Ajker Patrika

অনাবাদি জমিতে ফলছে সোনা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২১, ২১: ৩০
অনাবাদি জমিতে ফলছে সোনা

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে যুগ যুগ ধরে অনাবাদি ছিল শত শত বিঘা জমি। সেই অনাবাদি জমি (কাশবন) পরিচর্যা করে ফসল ফলিয়েছেন রেজাউল হায়াত ওরফে শীপু খালাসী (৪২) নামে এক ব্যক্তি। সরকারি চাকরিজীবী হলেও শীপু নিজেকে আদর্শ কৃষক হিসেবে পরিচয় দেন। চরের সেই নিষ্ফলা জমিতে তিনি আবাদ করেছেন ধান, সরিষা, মসুর, কালাই ও ভুট্টার মতো ফসল।

চরভদ্রাসন উপজেলা বিএস ডাঙ্গী গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শফিউদ্দিন খালাসির ছিলে শীপু তিনি জেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। তিনি বলেন, ‘ছোট বেলা থেকেই গ্রামের পাশে পদ্মার চরের দেখে আসছি (কাশবন)। সেখানে হয় না কোনো ফসল। আমি নিজ চেষ্টায় সেই অনাবাদি জমিতে সরকারি চাকরির পাশাপাশি অবসর সময়টুকু পরিচর্যা করে কৃষি উৎপাদনমুখী করে তুলেছি।’

শীপু জানান, দিনমজুরদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিনি পদ্মার চরের ৮০ একর অনাবাদি জমিতে ধান, সরিষা, মসুর ও কালাইয়ের চাষ শুরু করেছেন। ফরিদপুর বিএডিসির ডাল ও তৈলবীজ খামারের উপপরিচালকের পরামর্শে এবং “এক খণ্ড জমিও অনাবাদি থাকবে না” প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি পদ্মার চরের কাশবন ভেঙে কৃষি কাজ করছেন।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ও ফরিদপুর বিএসডিসির উপপরিচালকের পরামর্শে ২০২০ সাল থেকে কাশবন উপড়ে ফেলে নিষ্ফলা জমিগুলো আবাদযোগ্য করে গড়ে তুলেছি। প্রথমে ঘাস কাটার মেশিন দিয়ে বিশাল কাশবন জঙ্গলমুক্ত করা হয়েছে। পরে বড় ট্রাক্টর লাগিয়ে পরপর চার দফায় চাষ দিয়ে জমিগুলো আবাদ যোগ্য করা হয়েছে। বনের জঙ্গল পরিষ্কার ও ৮০ একর জমি আবাদযোগ্য করে গড়ে তুলতে প্রায় ৯ মাস সময় লেগেছে। এতে বেশ টাকা খরচও হয়েছে, জানান শীপু।

সরেজমিনে দেখা যায়, এ পর্যন্ত ২৫০ বিঘা জমিতে কালাই, ১১০ বিঘায় মসুর, ৫০ বিঘায় সরিষা ও ২৫ বিঘায় ধান চাষ হয়েছে।

শীপু জানান, ইতিমধ্যে একটি মৌসুমের ফসল ঘরে তুলেছেন এবং সম্প্রতি আরেকটি ফসল তোলা শুরু হয়েছে। এ দুটো ফসল মিলে তাঁর খরচের টাকা প্রায় উঠে এসেছে। তিনি এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ লাখ টাকার তিল বীজ, ৪ লাখ টাকার কালাই, সোয়া ২ লাখ টাকার মসুর ও ২ লাখ টাকার ধান বিক্রি করেছেন। খেতের পাশে তিনি ‘তাজ অ্যাগ্রো ফার্ম’ নামে একটি গরু ও ছাগলের ফার্ম গড়েছেন।

এ বিষয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতুল সরকার বলেন, আমাদের সরকার প্রধানের নির্দেশনা রয়েছে এক টুকরো জমি যেন অনাবাদি না থাকে। শীপু নিজ উদ্যোগে পদ্মার চরে পড়ে থাকা জমি পরিচর্যা করে কৃষি উৎপাদনমুখী করেছেন। তাঁকে ধন্যবাদ। পাশাপাশি সরকারি অনাবাদি পড়ে থাকা জমিগুলো কীভাবে চাষযোগ্য করা যায়, সে বিষয়ে কৃষি বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

ডিসি বলেন, জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পদ্মা, মধুমতী ও আড়িয়াল খাঁর চরাঞ্চল। চেষ্টা করব এই অনাবাদি জমিও আবাদযোগ্য করার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

মির্জা ফখরুলের কাছে অভিযোগ, ১৬ দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁও থানার ওসি বদলি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত