অরুণ কর্মকার

ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার দেশান্তরে আশ্রয় গ্রহণ ও তাঁর নেতৃত্বাধীন দেড় দশকের আওয়ামী স্বৈরশাসন অবসানের পর মনে হচ্ছে, ওই সরকারের শাসনামলে দেশে হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কোনো দুর্বিপাক ছিল না। দেশে কোনো গুম হয়নি। কোনো দুর্নীতি হয়নি। ব্যাংক লুট এবং বিদেশে অর্থ পাচার হলেও তার দায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী কিংবা সরকারের অন্য কোনো মন্ত্রী অথবা সরকারি দলের কারও ওপর বর্তায় না। দেশে হয়েছে শুধু হত্যাকাণ্ড এবং বিগত সরকারের সবাই প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে শুধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেই জড়িত। সে জন্যই শেখ হাসিনাসহ যাঁরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন কিংবা যাঁরা এখনো গ্রেপ্তার এড়িয়ে আত্মগোপন করে আছেন, সবার বিরুদ্ধেই অভিযোগ হত্যাকাণ্ডের। তাই সবার বিরুদ্ধে শুধু হত্যা মামলাই দেওয়া হচ্ছে।
এই সব মামলা দায়েরের ডামাডোলের মধ্যেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও বেশ কৌতূহলোদ্দীপক নড়াচড়া শুরু হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রীয় জরুরি সংস্কারের জন্য সরকারকে সময় দেওয়ার কথা বলে এসেছে। তারপর দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তাদের পরিকল্পিত কার্যক্রমের পথনকশা (রোডম্যাপ) দেওয়ার দাবি তুলেছে। প্রায় একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু করার কথাও উত্থাপন করেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘গণতন্ত্রে নির্বাচিত সংসদ ছাড়া রাষ্ট্র সংস্কার কেন, কোনো সমস্যারই সমাধান হয় না’; ‘১ / ১১-এর কথা আমরা ভুলি নাই’ প্রভৃতি অনেক কথা বলেছেন।
অন্যদিকে জামায়াত এ ধরনের কোনো কথাই বলছে না। তারা দলীয় কর্মকাণ্ড, কিছু মতবিনিময় প্রভৃতির মধ্যেই ব্যস্ত আছে। রাজনীতির আরেকটি কৌতূহলোদ্দীপক দিক হচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘নাগরিক কমিটি’ গঠনের উদ্যোগ। ২৩ আগস্ট তাদের লিয়াজোঁ কমিটির সভায় পাঁচটি আকাঙ্ক্ষা নিয়ে দেশের সব মহানগর, জেলা ও উপজেলায় নাগরিক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর একটি আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে—‘গণপরিষদ গঠন করে নতুন সংবিধান তৈরির জন্য গণ-আলোচনা শুরু করা’। এই আকাঙ্ক্ষাটিকে অনেকেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যাভিমুখী উদ্যোগ বলে মনে করছেন। কিন্তু এই দারুণ ইন্টারেস্টিং ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়গুলো চাপা পড়ে যাচ্ছে অগণিত হত্যা মামলার ডামাডোলের মধ্যে।
বিস্ময়করভাবে এই সব হত্যা মামলার কোনো কোনোটিতে অভিযুক্ত করা হচ্ছে একাধিক সিনিয়র সাংবাদিককে। এমনকি জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসানকেও হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের বিরুদ্ধেও হত্যাকাণ্ডে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এক সাংবাদিক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে হত্যা মামলায় রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে। যেসব সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা কিংবা হত্যাকাণ্ডে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করা হচ্ছে, তাঁরা সত্যি সত্যি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন—এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? তাঁদের কেউ কেউ হয়তো বিগত সরকারের তাঁবেদারি করেছেন কিংবা ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানের বিরোধিতাও করেছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, এটা প্রমাণ করা কি কঠিন হবে না?
জুলাই-আগস্টের যে ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানকে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা (কেউ কেউ তৃতীয়ও বলেন) বলে মনে করছি, তেমন একটি পরিবেশে তো এমনটা হওয়ার কথা নয়! শ্রদ্ধাভাজন একজন অগ্রজ সাংবাদিক সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘কেউ কথা বলতে নিষেধ করছে না, কিন্তু কেউ কথা বলার সাহস করছে না। ঘাড়ের ওপর কোনো খাঁড়া ঝুলছে না, কিন্তু খাঁড়ার ভয়ে সবাই ভীত। এ রকম একটি অবস্থা সবচেয়ে অস্বস্তিকর।’ ভয়ংকরও বটে। এই অবস্থার অবসান দরকার, বিশেষ করে গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে। অন্যথায় আমরা অতীতের চক্র থেকে বের হয়ে নতুন সময়ের চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হব। কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতেই পারে। কিন্তু গড়পড়তা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করে চাপে রাখা কিংবা কারাবন্দী করার ঘটনা কি ভয়ের সংস্কৃতিকেই বিস্তৃত করবে না? এসব ঘটনায় সামনে নতুন দিনের কোনো আভাস পাওয়া যায় না।
বিগত সরকার, সরকার-সংশ্লিষ্ট এবং সরকারদলীয়দের বিরুদ্ধে গড়পড়তা হত্যা মামলা করার একটা কারণ অনুসন্ধান করে জানা গেছে—তা হলো, তাদের আটকে রাখার জন্য আপাতত জামিন অযোগ্য মামলায় বা ধারায় অভিযুক্ত করা। এরপর রিমান্ডে নিয়ে নানা তথ্য বের করে এবং সরকারি নথিপত্র ঘেঁটে অন্যান্য মামলা করা। এ ধরনের মামলার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার কিছুটা বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছে সাকিব আল হাসানের মামলা নিয়ে। যদিও সাবেক সরকারের প্রধানমন্ত্রী, অন্যান্য মন্ত্রী, দলীয় নেতা এবং সংসদ সদস্যদের মতো তাঁকেও হুকুমের আসামি করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবু ঘটনাবলির সময় সাকিবের অবস্থান, জাতীয় দলের হয়ে বিদেশের মাটিতে খেলায় অংশ নেওয়া, বিশ্বখ্যাত একজন খেলোয়াড় হিসেবে দল-মতের ঊর্ধ্বে সাকিবের প্রতি জনসমর্থন প্রভৃতি পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টাকে সাকিবের বিরুদ্ধে হওয়া হত্যা মামলার বিষয়ে সরকারের একটা অবস্থান জানাতে হয়েছে।
কিন্তু সাংবাদিকদের বিষয়ে তেমন কোনো সরকারি ভাষ্য আসেনি। তা না আসুক, কিন্তু মামলার বিষয়ে ন্যূনতম একটা বিশ্বাসযোগ্যতা তো থাকা দরকার। রাজনীতিকদের বিষয়টা যেমন সবাই একরকম বুঝে নিয়েছে। সাংবাদিকদের বিষয়টা বোধ হয় তেমন নয়।
যেসব সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে, তাঁদের ওপর বিভিন্ন কারণে অনেকের রাগ-ক্ষোভ থাকতে পারে। অনেকের অভিযোগও থাকতে পারে। তাঁদের মধ্যে যদি ক্ষমতাবান কেউ থাকেন, তিনি তাঁদের মামলায় ঝোলাতেও পারেন। কিন্তু দিন শেষে ন্যূনতম বিশ্বাসযোগ্যতার জায়গাটা রাখতে হবে। না হলে বুমেরাং হতে পারে। এখন কথা হলো এই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করেনি। করেছেন কোনো নিহতের স্বজন। এ রকম কোনো স্বজন যদি কারও বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ নিয়ে থানায় কিংবা আদালতে যান, তাহলে সেই অভিযোগ গ্রহণ ও অনুসন্ধান করা রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। রাষ্ট্র তা না করে পারে না। কিন্তু যেহেতু দেশের একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে শোক-ক্ষোভের কারণে এই মামলাগুলো হচ্ছে, সেহেতু পুলিশ একটা প্রাথমিক স্ক্রুটিনির ব্যবস্থা করতে পারে। কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে পুলিশের আগাম যাচাই সাপেক্ষে অনুমোদন ছাড়া মামলা করা যাবে না বলে একটা গেটকিপিংয়ের ব্যবস্থা পুলিশ বিভাগ করতে পারে। তাতে সরকার অহেতুক সমালোচনা থেকে মুক্ত থাকতে পারবে বলে মনে হয়।
এই মুহূর্তে অন্যান্য জনগুরুত্বসম্পন্ন বিষয় হচ্ছে—নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের উচ্চমূল্য পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনো পূর্ণ শৃঙ্খলা ফেরেনি বা পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। সামাজিক মাধ্যমের পাশাপাশি একশ্রেণির গণমাধ্যমেও বিভ্রান্তিকর খবরাখবর প্রকাশ ও গুজব ছড়ানো অব্যাহত রয়েছে। রাজনৈতিক পরিচয়ধারী অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আদালতে হাজির করার সময় আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তাহীনতা ও বিশৃঙ্খলার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার সমালোচিত হচ্ছে।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার দেশান্তরে আশ্রয় গ্রহণ ও তাঁর নেতৃত্বাধীন দেড় দশকের আওয়ামী স্বৈরশাসন অবসানের পর মনে হচ্ছে, ওই সরকারের শাসনামলে দেশে হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কোনো দুর্বিপাক ছিল না। দেশে কোনো গুম হয়নি। কোনো দুর্নীতি হয়নি। ব্যাংক লুট এবং বিদেশে অর্থ পাচার হলেও তার দায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী কিংবা সরকারের অন্য কোনো মন্ত্রী অথবা সরকারি দলের কারও ওপর বর্তায় না। দেশে হয়েছে শুধু হত্যাকাণ্ড এবং বিগত সরকারের সবাই প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে শুধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেই জড়িত। সে জন্যই শেখ হাসিনাসহ যাঁরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন কিংবা যাঁরা এখনো গ্রেপ্তার এড়িয়ে আত্মগোপন করে আছেন, সবার বিরুদ্ধেই অভিযোগ হত্যাকাণ্ডের। তাই সবার বিরুদ্ধে শুধু হত্যা মামলাই দেওয়া হচ্ছে।
এই সব মামলা দায়েরের ডামাডোলের মধ্যেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও বেশ কৌতূহলোদ্দীপক নড়াচড়া শুরু হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রীয় জরুরি সংস্কারের জন্য সরকারকে সময় দেওয়ার কথা বলে এসেছে। তারপর দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে তাদের পরিকল্পিত কার্যক্রমের পথনকশা (রোডম্যাপ) দেওয়ার দাবি তুলেছে। প্রায় একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু করার কথাও উত্থাপন করেছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘গণতন্ত্রে নির্বাচিত সংসদ ছাড়া রাষ্ট্র সংস্কার কেন, কোনো সমস্যারই সমাধান হয় না’; ‘১ / ১১-এর কথা আমরা ভুলি নাই’ প্রভৃতি অনেক কথা বলেছেন।
অন্যদিকে জামায়াত এ ধরনের কোনো কথাই বলছে না। তারা দলীয় কর্মকাণ্ড, কিছু মতবিনিময় প্রভৃতির মধ্যেই ব্যস্ত আছে। রাজনীতির আরেকটি কৌতূহলোদ্দীপক দিক হচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘নাগরিক কমিটি’ গঠনের উদ্যোগ। ২৩ আগস্ট তাদের লিয়াজোঁ কমিটির সভায় পাঁচটি আকাঙ্ক্ষা নিয়ে দেশের সব মহানগর, জেলা ও উপজেলায় নাগরিক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর একটি আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে—‘গণপরিষদ গঠন করে নতুন সংবিধান তৈরির জন্য গণ-আলোচনা শুরু করা’। এই আকাঙ্ক্ষাটিকে অনেকেই নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যাভিমুখী উদ্যোগ বলে মনে করছেন। কিন্তু এই দারুণ ইন্টারেস্টিং ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বিষয়গুলো চাপা পড়ে যাচ্ছে অগণিত হত্যা মামলার ডামাডোলের মধ্যে।
বিস্ময়করভাবে এই সব হত্যা মামলার কোনো কোনোটিতে অভিযুক্ত করা হচ্ছে একাধিক সিনিয়র সাংবাদিককে। এমনকি জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসানকেও হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে। ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের বিরুদ্ধেও হত্যাকাণ্ডে উসকানি দেওয়ার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এক সাংবাদিক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে হত্যা মামলায় রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছে। যেসব সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা কিংবা হত্যাকাণ্ডে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করা হচ্ছে, তাঁরা সত্যি সত্যি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন—এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? তাঁদের কেউ কেউ হয়তো বিগত সরকারের তাঁবেদারি করেছেন কিংবা ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানের বিরোধিতাও করেছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, এটা প্রমাণ করা কি কঠিন হবে না?
জুলাই-আগস্টের যে ছাত্র-গণ-অভ্যুত্থানকে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা (কেউ কেউ তৃতীয়ও বলেন) বলে মনে করছি, তেমন একটি পরিবেশে তো এমনটা হওয়ার কথা নয়! শ্রদ্ধাভাজন একজন অগ্রজ সাংবাদিক সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘কেউ কথা বলতে নিষেধ করছে না, কিন্তু কেউ কথা বলার সাহস করছে না। ঘাড়ের ওপর কোনো খাঁড়া ঝুলছে না, কিন্তু খাঁড়ার ভয়ে সবাই ভীত। এ রকম একটি অবস্থা সবচেয়ে অস্বস্তিকর।’ ভয়ংকরও বটে। এই অবস্থার অবসান দরকার, বিশেষ করে গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে। অন্যথায় আমরা অতীতের চক্র থেকে বের হয়ে নতুন সময়ের চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হব। কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যেতেই পারে। কিন্তু গড়পড়তা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত করে চাপে রাখা কিংবা কারাবন্দী করার ঘটনা কি ভয়ের সংস্কৃতিকেই বিস্তৃত করবে না? এসব ঘটনায় সামনে নতুন দিনের কোনো আভাস পাওয়া যায় না।
বিগত সরকার, সরকার-সংশ্লিষ্ট এবং সরকারদলীয়দের বিরুদ্ধে গড়পড়তা হত্যা মামলা করার একটা কারণ অনুসন্ধান করে জানা গেছে—তা হলো, তাদের আটকে রাখার জন্য আপাতত জামিন অযোগ্য মামলায় বা ধারায় অভিযুক্ত করা। এরপর রিমান্ডে নিয়ে নানা তথ্য বের করে এবং সরকারি নথিপত্র ঘেঁটে অন্যান্য মামলা করা। এ ধরনের মামলার মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার কিছুটা বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়েছে সাকিব আল হাসানের মামলা নিয়ে। যদিও সাবেক সরকারের প্রধানমন্ত্রী, অন্যান্য মন্ত্রী, দলীয় নেতা এবং সংসদ সদস্যদের মতো তাঁকেও হুকুমের আসামি করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবু ঘটনাবলির সময় সাকিবের অবস্থান, জাতীয় দলের হয়ে বিদেশের মাটিতে খেলায় অংশ নেওয়া, বিশ্বখ্যাত একজন খেলোয়াড় হিসেবে দল-মতের ঊর্ধ্বে সাকিবের প্রতি জনসমর্থন প্রভৃতি পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টাকে সাকিবের বিরুদ্ধে হওয়া হত্যা মামলার বিষয়ে সরকারের একটা অবস্থান জানাতে হয়েছে।
কিন্তু সাংবাদিকদের বিষয়ে তেমন কোনো সরকারি ভাষ্য আসেনি। তা না আসুক, কিন্তু মামলার বিষয়ে ন্যূনতম একটা বিশ্বাসযোগ্যতা তো থাকা দরকার। রাজনীতিকদের বিষয়টা যেমন সবাই একরকম বুঝে নিয়েছে। সাংবাদিকদের বিষয়টা বোধ হয় তেমন নয়।
যেসব সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে, তাঁদের ওপর বিভিন্ন কারণে অনেকের রাগ-ক্ষোভ থাকতে পারে। অনেকের অভিযোগও থাকতে পারে। তাঁদের মধ্যে যদি ক্ষমতাবান কেউ থাকেন, তিনি তাঁদের মামলায় ঝোলাতেও পারেন। কিন্তু দিন শেষে ন্যূনতম বিশ্বাসযোগ্যতার জায়গাটা রাখতে হবে। না হলে বুমেরাং হতে পারে। এখন কথা হলো এই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা করেনি। করেছেন কোনো নিহতের স্বজন। এ রকম কোনো স্বজন যদি কারও বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ নিয়ে থানায় কিংবা আদালতে যান, তাহলে সেই অভিযোগ গ্রহণ ও অনুসন্ধান করা রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। রাষ্ট্র তা না করে পারে না। কিন্তু যেহেতু দেশের একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে শোক-ক্ষোভের কারণে এই মামলাগুলো হচ্ছে, সেহেতু পুলিশ একটা প্রাথমিক স্ক্রুটিনির ব্যবস্থা করতে পারে। কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে পুলিশের আগাম যাচাই সাপেক্ষে অনুমোদন ছাড়া মামলা করা যাবে না বলে একটা গেটকিপিংয়ের ব্যবস্থা পুলিশ বিভাগ করতে পারে। তাতে সরকার অহেতুক সমালোচনা থেকে মুক্ত থাকতে পারবে বলে মনে হয়।
এই মুহূর্তে অন্যান্য জনগুরুত্বসম্পন্ন বিষয় হচ্ছে—নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের উচ্চমূল্য পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনো পূর্ণ শৃঙ্খলা ফেরেনি বা পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। সামাজিক মাধ্যমের পাশাপাশি একশ্রেণির গণমাধ্যমেও বিভ্রান্তিকর খবরাখবর প্রকাশ ও গুজব ছড়ানো অব্যাহত রয়েছে। রাজনৈতিক পরিচয়ধারী অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আদালতে হাজির করার সময় আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তাহীনতা ও বিশৃঙ্খলার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার সমালোচিত হচ্ছে।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার দেশান্তরে আশ্রয় গ্রহণ ও তাঁর নেতৃত্বাধীন দেড় দশকের আওয়ামী স্বৈরশাসন অবসানের পর মনে হচ্ছে, ওই সরকারের শাসনামলে দেশে হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কোনো দুর্বিপাক ছিল না। দেশে কোনো গুম হয়নি। কোনো দুর্নীতি হয়নি। ব্যাংক লুট এবং বিদেশে অর্থ পাচার হলেও তার দায়
৩১ আগস্ট ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার দেশান্তরে আশ্রয় গ্রহণ ও তাঁর নেতৃত্বাধীন দেড় দশকের আওয়ামী স্বৈরশাসন অবসানের পর মনে হচ্ছে, ওই সরকারের শাসনামলে দেশে হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কোনো দুর্বিপাক ছিল না। দেশে কোনো গুম হয়নি। কোনো দুর্নীতি হয়নি। ব্যাংক লুট এবং বিদেশে অর্থ পাচার হলেও তার দায়
৩১ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার দেশান্তরে আশ্রয় গ্রহণ ও তাঁর নেতৃত্বাধীন দেড় দশকের আওয়ামী স্বৈরশাসন অবসানের পর মনে হচ্ছে, ওই সরকারের শাসনামলে দেশে হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কোনো দুর্বিপাক ছিল না। দেশে কোনো গুম হয়নি। কোনো দুর্নীতি হয়নি। ব্যাংক লুট এবং বিদেশে অর্থ পাচার হলেও তার দায়
৩১ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার দেশান্তরে আশ্রয় গ্রহণ ও তাঁর নেতৃত্বাধীন দেড় দশকের আওয়ামী স্বৈরশাসন অবসানের পর মনে হচ্ছে, ওই সরকারের শাসনামলে দেশে হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কোনো দুর্বিপাক ছিল না। দেশে কোনো গুম হয়নি। কোনো দুর্নীতি হয়নি। ব্যাংক লুট এবং বিদেশে অর্থ পাচার হলেও তার দায়
৩১ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫