
নিম্নবিত্তের কষ্ট বাড়বে
যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, তা অস্বাভাবিক ও অকল্পনীয়। একেবারেই এত দাম বাড়ানো উচিত হয়নি। প্রয়োজন হলে ধীরে ধীরে সময় নিয়ে দাম সমন্বয় করা যেত। এতে একেবারে এত বড় ধাক্কা পড়ত না। কারণ, এখন মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তার ওপর ডলারের দামও অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক চড়া।
ভর্তুকি না কমিয়ে সরকারের তো কৃচ্ছ্রসাধনের আরও অনেক সুযোগ ছিল। অনেক খাতে প্রচুর অপচয় হচ্ছে। অনেক অপ্রয়োজনী প্রকল্প রয়েছে। সেসব খাতে খরচ কমানোর প্রচুর সুযোগ ছিল। কিন্তু সেগুলোতে সে রকম নজর না দিয়ে শুধু তেলে ভর্তুকি তুলে দিয়ে, দাম বাড়িয়ে গরিবসহ সব শ্রেণির মানুষেরই কষ্ট বাড়ানো হলো।
যেকোনো জিনিসেরই সময় নিয়ে সমন্বয় করা উচিত। যেমন আমরা আগেও বলেছিলাম ডলারের বিপরীতে টাকার কিছুটা অবমূল্যায়ন দরকার আছে। কিন্তু তা করা হয়নি। এখন এক লাফে ৮৫ টাকার ডলার ১১০ টাকা ছাড়িয়েছে।
তেলের দাম বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে অনেকেই বলেন, ভারতের চেয়ে আমাদের দেশে তো তেলের দাম অনেক কম। তা ছাড়া, এ দেশে দাম কম হলে ভারতে পাচার হয়ে যাবে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে কি আমাদের সবকিছুতে তুলনা চলে? শুধু তেলের দাম কম দেখলেই হবে না। অন্য অনেক কিছু তাদের মতো আছে কি না, তা-ও দেখতে হবে। আর পাচারের কথাই যদি বলি, পাচার রোধে তো সীমান্তে আমাদের বাহিনী আছে। তাই দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত বলেই মনে করি।
বিশ্বে কমছে, বাড়ানোর যুক্তি নেই
বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমছে, তাই এ মুহূর্তে দাম বাড়ানো যুক্তিযুক্ত নয়। আরও কিছুদিন অপেক্ষা করা যেত। একেবারেই প্রায় ৫০ শতাংশ দাম বাড়ানোরও কোনো যৌক্তিকতা পাচ্ছি না। এখন যে পরিমাণ দাম বেড়েছে, আর আন্তর্জাতিক বাজারে যে দাম কমছে, তাতে তো বিপিসির ভর্তুকি কাটিয়ে লাভও থাকবে। কিন্তু অর্থনীতির এ কঠিন সময়ে বিপিসির তো লাভের চিন্তা করা উচিত নয়।
দাম বাড়ার প্রভাবে সব ধরনের পরিবহন খরচ বাড়বে। এতে মানুষের যাতায়াতের খরচসহ সব ধরনের পণ্য পরিবহন ব্যয়ও বেড়ে যাবে। ব্যবসা-উদ্যোক্তা-সরবরাহ—সব পর্যায়ে খরচ বেড়ে যাবে। খরচ বাড়লে উৎপাদন কমে যাবে। উৎপাদন কমে গেলে সরবরাহ কমে যাবে, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। আমাদের দেশে তো কোনো কিছুতে খরচ বাড়ার তুলনায় দাম বেড়ে যায় অনেক বেশি।
এখন দাম বাড়ার মূল চাপ পড়বে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত ও দারিদ্র্যসীমার সামান্য ওপরে থাকা মানুষের ওপর। কারণ, তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে। ফলে দরিদ্র আরও দরিদ্র হবে, আবার দারিদ্র্যসীমার ওপরের লোকজন দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে আসবে। অর্থাৎ দারিদ্র্য বেড়ে যাবে।
যদিও সরকার বলছে, বিশ্ববাজারে দাম কমলে দেশেও তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। তবে আমাদের দেশে একবার দাম বাড়লে তা আবার কমার উদাহরণ খুবই কম। আবার যদি দাম কমেও, তবে যে হারে বাড়ে, সে হারে আর কমে না।
সঠিক সময় নয়
সরকারকে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করতেই হতো। তবে দাম সমন্বয়ের এটা সঠিক সময় ছিল না। দামও বেড়েছে অনেক বেশি। এতে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ আরও বেড়ে গেল। কারণ, এমনিতেই উচ্চ মূল্যস্ফীতির অভিঘাতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অনেক কমে গেছে। এ ছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকার মান এখন অনেক কমেছে। এই অবস্থায় তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব মূল্যস্ফীতি আরও বাড়িয়ে দেবে। গণপরিবহন, পণ্য পরিবহনসহ সব খাতেই খরচ বেড়ে যাবে। যার চাপ নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের ওপর বেশি পড়বে। এই অবস্থায় যারা নিম্ন আয়ের মানুষ, তাদের এখন সহায়তা আরও বেশি প্রয়োজন হবে।
তবে জ্বালানির এ দাম বেড়েছে মূলত রাজস্ব আহরণে দুর্বল অবস্থার জন্য। কারণ, রাজস্ব সক্ষমতা কম থাকায় এসব খাতে সরকার যে ভর্তুকি দিয়ে আসছিল, তা দেওয়ার ক্ষমতা আর সরকারের ছিল না।
জ্বালানি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে
সরকার জ্বালানি পণ্যের দাম নির্ধারণে এত দিন ধরে যে অ্যাডমিনিস্টার্ড প্রাইস মেকানিজম অনুসরণ করত, তা থেকে সরে এসেছে। এই মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সরকার জনগণকে স্বস্তি দিতে মূল্যটা সহনশীল রাখত। যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, তা সাংঘাতিক রকমের বেশি। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম থাকার সময় যখন আমরা বলতাম, ভর্তুকি কমান; তখন সরকার বলত, দাম বাড়ানো যাবে না। দাম বাড়ালে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আর এখন এমন সময় দাম বাড়ানো হলো, যখন দেশের অর্থনীতি চাপে আছে এবং মানুষ অর্থনৈতিকভাবে দৈন্যর মধ্যে আছে। সরকার যদি বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম বাড়ায়, তাহলে জনগণের বিষয়ে চিন্তা করল কই। সরকার যদি জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায়, তাহলে কখনোই বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করবে না। যে প্রক্রিয়ার দাম বাড়ানো হয়েছে, তা অবৈধ। বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য যদি দাম বাড়াতে হয়, তাহলে বিইআরসির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করা যেতে পারে। বিইআরসির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করলে যে সুবিধাটা হবে—দাম বাড়লে দাম বেশি দেব, কমলে কম দেব। কিন্তু সরকার সেটা না করে দাম বাড়লে বাড়াচ্ছে, কিন্তু কমলে আর কমাচ্ছে না।
তেলের যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অসহনীয়। এই দাম বাড়ার ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শুরু করে আমাদের মৌলিক জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। এই দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় জনগণের যে অধিকার, তা সরকার রাখল না।
সরকার জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এখন জ্বালানির ক্ষেত্রে পুরোপুরি ভঙ্গুর অবস্থায় আছি। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার এখন করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। ২০০৯ সালের দিকে আমাদের জ্বালানি কম ছিল, কিন্তু বর্তমান অবস্থার মতো অনিশ্চিত ছিলাম না।
এই অবস্থায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো কোনো অবস্থাতেই সমীচীন হবে না। তবে দেখা যাচ্ছে, একদিকে ডলারের সংকট, জ্বালানি তেলের দাম, ভোজ্যতেলের দাম—এসব বিবেচনায় নিলে মনে হচ্ছে, সংকটটা ম্যানেজ করা যাচ্ছে না।
সাহসী ও কঠিন সিদ্ধান্ত
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি সরকারের খুবই সাহসী ও কঠিন সিদ্ধান্ত। এই দাম বাড়ার কারণে অর্থনীতিতে প্রাথমিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও আগামী ছয় মাস পর এই সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বে। আমরা যদি জ্বালানি তেলের দাম এখন সমন্বয় না করি, তাহলে অর্থনীতি নিয়ে বিরাট একটা ঝামেলায় পড়তে হবে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে আইএমএফ থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার একটা যোগসূত্র আছে। কারণ, আইএমএফ জ্বালানি তেলের ওপর ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ দিয়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে, সরকার আইএমএফের সঙ্গে ঋণ নিয়ে দর-কষাকষি করছে। আইএমএফের কাছেও মনে হচ্ছে, সরকার জ্বালানি তেলের ভর্তুকি কমাতে আন্তরিক। এই দাম বাড়ার ফলে সরকার আইএমএফকে একটা সিগন্যাল দিচ্ছে।
ডিজেলের দাম পৃথিবীর কোনো দেশে সস্তা নয়। আমাদের এখানে কৃত্রিমভাবে দাম কমিয়ে রাখা হতো। ভবিষ্যতে ফসিল ফুয়েলের ওপর ভর্তুকি উঠিয়ে দিতে হবে। আমরা ফসিল ফুয়েলের ওপর ভর্তুকি উঠিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভালোভাবে এগিয়ে গেলাম। এই দাম বাড়ানো তারই একটা পদক্ষেপ।
আমাদের দেশে জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত এখনই সরকারকে ঘোষণা করতে হবে। অকটেন ও পেট্রলের ওপর বেশি দাম বাড়িয়ে ডিজেলের ওপর যে ভর্তুকি ছিল, সরকার এখানে একটা সমন্বয় করেছে।
ডিজেলের দাম ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে। এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলছে। সামনে ডিজেলের দাম আরও পড়তে থাকবে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে গরিব মানুষের ভোগান্তি লাঘবে সরকারের উচিত সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ বাড়িয়ে সহায়তা করা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যয়বহুল হবে, ফলে পণ্যের দাম বাড়বে।
মূল্যস্ফীতি বাড়বে
আমরা সংকটকালে শুধু স্বল্পকালীন সমাধানের দিকে যাই। এভাবে ১৫-১৬ বছর পার করেছি। কিন্তু সবকিছুতে বহুমাত্রিক বিকল্প ব্যবস্থা দরকার। দীর্ঘমেয়াদি বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হতো। এত দিনে আমাদের উৎপাদন শুরু হলে জ্বালানির খরচ কমে যেত। এসব না করে আমরা এলএনজি আনছি। এতে সমাধান হবে না। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেচ, সার, কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তায় সহযোগিতা করতে হবে। এত বেশি দাম বাড়ালে মূল্যস্ফীতি বাড়বে।
নতুন করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে; বিশেষ করে কৃষি খাতে। খাদ্যনিরাপত্তায়ও ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। তবে এটা স্বল্প সময়ের জন্য সমাধানের উপায় হতে পারে।
অর্থনীতি নেতিবাচক হওয়ার আশঙ্কা
হঠাৎ জ্বালানির মূল্য এত বেশি বৃদ্ধিতে পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারখানায় পণ্য উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু পণ্যের দাম তো রাতারাতি বৃদ্ধি করা যায় না। আর বিদেশের ক্রেতারা তো আগের দামে পণ্য ক্রয়ের আদেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁরা হঠাৎ বেশি দাম বাড়াতে অভ্যস্তও না। দাম সমন্বয় করতে না পারলে অনেক ব্যবসায়ী কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হবেন। যার ফলে শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা কর্মহারা হতে পারেন। আর করোনার পরে চলমান সংকটের কারণে অন্যত্র নতুন চাকরি পাওয়াটাও সহজ হবে না। যদিও সংকটকালে সরকারের কর্মসংস্থানে বিশেষ নজর রাখা উচিত।
এদিকে বাংলাদেশে তো কোনো পণ্যের দাম একবার বাড়লে তা সহজে কমে না। পাশাপাশি কোনো পণ্যের দাম ১০ শতাংশ বাড়ালে ব্যবসায়ীরা বাড়ান কমপক্ষে ৩০ শতাংশ। আর পরিবহন খাতে ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি হয়। যার প্রভাব পড়ে জনজীবনে। বেড়ে যাবে বাজারের পণ্যমূল্য।

নিম্নবিত্তের কষ্ট বাড়বে
যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, তা অস্বাভাবিক ও অকল্পনীয়। একেবারেই এত দাম বাড়ানো উচিত হয়নি। প্রয়োজন হলে ধীরে ধীরে সময় নিয়ে দাম সমন্বয় করা যেত। এতে একেবারে এত বড় ধাক্কা পড়ত না। কারণ, এখন মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তার ওপর ডলারের দামও অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক চড়া।
ভর্তুকি না কমিয়ে সরকারের তো কৃচ্ছ্রসাধনের আরও অনেক সুযোগ ছিল। অনেক খাতে প্রচুর অপচয় হচ্ছে। অনেক অপ্রয়োজনী প্রকল্প রয়েছে। সেসব খাতে খরচ কমানোর প্রচুর সুযোগ ছিল। কিন্তু সেগুলোতে সে রকম নজর না দিয়ে শুধু তেলে ভর্তুকি তুলে দিয়ে, দাম বাড়িয়ে গরিবসহ সব শ্রেণির মানুষেরই কষ্ট বাড়ানো হলো।
যেকোনো জিনিসেরই সময় নিয়ে সমন্বয় করা উচিত। যেমন আমরা আগেও বলেছিলাম ডলারের বিপরীতে টাকার কিছুটা অবমূল্যায়ন দরকার আছে। কিন্তু তা করা হয়নি। এখন এক লাফে ৮৫ টাকার ডলার ১১০ টাকা ছাড়িয়েছে।
তেলের দাম বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে অনেকেই বলেন, ভারতের চেয়ে আমাদের দেশে তো তেলের দাম অনেক কম। তা ছাড়া, এ দেশে দাম কম হলে ভারতে পাচার হয়ে যাবে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে কি আমাদের সবকিছুতে তুলনা চলে? শুধু তেলের দাম কম দেখলেই হবে না। অন্য অনেক কিছু তাদের মতো আছে কি না, তা-ও দেখতে হবে। আর পাচারের কথাই যদি বলি, পাচার রোধে তো সীমান্তে আমাদের বাহিনী আছে। তাই দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত বলেই মনে করি।
বিশ্বে কমছে, বাড়ানোর যুক্তি নেই
বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমছে, তাই এ মুহূর্তে দাম বাড়ানো যুক্তিযুক্ত নয়। আরও কিছুদিন অপেক্ষা করা যেত। একেবারেই প্রায় ৫০ শতাংশ দাম বাড়ানোরও কোনো যৌক্তিকতা পাচ্ছি না। এখন যে পরিমাণ দাম বেড়েছে, আর আন্তর্জাতিক বাজারে যে দাম কমছে, তাতে তো বিপিসির ভর্তুকি কাটিয়ে লাভও থাকবে। কিন্তু অর্থনীতির এ কঠিন সময়ে বিপিসির তো লাভের চিন্তা করা উচিত নয়।
দাম বাড়ার প্রভাবে সব ধরনের পরিবহন খরচ বাড়বে। এতে মানুষের যাতায়াতের খরচসহ সব ধরনের পণ্য পরিবহন ব্যয়ও বেড়ে যাবে। ব্যবসা-উদ্যোক্তা-সরবরাহ—সব পর্যায়ে খরচ বেড়ে যাবে। খরচ বাড়লে উৎপাদন কমে যাবে। উৎপাদন কমে গেলে সরবরাহ কমে যাবে, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। আমাদের দেশে তো কোনো কিছুতে খরচ বাড়ার তুলনায় দাম বেড়ে যায় অনেক বেশি।
এখন দাম বাড়ার মূল চাপ পড়বে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত ও দারিদ্র্যসীমার সামান্য ওপরে থাকা মানুষের ওপর। কারণ, তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে। ফলে দরিদ্র আরও দরিদ্র হবে, আবার দারিদ্র্যসীমার ওপরের লোকজন দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে আসবে। অর্থাৎ দারিদ্র্য বেড়ে যাবে।
যদিও সরকার বলছে, বিশ্ববাজারে দাম কমলে দেশেও তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। তবে আমাদের দেশে একবার দাম বাড়লে তা আবার কমার উদাহরণ খুবই কম। আবার যদি দাম কমেও, তবে যে হারে বাড়ে, সে হারে আর কমে না।
সঠিক সময় নয়
সরকারকে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করতেই হতো। তবে দাম সমন্বয়ের এটা সঠিক সময় ছিল না। দামও বেড়েছে অনেক বেশি। এতে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ আরও বেড়ে গেল। কারণ, এমনিতেই উচ্চ মূল্যস্ফীতির অভিঘাতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অনেক কমে গেছে। এ ছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকার মান এখন অনেক কমেছে। এই অবস্থায় তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব মূল্যস্ফীতি আরও বাড়িয়ে দেবে। গণপরিবহন, পণ্য পরিবহনসহ সব খাতেই খরচ বেড়ে যাবে। যার চাপ নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের ওপর বেশি পড়বে। এই অবস্থায় যারা নিম্ন আয়ের মানুষ, তাদের এখন সহায়তা আরও বেশি প্রয়োজন হবে।
তবে জ্বালানির এ দাম বেড়েছে মূলত রাজস্ব আহরণে দুর্বল অবস্থার জন্য। কারণ, রাজস্ব সক্ষমতা কম থাকায় এসব খাতে সরকার যে ভর্তুকি দিয়ে আসছিল, তা দেওয়ার ক্ষমতা আর সরকারের ছিল না।
জ্বালানি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে
সরকার জ্বালানি পণ্যের দাম নির্ধারণে এত দিন ধরে যে অ্যাডমিনিস্টার্ড প্রাইস মেকানিজম অনুসরণ করত, তা থেকে সরে এসেছে। এই মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সরকার জনগণকে স্বস্তি দিতে মূল্যটা সহনশীল রাখত। যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, তা সাংঘাতিক রকমের বেশি। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম থাকার সময় যখন আমরা বলতাম, ভর্তুকি কমান; তখন সরকার বলত, দাম বাড়ানো যাবে না। দাম বাড়ালে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আর এখন এমন সময় দাম বাড়ানো হলো, যখন দেশের অর্থনীতি চাপে আছে এবং মানুষ অর্থনৈতিকভাবে দৈন্যর মধ্যে আছে। সরকার যদি বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম বাড়ায়, তাহলে জনগণের বিষয়ে চিন্তা করল কই। সরকার যদি জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায়, তাহলে কখনোই বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করবে না। যে প্রক্রিয়ার দাম বাড়ানো হয়েছে, তা অবৈধ। বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য যদি দাম বাড়াতে হয়, তাহলে বিইআরসির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করা যেতে পারে। বিইআরসির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করলে যে সুবিধাটা হবে—দাম বাড়লে দাম বেশি দেব, কমলে কম দেব। কিন্তু সরকার সেটা না করে দাম বাড়লে বাড়াচ্ছে, কিন্তু কমলে আর কমাচ্ছে না।
তেলের যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অসহনীয়। এই দাম বাড়ার ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শুরু করে আমাদের মৌলিক জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। এই দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় জনগণের যে অধিকার, তা সরকার রাখল না।
সরকার জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এখন জ্বালানির ক্ষেত্রে পুরোপুরি ভঙ্গুর অবস্থায় আছি। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার এখন করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। ২০০৯ সালের দিকে আমাদের জ্বালানি কম ছিল, কিন্তু বর্তমান অবস্থার মতো অনিশ্চিত ছিলাম না।
এই অবস্থায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো কোনো অবস্থাতেই সমীচীন হবে না। তবে দেখা যাচ্ছে, একদিকে ডলারের সংকট, জ্বালানি তেলের দাম, ভোজ্যতেলের দাম—এসব বিবেচনায় নিলে মনে হচ্ছে, সংকটটা ম্যানেজ করা যাচ্ছে না।
সাহসী ও কঠিন সিদ্ধান্ত
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি সরকারের খুবই সাহসী ও কঠিন সিদ্ধান্ত। এই দাম বাড়ার কারণে অর্থনীতিতে প্রাথমিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও আগামী ছয় মাস পর এই সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বে। আমরা যদি জ্বালানি তেলের দাম এখন সমন্বয় না করি, তাহলে অর্থনীতি নিয়ে বিরাট একটা ঝামেলায় পড়তে হবে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে আইএমএফ থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার একটা যোগসূত্র আছে। কারণ, আইএমএফ জ্বালানি তেলের ওপর ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ দিয়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে, সরকার আইএমএফের সঙ্গে ঋণ নিয়ে দর-কষাকষি করছে। আইএমএফের কাছেও মনে হচ্ছে, সরকার জ্বালানি তেলের ভর্তুকি কমাতে আন্তরিক। এই দাম বাড়ার ফলে সরকার আইএমএফকে একটা সিগন্যাল দিচ্ছে।
ডিজেলের দাম পৃথিবীর কোনো দেশে সস্তা নয়। আমাদের এখানে কৃত্রিমভাবে দাম কমিয়ে রাখা হতো। ভবিষ্যতে ফসিল ফুয়েলের ওপর ভর্তুকি উঠিয়ে দিতে হবে। আমরা ফসিল ফুয়েলের ওপর ভর্তুকি উঠিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভালোভাবে এগিয়ে গেলাম। এই দাম বাড়ানো তারই একটা পদক্ষেপ।
আমাদের দেশে জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত এখনই সরকারকে ঘোষণা করতে হবে। অকটেন ও পেট্রলের ওপর বেশি দাম বাড়িয়ে ডিজেলের ওপর যে ভর্তুকি ছিল, সরকার এখানে একটা সমন্বয় করেছে।
ডিজেলের দাম ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে। এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলছে। সামনে ডিজেলের দাম আরও পড়তে থাকবে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে গরিব মানুষের ভোগান্তি লাঘবে সরকারের উচিত সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ বাড়িয়ে সহায়তা করা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যয়বহুল হবে, ফলে পণ্যের দাম বাড়বে।
মূল্যস্ফীতি বাড়বে
আমরা সংকটকালে শুধু স্বল্পকালীন সমাধানের দিকে যাই। এভাবে ১৫-১৬ বছর পার করেছি। কিন্তু সবকিছুতে বহুমাত্রিক বিকল্প ব্যবস্থা দরকার। দীর্ঘমেয়াদি বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হতো। এত দিনে আমাদের উৎপাদন শুরু হলে জ্বালানির খরচ কমে যেত। এসব না করে আমরা এলএনজি আনছি। এতে সমাধান হবে না। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেচ, সার, কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তায় সহযোগিতা করতে হবে। এত বেশি দাম বাড়ালে মূল্যস্ফীতি বাড়বে।
নতুন করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে; বিশেষ করে কৃষি খাতে। খাদ্যনিরাপত্তায়ও ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। তবে এটা স্বল্প সময়ের জন্য সমাধানের উপায় হতে পারে।
অর্থনীতি নেতিবাচক হওয়ার আশঙ্কা
হঠাৎ জ্বালানির মূল্য এত বেশি বৃদ্ধিতে পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারখানায় পণ্য উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু পণ্যের দাম তো রাতারাতি বৃদ্ধি করা যায় না। আর বিদেশের ক্রেতারা তো আগের দামে পণ্য ক্রয়ের আদেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁরা হঠাৎ বেশি দাম বাড়াতে অভ্যস্তও না। দাম সমন্বয় করতে না পারলে অনেক ব্যবসায়ী কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হবেন। যার ফলে শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা কর্মহারা হতে পারেন। আর করোনার পরে চলমান সংকটের কারণে অন্যত্র নতুন চাকরি পাওয়াটাও সহজ হবে না। যদিও সংকটকালে সরকারের কর্মসংস্থানে বিশেষ নজর রাখা উচিত।
এদিকে বাংলাদেশে তো কোনো পণ্যের দাম একবার বাড়লে তা সহজে কমে না। পাশাপাশি কোনো পণ্যের দাম ১০ শতাংশ বাড়ালে ব্যবসায়ীরা বাড়ান কমপক্ষে ৩০ শতাংশ। আর পরিবহন খাতে ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি হয়। যার প্রভাব পড়ে জনজীবনে। বেড়ে যাবে বাজারের পণ্যমূল্য।

নিম্নবিত্তের কষ্ট বাড়বে
যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, তা অস্বাভাবিক ও অকল্পনীয়। একেবারেই এত দাম বাড়ানো উচিত হয়নি। প্রয়োজন হলে ধীরে ধীরে সময় নিয়ে দাম সমন্বয় করা যেত। এতে একেবারে এত বড় ধাক্কা পড়ত না। কারণ, এখন মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তার ওপর ডলারের দামও অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক চড়া।
ভর্তুকি না কমিয়ে সরকারের তো কৃচ্ছ্রসাধনের আরও অনেক সুযোগ ছিল। অনেক খাতে প্রচুর অপচয় হচ্ছে। অনেক অপ্রয়োজনী প্রকল্প রয়েছে। সেসব খাতে খরচ কমানোর প্রচুর সুযোগ ছিল। কিন্তু সেগুলোতে সে রকম নজর না দিয়ে শুধু তেলে ভর্তুকি তুলে দিয়ে, দাম বাড়িয়ে গরিবসহ সব শ্রেণির মানুষেরই কষ্ট বাড়ানো হলো।
যেকোনো জিনিসেরই সময় নিয়ে সমন্বয় করা উচিত। যেমন আমরা আগেও বলেছিলাম ডলারের বিপরীতে টাকার কিছুটা অবমূল্যায়ন দরকার আছে। কিন্তু তা করা হয়নি। এখন এক লাফে ৮৫ টাকার ডলার ১১০ টাকা ছাড়িয়েছে।
তেলের দাম বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে অনেকেই বলেন, ভারতের চেয়ে আমাদের দেশে তো তেলের দাম অনেক কম। তা ছাড়া, এ দেশে দাম কম হলে ভারতে পাচার হয়ে যাবে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে কি আমাদের সবকিছুতে তুলনা চলে? শুধু তেলের দাম কম দেখলেই হবে না। অন্য অনেক কিছু তাদের মতো আছে কি না, তা-ও দেখতে হবে। আর পাচারের কথাই যদি বলি, পাচার রোধে তো সীমান্তে আমাদের বাহিনী আছে। তাই দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত বলেই মনে করি।
বিশ্বে কমছে, বাড়ানোর যুক্তি নেই
বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমছে, তাই এ মুহূর্তে দাম বাড়ানো যুক্তিযুক্ত নয়। আরও কিছুদিন অপেক্ষা করা যেত। একেবারেই প্রায় ৫০ শতাংশ দাম বাড়ানোরও কোনো যৌক্তিকতা পাচ্ছি না। এখন যে পরিমাণ দাম বেড়েছে, আর আন্তর্জাতিক বাজারে যে দাম কমছে, তাতে তো বিপিসির ভর্তুকি কাটিয়ে লাভও থাকবে। কিন্তু অর্থনীতির এ কঠিন সময়ে বিপিসির তো লাভের চিন্তা করা উচিত নয়।
দাম বাড়ার প্রভাবে সব ধরনের পরিবহন খরচ বাড়বে। এতে মানুষের যাতায়াতের খরচসহ সব ধরনের পণ্য পরিবহন ব্যয়ও বেড়ে যাবে। ব্যবসা-উদ্যোক্তা-সরবরাহ—সব পর্যায়ে খরচ বেড়ে যাবে। খরচ বাড়লে উৎপাদন কমে যাবে। উৎপাদন কমে গেলে সরবরাহ কমে যাবে, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। আমাদের দেশে তো কোনো কিছুতে খরচ বাড়ার তুলনায় দাম বেড়ে যায় অনেক বেশি।
এখন দাম বাড়ার মূল চাপ পড়বে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত ও দারিদ্র্যসীমার সামান্য ওপরে থাকা মানুষের ওপর। কারণ, তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে। ফলে দরিদ্র আরও দরিদ্র হবে, আবার দারিদ্র্যসীমার ওপরের লোকজন দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে আসবে। অর্থাৎ দারিদ্র্য বেড়ে যাবে।
যদিও সরকার বলছে, বিশ্ববাজারে দাম কমলে দেশেও তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। তবে আমাদের দেশে একবার দাম বাড়লে তা আবার কমার উদাহরণ খুবই কম। আবার যদি দাম কমেও, তবে যে হারে বাড়ে, সে হারে আর কমে না।
সঠিক সময় নয়
সরকারকে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করতেই হতো। তবে দাম সমন্বয়ের এটা সঠিক সময় ছিল না। দামও বেড়েছে অনেক বেশি। এতে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ আরও বেড়ে গেল। কারণ, এমনিতেই উচ্চ মূল্যস্ফীতির অভিঘাতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অনেক কমে গেছে। এ ছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকার মান এখন অনেক কমেছে। এই অবস্থায় তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব মূল্যস্ফীতি আরও বাড়িয়ে দেবে। গণপরিবহন, পণ্য পরিবহনসহ সব খাতেই খরচ বেড়ে যাবে। যার চাপ নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের ওপর বেশি পড়বে। এই অবস্থায় যারা নিম্ন আয়ের মানুষ, তাদের এখন সহায়তা আরও বেশি প্রয়োজন হবে।
তবে জ্বালানির এ দাম বেড়েছে মূলত রাজস্ব আহরণে দুর্বল অবস্থার জন্য। কারণ, রাজস্ব সক্ষমতা কম থাকায় এসব খাতে সরকার যে ভর্তুকি দিয়ে আসছিল, তা দেওয়ার ক্ষমতা আর সরকারের ছিল না।
জ্বালানি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে
সরকার জ্বালানি পণ্যের দাম নির্ধারণে এত দিন ধরে যে অ্যাডমিনিস্টার্ড প্রাইস মেকানিজম অনুসরণ করত, তা থেকে সরে এসেছে। এই মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সরকার জনগণকে স্বস্তি দিতে মূল্যটা সহনশীল রাখত। যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, তা সাংঘাতিক রকমের বেশি। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম থাকার সময় যখন আমরা বলতাম, ভর্তুকি কমান; তখন সরকার বলত, দাম বাড়ানো যাবে না। দাম বাড়ালে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আর এখন এমন সময় দাম বাড়ানো হলো, যখন দেশের অর্থনীতি চাপে আছে এবং মানুষ অর্থনৈতিকভাবে দৈন্যর মধ্যে আছে। সরকার যদি বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম বাড়ায়, তাহলে জনগণের বিষয়ে চিন্তা করল কই। সরকার যদি জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায়, তাহলে কখনোই বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করবে না। যে প্রক্রিয়ার দাম বাড়ানো হয়েছে, তা অবৈধ। বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য যদি দাম বাড়াতে হয়, তাহলে বিইআরসির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করা যেতে পারে। বিইআরসির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করলে যে সুবিধাটা হবে—দাম বাড়লে দাম বেশি দেব, কমলে কম দেব। কিন্তু সরকার সেটা না করে দাম বাড়লে বাড়াচ্ছে, কিন্তু কমলে আর কমাচ্ছে না।
তেলের যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অসহনীয়। এই দাম বাড়ার ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শুরু করে আমাদের মৌলিক জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। এই দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় জনগণের যে অধিকার, তা সরকার রাখল না।
সরকার জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এখন জ্বালানির ক্ষেত্রে পুরোপুরি ভঙ্গুর অবস্থায় আছি। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার এখন করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। ২০০৯ সালের দিকে আমাদের জ্বালানি কম ছিল, কিন্তু বর্তমান অবস্থার মতো অনিশ্চিত ছিলাম না।
এই অবস্থায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো কোনো অবস্থাতেই সমীচীন হবে না। তবে দেখা যাচ্ছে, একদিকে ডলারের সংকট, জ্বালানি তেলের দাম, ভোজ্যতেলের দাম—এসব বিবেচনায় নিলে মনে হচ্ছে, সংকটটা ম্যানেজ করা যাচ্ছে না।
সাহসী ও কঠিন সিদ্ধান্ত
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি সরকারের খুবই সাহসী ও কঠিন সিদ্ধান্ত। এই দাম বাড়ার কারণে অর্থনীতিতে প্রাথমিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও আগামী ছয় মাস পর এই সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বে। আমরা যদি জ্বালানি তেলের দাম এখন সমন্বয় না করি, তাহলে অর্থনীতি নিয়ে বিরাট একটা ঝামেলায় পড়তে হবে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে আইএমএফ থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার একটা যোগসূত্র আছে। কারণ, আইএমএফ জ্বালানি তেলের ওপর ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ দিয়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে, সরকার আইএমএফের সঙ্গে ঋণ নিয়ে দর-কষাকষি করছে। আইএমএফের কাছেও মনে হচ্ছে, সরকার জ্বালানি তেলের ভর্তুকি কমাতে আন্তরিক। এই দাম বাড়ার ফলে সরকার আইএমএফকে একটা সিগন্যাল দিচ্ছে।
ডিজেলের দাম পৃথিবীর কোনো দেশে সস্তা নয়। আমাদের এখানে কৃত্রিমভাবে দাম কমিয়ে রাখা হতো। ভবিষ্যতে ফসিল ফুয়েলের ওপর ভর্তুকি উঠিয়ে দিতে হবে। আমরা ফসিল ফুয়েলের ওপর ভর্তুকি উঠিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভালোভাবে এগিয়ে গেলাম। এই দাম বাড়ানো তারই একটা পদক্ষেপ।
আমাদের দেশে জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত এখনই সরকারকে ঘোষণা করতে হবে। অকটেন ও পেট্রলের ওপর বেশি দাম বাড়িয়ে ডিজেলের ওপর যে ভর্তুকি ছিল, সরকার এখানে একটা সমন্বয় করেছে।
ডিজেলের দাম ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে। এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলছে। সামনে ডিজেলের দাম আরও পড়তে থাকবে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে গরিব মানুষের ভোগান্তি লাঘবে সরকারের উচিত সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ বাড়িয়ে সহায়তা করা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যয়বহুল হবে, ফলে পণ্যের দাম বাড়বে।
মূল্যস্ফীতি বাড়বে
আমরা সংকটকালে শুধু স্বল্পকালীন সমাধানের দিকে যাই। এভাবে ১৫-১৬ বছর পার করেছি। কিন্তু সবকিছুতে বহুমাত্রিক বিকল্প ব্যবস্থা দরকার। দীর্ঘমেয়াদি বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হতো। এত দিনে আমাদের উৎপাদন শুরু হলে জ্বালানির খরচ কমে যেত। এসব না করে আমরা এলএনজি আনছি। এতে সমাধান হবে না। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেচ, সার, কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তায় সহযোগিতা করতে হবে। এত বেশি দাম বাড়ালে মূল্যস্ফীতি বাড়বে।
নতুন করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে; বিশেষ করে কৃষি খাতে। খাদ্যনিরাপত্তায়ও ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। তবে এটা স্বল্প সময়ের জন্য সমাধানের উপায় হতে পারে।
অর্থনীতি নেতিবাচক হওয়ার আশঙ্কা
হঠাৎ জ্বালানির মূল্য এত বেশি বৃদ্ধিতে পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারখানায় পণ্য উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু পণ্যের দাম তো রাতারাতি বৃদ্ধি করা যায় না। আর বিদেশের ক্রেতারা তো আগের দামে পণ্য ক্রয়ের আদেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁরা হঠাৎ বেশি দাম বাড়াতে অভ্যস্তও না। দাম সমন্বয় করতে না পারলে অনেক ব্যবসায়ী কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হবেন। যার ফলে শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা কর্মহারা হতে পারেন। আর করোনার পরে চলমান সংকটের কারণে অন্যত্র নতুন চাকরি পাওয়াটাও সহজ হবে না। যদিও সংকটকালে সরকারের কর্মসংস্থানে বিশেষ নজর রাখা উচিত।
এদিকে বাংলাদেশে তো কোনো পণ্যের দাম একবার বাড়লে তা সহজে কমে না। পাশাপাশি কোনো পণ্যের দাম ১০ শতাংশ বাড়ালে ব্যবসায়ীরা বাড়ান কমপক্ষে ৩০ শতাংশ। আর পরিবহন খাতে ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি হয়। যার প্রভাব পড়ে জনজীবনে। বেড়ে যাবে বাজারের পণ্যমূল্য।

নিম্নবিত্তের কষ্ট বাড়বে
যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, তা অস্বাভাবিক ও অকল্পনীয়। একেবারেই এত দাম বাড়ানো উচিত হয়নি। প্রয়োজন হলে ধীরে ধীরে সময় নিয়ে দাম সমন্বয় করা যেত। এতে একেবারে এত বড় ধাক্কা পড়ত না। কারণ, এখন মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তার ওপর ডলারের দামও অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক চড়া।
ভর্তুকি না কমিয়ে সরকারের তো কৃচ্ছ্রসাধনের আরও অনেক সুযোগ ছিল। অনেক খাতে প্রচুর অপচয় হচ্ছে। অনেক অপ্রয়োজনী প্রকল্প রয়েছে। সেসব খাতে খরচ কমানোর প্রচুর সুযোগ ছিল। কিন্তু সেগুলোতে সে রকম নজর না দিয়ে শুধু তেলে ভর্তুকি তুলে দিয়ে, দাম বাড়িয়ে গরিবসহ সব শ্রেণির মানুষেরই কষ্ট বাড়ানো হলো।
যেকোনো জিনিসেরই সময় নিয়ে সমন্বয় করা উচিত। যেমন আমরা আগেও বলেছিলাম ডলারের বিপরীতে টাকার কিছুটা অবমূল্যায়ন দরকার আছে। কিন্তু তা করা হয়নি। এখন এক লাফে ৮৫ টাকার ডলার ১১০ টাকা ছাড়িয়েছে।
তেলের দাম বাড়ানোর যুক্তি হিসেবে অনেকেই বলেন, ভারতের চেয়ে আমাদের দেশে তো তেলের দাম অনেক কম। তা ছাড়া, এ দেশে দাম কম হলে ভারতে পাচার হয়ে যাবে। কিন্তু ভারতের সঙ্গে কি আমাদের সবকিছুতে তুলনা চলে? শুধু তেলের দাম কম দেখলেই হবে না। অন্য অনেক কিছু তাদের মতো আছে কি না, তা-ও দেখতে হবে। আর পাচারের কথাই যদি বলি, পাচার রোধে তো সীমান্তে আমাদের বাহিনী আছে। তাই দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত বলেই মনে করি।
বিশ্বে কমছে, বাড়ানোর যুক্তি নেই
বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমছে, তাই এ মুহূর্তে দাম বাড়ানো যুক্তিযুক্ত নয়। আরও কিছুদিন অপেক্ষা করা যেত। একেবারেই প্রায় ৫০ শতাংশ দাম বাড়ানোরও কোনো যৌক্তিকতা পাচ্ছি না। এখন যে পরিমাণ দাম বেড়েছে, আর আন্তর্জাতিক বাজারে যে দাম কমছে, তাতে তো বিপিসির ভর্তুকি কাটিয়ে লাভও থাকবে। কিন্তু অর্থনীতির এ কঠিন সময়ে বিপিসির তো লাভের চিন্তা করা উচিত নয়।
দাম বাড়ার প্রভাবে সব ধরনের পরিবহন খরচ বাড়বে। এতে মানুষের যাতায়াতের খরচসহ সব ধরনের পণ্য পরিবহন ব্যয়ও বেড়ে যাবে। ব্যবসা-উদ্যোক্তা-সরবরাহ—সব পর্যায়ে খরচ বেড়ে যাবে। খরচ বাড়লে উৎপাদন কমে যাবে। উৎপাদন কমে গেলে সরবরাহ কমে যাবে, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। আমাদের দেশে তো কোনো কিছুতে খরচ বাড়ার তুলনায় দাম বেড়ে যায় অনেক বেশি।
এখন দাম বাড়ার মূল চাপ পড়বে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত ও দারিদ্র্যসীমার সামান্য ওপরে থাকা মানুষের ওপর। কারণ, তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে। ফলে দরিদ্র আরও দরিদ্র হবে, আবার দারিদ্র্যসীমার ওপরের লোকজন দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে আসবে। অর্থাৎ দারিদ্র্য বেড়ে যাবে।
যদিও সরকার বলছে, বিশ্ববাজারে দাম কমলে দেশেও তেলের দাম সমন্বয় করা হবে। তবে আমাদের দেশে একবার দাম বাড়লে তা আবার কমার উদাহরণ খুবই কম। আবার যদি দাম কমেও, তবে যে হারে বাড়ে, সে হারে আর কমে না।
সঠিক সময় নয়
সরকারকে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করতেই হতো। তবে দাম সমন্বয়ের এটা সঠিক সময় ছিল না। দামও বেড়েছে অনেক বেশি। এতে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ আরও বেড়ে গেল। কারণ, এমনিতেই উচ্চ মূল্যস্ফীতির অভিঘাতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অনেক কমে গেছে। এ ছাড়া ডলারের বিপরীতে টাকার মান এখন অনেক কমেছে। এই অবস্থায় তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব মূল্যস্ফীতি আরও বাড়িয়ে দেবে। গণপরিবহন, পণ্য পরিবহনসহ সব খাতেই খরচ বেড়ে যাবে। যার চাপ নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের ওপর বেশি পড়বে। এই অবস্থায় যারা নিম্ন আয়ের মানুষ, তাদের এখন সহায়তা আরও বেশি প্রয়োজন হবে।
তবে জ্বালানির এ দাম বেড়েছে মূলত রাজস্ব আহরণে দুর্বল অবস্থার জন্য। কারণ, রাজস্ব সক্ষমতা কম থাকায় এসব খাতে সরকার যে ভর্তুকি দিয়ে আসছিল, তা দেওয়ার ক্ষমতা আর সরকারের ছিল না।
জ্বালানি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে
সরকার জ্বালানি পণ্যের দাম নির্ধারণে এত দিন ধরে যে অ্যাডমিনিস্টার্ড প্রাইস মেকানিজম অনুসরণ করত, তা থেকে সরে এসেছে। এই মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় সরকার জনগণকে স্বস্তি দিতে মূল্যটা সহনশীল রাখত। যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, তা সাংঘাতিক রকমের বেশি। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম থাকার সময় যখন আমরা বলতাম, ভর্তুকি কমান; তখন সরকার বলত, দাম বাড়ানো যাবে না। দাম বাড়ালে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
আর এখন এমন সময় দাম বাড়ানো হলো, যখন দেশের অর্থনীতি চাপে আছে এবং মানুষ অর্থনৈতিকভাবে দৈন্যর মধ্যে আছে। সরকার যদি বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দাম বাড়ায়, তাহলে জনগণের বিষয়ে চিন্তা করল কই। সরকার যদি জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায়, তাহলে কখনোই বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করবে না। যে প্রক্রিয়ার দাম বাড়ানো হয়েছে, তা অবৈধ। বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য যদি দাম বাড়াতে হয়, তাহলে বিইআরসির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করা যেতে পারে। বিইআরসির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ করলে যে সুবিধাটা হবে—দাম বাড়লে দাম বেশি দেব, কমলে কম দেব। কিন্তু সরকার সেটা না করে দাম বাড়লে বাড়াচ্ছে, কিন্তু কমলে আর কমাচ্ছে না।
তেলের যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অসহনীয়। এই দাম বাড়ার ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শুরু করে আমাদের মৌলিক জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। এই দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়ায় জনগণের যে অধিকার, তা সরকার রাখল না।
সরকার জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এখন জ্বালানির ক্ষেত্রে পুরোপুরি ভঙ্গুর অবস্থায় আছি। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার এখন করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। ২০০৯ সালের দিকে আমাদের জ্বালানি কম ছিল, কিন্তু বর্তমান অবস্থার মতো অনিশ্চিত ছিলাম না।
এই অবস্থায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো কোনো অবস্থাতেই সমীচীন হবে না। তবে দেখা যাচ্ছে, একদিকে ডলারের সংকট, জ্বালানি তেলের দাম, ভোজ্যতেলের দাম—এসব বিবেচনায় নিলে মনে হচ্ছে, সংকটটা ম্যানেজ করা যাচ্ছে না।
সাহসী ও কঠিন সিদ্ধান্ত
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তটি সরকারের খুবই সাহসী ও কঠিন সিদ্ধান্ত। এই দাম বাড়ার কারণে অর্থনীতিতে প্রাথমিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও আগামী ছয় মাস পর এই সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে পড়বে। আমরা যদি জ্বালানি তেলের দাম এখন সমন্বয় না করি, তাহলে অর্থনীতি নিয়ে বিরাট একটা ঝামেলায় পড়তে হবে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে আইএমএফ থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার একটা যোগসূত্র আছে। কারণ, আইএমএফ জ্বালানি তেলের ওপর ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ দিয়েছে। এই মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে, সরকার আইএমএফের সঙ্গে ঋণ নিয়ে দর-কষাকষি করছে। আইএমএফের কাছেও মনে হচ্ছে, সরকার জ্বালানি তেলের ভর্তুকি কমাতে আন্তরিক। এই দাম বাড়ার ফলে সরকার আইএমএফকে একটা সিগন্যাল দিচ্ছে।
ডিজেলের দাম পৃথিবীর কোনো দেশে সস্তা নয়। আমাদের এখানে কৃত্রিমভাবে দাম কমিয়ে রাখা হতো। ভবিষ্যতে ফসিল ফুয়েলের ওপর ভর্তুকি উঠিয়ে দিতে হবে। আমরা ফসিল ফুয়েলের ওপর ভর্তুকি উঠিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভালোভাবে এগিয়ে গেলাম। এই দাম বাড়ানো তারই একটা পদক্ষেপ।
আমাদের দেশে জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত এখনই সরকারকে ঘোষণা করতে হবে। অকটেন ও পেট্রলের ওপর বেশি দাম বাড়িয়ে ডিজেলের ওপর যে ভর্তুকি ছিল, সরকার এখানে একটা সমন্বয় করেছে।
ডিজেলের দাম ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে। এখন ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ চলছে। সামনে ডিজেলের দাম আরও পড়তে থাকবে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে গরিব মানুষের ভোগান্তি লাঘবে সরকারের উচিত সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ বাড়িয়ে সহায়তা করা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যয়বহুল হবে, ফলে পণ্যের দাম বাড়বে।
মূল্যস্ফীতি বাড়বে
আমরা সংকটকালে শুধু স্বল্পকালীন সমাধানের দিকে যাই। এভাবে ১৫-১৬ বছর পার করেছি। কিন্তু সবকিছুতে বহুমাত্রিক বিকল্প ব্যবস্থা দরকার। দীর্ঘমেয়াদি বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হতো। এত দিনে আমাদের উৎপাদন শুরু হলে জ্বালানির খরচ কমে যেত। এসব না করে আমরা এলএনজি আনছি। এতে সমাধান হবে না। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেচ, সার, কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তায় সহযোগিতা করতে হবে। এত বেশি দাম বাড়ালে মূল্যস্ফীতি বাড়বে।
নতুন করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে; বিশেষ করে কৃষি খাতে। খাদ্যনিরাপত্তায়ও ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। তবে এটা স্বল্প সময়ের জন্য সমাধানের উপায় হতে পারে।
অর্থনীতি নেতিবাচক হওয়ার আশঙ্কা
হঠাৎ জ্বালানির মূল্য এত বেশি বৃদ্ধিতে পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারখানায় পণ্য উৎপাদনের খরচ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু পণ্যের দাম তো রাতারাতি বৃদ্ধি করা যায় না। আর বিদেশের ক্রেতারা তো আগের দামে পণ্য ক্রয়ের আদেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া তাঁরা হঠাৎ বেশি দাম বাড়াতে অভ্যস্তও না। দাম সমন্বয় করতে না পারলে অনেক ব্যবসায়ী কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হবেন। যার ফলে শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা কর্মহারা হতে পারেন। আর করোনার পরে চলমান সংকটের কারণে অন্যত্র নতুন চাকরি পাওয়াটাও সহজ হবে না। যদিও সংকটকালে সরকারের কর্মসংস্থানে বিশেষ নজর রাখা উচিত।
এদিকে বাংলাদেশে তো কোনো পণ্যের দাম একবার বাড়লে তা সহজে কমে না। পাশাপাশি কোনো পণ্যের দাম ১০ শতাংশ বাড়ালে ব্যবসায়ীরা বাড়ান কমপক্ষে ৩০ শতাংশ। আর পরিবহন খাতে ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে অরাজকতা সৃষ্টি হয়। যার প্রভাব পড়ে জনজীবনে। বেড়ে যাবে বাজারের পণ্যমূল্য।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, তা অস্বাভাবিক ও অকল্পনীয়। একেবারেই এত দাম বাড়ানো উচিত হয়নি। প্রয়োজন হলে ধীরে ধীরে সময় নিয়ে দাম সমন্বয় করা যেত। এতে একেবারে এত বড় ধাক্কা পড়ত না। কারণ, এখন মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তার ওপর ডলারের দামও অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক চড়া।
০৭ আগস্ট ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, তা অস্বাভাবিক ও অকল্পনীয়। একেবারেই এত দাম বাড়ানো উচিত হয়নি। প্রয়োজন হলে ধীরে ধীরে সময় নিয়ে দাম সমন্বয় করা যেত। এতে একেবারে এত বড় ধাক্কা পড়ত না। কারণ, এখন মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তার ওপর ডলারের দামও অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক চড়া।
০৭ আগস্ট ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, তা অস্বাভাবিক ও অকল্পনীয়। একেবারেই এত দাম বাড়ানো উচিত হয়নি। প্রয়োজন হলে ধীরে ধীরে সময় নিয়ে দাম সমন্বয় করা যেত। এতে একেবারে এত বড় ধাক্কা পড়ত না। কারণ, এখন মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তার ওপর ডলারের দামও অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক চড়া।
০৭ আগস্ট ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

যে হারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে, তা অস্বাভাবিক ও অকল্পনীয়। একেবারেই এত দাম বাড়ানো উচিত হয়নি। প্রয়োজন হলে ধীরে ধীরে সময় নিয়ে দাম সমন্বয় করা যেত। এতে একেবারে এত বড় ধাক্কা পড়ত না। কারণ, এখন মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। তার ওপর ডলারের দামও অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক চড়া।
০৭ আগস্ট ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫