Ajker Patrika

ভাঙনের মুখে বিদ্যালয় মসজিদ, ঘরবাড়ি

মো. মাসুম, টঙ্গিবাড়ী (মুন্সিগঞ্জ)
আপডেট : ২৪ জুন ২০২২, ১৩: ১০
ভাঙনের মুখে বিদ্যালয় মসজিদ, ঘরবাড়ি

মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার ইছামতী নদীর (ডহরি তালতলা খাল) তীরবর্তী খলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ ও কৃষিজমিসহ দুই শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকার বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় স্কুলটি নদীগর্ভে বিলীনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার খিদিরপাড়া ইউনিয়নের খলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নিচ দিয়ে মাটি সরে গিয়ে এই গর্তের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। স্কুলের পাশে ফসলসহ আবাদি জমি ভেঙে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। এ ছাড়া ভাঙনের দুই মিটার দূরে রয়েছে একটি মসজিদ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত বছর ভাঙন দেখা দিলে নদীতে ৪ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। স্কুলের সামনে একটি ছোট গর্ত ছিল, যেটা ভরাট করে দেওয়ার কথা ছিল স্কুল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু তাদের গাফিলতিতে সেই গর্তটি ভরাট না করায় এখন বড় আকার ধারণ করেছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীর ভাঙনে মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে। বর্ষার পানির স্রোতের সঙ্গে যোগ হয়েছে বালু বহনকারী বাল্কহেডের ঢেউ। এবার নদী স্কুলটির একেবারে কাছে চলে এসেছে। এ অবস্থায় যদি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে যেকোনো সময় স্কুলটি নদীতে বিলীন হতে পারে। স্কুল, মসজিদ, ফসলি জমি ও বসতভিটা রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তা চান এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দা ফারুক বলেন, এই এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ২০০ পরিবারের বসতভিটা, ঘরবাড়ি ও স্কুল-মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঝুঁকির মুখে রয়েছে। যেকোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে।

খলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়টি ১৯৩৫ সালে স্থাপিত। এরপর নতুন ভবনটি নির্মাণ হয় ১৯৮৯ সালে। ২০০৪-০৫ অর্থবছরে বিদ্যালয় ভবনের পাশে আরেকটি টিনশেড ভবন নির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয়ের ভবন থেকে নদী এখন ৪ গজ দূরে অবস্থান করছে। যেকোনো সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে। স্কুলে ২৮৯ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। প্রায় শত বছরের পুরোনো এই স্কুলটি রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া খুবই জরুরি। নদীতে স্বাভাবিকভাবে তেমন ঢেউ না থাকলেও বালু বহনকারী বাল্কহেড চলাচলের ফলে ঢেউয়ের সৃষ্টি করে, ফলে ভাঙনের মাত্রা বেড়ে যায়।

মাহমুদা আক্তার আরও বলেন, গত বছর ভাঙনের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় ৪ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে আবার ভাঙন দেখা দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল বলেন, গত বছর স্কুলের সামনে বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মুন্সিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে গত বছর নদীভাঙন রোধে ৪ হাজার জিও ব্যাগ ফেলেছি। স্কুল মাঠে একটি গর্ত ছিল, যেটা ভরাট করার কথা ছিল স্কুল কর্তৃপক্ষের। সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত