Ajker Patrika

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরি

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ২৪
Thumbnail image

ঈদুল ফিতর সামনে রেখে নীলফামারীতে শুরু হয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরি। আড়াই শতাধিক কারখানায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এ সময় নিম্নমানের পাম অয়েল ও ডালডা দিয়ে তৈরি করছে এসব সেমাই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে তৈরি করা সেমাই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকেরা।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ও বিশিষ্ট চিকিৎসক শেখ নজরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে জানান, নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি সেমাই খেয়ে অনেক রোজাদার, সাধারণ মানুষ পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে। রং ও অন্যান্য কেমিক্যাল মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। খাদ্যদ্রব্যে মেশানো রং মানুষের পেটে গেলে তা গ্যাস্ট্রিক, আলসার থেকে ক্যানসারের কারণ হতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে হলে এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, সৈয়দপুরের পাটোয়ারীপাড়া, কাজীরহাট, পুরাতন বাবুপাড়া, বাঁশবাড়ি, মিস্ত্রিপাড়া, হাতিখানা, নিয়ামতপুর, মুন্সিপাড়া, গোলাহাটসহ শহরের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠেছে এসব মৌসুমি সেমাই কারখানা। অধিকাংশ সেমাই তৈরির কারখানার নেই বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন। এ ছাড়া কারখানাগুলোতে মানা হচ্ছে না কোনো নিয়মনীতি। নামি-দামি অনেক কোম্পানির লেভেল লাগিয়ে স্থানীয়ভাবে তৈরি এসব সেমাই বাজারজাত করছেন মালিকেরা। মানুষের খাওয়ার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এসব সেমাই প্রতিদিন বিভিন্ন মোড়কে বাজারজাত করা হচ্ছে গ্রামের হাটবাজারে। হাতে গোনা কয়েকটি সেমাই তৈরির বৈধ কারখানা থাকলেও তাঁরা বিপাকে পড়েছেন এসব মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দাপটে।

তা ছাড়া এসব কারখানায় নেই কোনো সাইনবোর্ড। কারখানার বাইরে থেকে প্রবেশ নিষেধ সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে অথবা গেট বন্ধ করে চলে সেমাই তৈরির কাজ। এসব কারখানা এক স্থানে বেশি দিন থাকে না। সচেতন মহলের চোখ পড়ার আগেই স্থান পরিবর্তন করা হয়। এসব সেমাইতে নামিদামি কোম্পানির লেবেল ও স্টিকার লাগিয়ে পাইকারি বিক্রি করা হয়। দেখে বোঝার কোনো উপায় থাকে না আসল না নকল। গোপন স্থানে কারখানা থাকায় প্রশাসনেরও নজরদারিতেও আসে না। ফলে নির্বিঘ্নে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

শহরের শহীদ জিকরুল হক সড়কের একটি দোকানে সেমাই কিনতে আসা ক্রেতা আতাহার হামিদ বলেন, ‘এতগুলো নামে-বেনামে সেমাই পাওয়া যাচ্ছে। কোনোটি আসল আর কোনোটি নকল বোঝাই যাচ্ছে না। ছেলে-মেয়েরা সেমাই খাওয়ার আবদার করছে। তাই বাধ্য হয়েই কিনছি। প্রশাসনের দুর্বলতার সুযোগে ও তদারকির অভাবে সৈয়দপুরে ভেজাল সেমাই তৈরির প্রবণতা বাড়ছেই।’

গাউসিয়া বেকারির মালিক আওরঙ্গজেব বলেন, ‘প্রতিবছর রমজান মাসের শুরুতে বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় অল্প টাকায় বেশি লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ব্যবসা শুরু করেন। তাঁরা কারখানাতে কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানেন না। এ ছাড়া তাঁদের কোনো বৈধ কাগজপত্রও নেই। অথচ প্রায় এক মাস হলো এসব অবৈধ মৌসুমি কারখানায় সেমাই তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো তৎপরতাই দেখা যায়নি। তাঁরা প্রতিষ্ঠিত বৈধ লাচ্ছা সেমাইয়ের মোড়ক নকল করে বাজারজাত করে থাকে।’

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শামসুল আলম জানান, পচা ডিম, অ্যানিমেল চর্বি এবং কৃত্রিম ঘি ও সুগন্ধি মিশ্রিত সেমাই তৈরি যাতে না হয়, সে জন্য কারখানাগুলোতে নজরদারি রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে এসব ভেজাল কারখানায় নিয়মিত অভিযান চালানো হবে এবং কোনো প্রকার অনিয়ম পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন সিরামিক শিল্পের মালিকেরা

গণ-অভ্যুত্থান ও পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম

বগুড়ায় আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

নির্বাচিত সরকারের আশায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি থেকে পিছু হটলেন তিতুমীর শিক্ষার্থীরা

ফরিদপুরে মাছ ধরা নিয়ে আ.লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত