Ajker Patrika

প্রতীকের চেয়ে ব্যক্তি ইমেজে গুরুত্ব

সাবিত আল হাসান, বন্দর (নারায়ণগঞ্জ)
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২১, ১০: ৪৭
প্রতীকের চেয়ে ব্যক্তি ইমেজে গুরুত্ব

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় বনাম স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে লড়াই জমে উঠছে। আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু না হলেও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আর মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হয়ে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করছেন। নৌকা প্রতীক ও সেলিনা হায়াৎ আইভীর ব্যক্তি-জনপ্রিয়তা তাঁকে এগিয়ে রাখলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না নেতা–কর্মীরা। একইভাবে তৈমূর আলমও জানিয়ে দিয়েছেন ‘নৌকা কোনো ফ্যাক্টর না’।

প্রথম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন আইভী। অন্যদিকে দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের সার্বিক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন তৈমূর আলম খন্দকার। আর এবারের নির্বাচনে আইভী পেয়েছেন দলীয় মনোনয়ন, আর তৈমূর এসেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে। প্রথম নির্বাচনের তুলনায় আইভী বর্তমানে বেশ এগিয়ে আছেন। তাঁর দৃঢ়তার কারণে বেশকিছু দৃশ্যমান উন্নয়ন দেখেছে শহরবাসী, যা ব্যক্তি-জনপ্রিয়তাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।

টানা দুই মেয়াদে নগর পরিচালনা এবং নৌকা প্রতীক পেয়েও পুরোপুরি স্বস্তি পাচ্ছেন না আইভী। নির্বাচনে তৈমূর আলম খন্দকারকে স্বাগত জানালেও সম্প্রতি রাখা বক্তব্যে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, প্রতিপক্ষকে সহজভাবে দেখার সুযোগ নেই। গত শনিবার বিকেলে দেওয়া বক্তব্যে সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রতিপক্ষ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা অনেক কঠিন সময় পার করেছি। এবারও যে নির্বাচন কঠিন হবে না তা বলা যায় না। কারণ এত বেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে, যা কল্পনার বাইরে। প্রতিপক্ষকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। সরকারি দলে যে থাকেন, তাঁর বদনাম বেশি। কোনোভাবেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করা যাবে না।’

একই দিন দুপুরে তৈমূর আলম খন্দকার গণমাধ্যমে দেওয়া এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সিটি নির্বাচনে নৌকা কোনো ফ্যাক্ট হবে না। জনগণের চাহিদা তৈমূর আলম খন্দকার। আমি সারা জীবন জনগণের পক্ষে ছিলাম। আমার কোনো গণবিরোধী কার্যক্রম নেই। মানুষের স্বার্থে সারা জীবন কাজ করেছি। এবারের নির্বাচনে আমি নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের রাজনৈতিক দল ও জনগণের প্রতিনিধি।’

দুজনের বক্তব্যে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, দলীয় প্রতীকের চাইতে ব্যক্তি ইমেজ মুখ্য হয়ে উঠেছে মেয়র নির্বাচনে। প্রতীকের চাইতে ব্যক্তি-জনপ্রিয়তা ইতিপূর্বেও প্রমাণিত হয়েছে এই শহরের নির্বাচনে। তৈমূরপন্থী বিএনপি নেতারা বলছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় তৈমূরের পাশে ভিড়তে পারবেন যেকোনো ব্যক্তি ও দলের মানুষ। যেটা দলীয় প্রতীকে সম্ভব হতো না। এদিক থেকে ব্যক্তি-জনপ্রিয়তা এবারের নির্বাচনে বড় ফ্যাক্ট হিসেবে হাজির হবে।

এই বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনে বরাবরই ব্যক্তি-জনপ্রিয়তা ফ্যাক্ট হয়ে দাঁড়ায়। এখানেও তাঁর ব্যতিক্রম হবে না। আমাদের মেয়র আইভী তাঁর নিজ কর্মদক্ষতায় যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তাঁর প্রতিপক্ষ হিসেবে বিএনপি দলীয়ভাবে না দাঁড়ালেও তাঁদের জেলা আহ্বায়ক ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা

দাঁড়িয়েছেন। তাঁকে দেখে বাকিরা সরে এসেছেন। বিএনপির তো কিছুই বাকি নেই। সুতরাং সবদিক বিবেচনা করেই আমরা নির্বাচনী মাঠে নামছি।’

একই বিষয়ে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল বলেন, ‘ব্যক্তি হিসেবে তৈমূর আলম খন্দকার বেশ জনপ্রিয়। আইভী যেমন সিটিতে জনপ্রিয়, তৈমূর আলম খন্দকারও তাঁর কোনো অংশে কম নয়। তিনি যে বলেছেন নৌকা কোনো ফ্যাক্টর নয়, তা যুক্তিসংগতভাবেই বলেছেন। কারণ তিনি বিএনপির জাতীয় পর্যায়ের নেতা। সুতরাং মার্কা যেটাই হোক, ব্যক্তি-জনপ্রিয়তার দিক থেকে বেশ এগিয়ে আছেন তৈমূর আলম খন্দকার।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত