপুলসংখ্যক ভোটার কিন্তু কেন্দ্রের আশপাশ দিয়েও যাবেন না। তাঁরাও এ দেশের নাগরিক। এদিকে দেশের অন্যতম প্রধান একটি দল মাঠছাড়া। তাদের একাংশ কারাগারে। দেশটা তাদেরও এবং নির্বাচনে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, এর একাংশ তাদের কাছ থেকেও আদায় করা হবে। এই যে অপূর্ণতার জায়গা–যেভাবে হোক, সেটা ‘অ্যাড্রেস’ করতে হবে। নইলে দেশের বাইরে থেকেও কী দুর্যোগ নেমে আসতে পারে, তার আলামত ইতিমধ্যে স্পষ্ট। বিরোধী দল এবং তার সমর্থকেরাও এর প্রভাব এড়াতে পারবেন না। আমরা তো রয়েছি একই নৌকায়!
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে, তাতে মনে হয় গতবারের চেয়ে কমপক্ষে দ্বিগুণ ব্যয় করতে হবে। গতবার, অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭০০ কোটি টাকা। বাস্তবে ব্যয় আরও বেশি হয়েছিল। এবারও ব্যয় অনুমিত অঙ্ক ছাড়িয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া ভালো। সিংহভাগ ব্যয় নাকি হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পেছনে।
এবার যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, সেটি দ্বাদশ। তার মানে, এগারোটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। তবে প্রতিবার নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় নিয়ে আলাপ তেমন হয়নি। এবার হবে। তার একটা কারণ হলো, সরকার অর্থসংকটে রয়েছে। টাকা ছাপিয়ে এবং অব্যাহতভাবে ঋণ করে চলতে হচ্ছে। এরই মধ্যে নির্বাচন এসে যাওয়ায় তাতেও বিপুল ব্যয় করতে হচ্ছে। আর ইসির চাহিদা অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ করতেই হয় সরকারকে।
পাঁচ বছরে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও একেবারে দ্বিগুণ ব্যয় কেন করতে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অবশ্য স্বাভাবিক। সেটা হয়তো তীব্রভাবে উঠত না–নির্বাচনটি স্বাভাবিক পরিবেশে গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠিত হলে। নিবন্ধিত দলগুলোর অধিকাংশ মনোনয়নপত্র জমা দিলেও এই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও অর্থবহ বলা যাচ্ছে না কেন, সেটা নতুন করে ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না সুনির্দিষ্ট দাবির ভিত্তিতে। এ বিষয়ে কোনো ধরনের সমঝোতার দিকে না গিয়ে সরকারপক্ষ সমমনা দলগুলোকে নিয়েই নির্বাচন সেরে ফেলার পথে এগিয়েছে। ইসিও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নেমে পড়েছে কাজে।
২০১৪ সালের মতোই একটা একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে, যাতে বিরোধী দল-সমর্থক বিপুলসংখ্যক ভোটারও এটা বর্জন করবেন। এমন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের জয় সুনিশ্চিত থাকে বলে তার সমর্থকেরাও কম হারে ভোট দিতে আসেন। নির্বাচন বর্জনকারীদের তৎপরতার কারণে গোলযোগের আশঙ্কায়ও অনেকে ভোটকেন্দ্র এড়ান। এ অবস্থায় রাজনৈতিক দল ও জনগণের স্বাভাবিক অংশগ্রহণে নির্বাচনটি অর্থবহ না হলেও রাষ্ট্রীয় অর্থ কিন্তু ব্যয় করতেই হয়। রাষ্ট্রীয় অর্থ মানে তো জনগণের অর্থ।
জনগণের অর্থ বিপুলভাবে ব্যয় হচ্ছে, অথচ নির্বাচনটি সব দল-মতের মানুষের অবাধ অংশগ্রহণে ধন্য হচ্ছে না–এটা অগ্রহণযোগ্য পরিস্থিতি। এটা এড়ানোই কাম্য। কিন্তু বারবারই দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। নির্বাচন সময়মতো অনুষ্ঠিত হয়ে যাচ্ছে এবং আইনগত বৈধতা পেতেও তার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। একতরফা বা ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনে গঠিত সরকার দেশ পরিচালনা করে যাচ্ছে রাজনৈতিক ও নৈতিক গ্রহণযোগ্যতা ছাড়া। বছরের পর বছর বাজেট দিয়ে যাচ্ছে। তার আকারও নির্বাচনী ব্যয়ের মতোই বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
আর সেটা নির্বাহ করা হচ্ছে জনগণের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করে; দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অব্যাহতভাবে ঋণ করে। এর ভেতর দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন যে হচ্ছে না, তা কিন্তু নয়। ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়নের দাবি করা হচ্ছে বরং। তবে এ কথা ঠিক, রাজনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে না, কিংবা সে ক্ষেত্রে আমরা বরং পিছিয়ে পড়ছি।
গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলেই সব হয়ে যায়–গণতন্ত্র ও সুশাসন হয়ে যায়, রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন ঘটে যায়, তা অবশ্যই নয়। তা সত্ত্বেও নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করার প্রয়োজন উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নির্বাচন হলো গণতন্ত্রচর্চার ন্যূনতম শর্ত এবং ভোটাধিকার হলো নাগরিকের ন্যূনতম প্রাপ্তি। এটা খর্ব হলে গণতন্ত্র, সুশাসন ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিকাশের দিকে এগোনোই যায় না। তখন এগিয়ে যেতে হয় বিপরীত দিকে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয় না বা নামকাওয়াস্তে হয়, এমন কিছু দেশ অবশ্য রয়েছে।
আমরা নিশ্চয়ই ওই সব দেশের কাতারে গিয়ে দাঁড়াতে চাই না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করুক, সেটা নিশ্চয়ই চাই না। সে জন্যই একটা ন্যূনতম মানসম্পন্ন নির্বাচন দেশের সিংহভাগ মানুষ চায়। গণতান্ত্রিক দেশগুলো, যাদের সঙ্গে আমাদের সুদীর্ঘ বহুমাত্রিক সম্পর্ক–তারাও চায় এখানে এবার একটা নির্বাচন হোক সব দল-মতের মানুষের অবাধ অংশগ্রহণে।
সেটা যে হতে যাচ্ছে না বা নির্বাচনের পরিবেশ যে ইতিমধ্যে অগ্রহণযোগ্য হয়ে পড়েছে, তা-ও কি অজানা? তারপরও কেন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হচ্ছে? অতিসম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে নতুন করে ব্যক্ত করা হয়েছে এমন প্রত্যাশা। সমমনাদের নির্বাচনে এনে সরকার যতই এটাকে ‘অংশগ্রহণমূলক’ দেখাতে চাক–নির্বাচনটি যে একতরফা, তা বুঝতে কারও কষ্ট হচ্ছে না।
নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে ক্ষমতাসীন দল (এমনকি গঠনতন্ত্র অমান্য করে) নিজ বিদ্রোহী প্রার্থীদের ‘স্বতন্ত্র’ বলে অনুমোদন দেবে, এমনটাও জানিয়েছে। আন্দোলনরত দলগুলো ভেঙে তাদের নির্বাচনে আনার চেষ্টাও ছিল। সেটা সফল হলেও তাতে সরকারপক্ষের গৌরব বাড়ত না। রাজনীতি তো কেবল যেনতেনভাবে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করার বিষয় নয়। এতে নীতির চর্চা আর গৌরব অর্জনের ব্যাপারও রয়েছে।
যেকোনো উপায়ে নির্বাচন সেরে ফেলে পুনরায় সরকার গঠনই যদি লক্ষ্য হয়, তাহলে কিন্তু এত রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যয়েরও প্রয়োজন নেই। সামনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ রয়েছে। সরকারপক্ষ চাইলে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে তিন শ আসনেই ‘পছন্দের প্রার্থী’ রেখে বাকি সবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করিয়ে নির্বাচনটা সেরে ফেলতে পারে। তাতে ৭ জানুয়ারির ভোটাভুটিতেও যেতে হয় না। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচনে যাঁরা কেবল সংসদ সদস্য হতে চান এবং সেটা ব্যবহার করে আরও ক্ষমতাবান হয়ে উঠতে উদ্গ্রীব, তাঁদের কেউ মনে হয় না এতে আপত্তি করবেন।
নির্বাচনও ‘অবৈধ’ হবে না। আংশিকভাবে এমনটা কিন্তু নিকট অতীতেই ঘটেছে–২০১৪ সালের নির্বাচনে। ‘আংশিকভাবে’ই বা বলি কেন! সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ তথা ১৫৩ আসনেই বিনা ভোটে তখন নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রার্থীরা। এভাবে ‘নির্বাচিত’ একজনও কি পরে পদত্যাগ করেছিলেন লজ্জিত হয়ে? তবে এবার নাকি তেমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধেই নেওয়া হয়েছে নিজ দল থেকে ‘ডামি প্রার্থী’ রাখার ব্যবস্থা!
প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার নির্বাচনে ভোটারের অংশগ্রহণ বাড়ানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। একতরফা নির্বাচন অনাকর্ষণীয় বলে ভোটার উপস্থিতি কম হবে, এটা ধরে নিয়েই নেওয়া হয়েছে নানা ব্যবস্থা। অন্তত নিজ দলের সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসার কিছু ‘প্রকল্পের’ কথাও শোনা যাচ্ছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সমমনা দলগুলোর মধ্যে কেবল জাতীয় পার্টিরই রয়েছে কিছু ভোট। তবে গত ১০ বছরে রাজনীতিতে তাদের যে ভূমিকা, তাতে মনে হয় এ দলের ভোটও কমে এসেছে। জাপার তৃণমূলের অধিকাংশ নেতাও কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাওয়ার বিরোধিতা করে বক্তব্য রেখেছিলেন দলীয় সভায়।
শেষতক তাঁরা নির্বাচনে থাকলেও সে কারণে ভোটের হার বাড়ার তেমন সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে যা করার ক্ষমতাসীন দলকেই করতে হবে। তবে ভোটের হার বাড়িয়ে দেখাতে ব্যাপকভাবে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা হলে তা গোপন করা সহজ হবে না। মানসম্মত নির্বাচন হচ্ছে না বলে জাতিসংঘসহ পশ্চিমা পর্যবেক্ষকেরা আসছেন না বটে; তবে দূর থেকেও একধরনের পর্যবেক্ষণ এখন সম্ভব। দেশের সচেতন মানুষও সব লক্ষ করবে।
নির্বাচন আসলে শুরু হয়ে যায় তফসিল ঘোষণার মুহূর্ত থেকেই। সংবিধানের নির্দেশনা হলো, সংসদ ভেঙে যাওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে। সেই অনুযায়ী ‘নির্বাচন’ কিন্তু শুরু হয়ে গেছে অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের শুরু থেকেই। নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা ওই সময় থেকেই এর পরিবেশ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন। তখন থেকেই কিন্তু স্পষ্ট হয়ে গেছে, এবারও একটা একতরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে দেশে। একতরফা নির্বাচন মানে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে সক্ষম কোনো দল এতে অংশগ্রহণ না করা। আওয়ামী লীগও যদি কোনো নির্বাচন বর্জন করে, সেটা হবে একতরফা। সেনাশাসক এরশাদের সময় একটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিলেও বিএনপি নেয়নি। সেটাও একতরফা বলে বিবেচিত হয়েছিল এবং নির্বাচনটি রাজনৈতিক ও নৈতিক গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
এখন দেখা যাক, গণ্য করার মতো ভোটার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন কি না। সেটা নিশ্চিত করা গেলেও বিপুলসংখ্যক ভোটার কিন্তু কেন্দ্রের আশপাশ দিয়েও যাবেন না। তাঁরাও এ দেশের নাগরিক। এদিকে দেশের অন্যতম প্রধান একটি দল মাঠছাড়া। তাদের একাংশ কারাগারে। দেশটা তাদেরও এবং নির্বাচনে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, এর একাংশ তাদের কাছ থেকেও আদায় করা হবে। এই যে অপূর্ণতার জায়গা–যেভাবে হোক, সেটা ‘অ্যাড্রেস’ করতে হবে। নইলে দেশের বাইরে থেকেও কী দুর্যোগ নেমে আসতে পারে, তার আলামত ইতিমধ্যে স্পষ্ট। বিরোধী দল এবং তার সমর্থকেরাও এর প্রভাব এড়াতে পারবেন না। আমরা তো রয়েছি একই নৌকায়!
লেখক: সাংবাদিক, বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে, তাতে মনে হয় গতবারের চেয়ে কমপক্ষে দ্বিগুণ ব্যয় করতে হবে। গতবার, অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭০০ কোটি টাকা। বাস্তবে ব্যয় আরও বেশি হয়েছিল। এবারও ব্যয় অনুমিত অঙ্ক ছাড়িয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া ভালো। সিংহভাগ ব্যয় নাকি হবে আইনশ
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে, তাতে মনে হয় গতবারের চেয়ে কমপক্ষে দ্বিগুণ ব্যয় করতে হবে। গতবার, অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭০০ কোটি টাকা। বাস্তবে ব্যয় আরও বেশি হয়েছিল। এবারও ব্যয় অনুমিত অঙ্ক ছাড়িয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া ভালো। সিংহভাগ ব্যয় নাকি হবে আইনশ
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে, তাতে মনে হয় গতবারের চেয়ে কমপক্ষে দ্বিগুণ ব্যয় করতে হবে। গতবার, অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭০০ কোটি টাকা। বাস্তবে ব্যয় আরও বেশি হয়েছিল। এবারও ব্যয় অনুমিত অঙ্ক ছাড়িয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া ভালো। সিংহভাগ ব্যয় নাকি হবে আইনশ
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যয় সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে, তাতে মনে হয় গতবারের চেয়ে কমপক্ষে দ্বিগুণ ব্যয় করতে হবে। গতবার, অর্থাৎ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭০০ কোটি টাকা। বাস্তবে ব্যয় আরও বেশি হয়েছিল। এবারও ব্যয় অনুমিত অঙ্ক ছাড়িয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া ভালো। সিংহভাগ ব্যয় নাকি হবে আইনশ
০৪ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫