রহমান মৃধা
তরুণদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ এখনো অনেক দূরে। বাঙালি জাতি স্বাধীন হলেও এবং দেশের অনেক উন্নতি হলেও এর সুফল সবাই ভোগ করতে পারছে না। মুষ্টিমেয় ক্ষমতাবানেরা এর সুফল ভোগ করছে, যা স্বাধীনতার চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। সাম্য, মানবিক মর্যাদা আর সামাজিক সুবিচার ছিল স্বাধীনতার চেতনা। এ চেতনা থেকে যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছে আমাদের সমাজ। প্রভাবশালীদের অনৈতিক কার্যকলাপ আমাদের স্বাধীনতাকে কালিমাযুক্ত করছে। তরুণেরা কখনো এটা প্রত্যাশা করে না।
ডিম যেমন তার নিজের ভেতরের চাপে সৃষ্টি করে নতুন জীবন, তেমন সুযোগ থেকে কিন্তু বঞ্চিত বর্তমান প্রজন্ম। তাই যে চেতনায় তাদের আলোর মতো বা ফুলের মতো ফুটে ওঠার কথা, তা না হয়ে বাইরের চাপের কারণে অঙ্কুরে বিনাশ হয়ে ঝরে পড়ছে সমাজের লাখো তরুণ। পরীক্ষায় কিংবা জীবনের যেকোনো পর্যায়ে ভালো করার যে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে, তাতে করে অনেকেই অসাধু উপায়ে ভালো ফল পেতে চেষ্টা করছে। কারণ এই নতুন প্রজন্ম বাইরের চাপ না পারছে গ্রহণ করতে, না পারছে সহ্য করতে। এর আসল কারণ কী? সবকিছু না চাইতে পাওয়া বা সহজে পাওয়ার কারণেই এমনটা হচ্ছে। এ যুগে কাউকেই কিন্তু কিছু পাওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে হচ্ছে না।
আরও একটি বিষয় বেশি লক্ষণীয়—তা হলো, ছেলেমেয়েরা পরিবার থেকে দিন দিন দূরে সরে যাচ্ছে। মা-বাবা কিংবা ভাইবোনের সঙ্গে যদি সম্পর্ক সুগভীর না হয়, তাহলে পথভ্রষ্ট হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। পরিবারের সদস্যদের চেয়ে ভালো বন্ধু কেউই হতে পারে না, এটা যেন সবাই ভুলতে বসেছে। এখনো সময় আছে ঘরে ফিরে আসার। ভালোবাসা এবং সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে পরিবারের দরকার। যে সমাজে পারিবারিক বন্ধন দুর্বল, সেখানে শান্তির দেখা পাওয়া কঠিন। সব সমস্যার সমাধান
হয়তো একসঙ্গে করা সম্ভব নয়, তবে শুরু হতে পারে সবার আগে পরিবারের কাছে ফিরে আসা।
বাংলাদেশের উন্নয়নের বহুমুখী খাত তারুণ্যের পদচারণে মুখর হয়ে উঠবে—এটাই সবার কাম্য। কিন্তু দেশে এখন তরুণ সমাজের খুবই দুঃসময় চলছে। তাদের মধ্যে দিকনির্দেশনার ঘাটতি ও হতাশা বিরাজ করছে। গুণগত শিক্ষায় পশ্চাৎপদতা, জ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক গবেষণামূলক শিক্ষার অভাব, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রচণ্ড দুর্বলতা, অপুষ্টি, চাকরি ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগের অভাব—এসব সমস্যা বর্তমান তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনার দ্বারকে রুদ্ধ করে রেখেছে। এ ছাড়া নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, অপরাজনীতির শিকার, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, মাদকাসক্তি প্রভৃতি কারণে বহু তরুণ আজ বিপথগামী এবং পথভ্রষ্ট।
দেশে আজ সুশাসন ও নীতিনৈতিকতার বড়ই অভাব। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। আদর্শ নেতৃত্বের অভাবে দুর্নীতির রাজনীতি দেশে অবাধ ও দুঃশাসনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। দলীয় ও গোষ্ঠীগত চেতনায় জাতীয় চেতনাবোধ অবলুপ্তপ্রায়। ফলে দেশের তরুণ ও যুবসমাজ আজ বিভ্রান্তি ও হতাশায় নিমজ্জিত। একটি উন্নয়নকামী সভ্য দেশের জন্য এ অবস্থা মোটেই কাম্য নয়।
আমাদের প্রত্যাশা হলো, দেশে স্বাধীনতার মৌলিক চেতনা ফিরে আসুক। সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার আর মানবিক মর্যাদায় সিক্ত হোক এই সমাজ। প্রত্যেকের মাঝে জাগ্রত হোক মানবিক চেতনা ও মূল্যবোধ। স্বাধীন দেশ হয়ে উঠুক নিরাপদ আশ্রয়স্থল। প্রত্যেক নাগরিক হয়ে উঠুক মানবিক মানুষ। নতুন প্রজন্ম রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে সবাই মিলে গঠন করুক দেশ গড়ার দল, যে দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক খেলা হবে, যে খেলার মধ্যে থাকবে কে কত ভালো ‘পারফরম্যান্স’ করছে তার দেশের পরিকাঠামো এবং অবকাঠামোকে শক্ত ও পরিপক্ব করতে।
সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের তরুণসমাজকে নোংরা রাজনীতি, সন্ত্রাস, নেশা ও কালোটাকার ছোবল থেকে রক্ষা করতে হবে। তাদের হাতে মাদক ও অস্ত্রের বদলে জ্ঞানের মশাল তুলে দিতে হবে। কারণ উদীয়মান তরুণ প্রজন্ম এখন দেশের বিরাট এক জনগোষ্ঠী। তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করা আমাদের সবার দায়িত্ব এবং কর্তব্য।
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
তরুণদের প্রত্যাশিত বাংলাদেশ এখনো অনেক দূরে। বাঙালি জাতি স্বাধীন হলেও এবং দেশের অনেক উন্নতি হলেও এর সুফল সবাই ভোগ করতে পারছে না। মুষ্টিমেয় ক্ষমতাবানেরা এর সুফল ভোগ করছে, যা স্বাধীনতার চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থী। সাম্য, মানবিক মর্যাদা আর সামাজিক সুবিচার ছিল স্বাধীনতার চেতনা। এ চেতনা থেকে যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছে আমাদের সমাজ। প্রভাবশালীদের অনৈতিক কার্যকলাপ আমাদের স্বাধীনতাকে কালিমাযুক্ত করছে। তরুণেরা কখনো এটা প্রত্যাশা করে না।
ডিম যেমন তার নিজের ভেতরের চাপে সৃষ্টি করে নতুন জীবন, তেমন সুযোগ থেকে কিন্তু বঞ্চিত বর্তমান প্রজন্ম। তাই যে চেতনায় তাদের আলোর মতো বা ফুলের মতো ফুটে ওঠার কথা, তা না হয়ে বাইরের চাপের কারণে অঙ্কুরে বিনাশ হয়ে ঝরে পড়ছে সমাজের লাখো তরুণ। পরীক্ষায় কিংবা জীবনের যেকোনো পর্যায়ে ভালো করার যে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে, তাতে করে অনেকেই অসাধু উপায়ে ভালো ফল পেতে চেষ্টা করছে। কারণ এই নতুন প্রজন্ম বাইরের চাপ না পারছে গ্রহণ করতে, না পারছে সহ্য করতে। এর আসল কারণ কী? সবকিছু না চাইতে পাওয়া বা সহজে পাওয়ার কারণেই এমনটা হচ্ছে। এ যুগে কাউকেই কিন্তু কিছু পাওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে হচ্ছে না।
আরও একটি বিষয় বেশি লক্ষণীয়—তা হলো, ছেলেমেয়েরা পরিবার থেকে দিন দিন দূরে সরে যাচ্ছে। মা-বাবা কিংবা ভাইবোনের সঙ্গে যদি সম্পর্ক সুগভীর না হয়, তাহলে পথভ্রষ্ট হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। পরিবারের সদস্যদের চেয়ে ভালো বন্ধু কেউই হতে পারে না, এটা যেন সবাই ভুলতে বসেছে। এখনো সময় আছে ঘরে ফিরে আসার। ভালোবাসা এবং সভ্যতাকে টিকিয়ে রাখতে পরিবারের দরকার। যে সমাজে পারিবারিক বন্ধন দুর্বল, সেখানে শান্তির দেখা পাওয়া কঠিন। সব সমস্যার সমাধান
হয়তো একসঙ্গে করা সম্ভব নয়, তবে শুরু হতে পারে সবার আগে পরিবারের কাছে ফিরে আসা।
বাংলাদেশের উন্নয়নের বহুমুখী খাত তারুণ্যের পদচারণে মুখর হয়ে উঠবে—এটাই সবার কাম্য। কিন্তু দেশে এখন তরুণ সমাজের খুবই দুঃসময় চলছে। তাদের মধ্যে দিকনির্দেশনার ঘাটতি ও হতাশা বিরাজ করছে। গুণগত শিক্ষায় পশ্চাৎপদতা, জ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক গবেষণামূলক শিক্ষার অভাব, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের প্রচণ্ড দুর্বলতা, অপুষ্টি, চাকরি ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগের অভাব—এসব সমস্যা বর্তমান তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনার দ্বারকে রুদ্ধ করে রেখেছে। এ ছাড়া নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, অপরাজনীতির শিকার, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, মাদকাসক্তি প্রভৃতি কারণে বহু তরুণ আজ বিপথগামী এবং পথভ্রষ্ট।
দেশে আজ সুশাসন ও নীতিনৈতিকতার বড়ই অভাব। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। আদর্শ নেতৃত্বের অভাবে দুর্নীতির রাজনীতি দেশে অবাধ ও দুঃশাসনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। দলীয় ও গোষ্ঠীগত চেতনায় জাতীয় চেতনাবোধ অবলুপ্তপ্রায়। ফলে দেশের তরুণ ও যুবসমাজ আজ বিভ্রান্তি ও হতাশায় নিমজ্জিত। একটি উন্নয়নকামী সভ্য দেশের জন্য এ অবস্থা মোটেই কাম্য নয়।
আমাদের প্রত্যাশা হলো, দেশে স্বাধীনতার মৌলিক চেতনা ফিরে আসুক। সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার আর মানবিক মর্যাদায় সিক্ত হোক এই সমাজ। প্রত্যেকের মাঝে জাগ্রত হোক মানবিক চেতনা ও মূল্যবোধ। স্বাধীন দেশ হয়ে উঠুক নিরাপদ আশ্রয়স্থল। প্রত্যেক নাগরিক হয়ে উঠুক মানবিক মানুষ। নতুন প্রজন্ম রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে সবাই মিলে গঠন করুক দেশ গড়ার দল, যে দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক খেলা হবে, যে খেলার মধ্যে থাকবে কে কত ভালো ‘পারফরম্যান্স’ করছে তার দেশের পরিকাঠামো এবং অবকাঠামোকে শক্ত ও পরিপক্ব করতে।
সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে আমাদের তরুণসমাজকে নোংরা রাজনীতি, সন্ত্রাস, নেশা ও কালোটাকার ছোবল থেকে রক্ষা করতে হবে। তাদের হাতে মাদক ও অস্ত্রের বদলে জ্ঞানের মশাল তুলে দিতে হবে। কারণ উদীয়মান তরুণ প্রজন্ম এখন দেশের বিরাট এক জনগোষ্ঠী। তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করা আমাদের সবার দায়িত্ব এবং কর্তব্য।
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫