Ajker Patrika

ডায়াবেটিস রোগীর ব্যায়াম হাঁটা

ডা. মাজহারুল হক তানিম
ডায়াবেটিস রোগীর ব্যায়াম হাঁটা

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য হাঁটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত হাঁটলে:

  • বাড়তি ওজন কমে
  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে
  • শরীরের জন্য ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমে ও ভালো কোলেস্টেরল বাড়ে
  • দুশ্চিন্তা কমে
  • পেশি ও হাড়ের শক্তি বাড়ে
  • শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটে।
     
    অ্যারোবিকস ও রেজিস্ট্যান্ট ব্যায়াম উভয়েই আপনার শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াবে এবং বিগত তিন মাসের ডায়াবেটিসের গড় কমাবে। 
    অ্যারোবিকস ব্যায়াম হচ্ছে জোরে জোরে হাঁটা, সাইক্লিং, জগিং, সাঁতার কাটা। অন্যদিকে রেজিস্ট্যান্ট ব্যায়াম হচ্ছে ওজন ওঠানো, দেয়াল বা কোনো শক্ত কাঠামোর বিপরীতে হাত বা পা দিয়ে কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখা ইত্যাদি।

ডায়াবেটিস রোগীদের 
ব্যায়ামের নির্দেশিকা

  • যাঁরা বসে দীর্ঘ সময় কাজ করেন, তাঁদের অনেকক্ষণ একটানা বসে থাকা যাবে না। ৩০ মিনিট পর পর ডেস্ক থেকে উঠে হাঁটতে হবে বা হালকা কাজ করতে হবে বা পায়চারি করতে হবে।
  • অনেকক্ষণ ধরে বসে ঢিভি দেখা বা বসার কাজ করা যাবে না। মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে পায়চারি করতে হবে।
  • প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি ধরনের শরীরচর্চা, যেমন জগিং, হাঁটা, সাঁতার এগুলো করতে হবে। টানা দুই দিন বিরতি দেওয়া যাবে না। 
  • শিশুদের শরীরচর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরচর্চায় উপকারিতা

  • শরীরচর্চা ডায়াবেটিস রোগীর শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে কম ওষুধ ও ইনসুলিনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসে।
  • ওজন কমাতে সহায়তা করে।
  • উচ্চ রক্তচাপ ও ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়।
  • হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোক প্রতিরোধ করে।
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।
  • হাড় ও হৃৎপিণ্ডকে শক্তিশালী করে।
  • ব্যায়াম ডায়াবেটিস প্রতিরোধেও সহায়তা করে। যাঁদের পরিবারে ডায়াবেটিস আছে, তাঁরা ব্যায়াম করলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে ও ডায়াবেটিস হওয়ার সময়টা বিলম্বিত হয়।

ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্কতা

  • অসুস্থ অবস্থায়, যেমন জ্বর বা ডায়রিয়া নিয়ে ব্যায়াম না করাই ভালো।
  • ডায়াবেটিস কমে যাওয়ার বা হাইপো হওয়ার লক্ষণ দেখা দিলে, যেমন শরীর কাঁপা, বুক ধড়ফড় করা, চোখে ঝাপসা দেখা ইত্যাদি সমস্যা হলে ব্যায়াম বন্ধ করে কিছু খেয়ে নিতে হবে।
  • প্রচণ্ড রোদে ব্যায়াম করবেন না। এতে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে।

ব্যায়াম করার নিয়ম

  • অল্প ব্যায়াম দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে। ধীরে ধীরে শুরু করে আবার ধীরে ধীরে ব্যায়াম শেষ করতে হবে। একেবারে শুরু বা শেষ করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, যত বেশি ব্যায়াম করবেন, তত বেশি শক্তি ক্ষয় হবে এবং গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে।
  • নসুলিন নিয়ে না খেয়ে কখনো ব্যায়াম করতে বা হাঁটতে যাবেন না। 

লেখক: ডায়াবেটিস ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত