Ajker Patrika

দর্শনার্থী বেশি, বিক্রি কম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

প্রবেশপথে লম্বা লাইন, মাঠের ভেতরটাও প্রায় পূর্ণ। স্টলের মাঝের গলিতে হাঁটতে গেলেও ধাক্কা লাগার উপক্রম। স্টলগুলোর সামনেও উৎসুক ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়। আগের চেয়ে বেচাকেনাও খানিকটা বেড়েছে। তবু বিক্রেতারা বলছেন, পূর্বাচলের মেলায় বিক্রি আশানুরূপ নয়, ঢাকার মেলার (আগারগাঁও) চেয়ে অর্ধেকের কম। এমন চিত্র গতকাল শনিবারের ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার।

বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসরের মতো এবারের ২৭তম আসরও বসেছে ঢাকার অদূরে পূর্বাচলের স্থায়ী ভেন্যুতে। গতকাল শনিবার ছিল মেলার ২১তম দিন, চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

আগের চেয়ে দর্শনার্থী বেড়েছে জানিয়ে মেলার প্রবেশপথ বা গেটের ইজারাদার স্থানীয় রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন ভূঁইয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত শুক্রবার এক লাখের একটু বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিনে এখন ৩৫ হাজারের মতো মানুষ আসছেন মেলায়। শুরুর দিকে দিনে মাত্র কয়েক হাজার মানুষ হতো। এখন অনেক বেড়েছে। তবে আশার চেয়ে অনেক কম, মনে হয় লোকসান দিতে হবে।

দর্শনার্থী বাড়লেও খুব বেশি খুশি নেই বিক্রেতাদের মনে। তাঁরা বলছেন, জমে উঠতে শুরু করেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। সাধারণত ছুটির দিনে মেলায় দর্শক সমাগম বেশি হয়। তবে শেষের দিনগুলো থাকে এর ব্যতিক্রম। এখন স্বাভাবিক দিনগুলোতেও ভালোই দর্শক হয় মেলায়। শুক্র ও শনিবার প্রচুর মানুষ হয়। তবে মানুষজন কিনছেন কম, দেখছেন বেশি। আগারগাঁওয়ে যে পরিমাণ বিক্রি হতো, সে তুলনায় পূর্বাচলে বিক্রি অনেকটাই কম। মূলত শহর থেকে মেলা দূরে হওয়ায় ক্রেতা ও বিক্রি কম হচ্ছে বলেই মনে করছেন তাঁরা।

হোম টেক্সটাইলের স্টল আনজুমান হোমের দোকানি মো. ইয়ামিন বলেন, ছয়-সাত বছর ধরে বাণিজ্য মেলায় স্টল নিই। দুই বছর থেকে তেমন লাভ করতে পারি না। আগে শেষের দিকে কথা বলার সময় থাকত না। এখন শুক্র-শনিবার একটু বিক্রি হয়। অন্য দিনে তেমন হয় না। এখানে স্টলও ছোট, মানুষের দেখার জায়গাও কম।

কার্পেট বিক্রির হোম সুলতানস ডট কমের বিক্রেতা রাহাত বলেন, বেচাকেনা আগের চেয়ে মোটামুটি বেড়েছে। দুই দিন ভালোই বিক্রি হয়েছে। অন্য দিন একটু কম থাকে। এখন শেষের দিকে এভাবে বিক্রি হলে ভালো হবে।

ব্লেজার দোকানের কর্মী রাসেল বলেন, ১ হাজার ৪০০ টাকায় ব্লেজার ও ১ হাজার ২০০ টাকায় কটি বিক্রি করছি। তারপরও বিক্রি কম। আগের চেয়ে দামও কমিয়েছি। তবু মানুষ তেমন কিনছে না। আগারগাঁওয়ে অনেক ভালো বিক্রি হতো। হয়তো শেষের দিকে একটু বিক্রি হতে পারে। মেলার সময় বাড়লে ব্যবসায়ীদের জন্য লাভ হবে।

সারা কাশ্মীরি শাল নামক স্টলের বিক্রেতা হাফিজুর রহমান অসীম বলেন, অনেকে পণ্য দেখেই চলে যাচ্ছেন। পূর্বাচলে বেচাকেনা একেবারে ফ্লপ। মেলা যখন আগারগাঁওয়ে ছিল তখন ভালোই বিক্রি হতো। এখানে আগের মতো বিক্রি হয় না।

তবে বিক্রি ভালো বলে জানান ইরানি প্যাভিলিয়নের বিক্রয়কর্মী জাহিদ। তিনি বলেন, ছুটির দিনে ভালোই বিক্রি হয়। শুক্রবার হলে লাখ টাকার বেশি আচার বিক্রি হয়েছে। আজও ভালো। আমাদের বিভিন্ন ধরনের আচার রয়েছে। বাদাম ও বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবারও আছে। ক্রেতারা তাঁদের পছন্দমতো আচার কিনতে পারছেন।

দর্শনার্থী শারমিন সুলতানা বলেন, ‘ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন বিদেশি পণ্যের দোকান দেখলাম। আমি একটি কাশ্মীরি শাল কিনেছি ২ হাজার টাকায়। নানা ধরনের পণ্য রয়েছে দোকানগুলোতে। বাণিজ্য মেলার বাইরে এসব পণ্য দেখাই যায় না। তাই প্রতি বছরই মেলায় আসি।’

দ্বিতীয়বারের মতো পূর্বাচলে চলে বাণিজ্য মেলা। গত বছরের চেয়ে এ বছর মেলার পরিসর, আয়োজন ও সাজসজ্জায় বড় পরিবর্তন এসেছে। গত বছর মেলায় স্টল ছিল ২২৫টি। এবার দেশি-বিদেশি স্টল বসছে ৩৩১টি। এবারের মেলায় মোট স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৪৮৩টি। এ বছর মেলায় ২১টি দেশ অংশ নিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত