Ajker Patrika

ভাঙা সেতু, ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

সীমান্ত হেলাল, মনপুরা প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ৫৩
Thumbnail image

ভোলার মনপুরা উপজেলায় নির্মিত চারটি সেতু বেহাল। কোনোটির মাঝবরাবর ভেঙে দেবে গেছে। কোনোটির রেলিং ভাঙা, আবার কোনোটির পাটাতন ভেঙে পড়ে আছে। বিকল্প না থাকায় বাধ্য হয়েই এসব ভাঙা সেতুতে প্রতিদিন মানুষ ও যানবাহন চলাচল করছে। এতে যেকোনো মুহূর্তে সেতু ধসে পড়ে হতাহতের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার হাজীর হাট ইউনিয়নের চরফৈজুদ্দিন গ্রামের সঙ্গে উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের আনন্দবাজার সংযোগ সড়কে নির্মিত সবচেয়ে বড় সেতুটি ২০১৪ সালে উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের এক বছরের মাথায় সেতুটিতে ফাটল দেখা দেয়। প্যালাসাইডিং ভেঙে সেতুর মূল পাটাতনেও দেখা দেয় বড় আকারের ভাঙন। সেতুটিতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে মানুষ ও যানবাহন।

এ ব্যাপারে চরফৈজুদ্দিন গ্রামের বাসিন্দা মাইনুদ্দিন বলেন, সেতুটি নির্মাণের বছরখানেক পরই মূল পাটাতনে ফাটল ধরে ভেঙে যায়। যার ফলে সেতুর পশ্চিম মাথা দিয়ে একটি মোটরসাইকেলের বেশি অথবা পাশাপাশি দুটি যানবাহন যেতে পারে না। এ ছাড়া রাতে চলাচলের সময় বহু রিকশা, মোটরসাইকেলসহ যানবাহন খাদে পড়ে দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে।

এ ছাড়া উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের আনন্দবাজার ও ভকেশনাল স্কুল সংযোগ সড়কে সেতুটি নির্মাণ করা হয় ২০০৩ সালে। এখন সেতুটির মূল পাটাতন ভেঙে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ভেঙে পড়েছে রেলিং। মাটির রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় তা তিন-চার ফুট নিচে দেবে গিয়ে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে সেতুটি।

উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের আনন্দবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. সিরাজ বলেন, ভকেশনাল স্কুলে যাওয়ার একমাত্র সড়কের সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজারো চলাচলকারীকে।

এদিকে ১ নম্বর মনপুরা ইউনিয়নের আন্দিরপাড় কুলাগাজীর তালুক সংযোগ সড়কের সেতুটিও বেহাল। নির্মাণের কয়েক বছরের মাথায় সেতুর মূল পাটাতন ফুটো হয়ে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে কাঠ বিছিয়ে সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কোনো রকমে চলাচল করছে মানুষ।

এ ছাড়া সীতাকুণ্ড সংযোগ সড়কের সেতুটিরও একই চিত্র। যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়ে ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা। তাই দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের দাবি জানান এলাকাবাসী।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন মিয়া বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো সংস্কারের ব্যাপারে আমরা প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। সেতুগুলো পুনর্নির্মাণ ও মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিগগির কাজ শুরু হবে।’

উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. অহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মোট চারটি ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর ব্যাপারে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। এর মধ্যে উপজেলার হাজীর হাট ইউনিয়নের চরফৈজুদ্দিন সংযোগ সড়ক থেকে দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের দখিনা হাওয়া সি-বিচ পর্যন্ত দুটি জরাজীর্ণ সেতু সম্পূর্ণ ভেঙে নতুন করে নির্মাণ ও একটি সেতু সংস্কারের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। শিগগির সেতু তিনটির কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া আন্দিরপাড় কুলাগাজীর তালুক সংযোগ সড়কে অবস্থিত সেতুটি সংস্কারের প্রস্তাবনা পাসের অপেক্ষায় রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত