Ajker Patrika

পাট জাগ দিতে হিমশিম চাষি

জামালপুর প্রতিনিধি
Thumbnail image

নদী-নালা-খাল-বিলে পানি না থাকায় বিপাকে পড়েছেন জামালপুরের পাটচাষিরা। এ ছাড়া ভরা মৌসুমেও বৃষ্টি না হওয়ায় পাটের ফলন কিছুটা কমে গেছে বলে দাবি তাঁদের। কৃষকেরা জানিয়েছেন, দাবদাহ আর পানির অভাবে খেতেই অনেক পাট পুড়ে গেছে। বাকি যেটুকু আছে সেটুকু খেত থেকে কেটে শ্রমিক আর পরিবহন খরচ মেটাতেই হিমশিম খেতে হবে কৃষককে।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ এবং সরিষাবাড়ী উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় পাটের চাষ হয়েছে। এ অঞ্চলে মেশতা কেনেফ, শিতু এবং তোষা জাতের পাটের চাষ হয়েছে বেশি। তবে এ বছর পাটের ফলন গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম হয়েছে। এ ছাড়া পানির অভাবে জাগ দেওয়া যাচ্ছে না পাট।

স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, শ্রমিকদের বেশি টাকা দিয়ে পাট কাটতে হচ্ছে। এরপর পরিবহনের মাধ্যমে দুই থেকে তিন কিলোমিটার দূরে নিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ বছর পাট চাষ করে লাভের মুখ দেখতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

প্রতি বিঘা জমিতে পাট চাষে খরচ হয়েছে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। ৬০০ টাকা মজুরি দিয়ে পাট কাটার জন্য শ্রমিক নিতে হচ্ছে। পরিবহন বাবদ যাচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। এতে প্রতি বিঘায় খরচ হচ্ছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা।

এদিকে খালে জমে থাকা অল্প পানিতে জাগ দেওয়ায় পাট নীল হয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা এসব পাট কিনতে চান না। জামালপুর জেলা পাট ব্যবসায়ী নেতা সম্পাদ দাস বলেন, এ বছর পাটের অবস্থা বেশি ভালো না। পাট বাজারে আসতে আরও ১৫ দিন লাগবে। পানি না থাকায় চাষিরা পাট বাজারে তুলতে পারছেন না।

দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ এলাকার পাটচাষি ইয়াসিন মিয়া বলেন, পানি না থাকায় মাদ্রেহ, গরুগাড়ি ও ভটভটি ভাড়া করে ২ থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে নিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে। গত বছর যে দামে পাট বিক্রি করেছিলাম। এ বছর পাঠ বিক্রি করে খরচ উঠবে কিনা জানি না।

পুল্যাকান্দির সুরুজজামান বলেন, ‘প্রতি বিঘায় ৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রচণ্ড রোদে খেতেই পাট পুড়ে গেছে। বাকি যা ছিল ৬০০ টাকা মজুরি দিয়ে কাটিয়েছি। এরপর দূরে নিয়ে পাট জাগ দিতে খরচ আরও বেড়েছে। এবার লাভ তো দূরে থাক আসলই ওঠে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ।’

জামালপুর কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাকারিয়া সুলতানা বলেন, এ বছর জামালপুর জেলায় ৩০ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ২৮ হাজার ৯৩৩ হেক্টর জমিতে। তিনি আরও বলেন, গত বছরের বন্যায় জেলায় ১ হাজার ১৬৮ হেক্টর জমির পাটের ক্ষতি হয়েছে। এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকেরা পাট জাগ দিতে পারছেন না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এবং মাঠ পরিদর্শকদের মাধ্যমে রিবন রেটিং সিস্টেমে পাটের আঁশ ছাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে কৃষকেরা এ বছর পাটের দাম ভালো পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত