Ajker Patrika

লবণাক্ত জমিতে বাদাম চাষ, দামে খুশি চাষি

কামাল হোসেন, কয়রা
আপডেট : ০৪ জুন ২০২২, ১৩: ৫৫
Thumbnail image

উপকূলীয় এলাকা খুলনার কয়রা উপজেলার লবণাক্ত জমিতে বাদাম আবাদ করে ভালো ফলন পেয়েছেন চাষিরা। তাঁরা দামও ভালো পেয়েছেন। এ জন্য বাদাম চাষে কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে।

জানা গেছে, গত বছর সামান্য কিছু জমিতে চিনা বাদামের চাষ করে সাফল্য লাভের পর এগিয়ে আসে অনেক কৃষক। চলতি বছর অনেক জমিতে বাদাম চাষ করে লাভ গুনছেন তারা। সরেজমিন গবেষণা বিভাগ পরীক্ষামূলকভাবে ২০১৬ সালে প্রথম কয়রায় বাদাম চাষ শুরু করে। ওই বছর বাদাম চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে বাম্পার ফলন ফলাতে সক্ষম হয় গবেষণা বিভাগ।

পরে লবণাক্ত জমিতেও পরীক্ষামূলকভাবে দুজন কৃষক বাদাম চাষ করে তাক লাগিয়ে দেয়। চলতি বছরের শুরুতেই উপজেলার উত্তর বেদকাশি ও ঝিলিয়াঘাটার ২ জন কৃষক ৪ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেন এবং সম্প্রতি মাঠ থেকে বাদাম তোলা শুরু হলে বিঘাপ্রতি ভালো উৎপাদন হয়েছে বলে জানা যায়। এটি দেখে উপজেলার অনেক কৃষক আগামীতে বাদাম চাষ করবেন বলে আগ্রহ দেখান।

উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের উত্তর বেদকাশি গ্রামের বাদাম চাষি মফিজুল ইসলাম মুন্না বলেন, তার আমন ধান কাটা শেষে পরিত্যক্ত ৬০ শতক জমিতে বাদাম চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন। ভালো ফলন দেখে বেজায় খুশি চাষিরা। ঝিলিয়াঘাটার কৃষক পল্লি চিকিৎসক কামারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সরেজমিন গবেষণা বিভাগ আমাদেরকে বাদাম চাষের জন্য আগ্রহ দেখিয়েছেন। তারা ভালো বীজ, সার কীটনাশক সরবরাহ করার আশ্বাস দেওয়ায় আমরা বাদাম চাষ করে লাভের মুখ দেখেছি। সরেজমিন গবেষণার বৈজ্ঞানিক সহকারী জাহিদ হাসান বলেন, আমরা এ বছর কৃষকদের মাঝে বারি চিনা বাদাম-৯ চাষে সহযোগিতা করেছি। এতে কৃষকেরা ভালো ফলন পেয়েছেন।

৩ নম্বর কয়রার কৃষক আজিজুল ইসলাম বলেন, খুলনার সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুন অর-রসিদ ঘূর্ণিঝড় আইলার পর গত ৪ বছর ধরে উপকূলীয় এলাকা খুলনার কয়রার মাটিতে শুধু বাদাম নয় ধান, তরমুজ, মুগডাল, সরিষা ও ভুট্টা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি এসব ফসল চাষে বিভিন্ন সময় দেশি ও বিদেশি কৃষি বিশেষজ্ঞদের কয়রায় এনে মাটি, পানি ও ফসলের মাঠ পরীক্ষা করেছেন।

ফলে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এসব ফসলের আবাদ করে কৃষকেরা লাভবান হয়েছেন। সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুন অর-রসিদ বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এ পর্যন্ত ১০টি বাদামের জাত আবিষ্কার করেছে। তিনি আরও বলেন, চিনা বাদাম একটি অর্থকরী ফসল। এটি একটি উৎকৃষ্ট ভোজ্য তৈলবীজ। সব বয়সের মানুষের জন্য চিনা বাদাম স্বাস্থ্য সম্মত খাবার। শখ করে কখনো কখনো হয়তো খাওয়া হয়।

তবে এর উপকারিতা সম্পর্কে জানলে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই বাদাম রাখতে চাইবেন। শরীরের মাত্রাধিক কোলেস্টেরল হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্ত চাপ, ওজন বৃদ্ধি ও ডায়বেটিসের মতো কঠিন রোগ প্রতিরোধ সৃষ্টি করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত