Ajker Patrika

ইউটিউব ও চাষবাস

সম্পাদকীয়
ইউটিউব ও চাষবাস

ফরিদপুরের আলীপুর থেকে ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া অনেক দূর। এই আলীপুরে বসেই হাসিবুল হাসান রন্টি দেশ দুটি থেকে ফরমাশ করেছেন ‘ব্ল্যাক রাইস’-এর বীজ। ব্ল্যাক রাইস বা কালো ধান হলো ধানের একজাতীয় বিশেষ ধরনের প্রজাতি। ঠিক ধরেছেন, অনলাইনে ফরমাশ করেছেন তিনি। আর এই অনলাইনের মাধ্যমেই জেনেছেন ব্ল্যাক রাইস সম্পর্কে। শুধু বীজ ফরমাশ করে বসে থাকেননি রন্টি। রীতিমতো চাষ করে সফল হয়েছেন তরুণ এই কৃষি উদ্যোক্তা। চাষবাসের পুরো প্রক্রিয়া তিনি শিখেছেন অনলাইনমাধ্যম ইউটিউবে।

নানা ধরনের নেতিবাচক খবর পড়ে যখন পাঠকদের হতোদ্যম অবস্থা, তখন মন ভালো করা এ খবরটি প্রকাশিত হয়েছে আজকের পত্রিকার বরিশাল সংস্করণে। নতুন জাতের এই ধান আবাদে সফল হওয়ায় রন্টিকে অভিনন্দন। তাঁকে বাহবাও দিতে হয় এই কারণে যে তিনি ইউটিউবের মতো একটি মাধ্যমকে কাজে লাগিয়েছেন। ইউটিউবে প্রথম তিনি ব্ল্যাক রাইস চাষাবাদের প্রক্রিয়া দেখে বিস্তারিত শিখে নেন। তারপর দুই হাজার টাকা কেজি দরে দুই কেজি ব্ল্যাক রাইস ও দুই কেজি গোল্ডেন ব্ল্যাক রাইসের বীজ কেনেন। এরপর পরীক্ষামূলকভাবে ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নে এর চাষ শুরু করেন এবং প্রথমবারই সফল হন।

ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, রন্টির ব্ল্যাক রাইস খেতের ফলন খুবই ভালো হয়েছে। অন্য কৃষকদের হাতে পৌঁছে দিতে রন্টির কাছ থেকেই ব্ল্যাক রাইসের বীজ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এতে রন্টি নিজে যেমন উপকৃত হবেন, তেমনি অন্য কৃষকদের কাছেও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।

এখন আসা যাক একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের উপকারিতা না অপকারিতা বেশি, এ নিয়ে বাহাস করা যেতেই পারে।একটা ব্যাপারে কেউ দ্বিমত পোষণ করবেন না, তা হলো—চাইলে কোনো কিছুর ‘মন্দ’টা বাদ দিয়ে ‘ভালো’টা নেওয়া যায়; অর্থাৎ অপকারিতাকে অগ্রাহ্য করে উপকারিতাকে গ্রহণ করা সম্ভব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতি ব্যবহারে নানা রকম ক্ষতিকর কথা যতটা আলোচনায় আসে, ঠিক ততটা আলোচনা হয় না এই মাধ্যম ব্যবহার করে কেউ ইতিবাচক কিছু করতে পারলে।

অন্তর্জালের সহজলভ্যতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। এই মাধ্যমগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ইউটিউব।স্বাভাবিকভাবে অনেকের ধারণা থাকতে পারে ইউটিউবে নাটক, সিনেমা, গান এবং অন্যান্য কনটেন্ট শুধু দর্শককে বিনোদন দেওয়ার জন্যই আপলোড করা হয়। কিন্তু এটাও তো স্বীকার করে নিতে হবে যে এই মাধ্যমে এমন অনুষ্ঠানও দেখা সম্ভব, যা থেকে অন্য দেশের সাফল্যের ঘটনাও জানা যায়। অপশন অনেক। কে কোনটা বেছে নিচ্ছে, সেটা ব্যক্তির ওপরই নির্ভর করে। তাই ইউটিউব বা অন্যান্য সামাজিকমাধ্যমকে দুয়ো দেওয়ার আগে নিজেরা ভালো-মন্দের দ্বন্দ্বের নির্বাচন করে ফেলতে পারেন। ঠিক রন্টির মতো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত