Ajker Patrika

প্রবীণদের বাকের ভাই, নবীনদের নূর

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০: ৫৪
প্রবীণদের বাকের ভাই, নবীনদের নূর

শীত জেঁকে বসেছে উত্তরের জেলা নীলফামারীতে। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলছে না। আবার বিকেল থেকেই শীতে কাবু হয়ে পড়ছে মানুষ। তবু থেমে নেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারকাজ। প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা শীত উপেক্ষা করেই ভোটের প্রচারে ব্যস্ত। তীব্র শীতের মধ্যেও শনিবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের যাদুরহাটে পথসভা করছিলেন নীলফামারী-২ আসনে নৌকার প্রার্থী আসাদুজ্জামান নূর। তাঁর বক্তব্য শুনছিলেন হাজারখানেক নারী-পুরুষ ভোটার। শ্রোতাদের মধ্যে প্রবীণ কারও কারও তখন বুঝি মনে পড়ে যাচ্ছিল ‘নূরলদীনের সারাজীবন’ কিংবা ‘কোথাও কেউ নেই’-এর বাকের ভাইয়ের কথা।

যাদুরহাটেই কথা হয় ষাটোর্ধ্ব বয়সী আবুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে টেলিভিশনে প্রচারিত জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক “কোথাও কেউ নেই”-এর বাকের ভাই আমার প্রিয় মানুষ। ২০০১ সালের নির্বাচন থেকে এখন পর্যন্ত তাঁকে ভোট দিয়ে আসছি। এবারও বাকের ভাইকে ভোট দেব। তিনি আমাদের অহংকার।’

সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ওই পথসভায় বলছিলেন, দিনের বেলায় গ্রামে প্রচার করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। বেশির ভাগ ভোটারকে বাড়িতে পাওয়া যাচ্ছে না। এর কারণ শেখ হাসিনার দেওয়া উত্তরা ইপিজেড। বর্তমানে এই ইপিজেডে এ অঞ্চলের ৫০ হাজার নারী-পুরুষ কাজ করছেন। দিনের বেলায় কর্মস্থলে থাকায় বাড়িতে গিয়ে তাঁদের সাক্ষাৎ মিলছে না। নূর বলেন, এই ইপিজেড বিএনপি ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দিয়েছিল লোকসানের অজুহাতে। পরে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে তা আবার চালু করেন। ফলে উত্তরাঞ্চলে আশ্বিন-কার্তিক মাসের মঙ্গা এখন আর নেই। এখন এ এলাকার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী। প্রত্যন্ত গ্রামেও আর চোখে পড়ে না কুঁড়েঘর।

নীলফামারী-২ আসনে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বলেন, ‘দলমত-নির্বিশেষে সকলেই আমাকে এবারও এমপি দেখতে চান।’ এর প্রমাণ হিসেবে তিনি পাশে থাকা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম শাহকে দেখান, যিনি সদর উপজেলার সোনারায় ইউনিয়ন বিএনপিরও সভাপতি। 

নীলফামারী জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহিদ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসাদুজ্জামান নূরের নিরলস ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রী এ উপজেলার প্রায় ৪ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠা করেছেন অক্সিজেন সরবরাহকারী ২৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতাল। সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউট, মেডিকেল কলেজ, ম্যাটস ইনস্টিটিউটের বহুতল ভবন নির্মাণসহ আধুনিকায়ন করেছেন ডায়াবেটিক হাসপাতাল। এই আসনে আধুনিক নীলফামারীর রূপকারখ্যাত বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান নূরকে টানা পঞ্চমবারের মতো মনোনয়ন দিয়েছেন আমাদের নেত্রী। নীলফামারীর মানুষ এবারও নৌকায় ভোট দিয়ে পঞ্চমবারের মতো নূরকে সংসদে পাঠাবেন।’ 

আসাদুজ্জামান নূর ২০০১ সালে প্রথম আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে তিনি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
রাস্তার মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকানগুলোতে চলছে চা পানের সঙ্গে নানা বয়সী ভোটারদের আড্ডা। সেই সব আড্ডা-আলোচনার কেন্দ্রে আছেন আসাদুজ্জামান নূর। আলোচনায় নতুন ভোটারদের কাছে নূর ভাইয়ের নৌকা আর প্রবীণদের কাছে বাকের ভাইয়ের নৌকা হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।

দারোয়ানী বস্ত্রকল মোড়ে কলেজছাত্র আশফাক আহমেদ মিশু জানান, এবার তিনি প্রথমবার ভোট দেবেন। তিনি বলেন, ‘আসাদুজ্জামান নূর আমার প্রিয় মানুষের মধ্যে একজন। তাই জীবনের প্রথম ভোটটি তাঁকেই দিতে চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত