Ajker Patrika

পুরোনো ছবিতে নতুন স্বপ্ন

রজত কান্তি রায়, ঢাকা
আপডেট : ১৪ মে ২০২৩, ০৯: ০৬
পুরোনো ছবিতে নতুন স্বপ্ন

‘নেপালি টুপি আর উত্তরীয় গায়ে জড়িয়ে কী মনে হলো? মানে, অনুভূতি কী হলো?’ ফেসবুকের ইনবক্সে জিজ্ঞেস করলাম তাঁকে। ফেসবুকে তুমুল জনপ্রিয় তিনি।তাঁর তৈরি করা গ্রুপ ‘বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য ছবি সমগ্র’ দারুণ জনপ্রিয় ও আলোচিত নেটিজেনদের কাছে। ইতিমধ্যে গ্রুপটির সদস্যসংখ্যা ১১ লাখ ১১ হাজার আর পেজের সদস্যসংখ্যা সাড়ে ৩ লাখের বেশি! প্রায় ১৫ লাখ সদস্য নিয়ে দারুণ সব কাজ করেন তিনি।

কখনো হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের ৫০ বছর পর খুঁজে পাওয়া যায় সেই গ্রুপের মাধ্যমে। কখনো অতি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ছবি, ভিডিও কিংবা কোনো দলিল পাওয়া যায় গ্রুপটিতে। তিনি পেছনে দাঁড়িয়ে সেই মিলন কিংবা গবেষকদের স্বস্তি উপভোগ করেন। অথচ কত বয়স তাঁর? মাত্র ২৮ বছর। নাম গিরিধর দে, বাড়ি ফরিদপুরে।

এই বিস্তারিত বিবরণের একটি কারণ আছে। গ্রুপটি মুক্তিযুদ্ধ, শিক্ষা, ইতিহাস, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষি, যোগাযোগ, প্রত্নতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করে।অর্থাৎ এ বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ঐতিহাসিক ছবি, ভিডিও কিংবা গুরুত্বপূর্ণ দলিলের ডিজিটাল সংরক্ষণ, সেগুলোর সঠিক তথ্য যাচাই-বাছাই, প্রয়োজনে গবেষণা কিংবা লেখালেখির কাজে সরবরাহ করা এবং তথ্যবিকৃতি রোধ করা বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য ছবি সমগ্র নামের গ্রুপটির মূল কাজ। ২০১৬ সালের আগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে গড়ে ওঠা গ্রুপটি ইতিমধ্যে তাদের কাজের জন্য দেশ-বিদেশের অনেক মানুষের যে দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছে, তা বোঝা যায় এর সদস্যসংখ্যা দেখলে। এর স্বীকৃতি হিসেবে গিরিধর দে ২০২১ সালে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। এবার সেই অর্জনের ক্ষেত্রে যোগ হলো ‘নেপাল-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০২৩’।

গত শুক্রবার নেপাল-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি এবং সাউথ এশিয়া বিজনেস পার্টনারশিপের যৌথ উদ্যোগে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর হোটেল থামেল পার্কের অডিটরিয়ামে এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে গিরিধর দের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানটির প্রধান অতিথি নেপালের সংস্কৃতি, পর্যটন ও বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী সুদান কেরাতি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নেপালের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যামন্ত্রী মোহন বাহাদুর বাসনেত।

আরও উপস্থিত ছিলেন নেপাল ঔষধি লিমিটেডের চেয়ারম্যান যজ্ঞ প্রসাদ নেউপানে, সাবেক জল সরবরাহমন্ত্রী উমাকান্ত চৌধুরী, এনআরএন ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের পরিচালক ডা. ভরত থাপা। অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন সাউথ এশিয়া বিজনেস পার্টনারশিপের পরিচালক মো. গোলাম ফারুক মজনু। এ ছাড়া নেপাল সরকার এবং নেপাল ও বাংলাদেশের করপোরেট জগতের ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

গিরিধরের এই পুরস্কার পাওয়ারই ছিল সম্ভবত। ডিজিটাল মাধ্যম যেসব ধরনের সীমানা ভেঙে দিয়েছে, সেটি প্রমাণ করেছেন তিনি। অনলাইনে প্রতি সপ্তাহে গ্রুপটির রিচ বা পাঠকসংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি! গত ৬ বছরে তাদের সংগ্রহ করা বিভিন্ন দলিলের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এসব সংগ্রহ নিয়ে ভবিষ্যতে ডিজিটাল মিউজিয়াম করতে চান গিরিধর দে। সেই অপেক্ষায় আমরাও।

পুরস্কার গ্রহণ শেষে গিরিধর দে জানান, এই অর্জন বাংলাদেশের। আর হ্যাঁ, আমার প্রশ্নের উত্তরে তিনি কিছু না বলে একটি হাস্যোজ্জ্বল ইমোজি পাঠিয়েছেন মাত্র।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত