Ajker Patrika

শুষ্ক মৌসুমেও শুরু হয়নি কাজ, ক্ষোভ স্থানীয়দের

শরীফুল ইসলাম ইন্না, সিরাজগঞ্জ 
শুষ্ক মৌসুমেও শুরু হয়নি কাজ, ক্ষোভ স্থানীয়দের

সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর ভাঙন রোধে সাড়ে ছয় কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। গত মার্চ মাস থেকে যমুনায় পানি বাড়তে থাকে। দেখা দেয় বন্যা। এ কারণে জুন থেকে প্রকল্পের কাজ বন্ধ রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এদিকে শুষ্ক মৌসুমেও কাজ বন্ধ থাকায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কাজ বন্ধের জন্য তাঁরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিকে দায়ী করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, কাজ শুরুর জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, কয়েক বছর হলো সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর, জালালপুর, কৈজুড়ীতে তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে এলাকাবাসী একাধিকবার মানববন্ধনও করেছেন। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য এনায়েতপুর খাঁজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শাহজাদপুর উপজেলার পাচিল পর্যন্ত সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে ১৭টি প্যাকেজে মার্চ মাস থেকে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

চলতি বছরে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দফায় দফায় যমুনায় পানি বাড়তে থাকে। পানি বাড়ার কারণে উজানের কাজীপুর থেকে ভাটির চৌহালী উপজেলা পর্যন্ত দফায় দফায় নদীভাঙন দেখা দেয়। তীব্র ভাঙন দেখা যায় এনায়েতপুর ও জালালপুর এলাকায়। ভাঙনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি, একাধিক বাঁধসহ বহু স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়। চলতি ডিসেম্বর মাসেও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু না করায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জালালপুর গ্রামের হালিমুন বেগম বলেন, ‘আট বছর আগে স্বামী মারা যায়। স্বামীর রেখে যাওয়া একটু জমি ও বসতভিটা ছিল। তাও এ বছর নদীতে ভাঙে গেছে। অন্যের জমিতে ঝুপড়িঘর তুলে বাস করছি। এখান থেকে কখন যে তুলে দেয় সেই আতঙ্কে থাকি।’

জালালপুর গ্রামের মকবুল শেখ বলেন, ‘১৯৮০ সাল থেকে ভাঙনের মুখে পড়ি। বারবার ভাঙনে সবকিছু নদীতে চলে গেছে। এখন একটু জায়গা আছে তাতে ছেলেমেয়ে নিয়ে বাস করি। এই জায়গাটুকুও ভাঙনের মুখে রয়েছে। বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হবে এই কথা শুনে আসছি। কিন্তু কাজ শুরু হয় না। ’

শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মহির উদ্দিন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে এ বছর নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের ভাঙনের বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু তাঁরা কোনো পদক্ষেপ নেননি। এখন শুষ্ক মৌসুম চলছে। তারপরও কাজ শুরু হয়নি।

১১ নম্বর ব্লকের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এআরসি কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার আকরাম হোসেন জানান, চলতি মাসের শেষের দিকে কাজ শুরু করার কথা রয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি ব্লক বানানোর জন্য বালু সরবরাহ করবেন।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (বেলকুচি-চৌহালী অঞ্চল) মিলটন হোসেন বলেন, এনায়েতপুরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ১ ও ৫ নম্বর পয়েন্টে ব্লক বানানোর কাজ শুরু হয়েছে। বাকি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানও দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রুয়া নির্বাচন: বিএনপিপন্থীদের বর্জন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জামায়াতপন্থী ২৭ জন নির্বাচিত

সৌদি আরবের কেনা ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলকে দেওয়ার অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রের, প্রত্যাখ্যান করে কিসের ইঙ্গিত দিল রিয়াদ

বীর্যে বিরল অ্যালার্জি, নারীর বন্ধ্যাত্ব নিয়ে চিকিৎসকদের নতুন সতর্কতা

‘পাপ কাহিনী’র হাত ধরে দেশের ওটিটিতে ফিরল অশ্লীলতা

কক্সবাজারে যাওয়ার পথে ২৩ মামলার আসামিকে কুপিয়ে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত