Ajker Patrika

লক্ষ্মীপুরে জোড়া খুন: এক বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত, অধরা জিহাদী

আব্বাছ হোসেন, লক্ষ্মীপুর
Thumbnail image

লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান ও ছাত্রলীগ নেতা রাকিব ইমাম হত্যাকাণ্ডের আজ এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। তবে বছর পার হলেও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা পড়েনি। ধরা পড়েননি জোড়া খুনের মামলার প্রধান আসামি আবুল কাশেম জিহাদী। হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি। 

এদিকে ১ বছরেও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা না পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মামলার বাদীসহ নিহতের স্বজনেরা। তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন। 

জানা গেছে, গত বছরের ২৫ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোটরসাইকেলযোগে সদর উপজেলার পোদ্দার বাজার থেকে নাগের হাটে যাচ্ছিলেন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিব ইমাম।

পশ্চিম বাজার এলাকার ব্রিজের পাশে পৌঁছালে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাঁদের গতিরোধ করে বেশ কয়েকটি গুলি ছোড়ে। এতে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আবদুল্লাহ আল নোমান ঘটনাস্থলে মারা যান। হাসপাতালে মারা যান রাকিব ইমাম। পরদিন ২৬ এপ্রিল নোমানের বড় ভাই বশিকপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় আবুল কাশেম জিহাদীকে প্রধান করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন। 

মামলায় রামগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দেওয়ান ফয়সাল, বশিকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান নিশান, আওয়ামী লীগ কর্মী রুবেল দেওয়ান, স্যুটার রাকিবসহ ২৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধরা পড়ার পর কয়েক মাসের মধ্যে জামিনে বের হন আসামিরা। 

নিহত রাকিব ইমামের ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘হত্যার ঘটনার ১ বছর পার হয়েছে। এখনো প্রধান আসামিকে ধরতে পারেনি পুলিশ। চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। আবুল কাশেম জিহাদী বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। জিহাদী ও তাঁর বাহিনীর ভয়ে মুখ খুলতে সাহস করছেন না স্থানীয়রা। এখনো খুব ভয়ে আছি।’ 

আবদুল্লাহ আল নোমানের ভাই মামলার বাদী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এক বছরেও মামলার অগ্রগতি নেই। যেসব আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন, সবাই এখন জামিনে বের হয়েছেন। মামলা তুলে নিতে নানা ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এমনকি প্রধান আসামি জিহাদীও গ্রেপ্তার হননি।’ 

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, ‘এটি একটি আলোচিত হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনা সবাইকে নাড়া দিয়েছে। হত্যাকারী যত বড়ই শক্তিশালী বা ক্ষমতাধর হোক, তাঁকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। হত্যাকারী বা সন্ত্রাসী কোনো দলের হতে পারে না। কাশেম জিহাদীসহ কয়েকজনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। খুনিদের ছাড় নয়। অপরাধ করলেই শাস্তি পেতেই হবে।’ 

লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদ্য পুলিশ সুপার পদোন্নতি প্রাপ্ত) এ বি সিদ্দিক বলেন, ‘এটি একটি আলোচিত মামলা। আলোচিত মামলা হওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদন দিতে সময় লাগছে। যেন তদন্ত করতে গিয়ে কোনো নির্দোষ মানুষ অপরাধী হিসেবে শাস্তি না পান, সেদিকে খেয়াল রেখে তদন্তকাজ অগ্রসর হচ্ছে।

ইতিমধ্যে এই মামলার তদন্ত কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়েছে। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হত্যার সূত্র ও কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত, সেটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত