Ajker Patrika

চুরির ভয়ে ট্রান্সফরমার খুলে নিয়ে বাড়িতে

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
চুরির ভয়ে ট্রান্সফরমার খুলে নিয়ে বাড়িতে

নওগাঁর রাণীনগরে গত পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) গভীর-অগভীর নলকূপসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত ৫৪টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। চুরির ভয়ে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার নামিয়ে বাড়িতে রাখছেন নলকূপ মালিকেরা। তবে এসব চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেও এখন পর্যন্ত চোরাই ট্রান্সফরমার উদ্ধার বা চোর চক্রকে শনাক্ত করতে পারেনি থানা-পুলিশ।

এ কারণে দিন দিন চুরির ঘটনা বাড়ছে। এতে একদিকে যেমন নলকূপমালিকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে পানি সেচের অভাবে রবিশস্য চাষাবাদ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়নের আওতায় গভীর নলকূপের পরিচালক জেঠাইল গ্রামের শাহিন আলম বলেন, চুরির ভয়ে তিনি ট্রান্সফরমার নামিয়ে রাখেন। এভাবে বছরে চারবার নামানো-ওঠানোয় তাঁর খরচ হয় সাড়ে নয় হাজার টাকা।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলাজুড়ে পানি সেচের জন্য বিদ্যুৎ এবং ডিজেলচালিত ৩৩২টি গভীর এবং ২ হাজার ৩০টি অগভীর নলকূপ রয়েছে। এর মধ্যে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গভীর নলকূপ রয়েছে ২৬২টি এবং ব্যক্তিমালিকানা গভীর নলকূপ রয়েছে ৭০টি।

রাণীনগর উপজেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কার্যালয়ের উপসহকারী ফিরোজ হোসেনের দেওয়া তথ্যমতে, গত জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বরেন্দ্রের আওতায় পরিচালিত ১২টি গভীর নলকূপের ৩৫টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এসব ঘটনায় গভীর নলকূপের অপারেটররা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ ছাড়া ব্যক্তিমালিকানার আওতায় গভীর-অগভীর নলকূপের ১৯টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে বলে নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর রাণীনগর উপজেলা জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে।

রাণীনগর উপজেলার গোনা গ্রামের রেজাউল ইসলাম বলেন, গত দেড়-দুই মাস আগে তাঁর নিজস্ব একটি গভীর এবং একটি অগভীর নলকূপের চারটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। পরে জমির ধানরক্ষা করতে দেড়-দুই লাখ টাকা খরচ করে ট্রান্সফরমার কিনতে হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

রাণীনগর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরিদা বেগম বলেন, সলিয়া গ্রামের দক্ষিণ মাঠে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গভীর নলকূপের অপারেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তাঁর স্বামী জনাব আলী। ২৫ নভেম্বর রাতে ওই নলকূপের তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছেন তিনি।

কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোনো সুরাহা হয়নি।

রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রান্সফরমার চুরি রোধে উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে আমরা পুলিশ প্রশাসনকে বলেছি। ট্রান্সফরমার চুরির কারণে একদিকে যেমন কৃষকের অতিরিক্ত খরচ বাড়ছে, অন্যদিকে রবিশস্য মৌসুমে পানি সেচের অভাবে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।’

রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমার উদ্ধার এবং চোর চক্রকে ধরতে জোরালোভাবে অনুসন্ধান চলছে। দ্রুত এই চক্রকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত