Ajker Patrika

বিকল্প সড়ক নির্মাণে অনিয়ম

বাসাইল প্রতিনিধি
বিকল্প সড়ক নির্মাণে অনিয়ম

বাসাইলে একটি নির্মাণাধীন সেতুর পাশে বিকল্প সড়ক (ডাইভারশন) নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ১০-১২ গ্রামের মানুষ ও যান চলাচলে দুর্ভোগে পড়েছে। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, উপজেলার বাসাইল মহিলা কলেজ-কাঞ্চনপুর ইউপি সড়কের ছোনকাপাড়া এলাকায় নির্মাণাধীন সেতুর পাশের বিকল্প সড়কের কাজ এখনো শেষ হয়নি। মূল সড়কের মাটি কেটে বিকল্প রাস্তায় ফেলা হয়েছে। করা হয়নি নির্ধারিত উচ্চতা ও ইট সলিং। এ ছাড়া ব্যবহৃত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুল জলিল সরকারের (জেভি) বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।

উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে বন্যার পানির তোড়ে ছোনকাপাড়ার এই সেতুটি ভেঙে যায়। পরে ২০২১-২২ অর্থবছরে ওই স্থানে বিশ্বব্যাংক ও জিওবির অর্থায়নে ৩ কোটি ৭২ লাখ ২ হাজার ৯৬৩ টাকা ব্যয়ে ৩৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে সেতুর আগে যাতায়াত ব্যবস্থা সচল রাখতে ১০০ মিটার বিকল্প সড়ক নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এর জন্য নির্দিষ্ট ব্যয়ও ধরা হয়। গোড়ায় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১২ ফুট প্রস্থ ধরা হয়েছে। এ কাজের জন্য ৪০ হাজার ঘনফুট মাটিও বরাদ্দ দেওয়া হয়। মাটির কাজে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ২৫৯ টাকা, ৩৩০ ফুট দীর্ঘ ও ১০ ফুট প্রস্থ ইট সলিং বাবদ ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮৭৮ টাকা এবং এইচবিবি বাবদ ২ লাখ ১৮ হাজার ২৮৩ টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিকল্প সড়কের কাজ অসম্পূর্ণ রেখে সেতু নির্মাণ শুরু করেছে। ফলে ওই সড়কে যাতায়াতকারী ১০-১২টি গ্রামের মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ভোগান্তিতে রয়েছে এ সড়কে চলাচলকারী যানবাহন।

অটোচালক মো. রাজীব মিয়া বলেন, ‘রাস্তায় তো মাটিই ফেলেনি। ইটের রাস্তা করবে বলে শুনেছি, কিন্তু মাটির রাস্তাই তো ঠিকমতো বানাইল না। বিকল্প রাস্তায় গাড়ি ধাক্কাইয়া উঠাইতে হয়।’

 কাঞ্চনপুর পশ্চিমপাড়ার জাকির বলেন, ঠিকাদার মূল রাস্তার মাটি কেটে নিয়ে বিকল্প রাস্তায় ফেলেছে। ইটের সলিংয়ের কোনো খবর নেই। এসব অভিযোগের কথা বললে ঠিকাদার অশালীন আচরণ করেন।

স্থানীয় কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন আলাল বলেন, সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধনের পরই নামফলক ভেঙে পড়েছে। ঠিকাদারের কাজের অবহেলায় এর চেয়ে বড় প্রমাণ আর কী হতে পারে।

কৃষক মো. মুস্তাকিন মিয়া বলেন, ‘আমি এক টুকরো বোরো আবাদ করে সারা বছরের খাবার জোটাই। রাস্তার জন্য এবার বোরো আবাদ করতে পারিনি। এই জমির ওপর দিয়ে রাস্তা করার সময় ঠিকাদার কিছু ক্ষতিপূরণ দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু এখন বিভিন্ন টালবাহানা করছেন।’

উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল জলিল বলেন, বিকল্প রাস্তায় বালুমাটি ফেলে ইটের সলিং করার কথা রয়েছে। কাজ শুরুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। 
ঠিকাদারি আব্দুল জলিল সরকার বলেন, বিকল্প রাস্তার জন্য ১০০ মিটার ধরা হয়েছিল। সেখানে ১৮০ মিটার তৈরি করতে হয়েছে। এ জন্যই বিলম্ব হচ্ছে। 

এ বিষয়ে সাংসদ জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, নিম্নমানের কাজ করার সুযোগ নেই। নিম্নমানের কাজ করলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত