তরুণ চক্রবর্তী

ভারতীয় গণতন্ত্রে পরিবারতন্ত্র নতুন কিছু নয়। বামপন্থী বা বিজেপির মতো দু-একটি দল বাদ দিলে সর্বত্রই পরিবারতন্ত্রেরই দাপট। তবে সেই পারিবারিক উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্বও কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির পরম্পরা হয়ে উঠেছে। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর ঘনিষ্ঠজনেরা ইন্দিরা গান্ধীর বিরাগভাজন হন। আবার ইন্দিরা গান্ধীর ঘনিষ্ঠজনের অনেকেই তাঁর পুত্র রাজীবের আমলে চলে যান রাজনৈতিক বনবাসে। যেমন প্রণব মুখার্জি। ইন্দিরার আমলে নম্বর-টু প্রণবকে রাজীব ক্ষমতায় এসে দল থেকে বের করে দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য প্রণব ফিরে আসেন স্বমহিমায়। অন্য দলেও পরিবারতন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার হাতবদলে ঝাঁকুনি কিন্তু ভালোই অনুভূত হয়। উত্তর প্রদেশে মুলায়ম সিং যাদব থেকে তাঁর ছেলে অখিলেশের ক্ষমতার ব্যাটন হাতবদলে যেমন অনুভূত হয়েছে ঝাঁকুনি, ঠিক তেমনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে অভিষেকের উত্থানে। ম-এ মুলায়ম, মমতাও। ঠিক তেমনি অ-এ অখিলেশ, অভিষেকও। তাই পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলে যে ঝাঁকুনি শুরু হয়েছে, এটা নতুন কিছু নয়। পাওয়ার সেন্টার বদলাচ্ছে। তাই নবীন ও প্রবীণের সংঘাত অবশ্যম্ভাবী।
বিজেপি যতই কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্র নিয়ে কথা বলুক, ভারতীয় উপমহাদেশের এটাই পরম্পরা। ভারতের মানচিত্রের দিকে তাকান। কাশ্মীরে ফারুক আবদুল্লাহর ছেলে ওমর আবদুল্লাহ থেকে শুরু করে দক্ষিণে অন্ধ্র প্রদেশে ওয়াইএসআর রেড্ডির ছেলে জগমোহন, পশ্চিমে বালাসাহেব ঠাকরের ভাইপো উদ্ভব ঠাকরে থেকে পূর্বে মমতার ভাইপো অভিষেক—ছবিটা একই। তালিকা বিশাল। আঞ্চলিক দলগুলোর প্রায় সব কটিতেই দাপিয়ে চলছে পরিবারতন্ত্র। ৩১ জন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ৯ জনই হয়েছেন পারিবারিক রাজনীতি থেকে। বিরোধী দলনেতাদের মধ্যে ১১ জন এসেছেন পারিবারিক উত্তরাধিকার সূত্রে। তামিলনাডুতে জয়ললিতার মৃত্যুর পর তাঁর দল এআইএডিএমকে চরম সংকটে পড়েছিল তাঁর কোনো উত্তরাধিকার না থাকায়। বান্ধবী শশীকলাকে বসিয়েও দল বা সরকারের হাল ফেরাতে ব্যর্থ হয়ে অস্তিত্বসংকটে ভুগছে এআইএডিএমকে।
কংগ্রেস রাজনীতিতে শুধু গান্ধী পরিবারই নয়, সর্বস্তরেই পারিবারিক শাসনের পরম্পরা বেশ প্রতিষ্ঠিত। সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখার্জির ছেলে অভিজিত ও মেয়ে শর্মিষ্ঠাও একই পথের অনুসারী। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গেলেও বর্তমানে মোদি সরকারের অসামরিক পরিবহনমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও একই পথের পথিক। পরিবারতন্ত্রের ধুয়ো তুলে একসময় কংগ্রেস ত্যাগ করেছিলেন মহারাষ্ট্রের বর্ষীয়ান নেতা শারদ পাওয়ার এবং মেঘালয়ের পূর্ণ অ্যাজিটক সাংমা। শারদ পাওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে পরিবারতন্ত্রের হাত ধরেই এখন জাতীয় সংসদের সদস্য। আর সাংমার ছেলে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী, মেয়ে এমপি।
উত্তর প্রদেশে বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সমাজবাদী পার্টি (সপা)। কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র যেমন অঘোষিত ইউএসপি ইন্দিরা গান্ধীর উত্তরাধিকার, তেমনি সপা নেতা অখিলেশ বইছেন তাঁর বাবা, রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের। বহুজন সমাজ পার্টির মায়াবতীর রয়েছে দলিত নেতা কাশীরামের উত্তরাধিকার। গান্ধী পরিবারের মানেকা ও বরুণ বিজেপি শিবিরে থাকলেও তাঁরা এখন কিছুটা হলেও বিদ্রোহী হিসেবে পরিচিত। তবে উত্তর প্রদেশে এবার সবচেয়ে বেশি আলোচিত ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র ও তাঁর ছেলে আশিস। অভিযোগ, আশিস গাড়িচাপা দিয়ে হত্যা করেছেন আন্দোলনরত চার কৃষককে।
ব্যবসা-বাণিজ্যের মতোই ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রনির্ভর ক্ষমতার হাতবদল মোগল যুগের আগে থেকে চলে আসছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর সেটা যে বিন্দুমাত্র টোল খায়নি, রাজ্যে রাজ্যে চোখ মেললেই সেটা বোঝা যায়। কংগ্রেসের বয়স বেশি, তাই তালিকাটিও বেশ বড়। মতিলাল নেহরু থেকে জওহরলাল। তারপর ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী হয়ে প্রিয়াঙ্কা। এরপর কে হবেন, সেটা নিয়ে চিন্তায় কংগ্রেসিরা। কারণ, রাহুল বিয়ে করেননি। প্রিয়াঙ্কার অবশ্য একটি ছেলে আছে, যদিও তিনি ভদ্র। নেহরু থেকে গান্ধী, গান্ধী থেকে ভদ্র কি না, সেটা অবশ্য ভবিষ্যৎই বলবে। পরিবারতন্ত্রের বড় সুবিধা নেতা বাছতে ঝামেলা নেই। পরিবারের বাইরের লোকেরা নিজেদের মধ্যে ক্ষমতা দখলের মরিয়া চেষ্টা থেকে বিরত থাকেন।
সমস্যা হয় দু-নম্বরকে নিয়েই। পারিবারিক ক্ষমতার হাতবদলে টলে যায় দু-নম্বরের গদি। যেমন প্রণব মুখার্জির ক্ষেত্রে হয়েছিল। যেমনটা হচ্ছে এখন তৃণমূলে। ভাইপো অভিষেকের উত্থানে মমতার ঘনিষ্ঠরা অনেকেই এখন দলে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছেন না বলে আড়ালে-আবডালে বলছেন। যেমন বিহারে লালুপ্রসাদের ছেলে তেজস্বীকে নিয়ে অভিমানী লালুর ঘনিষ্ঠদের বড় অংশ। অন্য রাজ্যেও একই ছবি। প্রজন্মগত এই বিরোধ ভারতীয় পরিবারতন্ত্রেরই অঙ্গ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান লড়াই দিয়ে। সাবেকি চালচলন নতুন প্রজন্মের অভিষেকের স্টাইলের সঙ্গে মিলছে না। করপোরেট ধাঁচে তিনি ভোটকৌশলী নিয়োগ করে বাজিমাত করতে চাইছেন। প্রশান্ত কিশোরের আই-প্যাকের মতো হাইটেকনির্ভর বাহিনীতেই তাঁর ভরসা। অথচ মমতার আস্থা দলের দীর্ঘদিনের সঙ্গীদের পরামর্শে। তাঁরা সবাই সাবেকি বা চিরাচরিত রাজনীতিতে অভ্যস্ত। তরুণ প্রজন্মকে মেনে নিতে সংশয় রয়েছে। প্রবীণদের রয়েছে গুরুত্ব হারানোর ভয়ও। নবীনেরা আগ্রাসী। তাঁরা অভিষেককে ঘিরে তৈরি করেছেন আলাদা ক্ষমতার কেন্দ্র। এই দুই ক্ষমতাকেন্দ্রের সংঘাত শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।
পরিবারতন্ত্রে এই সংঘাত নতুন কিছু নয়। প্রজন্মগত মানসিকতার সংঘাত। ছিল, আছে এবং থাকবেও। ফলে তৃণমূলকে নিয়ে যে গেল গেল রব তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, সেটা এখনই বলার সময় আসেনি। অযোগ্য উত্তরাধিকারের হাতে ইতিহাসে বহু সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছে। ইতিহাস সাক্ষী। গণতন্ত্রেও বিপদ ডেকে এনেছে পরিবারতন্ত্র।

ভারতীয় গণতন্ত্রে পরিবারতন্ত্র নতুন কিছু নয়। বামপন্থী বা বিজেপির মতো দু-একটি দল বাদ দিলে সর্বত্রই পরিবারতন্ত্রেরই দাপট। তবে সেই পারিবারিক উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্বও কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির পরম্পরা হয়ে উঠেছে। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর ঘনিষ্ঠজনেরা ইন্দিরা গান্ধীর বিরাগভাজন হন। আবার ইন্দিরা গান্ধীর ঘনিষ্ঠজনের অনেকেই তাঁর পুত্র রাজীবের আমলে চলে যান রাজনৈতিক বনবাসে। যেমন প্রণব মুখার্জি। ইন্দিরার আমলে নম্বর-টু প্রণবকে রাজীব ক্ষমতায় এসে দল থেকে বের করে দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য প্রণব ফিরে আসেন স্বমহিমায়। অন্য দলেও পরিবারতন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার হাতবদলে ঝাঁকুনি কিন্তু ভালোই অনুভূত হয়। উত্তর প্রদেশে মুলায়ম সিং যাদব থেকে তাঁর ছেলে অখিলেশের ক্ষমতার ব্যাটন হাতবদলে যেমন অনুভূত হয়েছে ঝাঁকুনি, ঠিক তেমনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে অভিষেকের উত্থানে। ম-এ মুলায়ম, মমতাও। ঠিক তেমনি অ-এ অখিলেশ, অভিষেকও। তাই পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলে যে ঝাঁকুনি শুরু হয়েছে, এটা নতুন কিছু নয়। পাওয়ার সেন্টার বদলাচ্ছে। তাই নবীন ও প্রবীণের সংঘাত অবশ্যম্ভাবী।
বিজেপি যতই কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্র নিয়ে কথা বলুক, ভারতীয় উপমহাদেশের এটাই পরম্পরা। ভারতের মানচিত্রের দিকে তাকান। কাশ্মীরে ফারুক আবদুল্লাহর ছেলে ওমর আবদুল্লাহ থেকে শুরু করে দক্ষিণে অন্ধ্র প্রদেশে ওয়াইএসআর রেড্ডির ছেলে জগমোহন, পশ্চিমে বালাসাহেব ঠাকরের ভাইপো উদ্ভব ঠাকরে থেকে পূর্বে মমতার ভাইপো অভিষেক—ছবিটা একই। তালিকা বিশাল। আঞ্চলিক দলগুলোর প্রায় সব কটিতেই দাপিয়ে চলছে পরিবারতন্ত্র। ৩১ জন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ৯ জনই হয়েছেন পারিবারিক রাজনীতি থেকে। বিরোধী দলনেতাদের মধ্যে ১১ জন এসেছেন পারিবারিক উত্তরাধিকার সূত্রে। তামিলনাডুতে জয়ললিতার মৃত্যুর পর তাঁর দল এআইএডিএমকে চরম সংকটে পড়েছিল তাঁর কোনো উত্তরাধিকার না থাকায়। বান্ধবী শশীকলাকে বসিয়েও দল বা সরকারের হাল ফেরাতে ব্যর্থ হয়ে অস্তিত্বসংকটে ভুগছে এআইএডিএমকে।
কংগ্রেস রাজনীতিতে শুধু গান্ধী পরিবারই নয়, সর্বস্তরেই পারিবারিক শাসনের পরম্পরা বেশ প্রতিষ্ঠিত। সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখার্জির ছেলে অভিজিত ও মেয়ে শর্মিষ্ঠাও একই পথের অনুসারী। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গেলেও বর্তমানে মোদি সরকারের অসামরিক পরিবহনমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও একই পথের পথিক। পরিবারতন্ত্রের ধুয়ো তুলে একসময় কংগ্রেস ত্যাগ করেছিলেন মহারাষ্ট্রের বর্ষীয়ান নেতা শারদ পাওয়ার এবং মেঘালয়ের পূর্ণ অ্যাজিটক সাংমা। শারদ পাওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে পরিবারতন্ত্রের হাত ধরেই এখন জাতীয় সংসদের সদস্য। আর সাংমার ছেলে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী, মেয়ে এমপি।
উত্তর প্রদেশে বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সমাজবাদী পার্টি (সপা)। কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র যেমন অঘোষিত ইউএসপি ইন্দিরা গান্ধীর উত্তরাধিকার, তেমনি সপা নেতা অখিলেশ বইছেন তাঁর বাবা, রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের। বহুজন সমাজ পার্টির মায়াবতীর রয়েছে দলিত নেতা কাশীরামের উত্তরাধিকার। গান্ধী পরিবারের মানেকা ও বরুণ বিজেপি শিবিরে থাকলেও তাঁরা এখন কিছুটা হলেও বিদ্রোহী হিসেবে পরিচিত। তবে উত্তর প্রদেশে এবার সবচেয়ে বেশি আলোচিত ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র ও তাঁর ছেলে আশিস। অভিযোগ, আশিস গাড়িচাপা দিয়ে হত্যা করেছেন আন্দোলনরত চার কৃষককে।
ব্যবসা-বাণিজ্যের মতোই ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রনির্ভর ক্ষমতার হাতবদল মোগল যুগের আগে থেকে চলে আসছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর সেটা যে বিন্দুমাত্র টোল খায়নি, রাজ্যে রাজ্যে চোখ মেললেই সেটা বোঝা যায়। কংগ্রেসের বয়স বেশি, তাই তালিকাটিও বেশ বড়। মতিলাল নেহরু থেকে জওহরলাল। তারপর ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী হয়ে প্রিয়াঙ্কা। এরপর কে হবেন, সেটা নিয়ে চিন্তায় কংগ্রেসিরা। কারণ, রাহুল বিয়ে করেননি। প্রিয়াঙ্কার অবশ্য একটি ছেলে আছে, যদিও তিনি ভদ্র। নেহরু থেকে গান্ধী, গান্ধী থেকে ভদ্র কি না, সেটা অবশ্য ভবিষ্যৎই বলবে। পরিবারতন্ত্রের বড় সুবিধা নেতা বাছতে ঝামেলা নেই। পরিবারের বাইরের লোকেরা নিজেদের মধ্যে ক্ষমতা দখলের মরিয়া চেষ্টা থেকে বিরত থাকেন।
সমস্যা হয় দু-নম্বরকে নিয়েই। পারিবারিক ক্ষমতার হাতবদলে টলে যায় দু-নম্বরের গদি। যেমন প্রণব মুখার্জির ক্ষেত্রে হয়েছিল। যেমনটা হচ্ছে এখন তৃণমূলে। ভাইপো অভিষেকের উত্থানে মমতার ঘনিষ্ঠরা অনেকেই এখন দলে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছেন না বলে আড়ালে-আবডালে বলছেন। যেমন বিহারে লালুপ্রসাদের ছেলে তেজস্বীকে নিয়ে অভিমানী লালুর ঘনিষ্ঠদের বড় অংশ। অন্য রাজ্যেও একই ছবি। প্রজন্মগত এই বিরোধ ভারতীয় পরিবারতন্ত্রেরই অঙ্গ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান লড়াই দিয়ে। সাবেকি চালচলন নতুন প্রজন্মের অভিষেকের স্টাইলের সঙ্গে মিলছে না। করপোরেট ধাঁচে তিনি ভোটকৌশলী নিয়োগ করে বাজিমাত করতে চাইছেন। প্রশান্ত কিশোরের আই-প্যাকের মতো হাইটেকনির্ভর বাহিনীতেই তাঁর ভরসা। অথচ মমতার আস্থা দলের দীর্ঘদিনের সঙ্গীদের পরামর্শে। তাঁরা সবাই সাবেকি বা চিরাচরিত রাজনীতিতে অভ্যস্ত। তরুণ প্রজন্মকে মেনে নিতে সংশয় রয়েছে। প্রবীণদের রয়েছে গুরুত্ব হারানোর ভয়ও। নবীনেরা আগ্রাসী। তাঁরা অভিষেককে ঘিরে তৈরি করেছেন আলাদা ক্ষমতার কেন্দ্র। এই দুই ক্ষমতাকেন্দ্রের সংঘাত শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।
পরিবারতন্ত্রে এই সংঘাত নতুন কিছু নয়। প্রজন্মগত মানসিকতার সংঘাত। ছিল, আছে এবং থাকবেও। ফলে তৃণমূলকে নিয়ে যে গেল গেল রব তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, সেটা এখনই বলার সময় আসেনি। অযোগ্য উত্তরাধিকারের হাতে ইতিহাসে বহু সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছে। ইতিহাস সাক্ষী। গণতন্ত্রেও বিপদ ডেকে এনেছে পরিবারতন্ত্র।
তরুণ চক্রবর্তী

ভারতীয় গণতন্ত্রে পরিবারতন্ত্র নতুন কিছু নয়। বামপন্থী বা বিজেপির মতো দু-একটি দল বাদ দিলে সর্বত্রই পরিবারতন্ত্রেরই দাপট। তবে সেই পারিবারিক উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্বও কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির পরম্পরা হয়ে উঠেছে। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর ঘনিষ্ঠজনেরা ইন্দিরা গান্ধীর বিরাগভাজন হন। আবার ইন্দিরা গান্ধীর ঘনিষ্ঠজনের অনেকেই তাঁর পুত্র রাজীবের আমলে চলে যান রাজনৈতিক বনবাসে। যেমন প্রণব মুখার্জি। ইন্দিরার আমলে নম্বর-টু প্রণবকে রাজীব ক্ষমতায় এসে দল থেকে বের করে দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য প্রণব ফিরে আসেন স্বমহিমায়। অন্য দলেও পরিবারতন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার হাতবদলে ঝাঁকুনি কিন্তু ভালোই অনুভূত হয়। উত্তর প্রদেশে মুলায়ম সিং যাদব থেকে তাঁর ছেলে অখিলেশের ক্ষমতার ব্যাটন হাতবদলে যেমন অনুভূত হয়েছে ঝাঁকুনি, ঠিক তেমনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে অভিষেকের উত্থানে। ম-এ মুলায়ম, মমতাও। ঠিক তেমনি অ-এ অখিলেশ, অভিষেকও। তাই পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলে যে ঝাঁকুনি শুরু হয়েছে, এটা নতুন কিছু নয়। পাওয়ার সেন্টার বদলাচ্ছে। তাই নবীন ও প্রবীণের সংঘাত অবশ্যম্ভাবী।
বিজেপি যতই কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্র নিয়ে কথা বলুক, ভারতীয় উপমহাদেশের এটাই পরম্পরা। ভারতের মানচিত্রের দিকে তাকান। কাশ্মীরে ফারুক আবদুল্লাহর ছেলে ওমর আবদুল্লাহ থেকে শুরু করে দক্ষিণে অন্ধ্র প্রদেশে ওয়াইএসআর রেড্ডির ছেলে জগমোহন, পশ্চিমে বালাসাহেব ঠাকরের ভাইপো উদ্ভব ঠাকরে থেকে পূর্বে মমতার ভাইপো অভিষেক—ছবিটা একই। তালিকা বিশাল। আঞ্চলিক দলগুলোর প্রায় সব কটিতেই দাপিয়ে চলছে পরিবারতন্ত্র। ৩১ জন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ৯ জনই হয়েছেন পারিবারিক রাজনীতি থেকে। বিরোধী দলনেতাদের মধ্যে ১১ জন এসেছেন পারিবারিক উত্তরাধিকার সূত্রে। তামিলনাডুতে জয়ললিতার মৃত্যুর পর তাঁর দল এআইএডিএমকে চরম সংকটে পড়েছিল তাঁর কোনো উত্তরাধিকার না থাকায়। বান্ধবী শশীকলাকে বসিয়েও দল বা সরকারের হাল ফেরাতে ব্যর্থ হয়ে অস্তিত্বসংকটে ভুগছে এআইএডিএমকে।
কংগ্রেস রাজনীতিতে শুধু গান্ধী পরিবারই নয়, সর্বস্তরেই পারিবারিক শাসনের পরম্পরা বেশ প্রতিষ্ঠিত। সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখার্জির ছেলে অভিজিত ও মেয়ে শর্মিষ্ঠাও একই পথের অনুসারী। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গেলেও বর্তমানে মোদি সরকারের অসামরিক পরিবহনমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও একই পথের পথিক। পরিবারতন্ত্রের ধুয়ো তুলে একসময় কংগ্রেস ত্যাগ করেছিলেন মহারাষ্ট্রের বর্ষীয়ান নেতা শারদ পাওয়ার এবং মেঘালয়ের পূর্ণ অ্যাজিটক সাংমা। শারদ পাওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে পরিবারতন্ত্রের হাত ধরেই এখন জাতীয় সংসদের সদস্য। আর সাংমার ছেলে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী, মেয়ে এমপি।
উত্তর প্রদেশে বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সমাজবাদী পার্টি (সপা)। কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র যেমন অঘোষিত ইউএসপি ইন্দিরা গান্ধীর উত্তরাধিকার, তেমনি সপা নেতা অখিলেশ বইছেন তাঁর বাবা, রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের। বহুজন সমাজ পার্টির মায়াবতীর রয়েছে দলিত নেতা কাশীরামের উত্তরাধিকার। গান্ধী পরিবারের মানেকা ও বরুণ বিজেপি শিবিরে থাকলেও তাঁরা এখন কিছুটা হলেও বিদ্রোহী হিসেবে পরিচিত। তবে উত্তর প্রদেশে এবার সবচেয়ে বেশি আলোচিত ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র ও তাঁর ছেলে আশিস। অভিযোগ, আশিস গাড়িচাপা দিয়ে হত্যা করেছেন আন্দোলনরত চার কৃষককে।
ব্যবসা-বাণিজ্যের মতোই ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রনির্ভর ক্ষমতার হাতবদল মোগল যুগের আগে থেকে চলে আসছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর সেটা যে বিন্দুমাত্র টোল খায়নি, রাজ্যে রাজ্যে চোখ মেললেই সেটা বোঝা যায়। কংগ্রেসের বয়স বেশি, তাই তালিকাটিও বেশ বড়। মতিলাল নেহরু থেকে জওহরলাল। তারপর ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী হয়ে প্রিয়াঙ্কা। এরপর কে হবেন, সেটা নিয়ে চিন্তায় কংগ্রেসিরা। কারণ, রাহুল বিয়ে করেননি। প্রিয়াঙ্কার অবশ্য একটি ছেলে আছে, যদিও তিনি ভদ্র। নেহরু থেকে গান্ধী, গান্ধী থেকে ভদ্র কি না, সেটা অবশ্য ভবিষ্যৎই বলবে। পরিবারতন্ত্রের বড় সুবিধা নেতা বাছতে ঝামেলা নেই। পরিবারের বাইরের লোকেরা নিজেদের মধ্যে ক্ষমতা দখলের মরিয়া চেষ্টা থেকে বিরত থাকেন।
সমস্যা হয় দু-নম্বরকে নিয়েই। পারিবারিক ক্ষমতার হাতবদলে টলে যায় দু-নম্বরের গদি। যেমন প্রণব মুখার্জির ক্ষেত্রে হয়েছিল। যেমনটা হচ্ছে এখন তৃণমূলে। ভাইপো অভিষেকের উত্থানে মমতার ঘনিষ্ঠরা অনেকেই এখন দলে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছেন না বলে আড়ালে-আবডালে বলছেন। যেমন বিহারে লালুপ্রসাদের ছেলে তেজস্বীকে নিয়ে অভিমানী লালুর ঘনিষ্ঠদের বড় অংশ। অন্য রাজ্যেও একই ছবি। প্রজন্মগত এই বিরোধ ভারতীয় পরিবারতন্ত্রেরই অঙ্গ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান লড়াই দিয়ে। সাবেকি চালচলন নতুন প্রজন্মের অভিষেকের স্টাইলের সঙ্গে মিলছে না। করপোরেট ধাঁচে তিনি ভোটকৌশলী নিয়োগ করে বাজিমাত করতে চাইছেন। প্রশান্ত কিশোরের আই-প্যাকের মতো হাইটেকনির্ভর বাহিনীতেই তাঁর ভরসা। অথচ মমতার আস্থা দলের দীর্ঘদিনের সঙ্গীদের পরামর্শে। তাঁরা সবাই সাবেকি বা চিরাচরিত রাজনীতিতে অভ্যস্ত। তরুণ প্রজন্মকে মেনে নিতে সংশয় রয়েছে। প্রবীণদের রয়েছে গুরুত্ব হারানোর ভয়ও। নবীনেরা আগ্রাসী। তাঁরা অভিষেককে ঘিরে তৈরি করেছেন আলাদা ক্ষমতার কেন্দ্র। এই দুই ক্ষমতাকেন্দ্রের সংঘাত শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।
পরিবারতন্ত্রে এই সংঘাত নতুন কিছু নয়। প্রজন্মগত মানসিকতার সংঘাত। ছিল, আছে এবং থাকবেও। ফলে তৃণমূলকে নিয়ে যে গেল গেল রব তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, সেটা এখনই বলার সময় আসেনি। অযোগ্য উত্তরাধিকারের হাতে ইতিহাসে বহু সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছে। ইতিহাস সাক্ষী। গণতন্ত্রেও বিপদ ডেকে এনেছে পরিবারতন্ত্র।

ভারতীয় গণতন্ত্রে পরিবারতন্ত্র নতুন কিছু নয়। বামপন্থী বা বিজেপির মতো দু-একটি দল বাদ দিলে সর্বত্রই পরিবারতন্ত্রেরই দাপট। তবে সেই পারিবারিক উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্বও কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির পরম্পরা হয়ে উঠেছে। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর ঘনিষ্ঠজনেরা ইন্দিরা গান্ধীর বিরাগভাজন হন। আবার ইন্দিরা গান্ধীর ঘনিষ্ঠজনের অনেকেই তাঁর পুত্র রাজীবের আমলে চলে যান রাজনৈতিক বনবাসে। যেমন প্রণব মুখার্জি। ইন্দিরার আমলে নম্বর-টু প্রণবকে রাজীব ক্ষমতায় এসে দল থেকে বের করে দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য প্রণব ফিরে আসেন স্বমহিমায়। অন্য দলেও পরিবারতন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার হাতবদলে ঝাঁকুনি কিন্তু ভালোই অনুভূত হয়। উত্তর প্রদেশে মুলায়ম সিং যাদব থেকে তাঁর ছেলে অখিলেশের ক্ষমতার ব্যাটন হাতবদলে যেমন অনুভূত হয়েছে ঝাঁকুনি, ঠিক তেমনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে অভিষেকের উত্থানে। ম-এ মুলায়ম, মমতাও। ঠিক তেমনি অ-এ অখিলেশ, অভিষেকও। তাই পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলে যে ঝাঁকুনি শুরু হয়েছে, এটা নতুন কিছু নয়। পাওয়ার সেন্টার বদলাচ্ছে। তাই নবীন ও প্রবীণের সংঘাত অবশ্যম্ভাবী।
বিজেপি যতই কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্র নিয়ে কথা বলুক, ভারতীয় উপমহাদেশের এটাই পরম্পরা। ভারতের মানচিত্রের দিকে তাকান। কাশ্মীরে ফারুক আবদুল্লাহর ছেলে ওমর আবদুল্লাহ থেকে শুরু করে দক্ষিণে অন্ধ্র প্রদেশে ওয়াইএসআর রেড্ডির ছেলে জগমোহন, পশ্চিমে বালাসাহেব ঠাকরের ভাইপো উদ্ভব ঠাকরে থেকে পূর্বে মমতার ভাইপো অভিষেক—ছবিটা একই। তালিকা বিশাল। আঞ্চলিক দলগুলোর প্রায় সব কটিতেই দাপিয়ে চলছে পরিবারতন্ত্র। ৩১ জন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে ৯ জনই হয়েছেন পারিবারিক রাজনীতি থেকে। বিরোধী দলনেতাদের মধ্যে ১১ জন এসেছেন পারিবারিক উত্তরাধিকার সূত্রে। তামিলনাডুতে জয়ললিতার মৃত্যুর পর তাঁর দল এআইএডিএমকে চরম সংকটে পড়েছিল তাঁর কোনো উত্তরাধিকার না থাকায়। বান্ধবী শশীকলাকে বসিয়েও দল বা সরকারের হাল ফেরাতে ব্যর্থ হয়ে অস্তিত্বসংকটে ভুগছে এআইএডিএমকে।
কংগ্রেস রাজনীতিতে শুধু গান্ধী পরিবারই নয়, সর্বস্তরেই পারিবারিক শাসনের পরম্পরা বেশ প্রতিষ্ঠিত। সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত প্রণব মুখার্জির ছেলে অভিজিত ও মেয়ে শর্মিষ্ঠাও একই পথের অনুসারী। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গেলেও বর্তমানে মোদি সরকারের অসামরিক পরিবহনমন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও একই পথের পথিক। পরিবারতন্ত্রের ধুয়ো তুলে একসময় কংগ্রেস ত্যাগ করেছিলেন মহারাষ্ট্রের বর্ষীয়ান নেতা শারদ পাওয়ার এবং মেঘালয়ের পূর্ণ অ্যাজিটক সাংমা। শারদ পাওয়ারের মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে পরিবারতন্ত্রের হাত ধরেই এখন জাতীয় সংসদের সদস্য। আর সাংমার ছেলে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী, মেয়ে এমপি।
উত্তর প্রদেশে বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সমাজবাদী পার্টি (সপা)। কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্র যেমন অঘোষিত ইউএসপি ইন্দিরা গান্ধীর উত্তরাধিকার, তেমনি সপা নেতা অখিলেশ বইছেন তাঁর বাবা, রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মুলায়ম সিং যাদবের। বহুজন সমাজ পার্টির মায়াবতীর রয়েছে দলিত নেতা কাশীরামের উত্তরাধিকার। গান্ধী পরিবারের মানেকা ও বরুণ বিজেপি শিবিরে থাকলেও তাঁরা এখন কিছুটা হলেও বিদ্রোহী হিসেবে পরিচিত। তবে উত্তর প্রদেশে এবার সবচেয়ে বেশি আলোচিত ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র ও তাঁর ছেলে আশিস। অভিযোগ, আশিস গাড়িচাপা দিয়ে হত্যা করেছেন আন্দোলনরত চার কৃষককে।
ব্যবসা-বাণিজ্যের মতোই ভারতীয় রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রনির্ভর ক্ষমতার হাতবদল মোগল যুগের আগে থেকে চলে আসছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর সেটা যে বিন্দুমাত্র টোল খায়নি, রাজ্যে রাজ্যে চোখ মেললেই সেটা বোঝা যায়। কংগ্রেসের বয়স বেশি, তাই তালিকাটিও বেশ বড়। মতিলাল নেহরু থেকে জওহরলাল। তারপর ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী হয়ে প্রিয়াঙ্কা। এরপর কে হবেন, সেটা নিয়ে চিন্তায় কংগ্রেসিরা। কারণ, রাহুল বিয়ে করেননি। প্রিয়াঙ্কার অবশ্য একটি ছেলে আছে, যদিও তিনি ভদ্র। নেহরু থেকে গান্ধী, গান্ধী থেকে ভদ্র কি না, সেটা অবশ্য ভবিষ্যৎই বলবে। পরিবারতন্ত্রের বড় সুবিধা নেতা বাছতে ঝামেলা নেই। পরিবারের বাইরের লোকেরা নিজেদের মধ্যে ক্ষমতা দখলের মরিয়া চেষ্টা থেকে বিরত থাকেন।
সমস্যা হয় দু-নম্বরকে নিয়েই। পারিবারিক ক্ষমতার হাতবদলে টলে যায় দু-নম্বরের গদি। যেমন প্রণব মুখার্জির ক্ষেত্রে হয়েছিল। যেমনটা হচ্ছে এখন তৃণমূলে। ভাইপো অভিষেকের উত্থানে মমতার ঘনিষ্ঠরা অনেকেই এখন দলে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছেন না বলে আড়ালে-আবডালে বলছেন। যেমন বিহারে লালুপ্রসাদের ছেলে তেজস্বীকে নিয়ে অভিমানী লালুর ঘনিষ্ঠদের বড় অংশ। অন্য রাজ্যেও একই ছবি। প্রজন্মগত এই বিরোধ ভারতীয় পরিবারতন্ত্রেরই অঙ্গ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান লড়াই দিয়ে। সাবেকি চালচলন নতুন প্রজন্মের অভিষেকের স্টাইলের সঙ্গে মিলছে না। করপোরেট ধাঁচে তিনি ভোটকৌশলী নিয়োগ করে বাজিমাত করতে চাইছেন। প্রশান্ত কিশোরের আই-প্যাকের মতো হাইটেকনির্ভর বাহিনীতেই তাঁর ভরসা। অথচ মমতার আস্থা দলের দীর্ঘদিনের সঙ্গীদের পরামর্শে। তাঁরা সবাই সাবেকি বা চিরাচরিত রাজনীতিতে অভ্যস্ত। তরুণ প্রজন্মকে মেনে নিতে সংশয় রয়েছে। প্রবীণদের রয়েছে গুরুত্ব হারানোর ভয়ও। নবীনেরা আগ্রাসী। তাঁরা অভিষেককে ঘিরে তৈরি করেছেন আলাদা ক্ষমতার কেন্দ্র। এই দুই ক্ষমতাকেন্দ্রের সংঘাত শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে।
পরিবারতন্ত্রে এই সংঘাত নতুন কিছু নয়। প্রজন্মগত মানসিকতার সংঘাত। ছিল, আছে এবং থাকবেও। ফলে তৃণমূলকে নিয়ে যে গেল গেল রব তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, সেটা এখনই বলার সময় আসেনি। অযোগ্য উত্তরাধিকারের হাতে ইতিহাসে বহু সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছে। ইতিহাস সাক্ষী। গণতন্ত্রেও বিপদ ডেকে এনেছে পরিবারতন্ত্র।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ভারতীয় গণতন্ত্রে পরিবারতন্ত্র নতুন কিছু নয়। বামপন্থী বা বিজেপির মতো দু-একটি দল বাদ দিলে সর্বত্রই পরিবারতন্ত্রেরই দাপট। তবে সেই পারিবারিক উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্বও কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির পরম্পরা হয়ে উঠেছে।
০৮ এপ্রিল ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ভারতীয় গণতন্ত্রে পরিবারতন্ত্র নতুন কিছু নয়। বামপন্থী বা বিজেপির মতো দু-একটি দল বাদ দিলে সর্বত্রই পরিবারতন্ত্রেরই দাপট। তবে সেই পারিবারিক উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্বও কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির পরম্পরা হয়ে উঠেছে।
০৮ এপ্রিল ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতীয় গণতন্ত্রে পরিবারতন্ত্র নতুন কিছু নয়। বামপন্থী বা বিজেপির মতো দু-একটি দল বাদ দিলে সর্বত্রই পরিবারতন্ত্রেরই দাপট। তবে সেই পারিবারিক উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্বও কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির পরম্পরা হয়ে উঠেছে।
০৮ এপ্রিল ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ভারতীয় গণতন্ত্রে পরিবারতন্ত্র নতুন কিছু নয়। বামপন্থী বা বিজেপির মতো দু-একটি দল বাদ দিলে সর্বত্রই পরিবারতন্ত্রেরই দাপট। তবে সেই পারিবারিক উত্তরাধিকার নিয়ে দ্বন্দ্বও কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির পরম্পরা হয়ে উঠেছে।
০৮ এপ্রিল ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫