Ajker Patrika

অতিরিক্ত টাকা ছাড়া মেলে না জন্মনিবন্ধন সনদ

মো. জাকিরুল ইসলাম, হালুয়াঘাট
আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৭: ২১
অতিরিক্ত টাকা ছাড়া মেলে না জন্মনিবন্ধন সনদ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, শিক্ষার্থীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে প্রয়োজন পড়ছে ডিজিটাল জন্মসনদের। এ ছাড়া সম্প্রতি মাধ্যমিক থেকে শুরু করে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি ও প্রোফাইল তৈরির জন্য তথ্য চেয়েছে সরকার। এতে প্রয়োজন হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের জন্মনিবন্ধন সনদের। এ নিয়ে হালুয়াঘাটের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন। টাকা ছাড়া জন্মসনদ উত্তোলন ও ত্রুটি সংশোধন করতে পারছেন না তাঁরা।

ধুরাইল ইউপিতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ডিজিটাল জন্মসনদ পেতে হলে বাইরে থেকে আবেদন করতে হয়। এতে কম্পিউটারের দোকানে ইচ্ছেমতো টাকা আদায় করছে। আবার পরিষদে জন্মসনদ নেওয়ার সময় দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা। অথচ সরকার নির্ধারিত ফি ৫০ টাকা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের অনেকের জন্মসনদ ও শিক্ষাগত সনদের তথ্যের মিল নেই। এসব কারণে ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের চাপ বেড়েছে বহুগুণে। এই সুযোগে হালুয়াঘাট উপজেলায় কয়েকটি ইউনিয়নে সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো কোনো ইউনিয়নে নতুন জন্মসনদ পেতে বাইরে থেকে আবেদন করাতে বাধ্য করছে কর্তৃপক্ষ। আবার কোথাও আবেদন করলেও দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।

বিলডোরা ইউনিয়নের এক অভিভাবক বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগে দুটি জন্মসনদ করিয়েছি। আমার কাছে ৪০০ টাকা রেখেছে।’

জুগলী ইউনিয়নের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘গত কয়েক দিন আগে আমি জন্মসনদ করতে কাগজপত্র নিয়ে গিয়ে জানতে পারি জন্ম সনদ নিতে ৭০০ টাকা লাগে। পরে আমি বাড়ি ফিরে আসি।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ০-৪৫ দিন পর্যন্ত জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিনা ফিতে, পাঁচ বছরের ওপরে ৫০ টাকা, জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য ১০০ টাকা এবং জন্মতারিখ ব্যতীত পিতার নাম, মাতার নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন ফি ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সংশোধনের পর সনদের কপি বিনা ফিতে সরবরাহের কথাও বলা হয়েছে।

বিলডোরা ইউপি সচিব মো. আহসান হাবিব খানের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের এখানে সরকার নির্ধারিত ফি নেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে অতিরিক্ত কোনো টাকা নেওয়া হয় না। তবে নতুন ডিজিটাল জন্মসনদের সঙ্গে বসত বাড়ির ট্যাক্স বা কর নিচ্ছি। হয়তো অনেকে এর জন্য অভিযোগ করেছে।’

ধারা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, যাদের জন্মসনদ প্রয়োজন তাঁদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ রেখে দেওয়া হয়। পরে উদ্যোক্তার মাধ্যমে অনলাইন আবেদন করে জন্মসনদ দেওয়া হয়। ৫০ টাকা বেশি নিয়ে উদ্যোক্তাকে দেওয়া হচ্ছে।’

এ বিষয়ে বিলডোরা ইউপির চেয়ারম্যান মো. শাবজাল খানের মোবাইল ফোনে বারবার কল করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। জন্মসনদ পেতে ­সরকার নির্ধারিত ফি’র বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত