Ajker Patrika

লোকসানে গোটাচ্ছেন ব্যবসা

সনি আজাদ, চারঘাট 
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ০৯
লোকসানে গোটাচ্ছেন ব্যবসা

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় বন্ধ হচ্ছে একের পর এক মুরগির খামার। খাবার, ওষুধ, বাচ্চা ও পোলট্রি উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে খামারিদের। এরই মধ্যে উপজেলার অর্ধেকের বেশি পোলট্রি খামার বন্ধ হয়ে গেছে। একই সঙ্গে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ রিবেট সুবিধা বাতিল করায় দিশেহারা খামারিরা।

এদিকে খাবার ও বাচ্চার দাম দফায় দফায় বাড়ায় সম্প্রতি উপজেলা পোলট্রি খামারিরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। তাঁরা দাবি করেন, সিন্ডিকেট করে মুরগির বাচ্চা ও খাদ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে ব্যাংক ঋণ পেতে জামানতের ঝামেলা থাকায় এই ব্যবসায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন নতুন উদ্যোক্তারা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খামারিরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারের অজুহাতে দেশে অযৌক্তিকভাবে বাড়ানো হয়েছে কাঁচামালের দাম। সংকট আরও ঘনীভূত হলে চারঘাটের পোলট্রি শিল্পের প্রান্তিক খামারিদের জীবন ও জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে সরকারের সহায়তা চেয়েছেন তাঁরা।

সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় প্রায় ৬০০ মুরগির খামার ছিল। কিন্তু বর্তমানে তিন শতাধিক খামার চালু আছে। চালু খামারগুলোও বিভিন্ন বড় কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থেকে কার্যক্রম করছে। এতে খামারিদের চেয়ে কোম্পানিগুলো বেশি লাভবান হচ্ছে। এদিকে খামার বন্ধ হওয়া প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

উপজেলার মিয়াপুর এলাকার খামারি ওবাইদুর রহমান রিগেন জানান, ‘লেয়ার ও ব্রয়লার মুরগির বাচ্চা, খাবারসহ অন্য উপকরণের দাম বাড়ায় উপজেলার সম্ভাবনাময় এ শিল্প লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। কিছুদিন আগেও একটি লেয়ার মুরগির বাচ্চার দাম ছিল ২০ টাকা। বর্তমানে সেই বাচ্চার দাম ৪০ টাকা। একইভাবে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দামের একটি বয়লার মুরগির বাচ্চা ৭০-৭৫ টাকা ও সোনালি জাতের বাচ্চা ৩০ থেকে বেড়ে ৫৫ টাকা হয়েছে। তা ছাড়া পোলট্রি মুরগির খাবার রেডি ফিট প্রতি বস্তা এক হাজার ৮০০ টাকা থেকে বেড়ে তিন হাজার টাকা বস্তা হয়েছে।’

উপজেলার রাওথা এলাকার খামারি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘লোকসান করতে করতে আমরা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। দামটাও আমরা নির্ধারণ করতে পারছি না। নির্ধারণ করছে অন্য একটি সিন্ডিকেট। পাঁচ বছর আগে একটি ডিম বিক্রি হতো ছয় থেকে সাত টাকা। এখনো খামারিরা সেই আগের দামেই ডিম বিক্রি করছেন। কিন্তু বাচ্চা ও খাদ্যের দাম বেড়ে হয়েছে দুই তিন গুন। খামার করে বছরের পর বছর লোকসান গুনছি। মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরা।’

চারঘাট উপজেলা পোলট্রি খামারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, ‘উপজেলার প্রায় ৫০ ভাগ খামার বন্ধ হয়ে গেছে। আর বাকি ২০ ভাগ বন্ধ হওয়ার পথে। ব্যক্তি মালিকানাধীন খামার নেই বললেই চলে, সবই বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। বেকার যুবকেরা ঋণ নিয়ে যে খামার করেছিলেন, এখন হঠাৎ করে মুরগির খাদ্যের দাম বাড়ায় তা বন্ধ হয়ে গেছে।’

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা নাজনীন নাহার বলেন, খাদ্য ও ওষুধের দাম বাড়ায় ক্ষুদ্র খামারিরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। খামার টিকিয়ে রাখতে করোনাকালীন সময়ে সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মচারীরা মাঠপর্যায়ে তদারকি চালিয়ে ও পরামর্শ দিয়ে খামারিদের এ ব্যবসায় ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত