Ajker Patrika

মাঘের বৃষ্টিতে আলু-ভাটার ক্ষতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ৪৪
মাঘের বৃষ্টিতে আলু-ভাটার ক্ষতি

উত্তরাঞ্চলের জেলা জয়পুরহাটের কালাই ও পাঁচবিবিতে হঠাৎ মুষলধারে বৃষ্টিতে আলুর জমিসহ ইটভাটার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টা থেকে গতকাল শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি হয়। এর ফলে কালাইয়ের ৪০০ হেক্টর জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এদিকে পাঁচবিবি উপজেলার ১৩টি ভাটার কাঁচা ও শুকনো ইটগুলো পানিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে।

ইটভাটার মালিকেরা বলছেন, এভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে ভাটা চালু রাখা যাবে না। অন্যদিকে আলুচাষিরা বলছেন, এমনিতে বাজারে আলুর দাম কম। এর মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টি আলুচাষিদের সবকিছু ওলট-পালট করে দিয়েছে।

কালাই উপজেলায় কিছুদিন মধ্যে শুরু হবে আলু তোলার ব্যস্ততা। তাঁরা এখন এই আলু নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন। তবে আলুর ভালো দাম না পেলে কৃষকেরা এই পেশা থেকে বিমুখ হয়ে পড়বেন—এমনটাই মনে করছেন কৃষিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার আলুর জমিতে থইথই করছে পানি। এবার চড়া দামে সার ও বীজ কিনে আলু চাষ করছেন আলুচাষিরা। তা ছাড়া তেলের দাম বাড়ায় নতুন করে বেড়েছে জমিতে হাল চাষের খরচ। এত কিছুর পরেও বাম্পার ফলনের আশায় আলু রোপণ করেছেন কৃষকেরা। কিন্তু শীতকালে হঠাৎ অনাবৃষ্টি তাঁদের দুশ্চিন্তায় ফেলেছে।

উপজেলার তিশরাপাড়ার আলুচাষি আব্দুল হালিম বলেন, ‘এবার আলু চাষে খরচ খুব বেশি পড়েছে। কেননা, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে এবার সার ও বীজ কিনতে হয়েছে চড়া দামে। তেলের দাম বাড়ায় অন্যান্য খরচ বেশি পড়েছে। এই মৌসুমে আমি ৮ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। এবারে আমার প্রতি বিঘায় খরচ পড়েছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। আবার হঠাৎ অনাবৃষ্টির ফলে আলুর জমিতে থইথই করছে পানি। এতে আলু জমিতে পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

আরেক আলুচাষি পাঁচগ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর ৩ বিঘা জমিতে আলু রোপণ করেছি। গত বছরের তুলনায় এবারে বিঘাপ্রতি ৫ হাজার টাকা বেশি খরচ গুনতে হচ্ছে। এত কিছুর পরেও লাভের আশায় আলু রোপণ করেছি। আবার এখন বাজারে আলুর দাম কম। এই দামে খরচ ওঠানো সম্ভব নয়। দাম কম হওয়ায় কৃষকেরা এই পেশা থেকে বিমুখ হয়ে পড়বেন।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নীলিমা জাহান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ বছর উপজেলায় ১১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। হঠাৎ প্রবল বৃষ্টিতে উপজেলার ৪০০ হেক্টর জমি পুরোপুরি নিমজ্জিত এবং বাকি জমিগুলো আংশিক নিমজ্জিত আছে। কৃষকদের জমি থেকে পানি সরানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে পাঁচবিবির বাগজানা ইউনিয়নের আটাপাড়া রেলগেট এলাকায় বিবিসি ও মেসার্স লিটন ব্রিকস ভাটায় দেখা যায়, রোদে শুকাতে দেওয়া কাঁচা ইটগুলো বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে। এ ছাড়া পোড়ানোর আগে শুকানো সারিবদ্ধ করে রাখা ইটগুলোও বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।

মেসার্স লিটন ব্রিকসের মালিক আনিছুর রহমান লিটন বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে আমার ভাটার ২৫-৩০ লাখ টাকা ক্ষতি হবে।’ তিনি আরও বলেন, এমন পরিস্থিতিতে এ বছর আর ভাটা চালু করা সম্ভব হবে না।

উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি শিল্পপতি আব্দুল হাকিম মণ্ডল বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে উপজেলার ১৩টি ভাটারই ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়লার দাম আগের চেয়ে দ্বিগুণ, আর শ্রমিক ও মাটির দামও বেশি। এত কিছুর মধ্যেও ভাটাগুলো সচল রেখেছিলাম। কিন্তু বৃষ্টিতে অনেক ক্ষতি হলো।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত ১৭.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত