রাহুল শর্মা, ঢাকা

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫টি প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তি সেখানে আছেন ১৭ জন। অথচ মাত্র ৫ জন নেতৃত্ব দিচ্ছেন সব প্রকল্পে। অন্যরা করে যাচ্ছেন রুটিন কাজ।
সরকারি বিধান অনুযায়ী, একজন সরকারি কর্মকর্তার একটির বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকার কথা নয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট অনুশাসনও রয়েছে। কিন্তু বিধিবিধান ও অনুশাসনের তোয়াক্কা না করেই চলছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই অধিদপ্তর। পিছিয়ে নেই প্রধান প্রকৌশলীও। প্রধান প্রকৌশলীর কোনো প্রকল্পের দায়িত্বে না থাকার রীতি না থাকলেও তিনিও একটি প্রকল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এক কর্মকর্তার একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকাকে ক্ষমতার অপব্যবহার বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা সরকারি নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের খুবই খারাপ দৃষ্টান্ত। এর ফলে এক দিকে সুষ্ঠুভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অন্য দিকে অর্থের অপচয় হওয়ার সুযোগ থাকে। একই সঙ্গে আশঙ্কা থাকে অনিয়ম-দুর্নীতির।’
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ভবনগুলোর সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কার এবং আসবাবপত্র সরবরাহের কাজ করে থাকে। এ ছাড়া মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব স্থাপন, ইন্টারনেট সংযোগ, আইসিটি-সুবিধা সরবরাহের কাজও তারা করে থাকে।
বিধান কী বলে
সরকারি নিয়মে একাধিক প্রকল্পে এক কর্মকর্তাকে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হিসেবে নিয়োগের সুযোগ নেই। ২০২২ সালের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সরকারি খাতে উন্নয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন পদ্ধতিসংক্রান্ত নির্দেশিকার ২১.২৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়, ‘এক কর্মকর্তাকে কেবল একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে’। ২০১৬ সালের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায়ও একই ধরনের নির্দেশনা দেওয়া আছে।
এ ছাড়া, এক ব্যক্তিকে একাধিক প্রকল্পে দায়িত্ব না দিতে গত বছরের ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক শামীম আহম্মেদের সই করা চিঠি সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, একজন কর্মকর্তার ১০-১৪টি প্রকল্পের দায়িত্ব পালনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভয়াবহ’ বলে মন্তব্য করেছেন। চিঠিতে যেসব কর্মকর্তা একাধিক প্রকল্পে পিডি আছেন, তাঁদের অতিরিক্ত প্রকল্পের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।
কার হাতে কয়টি প্রকল্প
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রধান কার্যালয়ে বর্তমানে নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন সাতজন। এছাড়া প্রধান কার্যালয় ও অন্য জায়গা মিলিয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আছেন ১০ জন। যোগ্যতা অনুযায়ী এই ১৭ জন প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পেতে পারেন। অথচ চলমান ২৫ প্রকল্পের মধ্যে ২৪টির নেতৃত্বে আছেন ৪ নির্বাহী প্রকৌশলী। তাঁরা হলেন—মো. আবুল হাসেম সরদার, মীর মুয়াজ্জেম হুসেন, মো. মাহাবুবর রহমান ও মো. রফিকুল ইসলাম। এর মধ্যে আবুল হাসেম ১১টি প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্বে আছেন, যার আর্থিক মূল্য ৩ হাজার ৫৯১ কোটি টাকার বেশি। একই ভাবে মুয়াজ্জেম হুসেনের ৭টি প্রকল্পের ব্যয় ২৪ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা, মাহাবুবর রহমান ৪টিতে ব্যয় ৫ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা এবং রফিকুল ইসলামের ২টি ব্যয় ৫ হাজার ৬২০ কোটি। সব মিলিয়ে এই চার কর্মকর্তার হাতে আছে ৩৯ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকার কাজ।
এ ছাড়া রীতি ভেঙে একটি প্রকল্পের পরিচালক হয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ নইমুল কাদের। ওই প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ১০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অথচ অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন আরও তিনজন। তাঁরা হলেন জয়নাল আবেদীন, সুমী দেবী ও এস এম সাফিন আহমেদ। তাঁরা কোনো প্রকল্পের দায়িত্ব পাননি। বিভাগের কিছু রুটিন কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া আরও ১০ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আছেন, তাঁরাও প্রকল্পের দায়িত্ব পেতে পারতেন, কিন্তু পাননি।
এক কর্মকর্তা একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকতে পারেন কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি চার নির্বাহী প্রকৌশলী। তাঁরা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তাঁদের মন্তব্য ‘অফিস দায়িত্ব দিলে আমরা কী করব?’
অধিদপ্তরের একাধিক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জানান, এক কর্মকর্তার একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা নিয়ে সম্প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন শিক্ষাসচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক। একই সঙ্গে তিনি প্রধান প্রকৌশলীকে প্রকল্পের দায়িত্ব ছাড়ারও নির্দেশ দেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সে নির্দেশ বাস্তবায়িত হয়নি।
প্রধান প্রকৌশলীও প্রকল্পের দায়িত্বে
কাজ বণ্টনের নথিতে দেখা যায়, প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ নইমুল কাদের ‘বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। এ প্রকল্পের নকশাকারকও ছিলেন তিনি। এ প্রকল্পের অধীন খুলনার ডুমুরিয়ায় নির্মাণাধীন পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন হেলে পড়লে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। বিষয়টির এখনো কোনো সমাধান হয়নি।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কয়েক ব্যক্তি অভিযোগ করেন প্রকল্পের মূল ‘প্রোটোটাইপ ডিজাইন’ (একই রকম নির্মাণের নকশা) থাকলেও ডিজাইন ছাড়াই নিময় বহির্ভূতভাবে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এতে কাজ শুরু করতে নতুন করে প্রতিটি নির্মাণের ক্ষেত্রে নকশার অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট অঙ্কের উৎকোচ ছাড়া নতুন নকশার অনুমোদন মেলে না।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ নইমুল কাদের সোমবার তাঁর দপ্তরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। আপনার সঙ্গে কথা বলতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পারমিশন লাগবে।’
প্রকল্পে কী মধু?
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যত বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা যায়, তত বেশি অবৈধ অর্থের ভাগ-বাঁটোয়ারা পাওয়া যায়। এ জন্য কিছু কর্মকর্তা একের অধিক প্রকল্পের দায়িত্ব পেতে আগ্রহী হন। এ ছাড়া বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকলে পুরো ইইডি নিয়ন্ত্রণও সহজ হয়। সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় সবাই এদের তোয়াজ করে চলে।
খুঁটির জোর কোথায়?
ইইডি থেকে জানা যায়, সবচেয়ে বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে যে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী তাঁরা নিজেদের সরকারের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দেন। একজন নিজেকে সরকারের এক মন্ত্রীর বাল্যবন্ধু আরেকজন নিজেকে এক মন্ত্রীর ভাগনে বলে পরিচয় দেন। আর বাকি দুই নির্বাহী প্রকৌশলী মূলত যখন যে প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকেন, তাঁদের ‘আশীর্বাদেই’ কাজ করে যান।
জানতে চাইলে শিক্ষাসচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই বিষয়টির সমাধান হবে।’

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫টি প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তি সেখানে আছেন ১৭ জন। অথচ মাত্র ৫ জন নেতৃত্ব দিচ্ছেন সব প্রকল্পে। অন্যরা করে যাচ্ছেন রুটিন কাজ।
সরকারি বিধান অনুযায়ী, একজন সরকারি কর্মকর্তার একটির বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকার কথা নয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট অনুশাসনও রয়েছে। কিন্তু বিধিবিধান ও অনুশাসনের তোয়াক্কা না করেই চলছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই অধিদপ্তর। পিছিয়ে নেই প্রধান প্রকৌশলীও। প্রধান প্রকৌশলীর কোনো প্রকল্পের দায়িত্বে না থাকার রীতি না থাকলেও তিনিও একটি প্রকল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এক কর্মকর্তার একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকাকে ক্ষমতার অপব্যবহার বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা সরকারি নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের খুবই খারাপ দৃষ্টান্ত। এর ফলে এক দিকে সুষ্ঠুভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অন্য দিকে অর্থের অপচয় হওয়ার সুযোগ থাকে। একই সঙ্গে আশঙ্কা থাকে অনিয়ম-দুর্নীতির।’
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ভবনগুলোর সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কার এবং আসবাবপত্র সরবরাহের কাজ করে থাকে। এ ছাড়া মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব স্থাপন, ইন্টারনেট সংযোগ, আইসিটি-সুবিধা সরবরাহের কাজও তারা করে থাকে।
বিধান কী বলে
সরকারি নিয়মে একাধিক প্রকল্পে এক কর্মকর্তাকে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হিসেবে নিয়োগের সুযোগ নেই। ২০২২ সালের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সরকারি খাতে উন্নয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন পদ্ধতিসংক্রান্ত নির্দেশিকার ২১.২৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়, ‘এক কর্মকর্তাকে কেবল একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে’। ২০১৬ সালের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায়ও একই ধরনের নির্দেশনা দেওয়া আছে।
এ ছাড়া, এক ব্যক্তিকে একাধিক প্রকল্পে দায়িত্ব না দিতে গত বছরের ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক শামীম আহম্মেদের সই করা চিঠি সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, একজন কর্মকর্তার ১০-১৪টি প্রকল্পের দায়িত্ব পালনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভয়াবহ’ বলে মন্তব্য করেছেন। চিঠিতে যেসব কর্মকর্তা একাধিক প্রকল্পে পিডি আছেন, তাঁদের অতিরিক্ত প্রকল্পের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।
কার হাতে কয়টি প্রকল্প
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রধান কার্যালয়ে বর্তমানে নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন সাতজন। এছাড়া প্রধান কার্যালয় ও অন্য জায়গা মিলিয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আছেন ১০ জন। যোগ্যতা অনুযায়ী এই ১৭ জন প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পেতে পারেন। অথচ চলমান ২৫ প্রকল্পের মধ্যে ২৪টির নেতৃত্বে আছেন ৪ নির্বাহী প্রকৌশলী। তাঁরা হলেন—মো. আবুল হাসেম সরদার, মীর মুয়াজ্জেম হুসেন, মো. মাহাবুবর রহমান ও মো. রফিকুল ইসলাম। এর মধ্যে আবুল হাসেম ১১টি প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্বে আছেন, যার আর্থিক মূল্য ৩ হাজার ৫৯১ কোটি টাকার বেশি। একই ভাবে মুয়াজ্জেম হুসেনের ৭টি প্রকল্পের ব্যয় ২৪ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা, মাহাবুবর রহমান ৪টিতে ব্যয় ৫ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা এবং রফিকুল ইসলামের ২টি ব্যয় ৫ হাজার ৬২০ কোটি। সব মিলিয়ে এই চার কর্মকর্তার হাতে আছে ৩৯ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকার কাজ।
এ ছাড়া রীতি ভেঙে একটি প্রকল্পের পরিচালক হয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ নইমুল কাদের। ওই প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ১০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অথচ অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন আরও তিনজন। তাঁরা হলেন জয়নাল আবেদীন, সুমী দেবী ও এস এম সাফিন আহমেদ। তাঁরা কোনো প্রকল্পের দায়িত্ব পাননি। বিভাগের কিছু রুটিন কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া আরও ১০ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আছেন, তাঁরাও প্রকল্পের দায়িত্ব পেতে পারতেন, কিন্তু পাননি।
এক কর্মকর্তা একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকতে পারেন কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি চার নির্বাহী প্রকৌশলী। তাঁরা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তাঁদের মন্তব্য ‘অফিস দায়িত্ব দিলে আমরা কী করব?’
অধিদপ্তরের একাধিক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জানান, এক কর্মকর্তার একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা নিয়ে সম্প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন শিক্ষাসচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক। একই সঙ্গে তিনি প্রধান প্রকৌশলীকে প্রকল্পের দায়িত্ব ছাড়ারও নির্দেশ দেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সে নির্দেশ বাস্তবায়িত হয়নি।
প্রধান প্রকৌশলীও প্রকল্পের দায়িত্বে
কাজ বণ্টনের নথিতে দেখা যায়, প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ নইমুল কাদের ‘বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। এ প্রকল্পের নকশাকারকও ছিলেন তিনি। এ প্রকল্পের অধীন খুলনার ডুমুরিয়ায় নির্মাণাধীন পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন হেলে পড়লে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। বিষয়টির এখনো কোনো সমাধান হয়নি।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কয়েক ব্যক্তি অভিযোগ করেন প্রকল্পের মূল ‘প্রোটোটাইপ ডিজাইন’ (একই রকম নির্মাণের নকশা) থাকলেও ডিজাইন ছাড়াই নিময় বহির্ভূতভাবে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এতে কাজ শুরু করতে নতুন করে প্রতিটি নির্মাণের ক্ষেত্রে নকশার অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট অঙ্কের উৎকোচ ছাড়া নতুন নকশার অনুমোদন মেলে না।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ নইমুল কাদের সোমবার তাঁর দপ্তরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। আপনার সঙ্গে কথা বলতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পারমিশন লাগবে।’
প্রকল্পে কী মধু?
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যত বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা যায়, তত বেশি অবৈধ অর্থের ভাগ-বাঁটোয়ারা পাওয়া যায়। এ জন্য কিছু কর্মকর্তা একের অধিক প্রকল্পের দায়িত্ব পেতে আগ্রহী হন। এ ছাড়া বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকলে পুরো ইইডি নিয়ন্ত্রণও সহজ হয়। সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় সবাই এদের তোয়াজ করে চলে।
খুঁটির জোর কোথায়?
ইইডি থেকে জানা যায়, সবচেয়ে বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে যে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী তাঁরা নিজেদের সরকারের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দেন। একজন নিজেকে সরকারের এক মন্ত্রীর বাল্যবন্ধু আরেকজন নিজেকে এক মন্ত্রীর ভাগনে বলে পরিচয় দেন। আর বাকি দুই নির্বাহী প্রকৌশলী মূলত যখন যে প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকেন, তাঁদের ‘আশীর্বাদেই’ কাজ করে যান।
জানতে চাইলে শিক্ষাসচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই বিষয়টির সমাধান হবে।’
রাহুল শর্মা, ঢাকা

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫টি প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তি সেখানে আছেন ১৭ জন। অথচ মাত্র ৫ জন নেতৃত্ব দিচ্ছেন সব প্রকল্পে। অন্যরা করে যাচ্ছেন রুটিন কাজ।
সরকারি বিধান অনুযায়ী, একজন সরকারি কর্মকর্তার একটির বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকার কথা নয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট অনুশাসনও রয়েছে। কিন্তু বিধিবিধান ও অনুশাসনের তোয়াক্কা না করেই চলছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই অধিদপ্তর। পিছিয়ে নেই প্রধান প্রকৌশলীও। প্রধান প্রকৌশলীর কোনো প্রকল্পের দায়িত্বে না থাকার রীতি না থাকলেও তিনিও একটি প্রকল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এক কর্মকর্তার একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকাকে ক্ষমতার অপব্যবহার বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা সরকারি নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের খুবই খারাপ দৃষ্টান্ত। এর ফলে এক দিকে সুষ্ঠুভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অন্য দিকে অর্থের অপচয় হওয়ার সুযোগ থাকে। একই সঙ্গে আশঙ্কা থাকে অনিয়ম-দুর্নীতির।’
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ভবনগুলোর সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কার এবং আসবাবপত্র সরবরাহের কাজ করে থাকে। এ ছাড়া মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব স্থাপন, ইন্টারনেট সংযোগ, আইসিটি-সুবিধা সরবরাহের কাজও তারা করে থাকে।
বিধান কী বলে
সরকারি নিয়মে একাধিক প্রকল্পে এক কর্মকর্তাকে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হিসেবে নিয়োগের সুযোগ নেই। ২০২২ সালের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সরকারি খাতে উন্নয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন পদ্ধতিসংক্রান্ত নির্দেশিকার ২১.২৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়, ‘এক কর্মকর্তাকে কেবল একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে’। ২০১৬ সালের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায়ও একই ধরনের নির্দেশনা দেওয়া আছে।
এ ছাড়া, এক ব্যক্তিকে একাধিক প্রকল্পে দায়িত্ব না দিতে গত বছরের ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক শামীম আহম্মেদের সই করা চিঠি সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, একজন কর্মকর্তার ১০-১৪টি প্রকল্পের দায়িত্ব পালনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভয়াবহ’ বলে মন্তব্য করেছেন। চিঠিতে যেসব কর্মকর্তা একাধিক প্রকল্পে পিডি আছেন, তাঁদের অতিরিক্ত প্রকল্পের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।
কার হাতে কয়টি প্রকল্প
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রধান কার্যালয়ে বর্তমানে নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন সাতজন। এছাড়া প্রধান কার্যালয় ও অন্য জায়গা মিলিয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আছেন ১০ জন। যোগ্যতা অনুযায়ী এই ১৭ জন প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পেতে পারেন। অথচ চলমান ২৫ প্রকল্পের মধ্যে ২৪টির নেতৃত্বে আছেন ৪ নির্বাহী প্রকৌশলী। তাঁরা হলেন—মো. আবুল হাসেম সরদার, মীর মুয়াজ্জেম হুসেন, মো. মাহাবুবর রহমান ও মো. রফিকুল ইসলাম। এর মধ্যে আবুল হাসেম ১১টি প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্বে আছেন, যার আর্থিক মূল্য ৩ হাজার ৫৯১ কোটি টাকার বেশি। একই ভাবে মুয়াজ্জেম হুসেনের ৭টি প্রকল্পের ব্যয় ২৪ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা, মাহাবুবর রহমান ৪টিতে ব্যয় ৫ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা এবং রফিকুল ইসলামের ২টি ব্যয় ৫ হাজার ৬২০ কোটি। সব মিলিয়ে এই চার কর্মকর্তার হাতে আছে ৩৯ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকার কাজ।
এ ছাড়া রীতি ভেঙে একটি প্রকল্পের পরিচালক হয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ নইমুল কাদের। ওই প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ১০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অথচ অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন আরও তিনজন। তাঁরা হলেন জয়নাল আবেদীন, সুমী দেবী ও এস এম সাফিন আহমেদ। তাঁরা কোনো প্রকল্পের দায়িত্ব পাননি। বিভাগের কিছু রুটিন কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া আরও ১০ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আছেন, তাঁরাও প্রকল্পের দায়িত্ব পেতে পারতেন, কিন্তু পাননি।
এক কর্মকর্তা একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকতে পারেন কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি চার নির্বাহী প্রকৌশলী। তাঁরা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তাঁদের মন্তব্য ‘অফিস দায়িত্ব দিলে আমরা কী করব?’
অধিদপ্তরের একাধিক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জানান, এক কর্মকর্তার একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা নিয়ে সম্প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন শিক্ষাসচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক। একই সঙ্গে তিনি প্রধান প্রকৌশলীকে প্রকল্পের দায়িত্ব ছাড়ারও নির্দেশ দেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সে নির্দেশ বাস্তবায়িত হয়নি।
প্রধান প্রকৌশলীও প্রকল্পের দায়িত্বে
কাজ বণ্টনের নথিতে দেখা যায়, প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ নইমুল কাদের ‘বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। এ প্রকল্পের নকশাকারকও ছিলেন তিনি। এ প্রকল্পের অধীন খুলনার ডুমুরিয়ায় নির্মাণাধীন পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন হেলে পড়লে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। বিষয়টির এখনো কোনো সমাধান হয়নি।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কয়েক ব্যক্তি অভিযোগ করেন প্রকল্পের মূল ‘প্রোটোটাইপ ডিজাইন’ (একই রকম নির্মাণের নকশা) থাকলেও ডিজাইন ছাড়াই নিময় বহির্ভূতভাবে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এতে কাজ শুরু করতে নতুন করে প্রতিটি নির্মাণের ক্ষেত্রে নকশার অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট অঙ্কের উৎকোচ ছাড়া নতুন নকশার অনুমোদন মেলে না।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ নইমুল কাদের সোমবার তাঁর দপ্তরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। আপনার সঙ্গে কথা বলতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পারমিশন লাগবে।’
প্রকল্পে কী মধু?
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যত বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা যায়, তত বেশি অবৈধ অর্থের ভাগ-বাঁটোয়ারা পাওয়া যায়। এ জন্য কিছু কর্মকর্তা একের অধিক প্রকল্পের দায়িত্ব পেতে আগ্রহী হন। এ ছাড়া বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকলে পুরো ইইডি নিয়ন্ত্রণও সহজ হয়। সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় সবাই এদের তোয়াজ করে চলে।
খুঁটির জোর কোথায়?
ইইডি থেকে জানা যায়, সবচেয়ে বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে যে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী তাঁরা নিজেদের সরকারের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দেন। একজন নিজেকে সরকারের এক মন্ত্রীর বাল্যবন্ধু আরেকজন নিজেকে এক মন্ত্রীর ভাগনে বলে পরিচয় দেন। আর বাকি দুই নির্বাহী প্রকৌশলী মূলত যখন যে প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকেন, তাঁদের ‘আশীর্বাদেই’ কাজ করে যান।
জানতে চাইলে শিক্ষাসচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই বিষয়টির সমাধান হবে।’

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫টি প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তি সেখানে আছেন ১৭ জন। অথচ মাত্র ৫ জন নেতৃত্ব দিচ্ছেন সব প্রকল্পে। অন্যরা করে যাচ্ছেন রুটিন কাজ।
সরকারি বিধান অনুযায়ী, একজন সরকারি কর্মকর্তার একটির বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকার কথা নয়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট অনুশাসনও রয়েছে। কিন্তু বিধিবিধান ও অনুশাসনের তোয়াক্কা না করেই চলছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এই অধিদপ্তর। পিছিয়ে নেই প্রধান প্রকৌশলীও। প্রধান প্রকৌশলীর কোনো প্রকল্পের দায়িত্বে না থাকার রীতি না থাকলেও তিনিও একটি প্রকল্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এক কর্মকর্তার একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকাকে ক্ষমতার অপব্যবহার বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা সরকারি নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের খুবই খারাপ দৃষ্টান্ত। এর ফলে এক দিকে সুষ্ঠুভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, অন্য দিকে অর্থের অপচয় হওয়ার সুযোগ থাকে। একই সঙ্গে আশঙ্কা থাকে অনিয়ম-দুর্নীতির।’
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, নতুন ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ভবনগুলোর সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত ও সংস্কার এবং আসবাবপত্র সরবরাহের কাজ করে থাকে। এ ছাড়া মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, আইসিটি ল্যাব স্থাপন, ইন্টারনেট সংযোগ, আইসিটি-সুবিধা সরবরাহের কাজও তারা করে থাকে।
বিধান কী বলে
সরকারি নিয়মে একাধিক প্রকল্পে এক কর্মকর্তাকে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) হিসেবে নিয়োগের সুযোগ নেই। ২০২২ সালের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সরকারি খাতে উন্নয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন পদ্ধতিসংক্রান্ত নির্দেশিকার ২১.২৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়, ‘এক কর্মকর্তাকে কেবল একটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যাবে’। ২০১৬ সালের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায়ও একই ধরনের নির্দেশনা দেওয়া আছে।
এ ছাড়া, এক ব্যক্তিকে একাধিক প্রকল্পে দায়িত্ব না দিতে গত বছরের ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক শামীম আহম্মেদের সই করা চিঠি সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, একজন কর্মকর্তার ১০-১৪টি প্রকল্পের দায়িত্ব পালনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভয়াবহ’ বলে মন্তব্য করেছেন। চিঠিতে যেসব কর্মকর্তা একাধিক প্রকল্পে পিডি আছেন, তাঁদের অতিরিক্ত প্রকল্পের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।
কার হাতে কয়টি প্রকল্প
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রধান কার্যালয়ে বর্তমানে নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন সাতজন। এছাড়া প্রধান কার্যালয় ও অন্য জায়গা মিলিয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আছেন ১০ জন। যোগ্যতা অনুযায়ী এই ১৭ জন প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পেতে পারেন। অথচ চলমান ২৫ প্রকল্পের মধ্যে ২৪টির নেতৃত্বে আছেন ৪ নির্বাহী প্রকৌশলী। তাঁরা হলেন—মো. আবুল হাসেম সরদার, মীর মুয়াজ্জেম হুসেন, মো. মাহাবুবর রহমান ও মো. রফিকুল ইসলাম। এর মধ্যে আবুল হাসেম ১১টি প্রকল্পের পরিচালকের দায়িত্বে আছেন, যার আর্থিক মূল্য ৩ হাজার ৫৯১ কোটি টাকার বেশি। একই ভাবে মুয়াজ্জেম হুসেনের ৭টি প্রকল্পের ব্যয় ২৪ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা, মাহাবুবর রহমান ৪টিতে ব্যয় ৫ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা এবং রফিকুল ইসলামের ২টি ব্যয় ৫ হাজার ৬২০ কোটি। সব মিলিয়ে এই চার কর্মকর্তার হাতে আছে ৩৯ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকার কাজ।
এ ছাড়া রীতি ভেঙে একটি প্রকল্পের পরিচালক হয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ নইমুল কাদের। ওই প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ১০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অথচ অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী আছেন আরও তিনজন। তাঁরা হলেন জয়নাল আবেদীন, সুমী দেবী ও এস এম সাফিন আহমেদ। তাঁরা কোনো প্রকল্পের দায়িত্ব পাননি। বিভাগের কিছু রুটিন কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়া আরও ১০ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আছেন, তাঁরাও প্রকল্পের দায়িত্ব পেতে পারতেন, কিন্তু পাননি।
এক কর্মকর্তা একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকতে পারেন কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি চার নির্বাহী প্রকৌশলী। তাঁরা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তাঁদের মন্তব্য ‘অফিস দায়িত্ব দিলে আমরা কী করব?’
অধিদপ্তরের একাধিক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জানান, এক কর্মকর্তার একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা নিয়ে সম্প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন শিক্ষাসচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক। একই সঙ্গে তিনি প্রধান প্রকৌশলীকে প্রকল্পের দায়িত্ব ছাড়ারও নির্দেশ দেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সে নির্দেশ বাস্তবায়িত হয়নি।
প্রধান প্রকৌশলীও প্রকল্পের দায়িত্বে
কাজ বণ্টনের নথিতে দেখা যায়, প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ নইমুল কাদের ‘বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক। এ প্রকল্পের নকশাকারকও ছিলেন তিনি। এ প্রকল্পের অধীন খুলনার ডুমুরিয়ায় নির্মাণাধীন পল্লীশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন হেলে পড়লে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। বিষয়টির এখনো কোনো সমাধান হয়নি।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কয়েক ব্যক্তি অভিযোগ করেন প্রকল্পের মূল ‘প্রোটোটাইপ ডিজাইন’ (একই রকম নির্মাণের নকশা) থাকলেও ডিজাইন ছাড়াই নিময় বহির্ভূতভাবে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এতে কাজ শুরু করতে নতুন করে প্রতিটি নির্মাণের ক্ষেত্রে নকশার অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু নির্দিষ্ট অঙ্কের উৎকোচ ছাড়া নতুন নকশার অনুমোদন মেলে না।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান প্রকৌশলী শাহ্ নইমুল কাদের সোমবার তাঁর দপ্তরে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না। আপনার সঙ্গে কথা বলতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পারমিশন লাগবে।’
প্রকল্পে কী মধু?
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যত বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা যায়, তত বেশি অবৈধ অর্থের ভাগ-বাঁটোয়ারা পাওয়া যায়। এ জন্য কিছু কর্মকর্তা একের অধিক প্রকল্পের দায়িত্ব পেতে আগ্রহী হন। এ ছাড়া বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে থাকলে পুরো ইইডি নিয়ন্ত্রণও সহজ হয়। সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় সবাই এদের তোয়াজ করে চলে।
খুঁটির জোর কোথায়?
ইইডি থেকে জানা যায়, সবচেয়ে বেশি প্রকল্পের দায়িত্বে যে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী তাঁরা নিজেদের সরকারের দুই প্রভাবশালী মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দেন। একজন নিজেকে সরকারের এক মন্ত্রীর বাল্যবন্ধু আরেকজন নিজেকে এক মন্ত্রীর ভাগনে বলে পরিচয় দেন। আর বাকি দুই নির্বাহী প্রকৌশলী মূলত যখন যে প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকেন, তাঁদের ‘আশীর্বাদেই’ কাজ করে যান।
জানতে চাইলে শিক্ষাসচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই বিষয়টির সমাধান হবে।’

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫টি প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তি সেখানে আছেন ১৭ জন। অথচ মাত্র ৫ জন নেতৃত্ব দিচ্ছেন সব প্রকল্পে। অন্যরা করে যাচ্ছেন রুটিন কাজ...
১১ অক্টোবর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫টি প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তি সেখানে আছেন ১৭ জন। অথচ মাত্র ৫ জন নেতৃত্ব দিচ্ছেন সব প্রকল্পে। অন্যরা করে যাচ্ছেন রুটিন কাজ...
১১ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫টি প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তি সেখানে আছেন ১৭ জন। অথচ মাত্র ৫ জন নেতৃত্ব দিচ্ছেন সব প্রকল্পে। অন্যরা করে যাচ্ছেন রুটিন কাজ...
১১ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫টি প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার মতো যোগ্য ব্যক্তি সেখানে আছেন ১৭ জন। অথচ মাত্র ৫ জন নেতৃত্ব দিচ্ছেন সব প্রকল্পে। অন্যরা করে যাচ্ছেন রুটিন কাজ...
১১ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫