Ajker Patrika

সার নিয়ে বিপাকে কৃষক

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৪৬
সার নিয়ে বিপাকে কৃষক

নীলফামারীতে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। এতে তাঁরা চড়া দামে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে সারের পরিবেশকেরা বলেছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, সংকটের অজুহাত দেখিয়ে বাড়তি দাম আদায় করছেন তাঁরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘এমওপি সারের কোনো সংকট নেই। ডিলার পর্যায়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে বাজারে সারসংকট সৃষ্টি করছে। আমরা বাজার মনিটরিং জোরদার করেছি। এরপরও যদি কেউ সার মজুত করে বাজারে সংকট তৈরির চেষ্টা করে, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত জানুয়ারিতে জেলায় ছয় হাজার ৬৭১ টন এমওপি সারের চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ পাওয়া গেছে দুই হাজার ৭৫৭ টন। ফেব্রুয়ারিতে তিন হাজার ৮৯২ টনের বিপরীতে এক হাজার ৫৩ টন। মার্চে দুই হাজার ২৩০ টনের বিপরীতে ৭৬৮ টন বরাদ্দ পাওয়া যায়। চলতি মাসে ৯০৭ টন চাহিদার বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২০৫ টন, যা উত্তোলনের প্রক্রিয়ায় চলছে। জেলায় সারের মোট ডিলার ১৯৪ জন। এর মধ্যে বিসিআইসির ডিলার ৭৫ জন এবং বিএডিসির ডিলার ১১৯ জন। প্রতি কেজি পটাশ সারের সরকার নির্ধারিত দাম রয়েছে ১৫ টাকা। অথচ কৃষকদের ২০ থেকে ৩০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে।

জেলা সদরের সোনারায় ইউনিয়নের বানিয়াপাড়ার কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, তিন বিঘা জমিতে তিনি ইরির আবাদ করেছেন। গত তিন দিন আগে ওই জমিতে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে পটাশ সার কিনে দিয়েছেন। এর আগে সারের ডিলারের কাছে গেলে পটাশ সার নেই বলে জানান তিনি। খেতে সময়মতো সার না দিলে ফসলের ক্ষতি হবে, তাই চড়া দামে সার কিনে খেতে দিতে বাধ্য হয়েছি বলে জানান তিনি।

জলঢাকা বাজারের খুচরা সার ব্যবসায়ী জামিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন ডিলারের কাছ থেকে সার কিনে এনে এলাকার কৃষকদের কাছে খুচরা বিক্রি করি। যখন যে দামে কিনি একটু লাভ করে বেচি। কিন্তু কিছুদিন ধরে পটাশ সারের বাজার বেশি। ডিলারের কাছে দাম বেশি দিলে সার পাওয়া যাচ্ছে। তবে রসিদে প্রতি বস্তার দাম ৭৫০ টাকাই উল্লেখ করেন ডিলাররা।

সৈয়দপুর উপজেলার পরিবেশক হাজী নুর ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘বোরো আবাদের জমিতে পটাশ সারের চাহিদা প্রচুর। গত দুই মাস থেকে বরাদ্দ কম পেয়েছি, যেটুকু পেয়েছি এরই মধ্যে বিক্রি করে ফেলেছি। বেশির ভাগ ডিলারের কাছে মজুত না থাকায় বাজারে এমন অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। একই কথা জানালেন ডিমলা উপজেলার পরিবেশক আজিজুল ইসলাম।’

জেলা সার ব্যবসায়ী সমিতির (বিএফএ) সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ সরকার জানান, চলতি এপ্রিল মাসে জেলায় এমওপি সারের চাহিদা ছিল ৯০৭ টন। এর বিপরীতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২০৫ টন, যা এখনো উত্তোলনের পর্যায়ে রয়েছে। ওই ২০৫ টনের মধ্যে বিএডিসি থেকে সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে ১০৫ টন এবং ১০০ টন সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে বিসিআইসির নোয়াপাড়া গুদাম থেকে। চাহিদা কম থাকলে কৃষকপর্যায়ে এর সংকট অবশ্যই দেখা দেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত