মামুনুর রশীদ

জনপ্রতিনিধিরা চিরকালই ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। খুব সহজে তা দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব বলে তাঁরা মনে করেন। আজকাল এসব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বেশ কিছু সংসদ সদস্য প্রকাশ্যেই শিল্প-সাহিত্যের বিরোধিতা করে গানবাজনাকে এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যান উচ্চ কণ্ঠে বলেছেন, তাঁর এলাকায় গানবাজনা করা যাবে না। প্রায় সব এলাকাতেই এখন প্রাইমারি স্কুলের চেয়ে মাদ্রাসার সংখ্যা বেশি। তাই মাদ্রাসার অনুশাসনে থাকা, এসব মান্য করা স্বাভাবিক।
একজন সংসদ সদস্য যাঁর মাথায় খুনের মামলা ঝুলছে, সারা দেশে যাঁর পরিচিতি একজন সন্ত্রাসী হিসেবে, তিনি স্কুল-কলেজে পয়লা বৈশাখে গান গাইতে দেন না। শীতকালে তো বটেই, অন্য সময়েও তিনি ওয়াজ মাহফিল ও ধর্মসভার আয়োজন করেন। মাদ্রাসা-অধ্যুষিত এই এলাকায় পেশিশক্তির প্রবল ব্যবহার। যেহেতু এলাকায় কোনো সংস্কৃতিচর্চা নেই, তাই কোনো মানবিক ও সুকুমার বৃত্তির চর্চাও হয় না। এলাকায় নানা সাংস্কৃতিক সংগঠন থাকা সত্ত্বেও তাদের কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। গান-নাচ-আবৃত্তি-নাটক-সাহিত্য-চিত্রকলা যাঁদের অন্তরে কোনো স্পন্দন তোলে না, তাঁদের খুনি-সন্ত্রাসী হতে বাধা কোথায়? নারীশিক্ষা যেখানে বোরকার অন্তরালে মাদ্রাসা পাঠ, বিজ্ঞানচিন্তা যেখানে অন্তর্হিত, সেখানে তালেবানি শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে অসুবিধা কোথায়?
দেশে একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের একটা প্রধান বিষয় ছিল, অসাম্প্রদায়িকতা। যার আরও সুনির্দিষ্ট কথা ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু দেশে অনেক ব্যাপার ঘটে গেছে। দেশদ্রোহীরা রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদারি পেয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছায়াতলে আমাদের দেশের সেনাবাহিনী স্থান পেয়েছে। পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার স্বপ্নে তারা বিভোর হয়েছে। সেখানে অবশ্য দেশের শিল্পী-সাহিত্যিক, ছাত্র-জনতা এবং রাষ্ট্রক্ষমতার বঞ্চিত অংশ ও গণতন্ত্রকামী রাজনীতিকদের যৌথ আন্দোলনে তা ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু ওই সাম্প্রদায়িকতার ভূত চলে যায়নি। একটা বড় অংশ ওই ব্যাপারে ভূতগ্রস্ত। সেই ভূতগ্রস্তদের একটা বড় অংশ আবার বর্তমানের শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে ঢুকে পড়েছে। তাঁরা ধর্মকে ব্যবহার করছেন নানাভাবে। তাঁদের মধ্যে শিক্ষা-সংস্কৃতি নেই, তাঁরা বাংলাদেশের ইতিহাস জানেন না। তবে টাকাটা চেনেন ভালোভাবেই। তাঁরা ব্যবসায়ী, বিশাল মুনাফার মালিক। তাঁরা ব্যবসার নামে লুট করেন এবং বিদেশে টাকা পাচার করে দেন। নমিনেশন কিনতে পারলে তাঁর তো কোনো শিক্ষা-দীক্ষা বা বাংলার সংস্কৃতি জানার প্রয়োজন পড়ে না!
দীর্ঘদিন ধরেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় না। রাজনীতি শেখার সূতিকাগার এই সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ। দুই বড় দলের টাকা উপার্জনের একটা বড় জায়গা হচ্ছে নমিনেশন-বাণিজ্য। লুটেরা ব্যবসায়ীরাও মুক্তহস্তে এসব জায়গায় লগ্নি করে থাকেন। সংসদ নির্বাচন ছাড়াও তাঁদের বিস্তৃতি ঘটেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে। কোটি টাকার আদান-প্রদান সেখানে। কোনো ত্যাগী রাজনীতিবিদের পক্ষে এই প্রতিযোগিতায় দাঁড়ানো কি সম্ভব?
তাঁদের সবচেয়ে বড় সুবিধা যে তাঁরা জানেনও না দেশপ্রেমটা কী। দেশের অর্থ লুট করে বিদেশে পাচার করা যেকোনো রাষ্ট্রেই একটা দণ্ডনীয় অপরাধ। এই সব অপরাধ ধরার জন্য সব দেশেই শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে তা এখন পর্যন্ত দুর্বল শুধু নয়, নানা প্রভাব-প্রতিপত্তিতে অসহায়।
স্কুল-কলেজগুলোর জন্য নিয়মমাফিক কিছু কমিটি থাকে। এই কমিটিগুলোর চরিত্র ভয়ংকর। শিক্ষক নিয়োগে কমিটির সদস্যরা দুর্নীতি করেন, যতটুকু অর্থ আসে, সেখান থেকে উন্নয়নের বখরা নেন। কিন্তু স্কুল বা কলেজের শিক্ষার উন্নয়নের জন্য তাঁরা ভূমিকা নেন না। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ তাঁদের কোনো সংস্কৃতিভাবনা নেই। তাঁরা গানবাজনাকেই ভাবেন সংস্কৃতিচর্চা। তাই তাঁদের ক্ষোভ গানবাজনার ওপর। তাঁরা কি জানেন বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন, সেই সময়কার রাজনৈতিক আন্দোলন এবং এ দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছিল বাঙালির সংস্কৃতিকে রক্ষা করার আন্দোলন?
বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মুখ্য বিষয় হচ্ছে সাংস্কৃতিক আন্দোলন। একটা গভীর সাংস্কৃতিক আন্দোলনের জন্যই এ দেশটায় একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল এবং দেশটা স্বাধীন হয়েছিল। তখন কি এ দেশে ধার্মিক মানুষ ছিলেন না? তাঁরা কেন এই আন্দোলনে অংশ নিলেন? তাঁরা বুঝেছিলেন, পাকিস্তানি জান্তার ধর্মবিশ্বাস মানুষকে ধোঁকা দেওয়া। ওরা ধর্মে বিশ্বাসই করে না।
আমাদের দেশে যাঁরা ধর্মব্যবসায়ী, তাঁদের চরিত্রও একই। তাঁরা ভোটের আগে মসজিদ বা মাদ্রাসায় অর্থ খরচ করেন, হজব্রত পালন করেন, গ্রামে ধর্মসভা বা ওয়াজ মাহফিল করে একটা জায়গা করে নেন। তাঁদের অর্জিত লুটেরা অর্থকে জায়েজ করে নেন। একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন, আমলা—তাঁদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে নেন। ধর্মের পক্ষে দাঁড়ালে শাসকগোষ্ঠী কোনো নেতিবাচক পক্ষ নেবে না। একটা অদৃশ্য আঁতাত হয়ে যায় আমলা-ব্যবসায়ীদের মধ্যে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নানা কৌশল থাকে। তারা ব্রিটিশ, পাকিস্তান, বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর নানা কৌশল জানে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ থাকে।
এ অবস্থার মধ্যে একমাত্র অসহায় গোষ্ঠী তারাই, যাদের কোনো দল নেই, তদবির নেই, অর্থ নেই। অথচ মূল উৎপাদিকা শক্তি তারাই। তাদের অসহায় ক্রন্দনে কেউ এগিয়ে আসে না। পাজেরো গাড়ি করে আসা জনপ্রতিনিধি কচিৎ গ্রামে এসে দুপুরের উপাদেয় খাবারটি খেয়ে দিবানিদ্রায় কাতর হয়ে রাজধানীতে চলে যান। কিন্তু ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই আবার দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে কীভাবে লুটপাট করা যায়, সেই স্বপ্নে বিভোর হন।
রোজার সময় নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছিল। এখন তা তো কমছেই না; বরং আরও বেড়ে চলেছে। একাধিক বার লিখেছি, এ দেশের ব্যবসায়ীদের কোনো বোধ নেই, মানবিকতা নেই, আছে শুধু বল্গাহীন মুনাফার লোভ। এ অবস্থা থেকে তাঁরা কখনো মুক্ত হতে চান না। রাজনীতির সর্বোচ্চ মহলও তাঁদের সঙ্গী। তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সরকারের ভালোবাসার শেষ নেই। অথচ একদা সংস্কৃতিকর্মীরাই ছিল রাজনীতিবিদদের প্রধান সহায়। এসব কারণেই এক নৈরাজ্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিক।
অর্থ ও পেশিশক্তির কারণে যে রাজনীতির জন্ম হয়েছে, সেখানে রাজনৈতিক সংস্কৃতি তো উপেক্ষিত হবেই। যে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাজনা নিষিদ্ধ করেছেন, তাঁকে চরম শাস্তি দেওয়া উচিত। নইলে নৈরাজ্য আরও বাড়বে, অবাক হব না যদি তালেবানি শাসনকে আহ্বান করা হয়।
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

জনপ্রতিনিধিরা চিরকালই ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। খুব সহজে তা দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব বলে তাঁরা মনে করেন। আজকাল এসব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বেশ কিছু সংসদ সদস্য প্রকাশ্যেই শিল্প-সাহিত্যের বিরোধিতা করে গানবাজনাকে এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যান উচ্চ কণ্ঠে বলেছেন, তাঁর এলাকায় গানবাজনা করা যাবে না। প্রায় সব এলাকাতেই এখন প্রাইমারি স্কুলের চেয়ে মাদ্রাসার সংখ্যা বেশি। তাই মাদ্রাসার অনুশাসনে থাকা, এসব মান্য করা স্বাভাবিক।
একজন সংসদ সদস্য যাঁর মাথায় খুনের মামলা ঝুলছে, সারা দেশে যাঁর পরিচিতি একজন সন্ত্রাসী হিসেবে, তিনি স্কুল-কলেজে পয়লা বৈশাখে গান গাইতে দেন না। শীতকালে তো বটেই, অন্য সময়েও তিনি ওয়াজ মাহফিল ও ধর্মসভার আয়োজন করেন। মাদ্রাসা-অধ্যুষিত এই এলাকায় পেশিশক্তির প্রবল ব্যবহার। যেহেতু এলাকায় কোনো সংস্কৃতিচর্চা নেই, তাই কোনো মানবিক ও সুকুমার বৃত্তির চর্চাও হয় না। এলাকায় নানা সাংস্কৃতিক সংগঠন থাকা সত্ত্বেও তাদের কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। গান-নাচ-আবৃত্তি-নাটক-সাহিত্য-চিত্রকলা যাঁদের অন্তরে কোনো স্পন্দন তোলে না, তাঁদের খুনি-সন্ত্রাসী হতে বাধা কোথায়? নারীশিক্ষা যেখানে বোরকার অন্তরালে মাদ্রাসা পাঠ, বিজ্ঞানচিন্তা যেখানে অন্তর্হিত, সেখানে তালেবানি শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে অসুবিধা কোথায়?
দেশে একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের একটা প্রধান বিষয় ছিল, অসাম্প্রদায়িকতা। যার আরও সুনির্দিষ্ট কথা ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু দেশে অনেক ব্যাপার ঘটে গেছে। দেশদ্রোহীরা রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদারি পেয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছায়াতলে আমাদের দেশের সেনাবাহিনী স্থান পেয়েছে। পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার স্বপ্নে তারা বিভোর হয়েছে। সেখানে অবশ্য দেশের শিল্পী-সাহিত্যিক, ছাত্র-জনতা এবং রাষ্ট্রক্ষমতার বঞ্চিত অংশ ও গণতন্ত্রকামী রাজনীতিকদের যৌথ আন্দোলনে তা ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু ওই সাম্প্রদায়িকতার ভূত চলে যায়নি। একটা বড় অংশ ওই ব্যাপারে ভূতগ্রস্ত। সেই ভূতগ্রস্তদের একটা বড় অংশ আবার বর্তমানের শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে ঢুকে পড়েছে। তাঁরা ধর্মকে ব্যবহার করছেন নানাভাবে। তাঁদের মধ্যে শিক্ষা-সংস্কৃতি নেই, তাঁরা বাংলাদেশের ইতিহাস জানেন না। তবে টাকাটা চেনেন ভালোভাবেই। তাঁরা ব্যবসায়ী, বিশাল মুনাফার মালিক। তাঁরা ব্যবসার নামে লুট করেন এবং বিদেশে টাকা পাচার করে দেন। নমিনেশন কিনতে পারলে তাঁর তো কোনো শিক্ষা-দীক্ষা বা বাংলার সংস্কৃতি জানার প্রয়োজন পড়ে না!
দীর্ঘদিন ধরেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় না। রাজনীতি শেখার সূতিকাগার এই সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ। দুই বড় দলের টাকা উপার্জনের একটা বড় জায়গা হচ্ছে নমিনেশন-বাণিজ্য। লুটেরা ব্যবসায়ীরাও মুক্তহস্তে এসব জায়গায় লগ্নি করে থাকেন। সংসদ নির্বাচন ছাড়াও তাঁদের বিস্তৃতি ঘটেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে। কোটি টাকার আদান-প্রদান সেখানে। কোনো ত্যাগী রাজনীতিবিদের পক্ষে এই প্রতিযোগিতায় দাঁড়ানো কি সম্ভব?
তাঁদের সবচেয়ে বড় সুবিধা যে তাঁরা জানেনও না দেশপ্রেমটা কী। দেশের অর্থ লুট করে বিদেশে পাচার করা যেকোনো রাষ্ট্রেই একটা দণ্ডনীয় অপরাধ। এই সব অপরাধ ধরার জন্য সব দেশেই শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে তা এখন পর্যন্ত দুর্বল শুধু নয়, নানা প্রভাব-প্রতিপত্তিতে অসহায়।
স্কুল-কলেজগুলোর জন্য নিয়মমাফিক কিছু কমিটি থাকে। এই কমিটিগুলোর চরিত্র ভয়ংকর। শিক্ষক নিয়োগে কমিটির সদস্যরা দুর্নীতি করেন, যতটুকু অর্থ আসে, সেখান থেকে উন্নয়নের বখরা নেন। কিন্তু স্কুল বা কলেজের শিক্ষার উন্নয়নের জন্য তাঁরা ভূমিকা নেন না। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ তাঁদের কোনো সংস্কৃতিভাবনা নেই। তাঁরা গানবাজনাকেই ভাবেন সংস্কৃতিচর্চা। তাই তাঁদের ক্ষোভ গানবাজনার ওপর। তাঁরা কি জানেন বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন, সেই সময়কার রাজনৈতিক আন্দোলন এবং এ দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছিল বাঙালির সংস্কৃতিকে রক্ষা করার আন্দোলন?
বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মুখ্য বিষয় হচ্ছে সাংস্কৃতিক আন্দোলন। একটা গভীর সাংস্কৃতিক আন্দোলনের জন্যই এ দেশটায় একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল এবং দেশটা স্বাধীন হয়েছিল। তখন কি এ দেশে ধার্মিক মানুষ ছিলেন না? তাঁরা কেন এই আন্দোলনে অংশ নিলেন? তাঁরা বুঝেছিলেন, পাকিস্তানি জান্তার ধর্মবিশ্বাস মানুষকে ধোঁকা দেওয়া। ওরা ধর্মে বিশ্বাসই করে না।
আমাদের দেশে যাঁরা ধর্মব্যবসায়ী, তাঁদের চরিত্রও একই। তাঁরা ভোটের আগে মসজিদ বা মাদ্রাসায় অর্থ খরচ করেন, হজব্রত পালন করেন, গ্রামে ধর্মসভা বা ওয়াজ মাহফিল করে একটা জায়গা করে নেন। তাঁদের অর্জিত লুটেরা অর্থকে জায়েজ করে নেন। একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন, আমলা—তাঁদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে নেন। ধর্মের পক্ষে দাঁড়ালে শাসকগোষ্ঠী কোনো নেতিবাচক পক্ষ নেবে না। একটা অদৃশ্য আঁতাত হয়ে যায় আমলা-ব্যবসায়ীদের মধ্যে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নানা কৌশল থাকে। তারা ব্রিটিশ, পাকিস্তান, বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর নানা কৌশল জানে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ থাকে।
এ অবস্থার মধ্যে একমাত্র অসহায় গোষ্ঠী তারাই, যাদের কোনো দল নেই, তদবির নেই, অর্থ নেই। অথচ মূল উৎপাদিকা শক্তি তারাই। তাদের অসহায় ক্রন্দনে কেউ এগিয়ে আসে না। পাজেরো গাড়ি করে আসা জনপ্রতিনিধি কচিৎ গ্রামে এসে দুপুরের উপাদেয় খাবারটি খেয়ে দিবানিদ্রায় কাতর হয়ে রাজধানীতে চলে যান। কিন্তু ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই আবার দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে কীভাবে লুটপাট করা যায়, সেই স্বপ্নে বিভোর হন।
রোজার সময় নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছিল। এখন তা তো কমছেই না; বরং আরও বেড়ে চলেছে। একাধিক বার লিখেছি, এ দেশের ব্যবসায়ীদের কোনো বোধ নেই, মানবিকতা নেই, আছে শুধু বল্গাহীন মুনাফার লোভ। এ অবস্থা থেকে তাঁরা কখনো মুক্ত হতে চান না। রাজনীতির সর্বোচ্চ মহলও তাঁদের সঙ্গী। তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সরকারের ভালোবাসার শেষ নেই। অথচ একদা সংস্কৃতিকর্মীরাই ছিল রাজনীতিবিদদের প্রধান সহায়। এসব কারণেই এক নৈরাজ্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিক।
অর্থ ও পেশিশক্তির কারণে যে রাজনীতির জন্ম হয়েছে, সেখানে রাজনৈতিক সংস্কৃতি তো উপেক্ষিত হবেই। যে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাজনা নিষিদ্ধ করেছেন, তাঁকে চরম শাস্তি দেওয়া উচিত। নইলে নৈরাজ্য আরও বাড়বে, অবাক হব না যদি তালেবানি শাসনকে আহ্বান করা হয়।
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব
মামুনুর রশীদ

জনপ্রতিনিধিরা চিরকালই ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। খুব সহজে তা দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব বলে তাঁরা মনে করেন। আজকাল এসব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বেশ কিছু সংসদ সদস্য প্রকাশ্যেই শিল্প-সাহিত্যের বিরোধিতা করে গানবাজনাকে এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যান উচ্চ কণ্ঠে বলেছেন, তাঁর এলাকায় গানবাজনা করা যাবে না। প্রায় সব এলাকাতেই এখন প্রাইমারি স্কুলের চেয়ে মাদ্রাসার সংখ্যা বেশি। তাই মাদ্রাসার অনুশাসনে থাকা, এসব মান্য করা স্বাভাবিক।
একজন সংসদ সদস্য যাঁর মাথায় খুনের মামলা ঝুলছে, সারা দেশে যাঁর পরিচিতি একজন সন্ত্রাসী হিসেবে, তিনি স্কুল-কলেজে পয়লা বৈশাখে গান গাইতে দেন না। শীতকালে তো বটেই, অন্য সময়েও তিনি ওয়াজ মাহফিল ও ধর্মসভার আয়োজন করেন। মাদ্রাসা-অধ্যুষিত এই এলাকায় পেশিশক্তির প্রবল ব্যবহার। যেহেতু এলাকায় কোনো সংস্কৃতিচর্চা নেই, তাই কোনো মানবিক ও সুকুমার বৃত্তির চর্চাও হয় না। এলাকায় নানা সাংস্কৃতিক সংগঠন থাকা সত্ত্বেও তাদের কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। গান-নাচ-আবৃত্তি-নাটক-সাহিত্য-চিত্রকলা যাঁদের অন্তরে কোনো স্পন্দন তোলে না, তাঁদের খুনি-সন্ত্রাসী হতে বাধা কোথায়? নারীশিক্ষা যেখানে বোরকার অন্তরালে মাদ্রাসা পাঠ, বিজ্ঞানচিন্তা যেখানে অন্তর্হিত, সেখানে তালেবানি শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে অসুবিধা কোথায়?
দেশে একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের একটা প্রধান বিষয় ছিল, অসাম্প্রদায়িকতা। যার আরও সুনির্দিষ্ট কথা ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু দেশে অনেক ব্যাপার ঘটে গেছে। দেশদ্রোহীরা রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদারি পেয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছায়াতলে আমাদের দেশের সেনাবাহিনী স্থান পেয়েছে। পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার স্বপ্নে তারা বিভোর হয়েছে। সেখানে অবশ্য দেশের শিল্পী-সাহিত্যিক, ছাত্র-জনতা এবং রাষ্ট্রক্ষমতার বঞ্চিত অংশ ও গণতন্ত্রকামী রাজনীতিকদের যৌথ আন্দোলনে তা ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু ওই সাম্প্রদায়িকতার ভূত চলে যায়নি। একটা বড় অংশ ওই ব্যাপারে ভূতগ্রস্ত। সেই ভূতগ্রস্তদের একটা বড় অংশ আবার বর্তমানের শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে ঢুকে পড়েছে। তাঁরা ধর্মকে ব্যবহার করছেন নানাভাবে। তাঁদের মধ্যে শিক্ষা-সংস্কৃতি নেই, তাঁরা বাংলাদেশের ইতিহাস জানেন না। তবে টাকাটা চেনেন ভালোভাবেই। তাঁরা ব্যবসায়ী, বিশাল মুনাফার মালিক। তাঁরা ব্যবসার নামে লুট করেন এবং বিদেশে টাকা পাচার করে দেন। নমিনেশন কিনতে পারলে তাঁর তো কোনো শিক্ষা-দীক্ষা বা বাংলার সংস্কৃতি জানার প্রয়োজন পড়ে না!
দীর্ঘদিন ধরেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় না। রাজনীতি শেখার সূতিকাগার এই সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ। দুই বড় দলের টাকা উপার্জনের একটা বড় জায়গা হচ্ছে নমিনেশন-বাণিজ্য। লুটেরা ব্যবসায়ীরাও মুক্তহস্তে এসব জায়গায় লগ্নি করে থাকেন। সংসদ নির্বাচন ছাড়াও তাঁদের বিস্তৃতি ঘটেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে। কোটি টাকার আদান-প্রদান সেখানে। কোনো ত্যাগী রাজনীতিবিদের পক্ষে এই প্রতিযোগিতায় দাঁড়ানো কি সম্ভব?
তাঁদের সবচেয়ে বড় সুবিধা যে তাঁরা জানেনও না দেশপ্রেমটা কী। দেশের অর্থ লুট করে বিদেশে পাচার করা যেকোনো রাষ্ট্রেই একটা দণ্ডনীয় অপরাধ। এই সব অপরাধ ধরার জন্য সব দেশেই শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে তা এখন পর্যন্ত দুর্বল শুধু নয়, নানা প্রভাব-প্রতিপত্তিতে অসহায়।
স্কুল-কলেজগুলোর জন্য নিয়মমাফিক কিছু কমিটি থাকে। এই কমিটিগুলোর চরিত্র ভয়ংকর। শিক্ষক নিয়োগে কমিটির সদস্যরা দুর্নীতি করেন, যতটুকু অর্থ আসে, সেখান থেকে উন্নয়নের বখরা নেন। কিন্তু স্কুল বা কলেজের শিক্ষার উন্নয়নের জন্য তাঁরা ভূমিকা নেন না। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ তাঁদের কোনো সংস্কৃতিভাবনা নেই। তাঁরা গানবাজনাকেই ভাবেন সংস্কৃতিচর্চা। তাই তাঁদের ক্ষোভ গানবাজনার ওপর। তাঁরা কি জানেন বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন, সেই সময়কার রাজনৈতিক আন্দোলন এবং এ দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছিল বাঙালির সংস্কৃতিকে রক্ষা করার আন্দোলন?
বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মুখ্য বিষয় হচ্ছে সাংস্কৃতিক আন্দোলন। একটা গভীর সাংস্কৃতিক আন্দোলনের জন্যই এ দেশটায় একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল এবং দেশটা স্বাধীন হয়েছিল। তখন কি এ দেশে ধার্মিক মানুষ ছিলেন না? তাঁরা কেন এই আন্দোলনে অংশ নিলেন? তাঁরা বুঝেছিলেন, পাকিস্তানি জান্তার ধর্মবিশ্বাস মানুষকে ধোঁকা দেওয়া। ওরা ধর্মে বিশ্বাসই করে না।
আমাদের দেশে যাঁরা ধর্মব্যবসায়ী, তাঁদের চরিত্রও একই। তাঁরা ভোটের আগে মসজিদ বা মাদ্রাসায় অর্থ খরচ করেন, হজব্রত পালন করেন, গ্রামে ধর্মসভা বা ওয়াজ মাহফিল করে একটা জায়গা করে নেন। তাঁদের অর্জিত লুটেরা অর্থকে জায়েজ করে নেন। একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন, আমলা—তাঁদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে নেন। ধর্মের পক্ষে দাঁড়ালে শাসকগোষ্ঠী কোনো নেতিবাচক পক্ষ নেবে না। একটা অদৃশ্য আঁতাত হয়ে যায় আমলা-ব্যবসায়ীদের মধ্যে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নানা কৌশল থাকে। তারা ব্রিটিশ, পাকিস্তান, বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর নানা কৌশল জানে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ থাকে।
এ অবস্থার মধ্যে একমাত্র অসহায় গোষ্ঠী তারাই, যাদের কোনো দল নেই, তদবির নেই, অর্থ নেই। অথচ মূল উৎপাদিকা শক্তি তারাই। তাদের অসহায় ক্রন্দনে কেউ এগিয়ে আসে না। পাজেরো গাড়ি করে আসা জনপ্রতিনিধি কচিৎ গ্রামে এসে দুপুরের উপাদেয় খাবারটি খেয়ে দিবানিদ্রায় কাতর হয়ে রাজধানীতে চলে যান। কিন্তু ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই আবার দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে কীভাবে লুটপাট করা যায়, সেই স্বপ্নে বিভোর হন।
রোজার সময় নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছিল। এখন তা তো কমছেই না; বরং আরও বেড়ে চলেছে। একাধিক বার লিখেছি, এ দেশের ব্যবসায়ীদের কোনো বোধ নেই, মানবিকতা নেই, আছে শুধু বল্গাহীন মুনাফার লোভ। এ অবস্থা থেকে তাঁরা কখনো মুক্ত হতে চান না। রাজনীতির সর্বোচ্চ মহলও তাঁদের সঙ্গী। তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সরকারের ভালোবাসার শেষ নেই। অথচ একদা সংস্কৃতিকর্মীরাই ছিল রাজনীতিবিদদের প্রধান সহায়। এসব কারণেই এক নৈরাজ্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিক।
অর্থ ও পেশিশক্তির কারণে যে রাজনীতির জন্ম হয়েছে, সেখানে রাজনৈতিক সংস্কৃতি তো উপেক্ষিত হবেই। যে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাজনা নিষিদ্ধ করেছেন, তাঁকে চরম শাস্তি দেওয়া উচিত। নইলে নৈরাজ্য আরও বাড়বে, অবাক হব না যদি তালেবানি শাসনকে আহ্বান করা হয়।
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

জনপ্রতিনিধিরা চিরকালই ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। খুব সহজে তা দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব বলে তাঁরা মনে করেন। আজকাল এসব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বেশ কিছু সংসদ সদস্য প্রকাশ্যেই শিল্প-সাহিত্যের বিরোধিতা করে গানবাজনাকে এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের একজন চেয়ারম্যান উচ্চ কণ্ঠে বলেছেন, তাঁর এলাকায় গানবাজনা করা যাবে না। প্রায় সব এলাকাতেই এখন প্রাইমারি স্কুলের চেয়ে মাদ্রাসার সংখ্যা বেশি। তাই মাদ্রাসার অনুশাসনে থাকা, এসব মান্য করা স্বাভাবিক।
একজন সংসদ সদস্য যাঁর মাথায় খুনের মামলা ঝুলছে, সারা দেশে যাঁর পরিচিতি একজন সন্ত্রাসী হিসেবে, তিনি স্কুল-কলেজে পয়লা বৈশাখে গান গাইতে দেন না। শীতকালে তো বটেই, অন্য সময়েও তিনি ওয়াজ মাহফিল ও ধর্মসভার আয়োজন করেন। মাদ্রাসা-অধ্যুষিত এই এলাকায় পেশিশক্তির প্রবল ব্যবহার। যেহেতু এলাকায় কোনো সংস্কৃতিচর্চা নেই, তাই কোনো মানবিক ও সুকুমার বৃত্তির চর্চাও হয় না। এলাকায় নানা সাংস্কৃতিক সংগঠন থাকা সত্ত্বেও তাদের কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। গান-নাচ-আবৃত্তি-নাটক-সাহিত্য-চিত্রকলা যাঁদের অন্তরে কোনো স্পন্দন তোলে না, তাঁদের খুনি-সন্ত্রাসী হতে বাধা কোথায়? নারীশিক্ষা যেখানে বোরকার অন্তরালে মাদ্রাসা পাঠ, বিজ্ঞানচিন্তা যেখানে অন্তর্হিত, সেখানে তালেবানি শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে অসুবিধা কোথায়?
দেশে একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের একটা প্রধান বিষয় ছিল, অসাম্প্রদায়িকতা। যার আরও সুনির্দিষ্ট কথা ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু দেশে অনেক ব্যাপার ঘটে গেছে। দেশদ্রোহীরা রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদারি পেয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছায়াতলে আমাদের দেশের সেনাবাহিনী স্থান পেয়েছে। পাকিস্তানে ফিরে যাওয়ার স্বপ্নে তারা বিভোর হয়েছে। সেখানে অবশ্য দেশের শিল্পী-সাহিত্যিক, ছাত্র-জনতা এবং রাষ্ট্রক্ষমতার বঞ্চিত অংশ ও গণতন্ত্রকামী রাজনীতিকদের যৌথ আন্দোলনে তা ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু ওই সাম্প্রদায়িকতার ভূত চলে যায়নি। একটা বড় অংশ ওই ব্যাপারে ভূতগ্রস্ত। সেই ভূতগ্রস্তদের একটা বড় অংশ আবার বর্তমানের শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে ঢুকে পড়েছে। তাঁরা ধর্মকে ব্যবহার করছেন নানাভাবে। তাঁদের মধ্যে শিক্ষা-সংস্কৃতি নেই, তাঁরা বাংলাদেশের ইতিহাস জানেন না। তবে টাকাটা চেনেন ভালোভাবেই। তাঁরা ব্যবসায়ী, বিশাল মুনাফার মালিক। তাঁরা ব্যবসার নামে লুট করেন এবং বিদেশে টাকা পাচার করে দেন। নমিনেশন কিনতে পারলে তাঁর তো কোনো শিক্ষা-দীক্ষা বা বাংলার সংস্কৃতি জানার প্রয়োজন পড়ে না!
দীর্ঘদিন ধরেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয় না। রাজনীতি শেখার সূতিকাগার এই সব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ। দুই বড় দলের টাকা উপার্জনের একটা বড় জায়গা হচ্ছে নমিনেশন-বাণিজ্য। লুটেরা ব্যবসায়ীরাও মুক্তহস্তে এসব জায়গায় লগ্নি করে থাকেন। সংসদ নির্বাচন ছাড়াও তাঁদের বিস্তৃতি ঘটেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে। কোটি টাকার আদান-প্রদান সেখানে। কোনো ত্যাগী রাজনীতিবিদের পক্ষে এই প্রতিযোগিতায় দাঁড়ানো কি সম্ভব?
তাঁদের সবচেয়ে বড় সুবিধা যে তাঁরা জানেনও না দেশপ্রেমটা কী। দেশের অর্থ লুট করে বিদেশে পাচার করা যেকোনো রাষ্ট্রেই একটা দণ্ডনীয় অপরাধ। এই সব অপরাধ ধরার জন্য সব দেশেই শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে তা এখন পর্যন্ত দুর্বল শুধু নয়, নানা প্রভাব-প্রতিপত্তিতে অসহায়।
স্কুল-কলেজগুলোর জন্য নিয়মমাফিক কিছু কমিটি থাকে। এই কমিটিগুলোর চরিত্র ভয়ংকর। শিক্ষক নিয়োগে কমিটির সদস্যরা দুর্নীতি করেন, যতটুকু অর্থ আসে, সেখান থেকে উন্নয়নের বখরা নেন। কিন্তু স্কুল বা কলেজের শিক্ষার উন্নয়নের জন্য তাঁরা ভূমিকা নেন না। সেটাই স্বাভাবিক। কারণ তাঁদের কোনো সংস্কৃতিভাবনা নেই। তাঁরা গানবাজনাকেই ভাবেন সংস্কৃতিচর্চা। তাই তাঁদের ক্ষোভ গানবাজনার ওপর। তাঁরা কি জানেন বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলন, সেই সময়কার রাজনৈতিক আন্দোলন এবং এ দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন ছিল বাঙালির সংস্কৃতিকে রক্ষা করার আন্দোলন?
বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মুখ্য বিষয় হচ্ছে সাংস্কৃতিক আন্দোলন। একটা গভীর সাংস্কৃতিক আন্দোলনের জন্যই এ দেশটায় একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল এবং দেশটা স্বাধীন হয়েছিল। তখন কি এ দেশে ধার্মিক মানুষ ছিলেন না? তাঁরা কেন এই আন্দোলনে অংশ নিলেন? তাঁরা বুঝেছিলেন, পাকিস্তানি জান্তার ধর্মবিশ্বাস মানুষকে ধোঁকা দেওয়া। ওরা ধর্মে বিশ্বাসই করে না।
আমাদের দেশে যাঁরা ধর্মব্যবসায়ী, তাঁদের চরিত্রও একই। তাঁরা ভোটের আগে মসজিদ বা মাদ্রাসায় অর্থ খরচ করেন, হজব্রত পালন করেন, গ্রামে ধর্মসভা বা ওয়াজ মাহফিল করে একটা জায়গা করে নেন। তাঁদের অর্জিত লুটেরা অর্থকে জায়েজ করে নেন। একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন, আমলা—তাঁদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে নেন। ধর্মের পক্ষে দাঁড়ালে শাসকগোষ্ঠী কোনো নেতিবাচক পক্ষ নেবে না। একটা অদৃশ্য আঁতাত হয়ে যায় আমলা-ব্যবসায়ীদের মধ্যে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নানা কৌশল থাকে। তারা ব্রিটিশ, পাকিস্তান, বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর নানা কৌশল জানে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ থাকে।
এ অবস্থার মধ্যে একমাত্র অসহায় গোষ্ঠী তারাই, যাদের কোনো দল নেই, তদবির নেই, অর্থ নেই। অথচ মূল উৎপাদিকা শক্তি তারাই। তাদের অসহায় ক্রন্দনে কেউ এগিয়ে আসে না। পাজেরো গাড়ি করে আসা জনপ্রতিনিধি কচিৎ গ্রামে এসে দুপুরের উপাদেয় খাবারটি খেয়ে দিবানিদ্রায় কাতর হয়ে রাজধানীতে চলে যান। কিন্তু ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই আবার দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে কীভাবে লুটপাট করা যায়, সেই স্বপ্নে বিভোর হন।
রোজার সময় নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছিল। এখন তা তো কমছেই না; বরং আরও বেড়ে চলেছে। একাধিক বার লিখেছি, এ দেশের ব্যবসায়ীদের কোনো বোধ নেই, মানবিকতা নেই, আছে শুধু বল্গাহীন মুনাফার লোভ। এ অবস্থা থেকে তাঁরা কখনো মুক্ত হতে চান না। রাজনীতির সর্বোচ্চ মহলও তাঁদের সঙ্গী। তাঁদের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সরকারের ভালোবাসার শেষ নেই। অথচ একদা সংস্কৃতিকর্মীরাই ছিল রাজনীতিবিদদের প্রধান সহায়। এসব কারণেই এক নৈরাজ্য পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যা স্বাভাবিক।
অর্থ ও পেশিশক্তির কারণে যে রাজনীতির জন্ম হয়েছে, সেখানে রাজনৈতিক সংস্কৃতি তো উপেক্ষিত হবেই। যে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাজনা নিষিদ্ধ করেছেন, তাঁকে চরম শাস্তি দেওয়া উচিত। নইলে নৈরাজ্য আরও বাড়বে, অবাক হব না যদি তালেবানি শাসনকে আহ্বান করা হয়।
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

জনপ্রতিনিধিরা চিরকালই ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। খুব সহজে তা দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব বলে তাঁরা মনে করেন। আজকাল এসব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বেশ কিছু সংসদ সদস্য প্রকাশ্যেই শিল্প-সাহিত্যের বিরোধিতা করে গানবাজনাকে এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের একজন চ
২৫ এপ্রিল ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

জনপ্রতিনিধিরা চিরকালই ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। খুব সহজে তা দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব বলে তাঁরা মনে করেন। আজকাল এসব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বেশ কিছু সংসদ সদস্য প্রকাশ্যেই শিল্প-সাহিত্যের বিরোধিতা করে গানবাজনাকে এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের একজন চ
২৫ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

জনপ্রতিনিধিরা চিরকালই ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। খুব সহজে তা দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব বলে তাঁরা মনে করেন। আজকাল এসব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বেশ কিছু সংসদ সদস্য প্রকাশ্যেই শিল্প-সাহিত্যের বিরোধিতা করে গানবাজনাকে এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের একজন চ
২৫ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

জনপ্রতিনিধিরা চিরকালই ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। খুব সহজে তা দিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা সম্ভব বলে তাঁরা মনে করেন। আজকাল এসব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। বেশ কিছু সংসদ সদস্য প্রকাশ্যেই শিল্প-সাহিত্যের বিরোধিতা করে গানবাজনাকে এলাকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদের একজন চ
২৫ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫