Ajker Patrika

স্বপ্নার স্বপ্ন মাথা গোঁজার ঠাঁই

সেলিম সুলতান সাগর, চিতলমারী (বাগেরহাট)
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ২৮
স্বপ্নার স্বপ্ন মাথা গোঁজার ঠাঁই

বিশ বছর ধরে নিরুদ্দেশ স্বপ্না বৈরাগীর (৪০) স্বামী শচীন বৈরাগী। স্বপ্না ও শচীন দম্পতির দুই মেয়ে। বড় মেয়ে মিতালী বৈরাগী (২২) ও ছোট মেয়ে রিতা বৈরাগী (২০)। বড় মেয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী তাই বিয়ে দিতে পারছেন না। ছোট মেয়ে এসএসসি পাশ। বিয়েও হয়েছিল। কিন্তু সংসার টেকেনি। এখন মায়ের ঘাড়ের বোঝা।

স্বপ্নাদের কোনো মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। তাই তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হিজলা ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে বৃদ্ধ মা-বাবার বাড়িতে।

স্বপ্নার মা ইলাবতী বৈরাগী (৬১) ও বাবা রবীন্দ্র নাথ বৈরাগী (৭৬)। বয়সের ভারে বাবা এখন আর কাজ করতে পারেন না। মা বাবুগঞ্জ বাজারের ঝাড়ুদারের কাজ করেন। সপ্তাহে দুই হাটের দিনে কিছু শাক-সবজি ও নগদ ৮০-৯০ টাকা পান। স্বপ্না চিতলমারী বাজারে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে দুই হাজার টাকা বেতনে ঝাড়ুদারের কাজ করেন। বড় মেয়ে মিতালী বৈরাগী প্রতি মাসে প্রতিবন্ধী ভাতা পান ৭০০ টাকা। বাবা বয়স্ক ভাতা পান ৫০০ টাকা। এ দিয়ে চলে তাঁদের পাঁচ সদস্যের সংসার।

স্বপ্না বৈরাগী বলেন, স্বামী ফেলে রেখে যাওয়ার পর দুটি সন্তানকে নিয়ে মা-বাবার আশ্রয়ে আছেন। মা-বাবার তেমন কোনো ঘর ছিল না। তাই ২০০৭ সালে ওয়ার্ল্ড ভিশন থেকে তাঁর মাকে একটি ছোট টিনের ঘর দিয়েছিল। সেই টিনের ঘরেই তাঁরা বাস করেন।

কিন্তু এখন সেই ঘরের অবস্থা ভালো না। তা ছাড়া মেয়েরাও বড় হয়েছে। তাই তাঁদের একটি ঘরের খুব প্রয়োজন। তাঁদের জন্য মা-বাবাকে ঘরের বাইরে থাকতে হয়।

স্বপ্নার মা ইলাবতী বৈরাগী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, 'আমাদের নিজেরদের দুই কাঠা জায়গা থাকলেও ঘর বাঁধার সামর্থ্য নেই। আমার মেয়ে ও নাতনি স্বামী পরিত্যক্তা। আমি মরে গেলে ওদের কী হবে? তাই আমি বেঁচে থাকতে ওঁদের একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই দেখে যেতে চাই।'

হিজলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. বাদশা শেখ বলেন, ঘরের জন্য তাঁর ওয়ার্ড থেকে অনেকের নাম দিয়েছিলেন। কিন্তু কেউই পাননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত