Ajker Patrika

জাল দলিল করে পুকুর দখলের অভিযোগ

রাজশাহী প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ২৪
জাল দলিল করে পুকুর দখলের অভিযোগ

জাল দলিল করে রাজশাহী মহানগরীতে বিহারিদের একটি পুকুর ও পুকুরপাড়ের জমি লিখে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১৬টি বিহারি পরিবার গতকাল শনিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন। সম্পত্তি রক্ষায় তাঁরা সংশ্লিষ্ট সবার সহায়তা কামনা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশভাগের পর নগরীর সাগরপাড়া বল্লভগঞ্জ এলাকায় ১৬টি বিহারি পরিবার এসে বসবাস শুরু করে। তাঁদের সাড়ে ১৮ কাঠা পুকুর এবং পুকুরপাড়ে সাড়ে ১৪ কাঠা জমি মিলে মোট ৩৩ কাঠা সম্পত্তি ছিল। সে সময় বিহারি সমাজে সর্দার প্রথা ছিল। স্বাধীনতার আগে হানিফ সর্দার সিদ্ধান্ত নেন, পুকুরটি রাজারহাতা এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমানকে মাছ চাষের জন্য দেওয়া হবে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বছরে দেড় হাজার টাকা এবং কিছু মাছ দেওয়ার শর্তে মজিবরকে পুকুরটি মৌখিকভাবে মাছ চাষের জন্য দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় এসব বিহারি পরিবারের ঘরবাড়ি লুটপাট হয়। অনেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যান। তাঁরা আর পুকুরটির দিকে ঠিকমতো নজর দিতে পারতেন না। এ সুযোগে মারা যাওয়া কয়েকজন বিহারির স্বাক্ষর জাল করে মজিবর রহমান নিজের নামে পুকুরের দলিল বানিয়ে ফেলেন বলে সংবাদ সম্মেলনে বিহারিরা অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, একাত্তরে ঘরবাড়ি লুট হওয়ার পর বিহারিরা আর জমির কাগজপত্র দেখাতে পারছেন না। মজিবর রহমান মারা যাওয়ার পর তাঁর ছেলে বিএনপি নেতা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর দিলদার আলী এবং তাঁর বন্ধু মোহাম্মদ নুরু একসঙ্গে পুকুর দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে তাঁরা পুকুরের তিনপাশে কিছুটা জায়গা ভরাট করে আত্মীয়-স্বজনদের তিনটি বাড়ি নির্মাণ করছেন। তাঁরা পুরো পুকুরটি এখন ঘিরে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিহারি পরিবারের জাব্বার আলী, সাইদা খাতুন, রিজিয়া খাতুন, ঈসা আলী, হালিমা বিবি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে দিলদার আলী বলেন, ‘আমরা জমির আরএস রেকর্ডীয় মালিক। আমরা ওয়ারিশসূত্রে এখন জমির মালিক। ১৯৭৪ সালে ১৭ জন ব্যক্তির কাছ থেকে আমার বাবা পুকুরটি কিনেছিলেন। সুতরাং, জাল দলিল করার অভিযোগ সঠিক নয়।’

মোহাম্মদ নুরু বলেন, ‘আমি দিলদারদের কাছ থেকে কিছু জমি কিনেছি। বিহারিরা দিলদারের বাবার কাছে ওই জমি বিক্রি করেছিল। আমি উকিল-মুহুরিদের কাগজপত্র দেখিয়ে নির্ভেজাল জায়গা কিনেছি। এখন কিছু অসাধু ব্যক্তি টাকা-পয়সা খাওয়ার জন্য বিহারিদের নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। আমি জমির খাজনাও দিয়েছি। বিহারিরা দাবি করছে জমি তাঁদের। তাঁদের যদি জমি থাকে তাহলে তাঁরা মামলা করছে না কেন? কোর্ট আছে, ভূমি অফিস আছে, মামলা করছে না। খালি বলছে- জমি আমাদের, আমাদের, আমাদের।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত