Ajker Patrika

ফরিদপুর-৩: প্রার্থীদের নিয়েই আলোচনা বেশি

বোরহানুজ্জামান, নগরকান্দা (ফরিদপুর)
Thumbnail image

দেশের অন্য আসনগুলোর মতো ফরিদপুর-৩ আসনে জমে উঠেছে নির্বাচনী রাজনীতি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রচার চালাচ্ছেন রাজনৈতিক দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তবে বেশি সক্রিয় রয়েছে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের শ্বশুর ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি টানা তিনবার আসনটি ধরে রেখেছেন। ক্ষমতাসীন দল চায় জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে। অন্যদিকে বিএনপি চায় আসনটি পুনরুদ্ধার করতে।

পরিসংখ্যান বলছে, এই আসনে সর্বোচ্চ পাঁচবার বিজয়ী হয়েছেন বিএনপির প্রার্থী। আওয়ামী লীগের প্রার্থী চারবার আর জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্বাচিত হন দুবার।

নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত না হলেও সম্ভাব্য প্রার্থীদের গণসংযোগে মুখর হয়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকার নিকটবর্তী জেলার গুরুত্বপূর্ণ এই আসন। নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাঁদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। মিটিং, মিছিল, গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক কর্মকাণ্ড ও অসহায় ছিন্নমূল মানুষের মাঝে আর্থিক সহযোগিতাসহ নানা কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন তাঁরা। শহরের অলিগলি থেকে গ্রাম-মহল্লায় শোভা পাচ্ছে বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টারসহ বিভিন্ন ধরনের প্রচারের অনুষঙ্গ। আবার কেউ দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে করছেন উঠান বৈঠক। কেউবা আবার গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন হাটবাজারে গিয়ে সরাসরি ভোটারদের কাছে দলীয় প্রতীকে ভোট চাইছেন।

জেলার গুরুত্বপূর্ণ এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি অবশ্য দীর্ঘদিন এলাকায় না থাকায় দলীয় নেতা-কর্মী ও দলীয় কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। তবে দলীয় মনোনয়ন পেতে বর্তমানে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট শিল্পপতি এ কে আজাদ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকায় গণসংযোগ করছেন। দলীয় প্রতীক নৌকার পক্ষে ভোটারদের কাছে ভোট চাইছেন। নানা কর্মসূচির মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের বার্তা জনগণের মাঝে পৌঁছে দিচ্ছেন।

মনোনয়ন বিষয়ে জানতে চাইলে এ কে আজাদ বলেন, ‘আমি দলের দুঃসময়ে পাশে ছিলাম। বর্তমানে আছি এবং ভবিষ্যতে থাকব। আমি দলের কাছ থেকে কিছু নিতে আসিনি। সুখে-দুঃখে সব সময় সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চাই। সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে চাই। আমার বিশ্বাস, দল আমাকে মনোনয়ন দেবে এবং বিজয়ী হব।’

এ ছাড়া মাঠে রয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য বিপুল ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সহসভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. ফারুক হোসেন। এই আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সভা-সমাবেশ করছেন। সব দ্বন্দ্ব নিরসন করে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই দলীয় আসনটি ধরে রাখতে চাইছেন।

অন্যদিকে জাতীয়ভাবে এখনো বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কি না ঘোষণা না দিলেও দলীয় সমর্থনের আশায় একাধিক প্রার্থী এলাকায় গণসংযোগ করে চলেছেন। নির্বাচনে একাধিক নেতা দলীয় মনোনয়নের আশায় এলাকার নেতা-কর্মীদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন।

এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ। আর জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মাহবুবুল হাসান ভুঁইয়া পিংকু।

মনোনয়নের বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুবুল হাসান বলেন, ‘দলীয় ঘোষিত সকল কর্মসূচি আমি সফলভাবে পালন করে আসছি। তা ছাড়া এলাকার সাধারণ মানুষের সুখে-দুঃখে সব সময় তাঁদের পাশে থাকি। আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিলে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে বিএনপির এই আসন পুনরুদ্ধার করব।’

এ ছাড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদ্দারেস আলী ইছা ও যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশের নামও আলোচনায় রয়েছে।

অন্যদিকে এই আসনে বড় দুই দল ছাড়া অন্য দলগুলো তেমন সক্রিয় নয়। তবু তারাও নির্বাচন ঘিরে কিছুটা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত