Ajker Patrika

ফেব্রুয়ারির পয়লাতেই উঠল পর্দা

অর্চি হক, ঢাকা
ফেব্রুয়ারির পয়লাতেই উঠল পর্দা

কোনো স্টলে চলছে হাতুড়ি-পেরেকের ঠুকঠুক আওয়াজ, কোথাও পড়ছে রংতুলির শেষ ছোঁয়া, কোনো স্টলে আবার বই সাজিয়ে রাখতে ব্যস্ত কর্মীরা। ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আর বাংলা একাডেমি ঘিরে শাহবাগ থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত এলাকাজুড়ে উৎসবের আমেজ। শুরু হয়েছে অমর একুশে বইমেলা।

দীর্ঘ তিন বছর পর চিরচেনা নিয়মে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে পর্দা উঠেছে এ মেলার। করোনার কারণে ২০২১ সালে মেলা শুরু হয়েছিল ১৮ মার্চ। আর গত বছর মেলার পর্দা ওঠে ১৫ ফেব্রুয়ারি। এর আগে ২০২০ সালে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় মেলা। নির্ধারিত সময়ে মেলা শুরু হওয়ায় এবং করোনার বিধিনিষেধ না থাকায় বইপ্রেমীদের মধ্যে চলছে উৎসবের আমেজ।

দুই মেয়েকে নিয়ে মেলায় আসা তাওহিদুল ইসলাম জানালেন, সন্তানদের বইয়ের প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে প্রতিবছরই বইমেলায় নিয়ে আসার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু করোনার কারণে গত দুই বছর তাদের নিয়ে মেলায় আসেননি তাওহিদুল। এবার পরিস্থিতি ভালো। মেলার স্টল বিন্যাসও অনেক গোছানো মনে হচ্ছে বলে জানালেন তাওহিদুল।

এবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায় মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৬০১টি প্রতিষ্ঠান ৯০১টি ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি ইউনিট দেওয়া হয়েছে। রয়েছে ৩৮টি প্যাভিলিয়ন।

মেলার প্রথম দিন বই কম বিক্রি হলেও মানুষের ভিড় ছিল বেশি। প্রকাশকেরা জানিয়েছেন, প্রথম দিন বই দেখতেই এসেছেন বেশির ভাগ মানুষ। মূলত এক সপ্তাহ পর থেকে শুরু হবে বেচাকেনা।

করোনার কারণে গত দুই বছর নির্ধারিত সময়ে মেলা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন প্রকাশকেরা। এবারও সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন অনেকে। 
তাম্রলিপি প্রকাশনীর এ কে এম তারিকুল ইসলাম রনি বলেন, ‘কাগজ, শ্রমিকের মূল্য থেকে শুরু করে সবকিছুর দাম এবার কয়েক গুণ বেড়েছে। সে তুলনায় আমরা বইয়ের দাম বাড়াতে পারছি না। তাই গত দুই বছরের ক্ষতি এবারের এই একটা মেলা দিয়ে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে না।’

ভাষাচিত্র প্রকাশনীর খন্দকার সোহেল জানিয়েছেন, কাগজের অস্বাভাবিক মূল্যের কারণে নতুন বইয়ের দাম অনেকটা বাড়বে এবার। বইয়ের পাঠক বেশির ভাগই মধ্যবিত্ত শ্রেণির। বেশি দাম দিয়ে তাঁরা বই কিনতে পারবেন না।

এবার মেলার স্টল বিন্যাস নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পাঠক প্রকাশক দুই পক্ষই। তবে লিটলম্যাগ চত্বরের অবস্থান নিয়ে আছে কিছুটা অস্বস্তি। লিটলম্যাগ চত্বরের পাশেই এবার গ্রন্থ উন্মোচন মঞ্চ রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গ্রন্থ উন্মোচন মঞ্চের মাইকের কারণে লিটলম্যাগ চত্বরের আড্ডার পরিবেশ নষ্ট হতে পারে।

ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা প্রাঙ্গণ। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে ঢুকতে পারবেন না। ছুটির দিনে মেলা বেলা ১১টা থেকে শুরু হবে।

প্রতি শুক্র ও শনিবার মেলায় বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে। শিশু চত্বরটি এবার মন্দির গেটে প্রবেশ পথের ঠিক ডান দিকে বড় পরিসরে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার এবং সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত