Ajker Patrika

সচিব বললেন, ঢাকায় তো এর চেয়েও বেশি ওঠে

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ১৬
সচিব বললেন, ঢাকায় তো এর চেয়েও বেশি ওঠে

অসময়ে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে যশোর শহরের নিম্নাঞ্চল। বর্ষার পর শুষ্ক মৌসুমে এসেও চরম বিপাকে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। বাড়ি-ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় আটটি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবন-যাপন। তবে এই সমস্যা সমাধানের দায়িত্বে থাকা যশোর পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন বলছেন, ‘যে পানি উঠেছে তাতে খুব বেশি একটা সমস্যা হবে না। ঢাকায় তো এর চেয়েও বেশি পানি ওঠে। সে হিসেবে আমরা ভালো আছি।’

গতকাল সোমবার জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, খড়কি, কারবালা, শংকরপুর, রায়পাড়া, বেজপাড়া, বারান্দীপাড়া, ঘোপ, নীলগঞ্জের নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও জমেছে হাঁটু পানি। রাস্তা, বাড়ি-ঘর, উঠান, টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ। এসব এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, যেখানে এক বা দুই–তিন ঘণ্টার মাঝারি বৃষ্টিতেই এই এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সেখানে টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে আরও দুর্ভোগ বেড়েছে।

এদিকে গতকাল সোমবার তৃতীয় দিনের টানা বৃষ্টিতে শহরের অধিকাংশ দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। অনেকটাই জনশূন্য হয়ে পড়েছে শহর।

রবিউল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টি হলেই খড়কি এলাকার অধিকাংশ জায়গা পানিতে তলিয়ে যায়। রাস্তাঘাট ছাপিয়ে পানি ওঠে ঘরেও। অনুপযোগী হয়ে পড়ে রান্নাবান্না ও বসবাসের।’

শংকরপুরের শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তায় পানি ওঠার পর পথচারীসহ অনেককেই বাইসাইকেল, রিকশা, মোটরসাইকেল নিয়ে পড়ে যেতে দেখেছি। ভাঙা রাস্তা ও ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকায় এসব দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে। জলাবদ্ধতার কারণে যা কয়েক গুণ বেড়ে যায়।’

বারান্দীপাড়ার রায়হান সিদ্দিকী বলেন, ‘পানিতে দোকানপাট তলিয়ে যাওয়ায় ব্যবসার ক্ষতির হচ্ছে।’

রোকেয়া পারভীন, ‘পানি উঠে যাওয়ায় রান্না-বান্না করা যাচ্ছে না। গবাদি পশুগুলো রাখতেও সমস্যা হচ্ছে। টয়লেটে যাওয়াসহ অন্যান্য দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে।’

যশোর পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী, ১৮৬৪ সালে স্থাপিত ১৪ দশমিক ৭২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের যশোর পৌরসভার জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। পৌর এলাকায় এ পর্যন্ত মোট ২৫২ কিলোমিটার নালা নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫.৫৬ কিলোমিটার আরসিসি, ৬০. ৮০ কিলোমিটার ইটের গাঁথুনি, ৫ কিলোমিটার পাইপ এবং ১৩০.৬৪ কিলোমিটার কাঁচা নালা রয়েছে।

যশোর সরকারি এম এম কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছোলজার রহমান বলেন, ‘আগে যশোর শহরের পানি নালা ব্যবস্থার মাধ্যমে হরিনার বিল ও ভৈরব নদের মাধ্যমে বের হয়ে যেত। এর মধ্যে হরিনার বিলে যশোর মেডিকেল কলেজ স্থাপন করায় শহরের দক্ষিণাংশের পানি নিষ্কাশনে সমস্যা দেখা দেয়। যদিও মুক্তেশ্বরী নদীর মাধ্যমে বিকল্প ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে, তবে তা অপ্রতুল।’

ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বলেন, ‘নগরায়ণের ক্ষেত্রে যেসব নীতিমালা মানার প্রয়োজন ছিল তা একেবারেই অনুসরণ করা হয়নি।’

যশোর পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন বলেন, ‘যে পানি উঠেছে তাতে খুব বেশি একটা সমস্যা হবে না। ঢাকায় তো এর চেয়েও বেশি পানি ওঠে। সে হিসেবে আমরা ভালো আছি। বৃষ্টি থেমে গেলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পানি নেমে যাবে। যেখানে পানি নামবে না, সেখানকার নালাগুলো পরিষ্কার করে দেওয়া হবে। যাতে খুব বেশি ভোগান্তিতে পড়তে না হয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত