Ajker Patrika

ভিড়ের মধ্যেও আনন্দ

এ এইচ এম শামীমুজ্জামান, খুলনা
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২২, ১২: ০৮
ভিড়ের মধ্যেও আনন্দ

গত দুই বছরের চেয়ে এবার করোনার প্রকোপ অনেকটাই কম। নেই স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতা। আর তারই প্রভাব পড়েছে এবারের ঈদবাজারে। বিক্রেতারা পার করছেন ব্যস্ত সময়, হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় সামাল দিতে। পছন্দের পোশাক, জুতা ও স্যান্ডেল কিনতে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে ছুটছেন ক্রেতারা। মহামারির ধাক্কা কিছুটা কাটিয়ে উৎসবের আগমনী বার্তাই যেন দিচ্ছে খুলনা নগরীর বিভিন্ন শপিং মল, বিপণিবিতানে বেচাকেনার এমন দৃশ্য।

কয়েক দিন ধরে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নগরীর শিববাড়ি মোড়ের পোশাকের বিভিন্ন শোরুম, নিউমার্কেট, ডাকবাংলো শহীদ সোহরাওয়ার্দী মার্কেট, এস এম এ রব শপিং কমপ্লেক্স, খুলনা শপিং কমপ্লেক্স, খুলনা বিপণিবিতান, কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, জব্বার মার্কেট ও নিক্সন মার্কেটে ঘুরে দেখা যায় ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।

বরাবরের মতো এবারও ঈদের বাজারে শার্ট, জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট, টি-শার্ট, পায়জামা, পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস ও শাড়ির চাহিদা বেশি। খুলনা শপিং কমপ্লেক্সের অ্যারাবিয়ান থ্রি-পিস কর্নারের মালিক এম ডি আশিকুর রহমান জানালেন, ১৫ রমজান থেকে বিক্রি বেড়েছে। তাঁর দোকানে চাহিদা বেশি সারারা, গারারা, পাকিস্তানি নূর ও তায়াক্কাল থ্রি-পিসের।

একই মার্কেটের বিসমিল্লাহ ফেব্রিকসের মালিক আবুল বাসার বলেন, করোনা-পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এবার ক্রেতা অনেক বেশি, বেচাকেনাও বেশ ভালো। এদিকে নগরীর ডাকবাংলো সুপার মার্কেট বাচ্চাদের কাপড়ের মার্কেট বলে পরিচিত। সেখানে সাজানো হয়েছে বাচ্চাদের বাহারি সব পোশাক।

নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও পাবনা এমপোরিয়ামের মালিক আমিরুল ইসলাম আলিফ জানান, দোলা কাতান, সামার কাতান, মহিসুর সিল্ক, সালতানাত কাতান ও ফারিয়া নামে শাড়ির জগতে এবার যুক্ত হয়েছে নতুন সব চমক। মানভেদে এগুলোর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার থেকে শুরু করে ১৮ হাজার পর্যন্ত।

খুলনা নিউমার্কেটে কথা হয় মিজানুর রহমান নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। দুই বছর পর এবার পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন। করোনার শঙ্কা না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বের হওয়ার কথা জানালেন মিজানুর। নতুন পোশাকের সঙ্গে এক জোড়া স্যান্ডেল বা জুতা না হলেই নয়। তাই পছন্দের পোশাকের সঙ্গে মিল করে চলছে জুতা কেনাও। নগরীর জুতার দোকানগুলোয় বেড়েছে ক্রেতাদের আনাগোনা।

ডাকবাংলো মোড় নগরীর জুতা ও স্যান্ডেলের মার্কেট বলে ব্যাপক পরিচিত। মুরাদ হোসেন নামের সেখানকার এক দোকানের ম্যানেজার জানান, সারা বছরই টুকটাক বিক্রি হয়। গত দুই বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বেচাকেনা একেবারেই ছিল না। রমজানের শুরুতে ক্রেতার দেখা মেলেনি। তবে ১৫ রমজান পার হতেই ক্রেতা সমাগম শুরু হতে থাকে। বেচাকেনা বেশ ভালোই।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন আগামী কয়েক দিন ভিড় এভাবেই বাড়তে থাকবে। তা ঈদের আগের দিন পর্যন্ত থাকবে।

নগরীর ক্লে রোডের ভাসমান স্যান্ডেলের দোকানগুলো ‘গরিবের মার্কেট’ নামে পরিচিত। সেখানেও এবার ভিড়ের কমতি নেই। এ মার্কেটে কথা হয় দিনমজুর আনোয়ারুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গরিবের আবার ঈদ আছে নাকি। মেয়েটা একটা স্যান্ডেল কেনার বায়না ধরছিল। টাকা না থাকায় আসতে পারিনি। আজকে কিছু আয় হওয়ায় মেয়েরে স্যান্ডেল কিনে দেওয়া। মার্কেটের বড় দোকানে কিনতে না পারলেও এইখান থেকে কিনছি। মেয়ের মুখে হাসি ফুটেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত