শরিফুল হাসান

ঈদ সামনে রেখে বিপুল পরিমাণ প্রবাসী আয় পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের প্রথম দুই সপ্তাহেই বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে ৯৫ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় এর (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ধরে) পরিমাণ ১০ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা।
এর আগে মার্চ মাসে বৈধ পথে দেশে এসেছে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। আর
২০২২-২৩ অর্থবছরের (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৪ কোটি বেশি।
সংকটের এই সময়ে প্রবাসী এই আয় দেশের জন্য ইতিবাচক। কোনো সন্দেহ নেই—রোজা ও ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ—সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন ও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর থেকে বেশি প্রবাসী আয় আসে।
প্রবাসী ভাইবোনদের বলব, এই টাকা পাঠানো অব্যাহত থাকুক। কারণ, অর্থনৈতিক মন্দা হোক কিংবা করোনা মহামারি, যুদ্ধ হোক কিংবা দুর্যোগ, বাংলাদেশের যেকোনো বৈশ্বিক সংকটে বড় ভরসার নাম এই প্রবাসী আয়। আর এই আয়ের নেপথ্যে আছেন এক কোটির বেশি বাংলাদেশি। তাঁরা এক অর্থে দেশের আশীর্বাদ।
অবশ্য প্রবাসীরা পরিবারের কাছে ডলার পাঠালে দেশের জন্য আশীর্বাদ কেন, এই তথ্য সাধারণ মানুষের অনেকেই বুঝতে পারেন না। তাঁদের জন্য সহজ কয়েকটা কথা: আসলে ডলার ছাড়া একটা দেশ চলতে পারে না। পৃথিবীর ৯০ শতাংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের লেনদেন নিষ্পত্তি হয় ডলারে। এই যে আমাদের জ্বালানি তেল লাগে, বিদেশ থেকে নানা কিছু আমদানি করতে হয়, এর মূল্য পরিশোধ করতে হয় ডলারে। বৈশ্বিক ঋণের ৪০ শতাংশ ইস্যু হয় ডলারে। আন্তর্জাতিক রিজার্ভ কারেন্সি বা ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ’ হিসেবেও ডলারই ব্যবহৃত হয়।
মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই ডলার ধীরে ধীরে পৃথিবীতে সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা হিসেবে স্থান করে নেয়। ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ডলারের প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি করে স্বর্ণ রিজার্ভের ধারণা থেকে বের করে নিয়ে আসেন বিশ্বকে। এই সময় তাঁরা ডলারের ‘স্বর্ণভিত্তি’ বাতিল করেন। তখন থেকে দেশটি বিশ্বব্যাপী বিভিন্নভাবে ডলারের প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি ও জোগান দেওয়ার মাধ্যমে ডলারকে বিশ্ববাণিজ্যের মুদ্রা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
ডলারের ক্ষমতা কমাতে ফ্রান্স ও জার্মানি ১৯৯৯ সালে চালু করে ইউরো মুদ্রা। ওই সময় ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ঘোষণা দেন, ‘তেল আর ডলারে নয়, ইউরোতে বিক্রি করবে ইরাক। এরপর ২০০০ সাল থেকে ইরাক ইউরোতে তেল বিক্রি শুরু করে। ডলারের পতন আশঙ্কায় ২০০৩ সালে আমেরিকা ইরাক আক্রমণ করে। তারা সাদ্দাম সরকারের পতন ঘটিয়ে নতুন সরকার বসায় এবং ফের ডলারে তেল বিক্রি শুরু করে।
এককথায় বর্তমান সময়ে ডলার ছাড়া চলা অসম্ভব। আর আমরা চাইলে ধান, চাল, মাংস বা সবকিছুর উৎপাদন চেষ্টা করে বাড়াতে পারি, কালকে যদি মনে করি বেশি টাকা ছাপব, সেটাও পারি, কিন্তু একটা ডলার তৈরির ক্ষমতাও আমাদের নেই। আর সে কারণেই আমরা চাই বৈধপথে ডলার আসুক। আমরা আসলে আমাদের লোকজনকে বিদেশে পাঠাই ডলারের জন্য। এই ডলার ছাড়া চলা যায় না। হুন্ডিতে টাকা এলে সেটা দেশের কাজে লাগে না। কিন্তু তারপরও বিপুল পরিমাণ অর্থ হুন্ডিতে লেনদেন হয়।
আসলে প্রবাসীরা বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটা বিষয়কে গুরুত্ব দেন। তাঁরা বিবেচনায় নেন, কত দ্রুত দেশে অর্থ পাঠানো যাবে; সেই প্রক্রিয়া কতটা সহজ। এর সঙ্গে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—ডলারের দাম। ডলারের বিপরীতে কত টাকা তিনি পাবেন, সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বারবার ডলারের রেট বেঁধে দেওয়া, যেটি খোলাবাজারের চেয়ে অনেক কম, সেটি কিন্তু হুন্ডি বাড়িয়েছে। কারণ হুন্ডিতে রেট বেশি ছিল।
এপ্রিল মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, সরকারি খাতের ছয়টি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ কোটি ৪২ লাখ ডলার। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭৯ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলার। এই আয় আরও বাড়ানো সম্ভব। এ জন্য ব্যাংকগুলোর আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
আসলে প্রবাসী জনশক্তির অধিকাংশই শ্রমিক। মধ্যপ্রাচ্যের যেসব জায়গায় থাকেন, সেখান থেকে ব্যাংকের দূরত্ব অনেক বেশি। আবার প্রবাসীদের কাজের সময় ও ব্যাংক খোলা থাকার সময় একই। ফলে ব্যাংকে গেলে ছুটি নিতে হবে, বেতন কাটা যাবে। হুন্ডির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এসব সুযোগ নিয়ে সরাসরি শ্রমিকদের আবাসিক ক্যাম্পে চলে যান। এখন বৈধ সেবাগুলো যদি প্রবাসীদের দোরগোড়ায় না যায়, তাহলে হুন্ডি ঠেকানো কঠিন। কাজেই সব প্রবাসীকে ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনতে হবে। এমএফএস বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসগুলোও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
কয়েক বছর ধরে গড়ে ১০ লাখেরও বেশি কর্মী বিদেশে যাচ্ছেন, যাঁরা মূলত নির্মাণশ্রমিক, প্ল্যান্টেশন, কৃষি, সার্ভিস বা উৎপাদন খাতে কাজ করেন। আর তাঁরাই মূলত প্রবাসী আয় পাঠান। আমাদের শিক্ষিত যে শ্রেণিটি একেবারে বিদেশে চলে যান, তাঁদের অধিকাংশই দেশ থেকে সব নিয়ে যান বা পাচার করেন, কিন্তু প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকেরা টাকা পাঠান স্বজনদের জন্য।
কাজেই প্রতিবছর যাঁরা বিদেশে কাজ করতে যাচ্ছেন, যাওয়ার আগে প্রত্যেকের দুটি করে ব্যাংক হিসাব খোলার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। একটিতে তিনি পরিবারের জন্য টাকা পাঠাবেন, আরেকটিতে নিজের জন্য কিছু সঞ্চয় করবেন। এই সঞ্চয়ের ওপর ভিত্তি করে পরে দেশে ফিরলে তাঁকে পেনশন-ভাতা দেওয়াসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
শুধু প্রবাসী নন, দেশে থাকা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্যও উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে করে তিনি দেশে বেশি করে প্রবাসী আয় পাঠান। এ ক্ষেত্রে তাঁর সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, লেখাপড়ায় বৃত্তি, চিকিৎসাব্যবস্থায় বিশেষ সুবিধাসহ আরও অনেক কিছু ভাবা যেতে পারে। প্রবাসীদের দেশে-বিদেশে সম্মান জানাতে রাষ্ট্রীয় কিছু উদ্যোগ নেওয়া উচিত, যাতে বৈধভাবে তাঁরা প্রবাসী আয় পাঠাতে উৎসাহী হন। দূতাবাসগুলোর উচিত প্রবাসীদের তালিকা করে তাঁদের নিয়ে নানা ধরনের অনুষ্ঠান করা। সেখানে হুন্ডি প্রতিরোধে প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠানো বাড়াতে হবে। এ জন্য নতুন নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান জরুরি। পুরোনো কয়েকটি বাজারের দিকেও নজর দিতে হবে।
এই যে প্রবাসীরা বছরে ২২ বা ২৪ বিলিয়ন ডলার পাঠান, এটি কিন্তু বিশাল। সহজ করে বললে, সারা পৃথিবী মিলে বাংলাদেশকে এখন যে পরিমাণ ঋণ বা অনুদান দিচ্ছে বা সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) যে অর্থ আসছে, তার চেয়ে ছয় থেকে দশ গুণ পর্যন্ত বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ যে এখন আর বিদেশি ঋণের ওপর নির্ভরশীল নয়, তার কারণ এই প্রবাসী আয়।
২০০৮-০৯ সালের বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দায় বাংলাদেশকে কোনো সংকটে পড়তে হয়নি প্রবাসী আয়ের কারণে। করোনা মহামারির মধ্যেও রেকর্ড পরিমাণ ২৪ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সারা বিশ্ব যখন সংকটে, সেই সময়ও বাংলাদেশের ভরসা প্রবাসী আয়।
এই বিশাল অবদানের পরও প্রবাসীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি কিন্তু বদলায়নি। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে দূতাবাস—সবখানেই পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। পাসপোর্ট তৈরি থেকেই শুরু। এরপর দালাল, চাকরির বিষয়ে অসত্য তথ্য, উচ্চমূল্যে ভিসা কেনাবেচা, স্বাস্থ্যপরীক্ষা, সরকারি ছাড়পত্রসহ সবখানে সীমাহীন যন্ত্রণা। দেশের আকাশ পার হলে শুরু হয় বিরূপ প্রকৃতি, অমানুষিক পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবনযাপন, মালিকদের প্রতারণা, নির্যাতনসহ আরও কত-কী! আবার বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে গেলে কাঙ্ক্ষিত সেবা মেলে না, দেশে ফিরলেও ভোগান্তি।
যদিও পরিস্থিতি একটু একটু ইতিবাচক হচ্ছে এবং মন্ত্রণালয় ও সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। তবু এখনো অনেক পথচলা বাকি। তবে যত উদ্যোগ হোক, সবার আগে প্রবাসীদের সম্মান দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, তাঁরাও মানুষ। মনে রাখতে হবে, এক কোটির বেশি প্রবাসী শুধু যে দেশের অর্থনীতি সচল রাখছেন তা নয়, অনেক দূর থেকেও বুকের মধ্যে যত্ন করে রেখেছেন
লাল-সবুজের জন্য ভালোবাসা। দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে তাঁরাই আমাদের ভরসা। তাঁদের জন্য ভালোবাসা। তাঁদের সবাইকে ঈদ মোবারক।
লেখক: হেড অব মাইগ্রেশন অ্যান্ড ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভস, ব্র্যাক এবং কলামিস্ট

ঈদ সামনে রেখে বিপুল পরিমাণ প্রবাসী আয় পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের প্রথম দুই সপ্তাহেই বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে ৯৫ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় এর (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ধরে) পরিমাণ ১০ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা।
এর আগে মার্চ মাসে বৈধ পথে দেশে এসেছে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। আর
২০২২-২৩ অর্থবছরের (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৪ কোটি বেশি।
সংকটের এই সময়ে প্রবাসী এই আয় দেশের জন্য ইতিবাচক। কোনো সন্দেহ নেই—রোজা ও ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ—সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন ও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর থেকে বেশি প্রবাসী আয় আসে।
প্রবাসী ভাইবোনদের বলব, এই টাকা পাঠানো অব্যাহত থাকুক। কারণ, অর্থনৈতিক মন্দা হোক কিংবা করোনা মহামারি, যুদ্ধ হোক কিংবা দুর্যোগ, বাংলাদেশের যেকোনো বৈশ্বিক সংকটে বড় ভরসার নাম এই প্রবাসী আয়। আর এই আয়ের নেপথ্যে আছেন এক কোটির বেশি বাংলাদেশি। তাঁরা এক অর্থে দেশের আশীর্বাদ।
অবশ্য প্রবাসীরা পরিবারের কাছে ডলার পাঠালে দেশের জন্য আশীর্বাদ কেন, এই তথ্য সাধারণ মানুষের অনেকেই বুঝতে পারেন না। তাঁদের জন্য সহজ কয়েকটা কথা: আসলে ডলার ছাড়া একটা দেশ চলতে পারে না। পৃথিবীর ৯০ শতাংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের লেনদেন নিষ্পত্তি হয় ডলারে। এই যে আমাদের জ্বালানি তেল লাগে, বিদেশ থেকে নানা কিছু আমদানি করতে হয়, এর মূল্য পরিশোধ করতে হয় ডলারে। বৈশ্বিক ঋণের ৪০ শতাংশ ইস্যু হয় ডলারে। আন্তর্জাতিক রিজার্ভ কারেন্সি বা ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ’ হিসেবেও ডলারই ব্যবহৃত হয়।
মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই ডলার ধীরে ধীরে পৃথিবীতে সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা হিসেবে স্থান করে নেয়। ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ডলারের প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি করে স্বর্ণ রিজার্ভের ধারণা থেকে বের করে নিয়ে আসেন বিশ্বকে। এই সময় তাঁরা ডলারের ‘স্বর্ণভিত্তি’ বাতিল করেন। তখন থেকে দেশটি বিশ্বব্যাপী বিভিন্নভাবে ডলারের প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি ও জোগান দেওয়ার মাধ্যমে ডলারকে বিশ্ববাণিজ্যের মুদ্রা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
ডলারের ক্ষমতা কমাতে ফ্রান্স ও জার্মানি ১৯৯৯ সালে চালু করে ইউরো মুদ্রা। ওই সময় ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ঘোষণা দেন, ‘তেল আর ডলারে নয়, ইউরোতে বিক্রি করবে ইরাক। এরপর ২০০০ সাল থেকে ইরাক ইউরোতে তেল বিক্রি শুরু করে। ডলারের পতন আশঙ্কায় ২০০৩ সালে আমেরিকা ইরাক আক্রমণ করে। তারা সাদ্দাম সরকারের পতন ঘটিয়ে নতুন সরকার বসায় এবং ফের ডলারে তেল বিক্রি শুরু করে।
এককথায় বর্তমান সময়ে ডলার ছাড়া চলা অসম্ভব। আর আমরা চাইলে ধান, চাল, মাংস বা সবকিছুর উৎপাদন চেষ্টা করে বাড়াতে পারি, কালকে যদি মনে করি বেশি টাকা ছাপব, সেটাও পারি, কিন্তু একটা ডলার তৈরির ক্ষমতাও আমাদের নেই। আর সে কারণেই আমরা চাই বৈধপথে ডলার আসুক। আমরা আসলে আমাদের লোকজনকে বিদেশে পাঠাই ডলারের জন্য। এই ডলার ছাড়া চলা যায় না। হুন্ডিতে টাকা এলে সেটা দেশের কাজে লাগে না। কিন্তু তারপরও বিপুল পরিমাণ অর্থ হুন্ডিতে লেনদেন হয়।
আসলে প্রবাসীরা বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটা বিষয়কে গুরুত্ব দেন। তাঁরা বিবেচনায় নেন, কত দ্রুত দেশে অর্থ পাঠানো যাবে; সেই প্রক্রিয়া কতটা সহজ। এর সঙ্গে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—ডলারের দাম। ডলারের বিপরীতে কত টাকা তিনি পাবেন, সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বারবার ডলারের রেট বেঁধে দেওয়া, যেটি খোলাবাজারের চেয়ে অনেক কম, সেটি কিন্তু হুন্ডি বাড়িয়েছে। কারণ হুন্ডিতে রেট বেশি ছিল।
এপ্রিল মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, সরকারি খাতের ছয়টি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ কোটি ৪২ লাখ ডলার। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭৯ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলার। এই আয় আরও বাড়ানো সম্ভব। এ জন্য ব্যাংকগুলোর আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
আসলে প্রবাসী জনশক্তির অধিকাংশই শ্রমিক। মধ্যপ্রাচ্যের যেসব জায়গায় থাকেন, সেখান থেকে ব্যাংকের দূরত্ব অনেক বেশি। আবার প্রবাসীদের কাজের সময় ও ব্যাংক খোলা থাকার সময় একই। ফলে ব্যাংকে গেলে ছুটি নিতে হবে, বেতন কাটা যাবে। হুন্ডির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এসব সুযোগ নিয়ে সরাসরি শ্রমিকদের আবাসিক ক্যাম্পে চলে যান। এখন বৈধ সেবাগুলো যদি প্রবাসীদের দোরগোড়ায় না যায়, তাহলে হুন্ডি ঠেকানো কঠিন। কাজেই সব প্রবাসীকে ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনতে হবে। এমএফএস বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসগুলোও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
কয়েক বছর ধরে গড়ে ১০ লাখেরও বেশি কর্মী বিদেশে যাচ্ছেন, যাঁরা মূলত নির্মাণশ্রমিক, প্ল্যান্টেশন, কৃষি, সার্ভিস বা উৎপাদন খাতে কাজ করেন। আর তাঁরাই মূলত প্রবাসী আয় পাঠান। আমাদের শিক্ষিত যে শ্রেণিটি একেবারে বিদেশে চলে যান, তাঁদের অধিকাংশই দেশ থেকে সব নিয়ে যান বা পাচার করেন, কিন্তু প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকেরা টাকা পাঠান স্বজনদের জন্য।
কাজেই প্রতিবছর যাঁরা বিদেশে কাজ করতে যাচ্ছেন, যাওয়ার আগে প্রত্যেকের দুটি করে ব্যাংক হিসাব খোলার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। একটিতে তিনি পরিবারের জন্য টাকা পাঠাবেন, আরেকটিতে নিজের জন্য কিছু সঞ্চয় করবেন। এই সঞ্চয়ের ওপর ভিত্তি করে পরে দেশে ফিরলে তাঁকে পেনশন-ভাতা দেওয়াসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
শুধু প্রবাসী নন, দেশে থাকা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্যও উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে করে তিনি দেশে বেশি করে প্রবাসী আয় পাঠান। এ ক্ষেত্রে তাঁর সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, লেখাপড়ায় বৃত্তি, চিকিৎসাব্যবস্থায় বিশেষ সুবিধাসহ আরও অনেক কিছু ভাবা যেতে পারে। প্রবাসীদের দেশে-বিদেশে সম্মান জানাতে রাষ্ট্রীয় কিছু উদ্যোগ নেওয়া উচিত, যাতে বৈধভাবে তাঁরা প্রবাসী আয় পাঠাতে উৎসাহী হন। দূতাবাসগুলোর উচিত প্রবাসীদের তালিকা করে তাঁদের নিয়ে নানা ধরনের অনুষ্ঠান করা। সেখানে হুন্ডি প্রতিরোধে প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠানো বাড়াতে হবে। এ জন্য নতুন নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান জরুরি। পুরোনো কয়েকটি বাজারের দিকেও নজর দিতে হবে।
এই যে প্রবাসীরা বছরে ২২ বা ২৪ বিলিয়ন ডলার পাঠান, এটি কিন্তু বিশাল। সহজ করে বললে, সারা পৃথিবী মিলে বাংলাদেশকে এখন যে পরিমাণ ঋণ বা অনুদান দিচ্ছে বা সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) যে অর্থ আসছে, তার চেয়ে ছয় থেকে দশ গুণ পর্যন্ত বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ যে এখন আর বিদেশি ঋণের ওপর নির্ভরশীল নয়, তার কারণ এই প্রবাসী আয়।
২০০৮-০৯ সালের বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দায় বাংলাদেশকে কোনো সংকটে পড়তে হয়নি প্রবাসী আয়ের কারণে। করোনা মহামারির মধ্যেও রেকর্ড পরিমাণ ২৪ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সারা বিশ্ব যখন সংকটে, সেই সময়ও বাংলাদেশের ভরসা প্রবাসী আয়।
এই বিশাল অবদানের পরও প্রবাসীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি কিন্তু বদলায়নি। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে দূতাবাস—সবখানেই পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। পাসপোর্ট তৈরি থেকেই শুরু। এরপর দালাল, চাকরির বিষয়ে অসত্য তথ্য, উচ্চমূল্যে ভিসা কেনাবেচা, স্বাস্থ্যপরীক্ষা, সরকারি ছাড়পত্রসহ সবখানে সীমাহীন যন্ত্রণা। দেশের আকাশ পার হলে শুরু হয় বিরূপ প্রকৃতি, অমানুষিক পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবনযাপন, মালিকদের প্রতারণা, নির্যাতনসহ আরও কত-কী! আবার বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে গেলে কাঙ্ক্ষিত সেবা মেলে না, দেশে ফিরলেও ভোগান্তি।
যদিও পরিস্থিতি একটু একটু ইতিবাচক হচ্ছে এবং মন্ত্রণালয় ও সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। তবু এখনো অনেক পথচলা বাকি। তবে যত উদ্যোগ হোক, সবার আগে প্রবাসীদের সম্মান দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, তাঁরাও মানুষ। মনে রাখতে হবে, এক কোটির বেশি প্রবাসী শুধু যে দেশের অর্থনীতি সচল রাখছেন তা নয়, অনেক দূর থেকেও বুকের মধ্যে যত্ন করে রেখেছেন
লাল-সবুজের জন্য ভালোবাসা। দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে তাঁরাই আমাদের ভরসা। তাঁদের জন্য ভালোবাসা। তাঁদের সবাইকে ঈদ মোবারক।
লেখক: হেড অব মাইগ্রেশন অ্যান্ড ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভস, ব্র্যাক এবং কলামিস্ট
শরিফুল হাসান

ঈদ সামনে রেখে বিপুল পরিমাণ প্রবাসী আয় পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের প্রথম দুই সপ্তাহেই বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে ৯৫ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় এর (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ধরে) পরিমাণ ১০ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা।
এর আগে মার্চ মাসে বৈধ পথে দেশে এসেছে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। আর
২০২২-২৩ অর্থবছরের (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৪ কোটি বেশি।
সংকটের এই সময়ে প্রবাসী এই আয় দেশের জন্য ইতিবাচক। কোনো সন্দেহ নেই—রোজা ও ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ—সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন ও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর থেকে বেশি প্রবাসী আয় আসে।
প্রবাসী ভাইবোনদের বলব, এই টাকা পাঠানো অব্যাহত থাকুক। কারণ, অর্থনৈতিক মন্দা হোক কিংবা করোনা মহামারি, যুদ্ধ হোক কিংবা দুর্যোগ, বাংলাদেশের যেকোনো বৈশ্বিক সংকটে বড় ভরসার নাম এই প্রবাসী আয়। আর এই আয়ের নেপথ্যে আছেন এক কোটির বেশি বাংলাদেশি। তাঁরা এক অর্থে দেশের আশীর্বাদ।
অবশ্য প্রবাসীরা পরিবারের কাছে ডলার পাঠালে দেশের জন্য আশীর্বাদ কেন, এই তথ্য সাধারণ মানুষের অনেকেই বুঝতে পারেন না। তাঁদের জন্য সহজ কয়েকটা কথা: আসলে ডলার ছাড়া একটা দেশ চলতে পারে না। পৃথিবীর ৯০ শতাংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের লেনদেন নিষ্পত্তি হয় ডলারে। এই যে আমাদের জ্বালানি তেল লাগে, বিদেশ থেকে নানা কিছু আমদানি করতে হয়, এর মূল্য পরিশোধ করতে হয় ডলারে। বৈশ্বিক ঋণের ৪০ শতাংশ ইস্যু হয় ডলারে। আন্তর্জাতিক রিজার্ভ কারেন্সি বা ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ’ হিসেবেও ডলারই ব্যবহৃত হয়।
মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই ডলার ধীরে ধীরে পৃথিবীতে সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা হিসেবে স্থান করে নেয়। ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ডলারের প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি করে স্বর্ণ রিজার্ভের ধারণা থেকে বের করে নিয়ে আসেন বিশ্বকে। এই সময় তাঁরা ডলারের ‘স্বর্ণভিত্তি’ বাতিল করেন। তখন থেকে দেশটি বিশ্বব্যাপী বিভিন্নভাবে ডলারের প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি ও জোগান দেওয়ার মাধ্যমে ডলারকে বিশ্ববাণিজ্যের মুদ্রা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
ডলারের ক্ষমতা কমাতে ফ্রান্স ও জার্মানি ১৯৯৯ সালে চালু করে ইউরো মুদ্রা। ওই সময় ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ঘোষণা দেন, ‘তেল আর ডলারে নয়, ইউরোতে বিক্রি করবে ইরাক। এরপর ২০০০ সাল থেকে ইরাক ইউরোতে তেল বিক্রি শুরু করে। ডলারের পতন আশঙ্কায় ২০০৩ সালে আমেরিকা ইরাক আক্রমণ করে। তারা সাদ্দাম সরকারের পতন ঘটিয়ে নতুন সরকার বসায় এবং ফের ডলারে তেল বিক্রি শুরু করে।
এককথায় বর্তমান সময়ে ডলার ছাড়া চলা অসম্ভব। আর আমরা চাইলে ধান, চাল, মাংস বা সবকিছুর উৎপাদন চেষ্টা করে বাড়াতে পারি, কালকে যদি মনে করি বেশি টাকা ছাপব, সেটাও পারি, কিন্তু একটা ডলার তৈরির ক্ষমতাও আমাদের নেই। আর সে কারণেই আমরা চাই বৈধপথে ডলার আসুক। আমরা আসলে আমাদের লোকজনকে বিদেশে পাঠাই ডলারের জন্য। এই ডলার ছাড়া চলা যায় না। হুন্ডিতে টাকা এলে সেটা দেশের কাজে লাগে না। কিন্তু তারপরও বিপুল পরিমাণ অর্থ হুন্ডিতে লেনদেন হয়।
আসলে প্রবাসীরা বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটা বিষয়কে গুরুত্ব দেন। তাঁরা বিবেচনায় নেন, কত দ্রুত দেশে অর্থ পাঠানো যাবে; সেই প্রক্রিয়া কতটা সহজ। এর সঙ্গে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—ডলারের দাম। ডলারের বিপরীতে কত টাকা তিনি পাবেন, সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বারবার ডলারের রেট বেঁধে দেওয়া, যেটি খোলাবাজারের চেয়ে অনেক কম, সেটি কিন্তু হুন্ডি বাড়িয়েছে। কারণ হুন্ডিতে রেট বেশি ছিল।
এপ্রিল মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, সরকারি খাতের ছয়টি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ কোটি ৪২ লাখ ডলার। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭৯ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলার। এই আয় আরও বাড়ানো সম্ভব। এ জন্য ব্যাংকগুলোর আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
আসলে প্রবাসী জনশক্তির অধিকাংশই শ্রমিক। মধ্যপ্রাচ্যের যেসব জায়গায় থাকেন, সেখান থেকে ব্যাংকের দূরত্ব অনেক বেশি। আবার প্রবাসীদের কাজের সময় ও ব্যাংক খোলা থাকার সময় একই। ফলে ব্যাংকে গেলে ছুটি নিতে হবে, বেতন কাটা যাবে। হুন্ডির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এসব সুযোগ নিয়ে সরাসরি শ্রমিকদের আবাসিক ক্যাম্পে চলে যান। এখন বৈধ সেবাগুলো যদি প্রবাসীদের দোরগোড়ায় না যায়, তাহলে হুন্ডি ঠেকানো কঠিন। কাজেই সব প্রবাসীকে ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনতে হবে। এমএফএস বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসগুলোও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
কয়েক বছর ধরে গড়ে ১০ লাখেরও বেশি কর্মী বিদেশে যাচ্ছেন, যাঁরা মূলত নির্মাণশ্রমিক, প্ল্যান্টেশন, কৃষি, সার্ভিস বা উৎপাদন খাতে কাজ করেন। আর তাঁরাই মূলত প্রবাসী আয় পাঠান। আমাদের শিক্ষিত যে শ্রেণিটি একেবারে বিদেশে চলে যান, তাঁদের অধিকাংশই দেশ থেকে সব নিয়ে যান বা পাচার করেন, কিন্তু প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকেরা টাকা পাঠান স্বজনদের জন্য।
কাজেই প্রতিবছর যাঁরা বিদেশে কাজ করতে যাচ্ছেন, যাওয়ার আগে প্রত্যেকের দুটি করে ব্যাংক হিসাব খোলার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। একটিতে তিনি পরিবারের জন্য টাকা পাঠাবেন, আরেকটিতে নিজের জন্য কিছু সঞ্চয় করবেন। এই সঞ্চয়ের ওপর ভিত্তি করে পরে দেশে ফিরলে তাঁকে পেনশন-ভাতা দেওয়াসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
শুধু প্রবাসী নন, দেশে থাকা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্যও উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে করে তিনি দেশে বেশি করে প্রবাসী আয় পাঠান। এ ক্ষেত্রে তাঁর সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, লেখাপড়ায় বৃত্তি, চিকিৎসাব্যবস্থায় বিশেষ সুবিধাসহ আরও অনেক কিছু ভাবা যেতে পারে। প্রবাসীদের দেশে-বিদেশে সম্মান জানাতে রাষ্ট্রীয় কিছু উদ্যোগ নেওয়া উচিত, যাতে বৈধভাবে তাঁরা প্রবাসী আয় পাঠাতে উৎসাহী হন। দূতাবাসগুলোর উচিত প্রবাসীদের তালিকা করে তাঁদের নিয়ে নানা ধরনের অনুষ্ঠান করা। সেখানে হুন্ডি প্রতিরোধে প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠানো বাড়াতে হবে। এ জন্য নতুন নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান জরুরি। পুরোনো কয়েকটি বাজারের দিকেও নজর দিতে হবে।
এই যে প্রবাসীরা বছরে ২২ বা ২৪ বিলিয়ন ডলার পাঠান, এটি কিন্তু বিশাল। সহজ করে বললে, সারা পৃথিবী মিলে বাংলাদেশকে এখন যে পরিমাণ ঋণ বা অনুদান দিচ্ছে বা সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) যে অর্থ আসছে, তার চেয়ে ছয় থেকে দশ গুণ পর্যন্ত বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ যে এখন আর বিদেশি ঋণের ওপর নির্ভরশীল নয়, তার কারণ এই প্রবাসী আয়।
২০০৮-০৯ সালের বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দায় বাংলাদেশকে কোনো সংকটে পড়তে হয়নি প্রবাসী আয়ের কারণে। করোনা মহামারির মধ্যেও রেকর্ড পরিমাণ ২৪ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সারা বিশ্ব যখন সংকটে, সেই সময়ও বাংলাদেশের ভরসা প্রবাসী আয়।
এই বিশাল অবদানের পরও প্রবাসীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি কিন্তু বদলায়নি। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে দূতাবাস—সবখানেই পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। পাসপোর্ট তৈরি থেকেই শুরু। এরপর দালাল, চাকরির বিষয়ে অসত্য তথ্য, উচ্চমূল্যে ভিসা কেনাবেচা, স্বাস্থ্যপরীক্ষা, সরকারি ছাড়পত্রসহ সবখানে সীমাহীন যন্ত্রণা। দেশের আকাশ পার হলে শুরু হয় বিরূপ প্রকৃতি, অমানুষিক পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবনযাপন, মালিকদের প্রতারণা, নির্যাতনসহ আরও কত-কী! আবার বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে গেলে কাঙ্ক্ষিত সেবা মেলে না, দেশে ফিরলেও ভোগান্তি।
যদিও পরিস্থিতি একটু একটু ইতিবাচক হচ্ছে এবং মন্ত্রণালয় ও সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। তবু এখনো অনেক পথচলা বাকি। তবে যত উদ্যোগ হোক, সবার আগে প্রবাসীদের সম্মান দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, তাঁরাও মানুষ। মনে রাখতে হবে, এক কোটির বেশি প্রবাসী শুধু যে দেশের অর্থনীতি সচল রাখছেন তা নয়, অনেক দূর থেকেও বুকের মধ্যে যত্ন করে রেখেছেন
লাল-সবুজের জন্য ভালোবাসা। দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে তাঁরাই আমাদের ভরসা। তাঁদের জন্য ভালোবাসা। তাঁদের সবাইকে ঈদ মোবারক।
লেখক: হেড অব মাইগ্রেশন অ্যান্ড ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভস, ব্র্যাক এবং কলামিস্ট

ঈদ সামনে রেখে বিপুল পরিমাণ প্রবাসী আয় পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের প্রথম দুই সপ্তাহেই বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে ৯৫ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় এর (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ধরে) পরিমাণ ১০ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা।
এর আগে মার্চ মাসে বৈধ পথে দেশে এসেছে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। আর
২০২২-২৩ অর্থবছরের (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৪ কোটি বেশি।
সংকটের এই সময়ে প্রবাসী এই আয় দেশের জন্য ইতিবাচক। কোনো সন্দেহ নেই—রোজা ও ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ—সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন ও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর থেকে বেশি প্রবাসী আয় আসে।
প্রবাসী ভাইবোনদের বলব, এই টাকা পাঠানো অব্যাহত থাকুক। কারণ, অর্থনৈতিক মন্দা হোক কিংবা করোনা মহামারি, যুদ্ধ হোক কিংবা দুর্যোগ, বাংলাদেশের যেকোনো বৈশ্বিক সংকটে বড় ভরসার নাম এই প্রবাসী আয়। আর এই আয়ের নেপথ্যে আছেন এক কোটির বেশি বাংলাদেশি। তাঁরা এক অর্থে দেশের আশীর্বাদ।
অবশ্য প্রবাসীরা পরিবারের কাছে ডলার পাঠালে দেশের জন্য আশীর্বাদ কেন, এই তথ্য সাধারণ মানুষের অনেকেই বুঝতে পারেন না। তাঁদের জন্য সহজ কয়েকটা কথা: আসলে ডলার ছাড়া একটা দেশ চলতে পারে না। পৃথিবীর ৯০ শতাংশ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের লেনদেন নিষ্পত্তি হয় ডলারে। এই যে আমাদের জ্বালানি তেল লাগে, বিদেশ থেকে নানা কিছু আমদানি করতে হয়, এর মূল্য পরিশোধ করতে হয় ডলারে। বৈশ্বিক ঋণের ৪০ শতাংশ ইস্যু হয় ডলারে। আন্তর্জাতিক রিজার্ভ কারেন্সি বা ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ’ হিসেবেও ডলারই ব্যবহৃত হয়।
মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই ডলার ধীরে ধীরে পৃথিবীতে সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা হিসেবে স্থান করে নেয়। ১৯৭১ সালের ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ডলারের প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি করে স্বর্ণ রিজার্ভের ধারণা থেকে বের করে নিয়ে আসেন বিশ্বকে। এই সময় তাঁরা ডলারের ‘স্বর্ণভিত্তি’ বাতিল করেন। তখন থেকে দেশটি বিশ্বব্যাপী বিভিন্নভাবে ডলারের প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি ও জোগান দেওয়ার মাধ্যমে ডলারকে বিশ্ববাণিজ্যের মুদ্রা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
ডলারের ক্ষমতা কমাতে ফ্রান্স ও জার্মানি ১৯৯৯ সালে চালু করে ইউরো মুদ্রা। ওই সময় ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ঘোষণা দেন, ‘তেল আর ডলারে নয়, ইউরোতে বিক্রি করবে ইরাক। এরপর ২০০০ সাল থেকে ইরাক ইউরোতে তেল বিক্রি শুরু করে। ডলারের পতন আশঙ্কায় ২০০৩ সালে আমেরিকা ইরাক আক্রমণ করে। তারা সাদ্দাম সরকারের পতন ঘটিয়ে নতুন সরকার বসায় এবং ফের ডলারে তেল বিক্রি শুরু করে।
এককথায় বর্তমান সময়ে ডলার ছাড়া চলা অসম্ভব। আর আমরা চাইলে ধান, চাল, মাংস বা সবকিছুর উৎপাদন চেষ্টা করে বাড়াতে পারি, কালকে যদি মনে করি বেশি টাকা ছাপব, সেটাও পারি, কিন্তু একটা ডলার তৈরির ক্ষমতাও আমাদের নেই। আর সে কারণেই আমরা চাই বৈধপথে ডলার আসুক। আমরা আসলে আমাদের লোকজনকে বিদেশে পাঠাই ডলারের জন্য। এই ডলার ছাড়া চলা যায় না। হুন্ডিতে টাকা এলে সেটা দেশের কাজে লাগে না। কিন্তু তারপরও বিপুল পরিমাণ অর্থ হুন্ডিতে লেনদেন হয়।
আসলে প্রবাসীরা বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটা বিষয়কে গুরুত্ব দেন। তাঁরা বিবেচনায় নেন, কত দ্রুত দেশে অর্থ পাঠানো যাবে; সেই প্রক্রিয়া কতটা সহজ। এর সঙ্গে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—ডলারের দাম। ডলারের বিপরীতে কত টাকা তিনি পাবেন, সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর বারবার ডলারের রেট বেঁধে দেওয়া, যেটি খোলাবাজারের চেয়ে অনেক কম, সেটি কিন্তু হুন্ডি বাড়িয়েছে। কারণ হুন্ডিতে রেট বেশি ছিল।
এপ্রিল মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, সরকারি খাতের ছয়টি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩ কোটি ৪২ লাখ ডলার। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৭৯ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। আর বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলার। এই আয় আরও বাড়ানো সম্ভব। এ জন্য ব্যাংকগুলোর আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
আসলে প্রবাসী জনশক্তির অধিকাংশই শ্রমিক। মধ্যপ্রাচ্যের যেসব জায়গায় থাকেন, সেখান থেকে ব্যাংকের দূরত্ব অনেক বেশি। আবার প্রবাসীদের কাজের সময় ও ব্যাংক খোলা থাকার সময় একই। ফলে ব্যাংকে গেলে ছুটি নিতে হবে, বেতন কাটা যাবে। হুন্ডির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা এসব সুযোগ নিয়ে সরাসরি শ্রমিকদের আবাসিক ক্যাম্পে চলে যান। এখন বৈধ সেবাগুলো যদি প্রবাসীদের দোরগোড়ায় না যায়, তাহলে হুন্ডি ঠেকানো কঠিন। কাজেই সব প্রবাসীকে ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনতে হবে। এমএফএস বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসগুলোও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
কয়েক বছর ধরে গড়ে ১০ লাখেরও বেশি কর্মী বিদেশে যাচ্ছেন, যাঁরা মূলত নির্মাণশ্রমিক, প্ল্যান্টেশন, কৃষি, সার্ভিস বা উৎপাদন খাতে কাজ করেন। আর তাঁরাই মূলত প্রবাসী আয় পাঠান। আমাদের শিক্ষিত যে শ্রেণিটি একেবারে বিদেশে চলে যান, তাঁদের অধিকাংশই দেশ থেকে সব নিয়ে যান বা পাচার করেন, কিন্তু প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকেরা টাকা পাঠান স্বজনদের জন্য।
কাজেই প্রতিবছর যাঁরা বিদেশে কাজ করতে যাচ্ছেন, যাওয়ার আগে প্রত্যেকের দুটি করে ব্যাংক হিসাব খোলার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। একটিতে তিনি পরিবারের জন্য টাকা পাঠাবেন, আরেকটিতে নিজের জন্য কিছু সঞ্চয় করবেন। এই সঞ্চয়ের ওপর ভিত্তি করে পরে দেশে ফিরলে তাঁকে পেনশন-ভাতা দেওয়াসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
শুধু প্রবাসী নন, দেশে থাকা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্যও উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে করে তিনি দেশে বেশি করে প্রবাসী আয় পাঠান। এ ক্ষেত্রে তাঁর সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, লেখাপড়ায় বৃত্তি, চিকিৎসাব্যবস্থায় বিশেষ সুবিধাসহ আরও অনেক কিছু ভাবা যেতে পারে। প্রবাসীদের দেশে-বিদেশে সম্মান জানাতে রাষ্ট্রীয় কিছু উদ্যোগ নেওয়া উচিত, যাতে বৈধভাবে তাঁরা প্রবাসী আয় পাঠাতে উৎসাহী হন। দূতাবাসগুলোর উচিত প্রবাসীদের তালিকা করে তাঁদের নিয়ে নানা ধরনের অনুষ্ঠান করা। সেখানে হুন্ডি প্রতিরোধে প্রবাসীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠানো বাড়াতে হবে। এ জন্য নতুন নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান জরুরি। পুরোনো কয়েকটি বাজারের দিকেও নজর দিতে হবে।
এই যে প্রবাসীরা বছরে ২২ বা ২৪ বিলিয়ন ডলার পাঠান, এটি কিন্তু বিশাল। সহজ করে বললে, সারা পৃথিবী মিলে বাংলাদেশকে এখন যে পরিমাণ ঋণ বা অনুদান দিচ্ছে বা সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগের (এফডিআই) যে অর্থ আসছে, তার চেয়ে ছয় থেকে দশ গুণ পর্যন্ত বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ যে এখন আর বিদেশি ঋণের ওপর নির্ভরশীল নয়, তার কারণ এই প্রবাসী আয়।
২০০৮-০৯ সালের বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দায় বাংলাদেশকে কোনো সংকটে পড়তে হয়নি প্রবাসী আয়ের কারণে। করোনা মহামারির মধ্যেও রেকর্ড পরিমাণ ২৪ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর সারা বিশ্ব যখন সংকটে, সেই সময়ও বাংলাদেশের ভরসা প্রবাসী আয়।
এই বিশাল অবদানের পরও প্রবাসীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি কিন্তু বদলায়নি। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে দূতাবাস—সবখানেই পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। পাসপোর্ট তৈরি থেকেই শুরু। এরপর দালাল, চাকরির বিষয়ে অসত্য তথ্য, উচ্চমূল্যে ভিসা কেনাবেচা, স্বাস্থ্যপরীক্ষা, সরকারি ছাড়পত্রসহ সবখানে সীমাহীন যন্ত্রণা। দেশের আকাশ পার হলে শুরু হয় বিরূপ প্রকৃতি, অমানুষিক পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবনযাপন, মালিকদের প্রতারণা, নির্যাতনসহ আরও কত-কী! আবার বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে গেলে কাঙ্ক্ষিত সেবা মেলে না, দেশে ফিরলেও ভোগান্তি।
যদিও পরিস্থিতি একটু একটু ইতিবাচক হচ্ছে এবং মন্ত্রণালয় ও সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। তবু এখনো অনেক পথচলা বাকি। তবে যত উদ্যোগ হোক, সবার আগে প্রবাসীদের সম্মান দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, তাঁরাও মানুষ। মনে রাখতে হবে, এক কোটির বেশি প্রবাসী শুধু যে দেশের অর্থনীতি সচল রাখছেন তা নয়, অনেক দূর থেকেও বুকের মধ্যে যত্ন করে রেখেছেন
লাল-সবুজের জন্য ভালোবাসা। দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে তাঁরাই আমাদের ভরসা। তাঁদের জন্য ভালোবাসা। তাঁদের সবাইকে ঈদ মোবারক।
লেখক: হেড অব মাইগ্রেশন অ্যান্ড ইয়ুথ ইনিশিয়েটিভস, ব্র্যাক এবং কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

এর আগে মার্চ মাসে বৈধ পথে দেশে এসেছে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৪ কোটি বেশি।
২০ এপ্রিল ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

এর আগে মার্চ মাসে বৈধ পথে দেশে এসেছে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৪ কোটি বেশি।
২০ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

এর আগে মার্চ মাসে বৈধ পথে দেশে এসেছে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৪ কোটি বেশি।
২০ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

এর আগে মার্চ মাসে বৈধ পথে দেশে এসেছে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের (জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত) ৯ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৬৩০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭৪ কোটি বেশি।
২০ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫