শাইখ সিরাজ

এক দশকের বেশি সময় ধরে আমি খেজুর গুড়ের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরছি টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও আমার লেখালেখিতে। তুলে ধরেছি গাছিদের নানা সংকটের কথা। প্রচার-প্রচারণায় বেড়েছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ের চাহিদা। গণমাধ্যমের প্রচার-প্রচারণা এবং সরকারের, প্রশাসনের উদ্যোগে খেজুর গুড় উৎপাদনের তাগিদ ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের মাঝে। ফলে খেজুরগাছ রোপণ থেকে রস আহরণ এবং গুড় উৎপাদনে উদ্যোগী হচ্ছেন অনেকেই।
প্রকৃতির অনন্য আশীর্বাদ এই খেজুরগাছ। মরু অঞ্চলের খেজুরগাছ থেকে পাওয়া যায় পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। আর এই অঞ্চলের খেজুরগাছ
থেকে শীতকালে আহরণ করা হয় সুমিষ্ট রস। ফলে আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে খেজুর রসের ইতিহাস জড়িয়ে গেছে। পিঠা-পুলি থেকে
খেজুরের গুড়...মোহনীয় ঘ্রাণে বেঁধেছে আমাদের জীবনযাপনকে।
শীতের সকালে রোদে বসে খেজুর রস কিংবা খেজুরের গুড় দিয়ে এক বাটি মুড়ির তৃপ্তি অন্য কিছুতে পাওয়া যাবে না। রসনাতৃপ্তির জন্য
একসময় বাদামি চিনি তৈরি হতো এই খেজুরের গুড় দিয়ে। যে বাদামি চিনির খ্যাতি শুধু বাংলাদেশেই নয়, ছিল বিশ্বজুড়ে। কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে আমাদের সেই সমৃদ্ধি। তবে এখনো বিভিন্ন গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে চলে খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া।
কয়েক দিন আগে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল যশোরের চৌগাছায়। কথা বলেছিলাম চৌগাছার গাছি হারুন-অর-রশীদের সঙ্গে। তিনি চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। গাছ কাটা, রস সংগ্রহ থেকে শুরু করে গুড় বানানো পর্যন্ত সব কাজই করেন নিজ হাতে। তিনি বললেন, আগের মতো খেজুরগাছ নেই, একই সঙ্গে কমছে গাছির সংখ্যাও। গাছিদের পরবর্তী প্রজন্ম এই পেশায় আগ্রহী হচ্ছে না। সংকটের আরেকটি কারণ পরিশ্রম ও উৎপাদন খরচ অনুযায়ী গুড়-পাটালির ন্যায্য দাম না পাওয়া।
রফিকুল ইসলাম ও কেনু মণ্ডল নামের দুজন খেজুরগাছ থেকে রস পাড়ছিলেন। কথা হয় তাঁদের সঙ্গেও। রফিকুল ইসলাম বলেন, কালের বিবর্তনে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের গাছ ও রস। একসময় রাস্তার মেঠোপথের দুই পাশেই চোখ বোলালে চোখে পড়ত খেজুরগাছের সারি। আর এখন এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না। বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে দিন দিন খেজুরের গাছ কমতে থাকায় গাছিরাও বেছে নিয়েছেন অন্য পেশা।
বছর বিশেক আগেও কনকনে শীতে হারিকেন জ্বালিয়ে খেজুর রস চোরের ভয়ে গভীর রাত পর্যন্ত রসের হাঁড়ি পাহারা দিতে হতো। পুরো শীতকাল ব্যস্ত থাকতে হতো খেজুরের রস এবং রসের গুড় তৈরি নিয়ে। এখন যে গাছগুলো আছে তাতেও তেমন রস মিলছে না। শীতের সময় রস সংগ্রহের পরে গাছগুলো আর পরিচর্যা করা হয় না বলে গাছে শীতের সময় রস হয় না; বিশেষ করে প্রতিটি এলাকায় কৃষকেরা তাঁদের অভাব-অনটনের কারণে রসের খেজুরগাছগুলো কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে সংকট দেখা দিচ্ছে রস সংগ্রহের জন্য গাছের।
একদিকে চাহিদার তুলনায় রসের জোগান অনেক কম, অন্য দিকে ভেজাল গুড়ে বাজার সয়লাব। এতে করে আসল খেজুর গুড়ের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। চৌগাছার হাজীপুর গ্রামের অনেকের সঙ্গে কথা হয়।
তাঁরা জানালেন, ইটভাটা, গাছি-সংকট, ধান-সবজির চাষ—এই তিন কারণে যশোরের ঐতিহ্যের খেজুর গুড় হারিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি অসৎ ব্যবসায়ীরা খেজুর গুড়ে চিনি মেশানোর কারণে চিরচেনা সেই স্বাদও আর থাকছে না। শীত মৌসুমে নলেন গুড়ের পায়েস, রস পিঠা, নারকেল পুলি ঐতিহ্যের এই পিঠা-পায়েসও কেবল খেজুর গুড়ের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে।
একবার গাছকাটার পর দুই-তিন দিন পর্যন্ত রস সংগ্রহ করা হয়। প্রথম দিনের রসকে স্থানীয়ভাবে বলা হয় জিরেন। জিরেন রস থেকেই হয় নলেন গুড়। গাছ কাটার ওপর যেমন রসের তারতম্য, তেমনি গুড়ের মানও নির্ভর করে রসের ওপর। নলেন গুড়ের সুঘ্রাণ সবচেয়ে বেশি। দোকাটের রসে হয় পাটালি আর দানাগুড়। এই অঞ্চলে তৃতীয় কাট বা নিমঝরা রস সংগ্রহ করা হয় না। নিমঝরা রসের গুড় হয় কিছুটা টক টক। দিনের বেলার রস ‘ওলা’। সেই রসের গুড়ের স্বাদ তেমন ভালো হয় না।
আমি হৃদয়ে মাটি ও মানুষের নানা পর্বে যশোরের খাজুরার গুড় তৈরির দৃশ্য যেমন তুলে ধরেছি, তুলে ধরেছি মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড় তৈরির প্রক্রিয়াও। খেজুরের গুড় ছাড়াও উপকূলীয় অঞ্চলের গোলপাতার গুড়ের গল্পও তুলে ধরেছি। ২০১৭ সালে প্রথম হাজারি গুড়ের উৎপাদন চিত্র তুলে ধরি।
তখন এর ঐতিহাসিক গল্পগুলো ঠিকই ছিল, কিন্তু বহু মানুষের তৎপরতায় হাজারির আসল ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। সে সময় মনে হয়েছিল, মানিকগঞ্জ জেলার অন্যতম সেরা ঐতিহ্য এই হাজারি গুড় যুক্ত হওয়া উচিত জেলা ব্র্যান্ডিংয়ে। বিষয়টি চ্যানেল আইয়ের হৃদয়ে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানেও তুলে ধরেছিলাম। এরই ধারাবাহিকতায় মানিকগঞ্জের তৎকালীন পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম ও চ্যানেল আইয়ের জেলা প্রতিনিধি গোলাম সারওয়ার সানু বিষয়টি নিয়ে জোরালো তৎপরতা চালান। পরে জেলার ব্র্যান্ডিং হয়—‘লোকসংগীত আর হাজারি গুড়, মানিকগঞ্জের প্রাণের সুর’।
ঐতিহাসিক সতীশ চন্দ্র মিত্রের ‘যশোহর খুলনার ইতিহাস’ বইয়ে পাওয়া যায়, ১৯০০-১৯০১ সালে পূর্ববঙ্গে খেজুরের গুড় তৈরি হয়েছে ২১ লাখ ৮০ হাজার ৫৫০ মণ। এর মধ্যে শুধু যশোরেই তৈরি হয়েছে ১৭ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ মণ গুড়। ১৮৬১ সালে মিস্টার নিউ হাউস চৌগাছার কপোতাক্ষ নদের তীর এলাকার তাহেরপুরে প্রথম খেজুরের গুড় উৎপাদনের যান্ত্রিক কারখানা গড়ে তোলেন। ওই কারখানার উৎপাদিত গুড় ইউরোপে রপ্তানি হয়েছে।
পরবর্তী সময়ে যশোরের বিভিন্ন গ্রামে ১১৭টি কারখানা গড়ে ওঠে। সেই সমৃদ্ধির গল্প কবেই তলিয়ে গেছে। তবে এখন খেজুর গুড়ের উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের তথ্য বলছে, দেশে প্রতিবছর সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টন গুড় উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে খেজুর ও তালের রস থেকে উৎপাদিত গুড়ের পরিমাণ ৩০ থেকে ৪০ হাজার টন। এর বড় অংশই খেজুরের গুড়। ধীরে ধীরে পরিধি বাড়ছে খেজুর গুড়ের বাজারের।
গুড় তৈরির প্রক্রিয়াটি শুদ্ধতম চর্চা হিসেবে খ্যাত। যশোরের খেজুর গুড়কে ভৌগোলিক নির্দেশক, অর্থাৎ জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির প্রক্রিয়া চলছে। একদিকে দেশের বাজারে চিনির বিকল্প গুড়ের চাহিদা বাড়ছে। অন্যদিকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলে বাড়বে আন্তর্জাতিক কদর। আমাদের আদি ঐতিহ্যের ধারক খেজুর গুড়ের গুণ ও ঘ্রাণ ছড়িয়ে দিতে হবে বিশ্বব্যাপী।
খেজুরের রস আহরণ থেকে শুরু করে গুড় তৈরির প্রতিটি প্রক্রিয়া হতে হবে শুদ্ধ। গুড়ের শিল্পকে আরও অগ্রসর করতে প্রয়োজন নানাবিধ গবেষণা এবং এই খাতে পরিকল্পিত বিনিয়োগ। আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশের খেজুর গুড়ের মোহনীয় ঘ্রাণে একদিন মোহিত হবে সারা বিশ্ব।
লেখক: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই

এক দশকের বেশি সময় ধরে আমি খেজুর গুড়ের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরছি টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও আমার লেখালেখিতে। তুলে ধরেছি গাছিদের নানা সংকটের কথা। প্রচার-প্রচারণায় বেড়েছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ের চাহিদা। গণমাধ্যমের প্রচার-প্রচারণা এবং সরকারের, প্রশাসনের উদ্যোগে খেজুর গুড় উৎপাদনের তাগিদ ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের মাঝে। ফলে খেজুরগাছ রোপণ থেকে রস আহরণ এবং গুড় উৎপাদনে উদ্যোগী হচ্ছেন অনেকেই।
প্রকৃতির অনন্য আশীর্বাদ এই খেজুরগাছ। মরু অঞ্চলের খেজুরগাছ থেকে পাওয়া যায় পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। আর এই অঞ্চলের খেজুরগাছ
থেকে শীতকালে আহরণ করা হয় সুমিষ্ট রস। ফলে আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে খেজুর রসের ইতিহাস জড়িয়ে গেছে। পিঠা-পুলি থেকে
খেজুরের গুড়...মোহনীয় ঘ্রাণে বেঁধেছে আমাদের জীবনযাপনকে।
শীতের সকালে রোদে বসে খেজুর রস কিংবা খেজুরের গুড় দিয়ে এক বাটি মুড়ির তৃপ্তি অন্য কিছুতে পাওয়া যাবে না। রসনাতৃপ্তির জন্য
একসময় বাদামি চিনি তৈরি হতো এই খেজুরের গুড় দিয়ে। যে বাদামি চিনির খ্যাতি শুধু বাংলাদেশেই নয়, ছিল বিশ্বজুড়ে। কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে আমাদের সেই সমৃদ্ধি। তবে এখনো বিভিন্ন গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে চলে খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া।
কয়েক দিন আগে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল যশোরের চৌগাছায়। কথা বলেছিলাম চৌগাছার গাছি হারুন-অর-রশীদের সঙ্গে। তিনি চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। গাছ কাটা, রস সংগ্রহ থেকে শুরু করে গুড় বানানো পর্যন্ত সব কাজই করেন নিজ হাতে। তিনি বললেন, আগের মতো খেজুরগাছ নেই, একই সঙ্গে কমছে গাছির সংখ্যাও। গাছিদের পরবর্তী প্রজন্ম এই পেশায় আগ্রহী হচ্ছে না। সংকটের আরেকটি কারণ পরিশ্রম ও উৎপাদন খরচ অনুযায়ী গুড়-পাটালির ন্যায্য দাম না পাওয়া।
রফিকুল ইসলাম ও কেনু মণ্ডল নামের দুজন খেজুরগাছ থেকে রস পাড়ছিলেন। কথা হয় তাঁদের সঙ্গেও। রফিকুল ইসলাম বলেন, কালের বিবর্তনে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের গাছ ও রস। একসময় রাস্তার মেঠোপথের দুই পাশেই চোখ বোলালে চোখে পড়ত খেজুরগাছের সারি। আর এখন এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না। বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে দিন দিন খেজুরের গাছ কমতে থাকায় গাছিরাও বেছে নিয়েছেন অন্য পেশা।
বছর বিশেক আগেও কনকনে শীতে হারিকেন জ্বালিয়ে খেজুর রস চোরের ভয়ে গভীর রাত পর্যন্ত রসের হাঁড়ি পাহারা দিতে হতো। পুরো শীতকাল ব্যস্ত থাকতে হতো খেজুরের রস এবং রসের গুড় তৈরি নিয়ে। এখন যে গাছগুলো আছে তাতেও তেমন রস মিলছে না। শীতের সময় রস সংগ্রহের পরে গাছগুলো আর পরিচর্যা করা হয় না বলে গাছে শীতের সময় রস হয় না; বিশেষ করে প্রতিটি এলাকায় কৃষকেরা তাঁদের অভাব-অনটনের কারণে রসের খেজুরগাছগুলো কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে সংকট দেখা দিচ্ছে রস সংগ্রহের জন্য গাছের।
একদিকে চাহিদার তুলনায় রসের জোগান অনেক কম, অন্য দিকে ভেজাল গুড়ে বাজার সয়লাব। এতে করে আসল খেজুর গুড়ের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। চৌগাছার হাজীপুর গ্রামের অনেকের সঙ্গে কথা হয়।
তাঁরা জানালেন, ইটভাটা, গাছি-সংকট, ধান-সবজির চাষ—এই তিন কারণে যশোরের ঐতিহ্যের খেজুর গুড় হারিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি অসৎ ব্যবসায়ীরা খেজুর গুড়ে চিনি মেশানোর কারণে চিরচেনা সেই স্বাদও আর থাকছে না। শীত মৌসুমে নলেন গুড়ের পায়েস, রস পিঠা, নারকেল পুলি ঐতিহ্যের এই পিঠা-পায়েসও কেবল খেজুর গুড়ের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে।
একবার গাছকাটার পর দুই-তিন দিন পর্যন্ত রস সংগ্রহ করা হয়। প্রথম দিনের রসকে স্থানীয়ভাবে বলা হয় জিরেন। জিরেন রস থেকেই হয় নলেন গুড়। গাছ কাটার ওপর যেমন রসের তারতম্য, তেমনি গুড়ের মানও নির্ভর করে রসের ওপর। নলেন গুড়ের সুঘ্রাণ সবচেয়ে বেশি। দোকাটের রসে হয় পাটালি আর দানাগুড়। এই অঞ্চলে তৃতীয় কাট বা নিমঝরা রস সংগ্রহ করা হয় না। নিমঝরা রসের গুড় হয় কিছুটা টক টক। দিনের বেলার রস ‘ওলা’। সেই রসের গুড়ের স্বাদ তেমন ভালো হয় না।
আমি হৃদয়ে মাটি ও মানুষের নানা পর্বে যশোরের খাজুরার গুড় তৈরির দৃশ্য যেমন তুলে ধরেছি, তুলে ধরেছি মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড় তৈরির প্রক্রিয়াও। খেজুরের গুড় ছাড়াও উপকূলীয় অঞ্চলের গোলপাতার গুড়ের গল্পও তুলে ধরেছি। ২০১৭ সালে প্রথম হাজারি গুড়ের উৎপাদন চিত্র তুলে ধরি।
তখন এর ঐতিহাসিক গল্পগুলো ঠিকই ছিল, কিন্তু বহু মানুষের তৎপরতায় হাজারির আসল ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। সে সময় মনে হয়েছিল, মানিকগঞ্জ জেলার অন্যতম সেরা ঐতিহ্য এই হাজারি গুড় যুক্ত হওয়া উচিত জেলা ব্র্যান্ডিংয়ে। বিষয়টি চ্যানেল আইয়ের হৃদয়ে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানেও তুলে ধরেছিলাম। এরই ধারাবাহিকতায় মানিকগঞ্জের তৎকালীন পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম ও চ্যানেল আইয়ের জেলা প্রতিনিধি গোলাম সারওয়ার সানু বিষয়টি নিয়ে জোরালো তৎপরতা চালান। পরে জেলার ব্র্যান্ডিং হয়—‘লোকসংগীত আর হাজারি গুড়, মানিকগঞ্জের প্রাণের সুর’।
ঐতিহাসিক সতীশ চন্দ্র মিত্রের ‘যশোহর খুলনার ইতিহাস’ বইয়ে পাওয়া যায়, ১৯০০-১৯০১ সালে পূর্ববঙ্গে খেজুরের গুড় তৈরি হয়েছে ২১ লাখ ৮০ হাজার ৫৫০ মণ। এর মধ্যে শুধু যশোরেই তৈরি হয়েছে ১৭ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ মণ গুড়। ১৮৬১ সালে মিস্টার নিউ হাউস চৌগাছার কপোতাক্ষ নদের তীর এলাকার তাহেরপুরে প্রথম খেজুরের গুড় উৎপাদনের যান্ত্রিক কারখানা গড়ে তোলেন। ওই কারখানার উৎপাদিত গুড় ইউরোপে রপ্তানি হয়েছে।
পরবর্তী সময়ে যশোরের বিভিন্ন গ্রামে ১১৭টি কারখানা গড়ে ওঠে। সেই সমৃদ্ধির গল্প কবেই তলিয়ে গেছে। তবে এখন খেজুর গুড়ের উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের তথ্য বলছে, দেশে প্রতিবছর সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টন গুড় উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে খেজুর ও তালের রস থেকে উৎপাদিত গুড়ের পরিমাণ ৩০ থেকে ৪০ হাজার টন। এর বড় অংশই খেজুরের গুড়। ধীরে ধীরে পরিধি বাড়ছে খেজুর গুড়ের বাজারের।
গুড় তৈরির প্রক্রিয়াটি শুদ্ধতম চর্চা হিসেবে খ্যাত। যশোরের খেজুর গুড়কে ভৌগোলিক নির্দেশক, অর্থাৎ জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির প্রক্রিয়া চলছে। একদিকে দেশের বাজারে চিনির বিকল্প গুড়ের চাহিদা বাড়ছে। অন্যদিকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলে বাড়বে আন্তর্জাতিক কদর। আমাদের আদি ঐতিহ্যের ধারক খেজুর গুড়ের গুণ ও ঘ্রাণ ছড়িয়ে দিতে হবে বিশ্বব্যাপী।
খেজুরের রস আহরণ থেকে শুরু করে গুড় তৈরির প্রতিটি প্রক্রিয়া হতে হবে শুদ্ধ। গুড়ের শিল্পকে আরও অগ্রসর করতে প্রয়োজন নানাবিধ গবেষণা এবং এই খাতে পরিকল্পিত বিনিয়োগ। আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশের খেজুর গুড়ের মোহনীয় ঘ্রাণে একদিন মোহিত হবে সারা বিশ্ব।
লেখক: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই
শাইখ সিরাজ

এক দশকের বেশি সময় ধরে আমি খেজুর গুড়ের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরছি টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও আমার লেখালেখিতে। তুলে ধরেছি গাছিদের নানা সংকটের কথা। প্রচার-প্রচারণায় বেড়েছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ের চাহিদা। গণমাধ্যমের প্রচার-প্রচারণা এবং সরকারের, প্রশাসনের উদ্যোগে খেজুর গুড় উৎপাদনের তাগিদ ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের মাঝে। ফলে খেজুরগাছ রোপণ থেকে রস আহরণ এবং গুড় উৎপাদনে উদ্যোগী হচ্ছেন অনেকেই।
প্রকৃতির অনন্য আশীর্বাদ এই খেজুরগাছ। মরু অঞ্চলের খেজুরগাছ থেকে পাওয়া যায় পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। আর এই অঞ্চলের খেজুরগাছ
থেকে শীতকালে আহরণ করা হয় সুমিষ্ট রস। ফলে আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে খেজুর রসের ইতিহাস জড়িয়ে গেছে। পিঠা-পুলি থেকে
খেজুরের গুড়...মোহনীয় ঘ্রাণে বেঁধেছে আমাদের জীবনযাপনকে।
শীতের সকালে রোদে বসে খেজুর রস কিংবা খেজুরের গুড় দিয়ে এক বাটি মুড়ির তৃপ্তি অন্য কিছুতে পাওয়া যাবে না। রসনাতৃপ্তির জন্য
একসময় বাদামি চিনি তৈরি হতো এই খেজুরের গুড় দিয়ে। যে বাদামি চিনির খ্যাতি শুধু বাংলাদেশেই নয়, ছিল বিশ্বজুড়ে। কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে আমাদের সেই সমৃদ্ধি। তবে এখনো বিভিন্ন গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে চলে খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া।
কয়েক দিন আগে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল যশোরের চৌগাছায়। কথা বলেছিলাম চৌগাছার গাছি হারুন-অর-রশীদের সঙ্গে। তিনি চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। গাছ কাটা, রস সংগ্রহ থেকে শুরু করে গুড় বানানো পর্যন্ত সব কাজই করেন নিজ হাতে। তিনি বললেন, আগের মতো খেজুরগাছ নেই, একই সঙ্গে কমছে গাছির সংখ্যাও। গাছিদের পরবর্তী প্রজন্ম এই পেশায় আগ্রহী হচ্ছে না। সংকটের আরেকটি কারণ পরিশ্রম ও উৎপাদন খরচ অনুযায়ী গুড়-পাটালির ন্যায্য দাম না পাওয়া।
রফিকুল ইসলাম ও কেনু মণ্ডল নামের দুজন খেজুরগাছ থেকে রস পাড়ছিলেন। কথা হয় তাঁদের সঙ্গেও। রফিকুল ইসলাম বলেন, কালের বিবর্তনে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের গাছ ও রস। একসময় রাস্তার মেঠোপথের দুই পাশেই চোখ বোলালে চোখে পড়ত খেজুরগাছের সারি। আর এখন এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না। বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে দিন দিন খেজুরের গাছ কমতে থাকায় গাছিরাও বেছে নিয়েছেন অন্য পেশা।
বছর বিশেক আগেও কনকনে শীতে হারিকেন জ্বালিয়ে খেজুর রস চোরের ভয়ে গভীর রাত পর্যন্ত রসের হাঁড়ি পাহারা দিতে হতো। পুরো শীতকাল ব্যস্ত থাকতে হতো খেজুরের রস এবং রসের গুড় তৈরি নিয়ে। এখন যে গাছগুলো আছে তাতেও তেমন রস মিলছে না। শীতের সময় রস সংগ্রহের পরে গাছগুলো আর পরিচর্যা করা হয় না বলে গাছে শীতের সময় রস হয় না; বিশেষ করে প্রতিটি এলাকায় কৃষকেরা তাঁদের অভাব-অনটনের কারণে রসের খেজুরগাছগুলো কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে সংকট দেখা দিচ্ছে রস সংগ্রহের জন্য গাছের।
একদিকে চাহিদার তুলনায় রসের জোগান অনেক কম, অন্য দিকে ভেজাল গুড়ে বাজার সয়লাব। এতে করে আসল খেজুর গুড়ের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। চৌগাছার হাজীপুর গ্রামের অনেকের সঙ্গে কথা হয়।
তাঁরা জানালেন, ইটভাটা, গাছি-সংকট, ধান-সবজির চাষ—এই তিন কারণে যশোরের ঐতিহ্যের খেজুর গুড় হারিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি অসৎ ব্যবসায়ীরা খেজুর গুড়ে চিনি মেশানোর কারণে চিরচেনা সেই স্বাদও আর থাকছে না। শীত মৌসুমে নলেন গুড়ের পায়েস, রস পিঠা, নারকেল পুলি ঐতিহ্যের এই পিঠা-পায়েসও কেবল খেজুর গুড়ের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে।
একবার গাছকাটার পর দুই-তিন দিন পর্যন্ত রস সংগ্রহ করা হয়। প্রথম দিনের রসকে স্থানীয়ভাবে বলা হয় জিরেন। জিরেন রস থেকেই হয় নলেন গুড়। গাছ কাটার ওপর যেমন রসের তারতম্য, তেমনি গুড়ের মানও নির্ভর করে রসের ওপর। নলেন গুড়ের সুঘ্রাণ সবচেয়ে বেশি। দোকাটের রসে হয় পাটালি আর দানাগুড়। এই অঞ্চলে তৃতীয় কাট বা নিমঝরা রস সংগ্রহ করা হয় না। নিমঝরা রসের গুড় হয় কিছুটা টক টক। দিনের বেলার রস ‘ওলা’। সেই রসের গুড়ের স্বাদ তেমন ভালো হয় না।
আমি হৃদয়ে মাটি ও মানুষের নানা পর্বে যশোরের খাজুরার গুড় তৈরির দৃশ্য যেমন তুলে ধরেছি, তুলে ধরেছি মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড় তৈরির প্রক্রিয়াও। খেজুরের গুড় ছাড়াও উপকূলীয় অঞ্চলের গোলপাতার গুড়ের গল্পও তুলে ধরেছি। ২০১৭ সালে প্রথম হাজারি গুড়ের উৎপাদন চিত্র তুলে ধরি।
তখন এর ঐতিহাসিক গল্পগুলো ঠিকই ছিল, কিন্তু বহু মানুষের তৎপরতায় হাজারির আসল ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। সে সময় মনে হয়েছিল, মানিকগঞ্জ জেলার অন্যতম সেরা ঐতিহ্য এই হাজারি গুড় যুক্ত হওয়া উচিত জেলা ব্র্যান্ডিংয়ে। বিষয়টি চ্যানেল আইয়ের হৃদয়ে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানেও তুলে ধরেছিলাম। এরই ধারাবাহিকতায় মানিকগঞ্জের তৎকালীন পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম ও চ্যানেল আইয়ের জেলা প্রতিনিধি গোলাম সারওয়ার সানু বিষয়টি নিয়ে জোরালো তৎপরতা চালান। পরে জেলার ব্র্যান্ডিং হয়—‘লোকসংগীত আর হাজারি গুড়, মানিকগঞ্জের প্রাণের সুর’।
ঐতিহাসিক সতীশ চন্দ্র মিত্রের ‘যশোহর খুলনার ইতিহাস’ বইয়ে পাওয়া যায়, ১৯০০-১৯০১ সালে পূর্ববঙ্গে খেজুরের গুড় তৈরি হয়েছে ২১ লাখ ৮০ হাজার ৫৫০ মণ। এর মধ্যে শুধু যশোরেই তৈরি হয়েছে ১৭ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ মণ গুড়। ১৮৬১ সালে মিস্টার নিউ হাউস চৌগাছার কপোতাক্ষ নদের তীর এলাকার তাহেরপুরে প্রথম খেজুরের গুড় উৎপাদনের যান্ত্রিক কারখানা গড়ে তোলেন। ওই কারখানার উৎপাদিত গুড় ইউরোপে রপ্তানি হয়েছে।
পরবর্তী সময়ে যশোরের বিভিন্ন গ্রামে ১১৭টি কারখানা গড়ে ওঠে। সেই সমৃদ্ধির গল্প কবেই তলিয়ে গেছে। তবে এখন খেজুর গুড়ের উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের তথ্য বলছে, দেশে প্রতিবছর সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টন গুড় উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে খেজুর ও তালের রস থেকে উৎপাদিত গুড়ের পরিমাণ ৩০ থেকে ৪০ হাজার টন। এর বড় অংশই খেজুরের গুড়। ধীরে ধীরে পরিধি বাড়ছে খেজুর গুড়ের বাজারের।
গুড় তৈরির প্রক্রিয়াটি শুদ্ধতম চর্চা হিসেবে খ্যাত। যশোরের খেজুর গুড়কে ভৌগোলিক নির্দেশক, অর্থাৎ জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির প্রক্রিয়া চলছে। একদিকে দেশের বাজারে চিনির বিকল্প গুড়ের চাহিদা বাড়ছে। অন্যদিকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলে বাড়বে আন্তর্জাতিক কদর। আমাদের আদি ঐতিহ্যের ধারক খেজুর গুড়ের গুণ ও ঘ্রাণ ছড়িয়ে দিতে হবে বিশ্বব্যাপী।
খেজুরের রস আহরণ থেকে শুরু করে গুড় তৈরির প্রতিটি প্রক্রিয়া হতে হবে শুদ্ধ। গুড়ের শিল্পকে আরও অগ্রসর করতে প্রয়োজন নানাবিধ গবেষণা এবং এই খাতে পরিকল্পিত বিনিয়োগ। আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশের খেজুর গুড়ের মোহনীয় ঘ্রাণে একদিন মোহিত হবে সারা বিশ্ব।
লেখক: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই

এক দশকের বেশি সময় ধরে আমি খেজুর গুড়ের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরছি টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও আমার লেখালেখিতে। তুলে ধরেছি গাছিদের নানা সংকটের কথা। প্রচার-প্রচারণায় বেড়েছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ের চাহিদা। গণমাধ্যমের প্রচার-প্রচারণা এবং সরকারের, প্রশাসনের উদ্যোগে খেজুর গুড় উৎপাদনের তাগিদ ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের মাঝে। ফলে খেজুরগাছ রোপণ থেকে রস আহরণ এবং গুড় উৎপাদনে উদ্যোগী হচ্ছেন অনেকেই।
প্রকৃতির অনন্য আশীর্বাদ এই খেজুরগাছ। মরু অঞ্চলের খেজুরগাছ থেকে পাওয়া যায় পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল। আর এই অঞ্চলের খেজুরগাছ
থেকে শীতকালে আহরণ করা হয় সুমিষ্ট রস। ফলে আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে খেজুর রসের ইতিহাস জড়িয়ে গেছে। পিঠা-পুলি থেকে
খেজুরের গুড়...মোহনীয় ঘ্রাণে বেঁধেছে আমাদের জীবনযাপনকে।
শীতের সকালে রোদে বসে খেজুর রস কিংবা খেজুরের গুড় দিয়ে এক বাটি মুড়ির তৃপ্তি অন্য কিছুতে পাওয়া যাবে না। রসনাতৃপ্তির জন্য
একসময় বাদামি চিনি তৈরি হতো এই খেজুরের গুড় দিয়ে। যে বাদামি চিনির খ্যাতি শুধু বাংলাদেশেই নয়, ছিল বিশ্বজুড়ে। কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে আমাদের সেই সমৃদ্ধি। তবে এখনো বিভিন্ন গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে চলে খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির প্রক্রিয়া।
কয়েক দিন আগে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল যশোরের চৌগাছায়। কথা বলেছিলাম চৌগাছার গাছি হারুন-অর-রশীদের সঙ্গে। তিনি চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। গাছ কাটা, রস সংগ্রহ থেকে শুরু করে গুড় বানানো পর্যন্ত সব কাজই করেন নিজ হাতে। তিনি বললেন, আগের মতো খেজুরগাছ নেই, একই সঙ্গে কমছে গাছির সংখ্যাও। গাছিদের পরবর্তী প্রজন্ম এই পেশায় আগ্রহী হচ্ছে না। সংকটের আরেকটি কারণ পরিশ্রম ও উৎপাদন খরচ অনুযায়ী গুড়-পাটালির ন্যায্য দাম না পাওয়া।
রফিকুল ইসলাম ও কেনু মণ্ডল নামের দুজন খেজুরগাছ থেকে রস পাড়ছিলেন। কথা হয় তাঁদের সঙ্গেও। রফিকুল ইসলাম বলেন, কালের বিবর্তনে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের গাছ ও রস। একসময় রাস্তার মেঠোপথের দুই পাশেই চোখ বোলালে চোখে পড়ত খেজুরগাছের সারি। আর এখন এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না। বিভিন্ন দুর্যোগের কারণে দিন দিন খেজুরের গাছ কমতে থাকায় গাছিরাও বেছে নিয়েছেন অন্য পেশা।
বছর বিশেক আগেও কনকনে শীতে হারিকেন জ্বালিয়ে খেজুর রস চোরের ভয়ে গভীর রাত পর্যন্ত রসের হাঁড়ি পাহারা দিতে হতো। পুরো শীতকাল ব্যস্ত থাকতে হতো খেজুরের রস এবং রসের গুড় তৈরি নিয়ে। এখন যে গাছগুলো আছে তাতেও তেমন রস মিলছে না। শীতের সময় রস সংগ্রহের পরে গাছগুলো আর পরিচর্যা করা হয় না বলে গাছে শীতের সময় রস হয় না; বিশেষ করে প্রতিটি এলাকায় কৃষকেরা তাঁদের অভাব-অনটনের কারণে রসের খেজুরগাছগুলো কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে সংকট দেখা দিচ্ছে রস সংগ্রহের জন্য গাছের।
একদিকে চাহিদার তুলনায় রসের জোগান অনেক কম, অন্য দিকে ভেজাল গুড়ে বাজার সয়লাব। এতে করে আসল খেজুর গুড়ের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। চৌগাছার হাজীপুর গ্রামের অনেকের সঙ্গে কথা হয়।
তাঁরা জানালেন, ইটভাটা, গাছি-সংকট, ধান-সবজির চাষ—এই তিন কারণে যশোরের ঐতিহ্যের খেজুর গুড় হারিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি অসৎ ব্যবসায়ীরা খেজুর গুড়ে চিনি মেশানোর কারণে চিরচেনা সেই স্বাদও আর থাকছে না। শীত মৌসুমে নলেন গুড়ের পায়েস, রস পিঠা, নারকেল পুলি ঐতিহ্যের এই পিঠা-পায়েসও কেবল খেজুর গুড়ের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে।
একবার গাছকাটার পর দুই-তিন দিন পর্যন্ত রস সংগ্রহ করা হয়। প্রথম দিনের রসকে স্থানীয়ভাবে বলা হয় জিরেন। জিরেন রস থেকেই হয় নলেন গুড়। গাছ কাটার ওপর যেমন রসের তারতম্য, তেমনি গুড়ের মানও নির্ভর করে রসের ওপর। নলেন গুড়ের সুঘ্রাণ সবচেয়ে বেশি। দোকাটের রসে হয় পাটালি আর দানাগুড়। এই অঞ্চলে তৃতীয় কাট বা নিমঝরা রস সংগ্রহ করা হয় না। নিমঝরা রসের গুড় হয় কিছুটা টক টক। দিনের বেলার রস ‘ওলা’। সেই রসের গুড়ের স্বাদ তেমন ভালো হয় না।
আমি হৃদয়ে মাটি ও মানুষের নানা পর্বে যশোরের খাজুরার গুড় তৈরির দৃশ্য যেমন তুলে ধরেছি, তুলে ধরেছি মানিকগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী হাজারি গুড় তৈরির প্রক্রিয়াও। খেজুরের গুড় ছাড়াও উপকূলীয় অঞ্চলের গোলপাতার গুড়ের গল্পও তুলে ধরেছি। ২০১৭ সালে প্রথম হাজারি গুড়ের উৎপাদন চিত্র তুলে ধরি।
তখন এর ঐতিহাসিক গল্পগুলো ঠিকই ছিল, কিন্তু বহু মানুষের তৎপরতায় হাজারির আসল ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। সে সময় মনে হয়েছিল, মানিকগঞ্জ জেলার অন্যতম সেরা ঐতিহ্য এই হাজারি গুড় যুক্ত হওয়া উচিত জেলা ব্র্যান্ডিংয়ে। বিষয়টি চ্যানেল আইয়ের হৃদয়ে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানেও তুলে ধরেছিলাম। এরই ধারাবাহিকতায় মানিকগঞ্জের তৎকালীন পৌর মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম ও চ্যানেল আইয়ের জেলা প্রতিনিধি গোলাম সারওয়ার সানু বিষয়টি নিয়ে জোরালো তৎপরতা চালান। পরে জেলার ব্র্যান্ডিং হয়—‘লোকসংগীত আর হাজারি গুড়, মানিকগঞ্জের প্রাণের সুর’।
ঐতিহাসিক সতীশ চন্দ্র মিত্রের ‘যশোহর খুলনার ইতিহাস’ বইয়ে পাওয়া যায়, ১৯০০-১৯০১ সালে পূর্ববঙ্গে খেজুরের গুড় তৈরি হয়েছে ২১ লাখ ৮০ হাজার ৫৫০ মণ। এর মধ্যে শুধু যশোরেই তৈরি হয়েছে ১৭ লাখ ৯ হাজার ৯৬০ মণ গুড়। ১৮৬১ সালে মিস্টার নিউ হাউস চৌগাছার কপোতাক্ষ নদের তীর এলাকার তাহেরপুরে প্রথম খেজুরের গুড় উৎপাদনের যান্ত্রিক কারখানা গড়ে তোলেন। ওই কারখানার উৎপাদিত গুড় ইউরোপে রপ্তানি হয়েছে।
পরবর্তী সময়ে যশোরের বিভিন্ন গ্রামে ১১৭টি কারখানা গড়ে ওঠে। সেই সমৃদ্ধির গল্প কবেই তলিয়ে গেছে। তবে এখন খেজুর গুড়ের উৎপাদন দিন দিন বাড়ছে। কৃষি তথ্য সার্ভিসের তথ্য বলছে, দেশে প্রতিবছর সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টন গুড় উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে খেজুর ও তালের রস থেকে উৎপাদিত গুড়ের পরিমাণ ৩০ থেকে ৪০ হাজার টন। এর বড় অংশই খেজুরের গুড়। ধীরে ধীরে পরিধি বাড়ছে খেজুর গুড়ের বাজারের।
গুড় তৈরির প্রক্রিয়াটি শুদ্ধতম চর্চা হিসেবে খ্যাত। যশোরের খেজুর গুড়কে ভৌগোলিক নির্দেশক, অর্থাৎ জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতির প্রক্রিয়া চলছে। একদিকে দেশের বাজারে চিনির বিকল্প গুড়ের চাহিদা বাড়ছে। অন্যদিকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলে বাড়বে আন্তর্জাতিক কদর। আমাদের আদি ঐতিহ্যের ধারক খেজুর গুড়ের গুণ ও ঘ্রাণ ছড়িয়ে দিতে হবে বিশ্বব্যাপী।
খেজুরের রস আহরণ থেকে শুরু করে গুড় তৈরির প্রতিটি প্রক্রিয়া হতে হবে শুদ্ধ। গুড়ের শিল্পকে আরও অগ্রসর করতে প্রয়োজন নানাবিধ গবেষণা এবং এই খাতে পরিকল্পিত বিনিয়োগ। আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশের খেজুর গুড়ের মোহনীয় ঘ্রাণে একদিন মোহিত হবে সারা বিশ্ব।
লেখক: পরিচালক ও বার্তাপ্রধান, চ্যানেল আই

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

এক দশকের বেশি সময় ধরে আমি খেজুর গুড়ের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরছি টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও আমার লেখালেখিতে। তুলে ধরেছি গাছিদের নানা সংকটের কথা। প্রচার-প্রচারণায় বেড়েছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ের চাহিদা।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

এক দশকের বেশি সময় ধরে আমি খেজুর গুড়ের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরছি টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও আমার লেখালেখিতে। তুলে ধরেছি গাছিদের নানা সংকটের কথা। প্রচার-প্রচারণায় বেড়েছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ের চাহিদা।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

এক দশকের বেশি সময় ধরে আমি খেজুর গুড়ের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরছি টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও আমার লেখালেখিতে। তুলে ধরেছি গাছিদের নানা সংকটের কথা। প্রচার-প্রচারণায় বেড়েছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ের চাহিদা।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

এক দশকের বেশি সময় ধরে আমি খেজুর গুড়ের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরছি টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও আমার লেখালেখিতে। তুলে ধরেছি গাছিদের নানা সংকটের কথা। প্রচার-প্রচারণায় বেড়েছে ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ের চাহিদা।
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫