
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর। বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ক্রিটিক্যাল ইস্যুজ ইন ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকস, কালেক্টেড পেপারস অন ইকোনমিক ইস্যুজসহ অর্থনীতির ওপর রচিত তাঁর কয়েকটি গ্রন্থ রয়েছে। ‘গভর্নরের স্মৃতিকথা’ নামে তাঁর একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য খাতে বাজেট কতটা ভূমিকা রাখবে, তা নিয়ে তিনি আজকের পত্রিকার মাসুদ রানার সঙ্গে কথা বলেছেন।
আজকের পত্রিকা: আপনার মতে এবারের বাজেট কেমন হলো?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: সার্বিকভাবে আমি বলব, এবারের বাজেটে অনেক আশ্বাস আছে, কিন্তু আশ্বাস অনুযায়ী সাধারণ মানুষের কোনো প্রত্যাশা নেই। বাজেট বড় না করে এর আকার ছোট করেছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দেশের মানুষের মধ্যে চাপ বাড়াব না। কিন্তু খরচের মাত্রা কমেনি। কর আদায়ের বড় টার্গেট নিয়েছে, কিন্তু কীভাবে তা আদায় হবে, তা নিয়ে কোনো কথা নেই।
অপ্রয়োজনীয় ১ হাজার ২৮৫টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এতগুলো প্রকল্পের কোনো দরকারই ছিল না। সরকার এবারের বাজেটকে সাধারণ বললেও তা হয়নি। অর্থনীতিতে বর্তমানে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে—মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও বিনিময় হার এবং জ্বালানি। এসব ক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। আবার ঘাটতি বাজেটের পুরোটাই আসবে ব্যাংক ও বৈদেশিক উৎস থেকে।
এমনিতেই ব্যাংকের অবস্থা খারাপ। আস্থাহীনতাসহ বিভিন্ন কারণে আমানতকারীদের অনেকে ব্যাংকে টাকা রাখছে না। আবার ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার অনেক বেড়ে যাচ্ছে। এ রকম অবস্থায় সরকারের ব্যাংকঋণের নির্ভরতা বেসরকারি খাতকে বাধাগ্রস্ত করবে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ঋণ পাবে না। ঘাটতি না রেখে এই সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ব্যয় অর্ধেক করা দরকার ছিল।
যদিও অর্থমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি কমার জন্য অপেক্ষা করতে বলেছেন। কিন্তু কীভাবে এটা কমবে, তার কোনো কথা নেই। এর জন্য সরবরাহ বাড়াতে হবে, মনিটরিং বাড়াতে হবে, ছোট-বড় শিল্পের পরিসর বাড়াতে হবে। রেমিট্যান্স না বাড়লে তো বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ বাড়বে না। রিজার্ভ না বাড়লে আমরা বিদেশে কোনো কিছু আমদানি করতে পারব না। তাহলে বিনিয়োগ কীভাবে আসবে?
জ্বালানির দর বাড়ানো-কমানো হচ্ছে। গত ১০ বছরে জ্বালানি অনুসন্ধানে কিছু না করে কেবল দাম বাড়ানো হয়েছে। সামনে জ্বালানি সরবরাহের জন্য যে তেল আনা হবে, তার ডলার কোথায়?
মূল যে তিনটা চ্যালেঞ্জ, সেটা সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ নেই। ব্যাংকের অবস্থা খারাপ। ব্যাংক নিয়ে কী করবে, তা নিয়ে কোনো কথাবার্তা নেই। পুঁজিবাজারের অবস্থাও খারাপ। সেটা নিয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, তা নিয়ে কোনো কথা নেই। পুঁজিবাজার উন্নয়নে কিছু করা হয়নি। উল্টো প্রথমবারের মতো ব্যক্তি পর্যায়ে মূলধনি মুনাফার ওপর কর আরোপ করা হয়েছে।
কর্মসংস্থানে সবচেয়ে ভালো ভূমিকা রাখে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত। এখন এই খাত ঋণ না পেলে কর্মসংস্থান হবে কী করে? আর ব্যবসা-বাণিজ্য না হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর আদায় করবে কীভাবে? ব্যবসা করতে না পারলে মানুষ কর, ভ্যাট দেবে কোত্থেকে? এর মানে মূল্যস্ফীতি কমবে না, আবার কর্মসংস্থানও বাড়বে না।
অপ্রিয় সত্যি হলেও অর্থনৈতিক এই কঠিন সময়ে জনবান্ধব, ব্যবসাবান্ধব নিয়ে যদি কঠিন পদক্ষেপ নিতেন, তাহলে ভালো হতো। আমি বলছি না এক বছরের মধ্যে সবকিছু বদলে ফেলতে হবে।
আমরা বাজেটের অনেক আগে থেকে নানা কথা বা প্রস্তাব দিয়েছি, কিন্তু সেসবের কিছু নেই।
আজকের পত্রিকা: আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে নতুন নতুন খাতে কর বসানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ বাঁচবে কীভাবে?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: আমি জানি না আইএমএফের শর্ত মানা ঠিক হবে কি না। তবে আয়কর বাড়ান এবং ১ কোটি লোকের টিন আছে, তার মধ্যে ৫০ লাখ লোককে আয়করের আওতায় আনেন। গ্রাম-শহর মিলে প্রচুর টাকাওয়ালা ব্যবসায়ী আছেন, উপজেলা পর্যায়ে অনেক দোকানদার আছেন—এ রকম আরও অনেক খাতের ব্যবসায়ী আছেন, তাঁদের কাছ থেকে আয়কর তো তুলতে হবে। কিন্তু তার কোনো দিকনির্দেশনা নেই।
দেশে অনেক সামর্থ্যবান চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী আছেন। তাঁদের কাছ থেকে ট্যাক্স তুললে তো ভ্যাটের বোঝা সাধারণ মানুষের ওপরে পড়ত না। অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের ওপর ভ্যাট নেই; কিন্তু সাধারণ মানুষের ক্রয়কৃত জিনিসের ওপর ভ্যাট বসানো এবং বাড়ানো হচ্ছে। সাধারণ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। আবার ন্যাপথলিন, শুকনো মরিচ—এসবের ভ্যাট কমানো হয়েছে। এসবের কোনো মানে হয়! অনেক ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না।
আপনি আয়কর বাড়ান, তাহলে তো সাধারণ মানুষের ওপর চাপ পড়ে না। এ ক্ষেত্রে এনবিআরকে আরও কর্মঠ ও সক্রিয় হতে হবে। যাঁদের ট্যাক্স দেওয়ার সামর্থ্য আছে, তাঁদের ট্যাক্সের আওতায় আনতে হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের ওপর ভ্যাটের বোঝা বাড়ানোর কোনো দরকার ছিল না। গরিবের রুটির ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে লাভ কী? বড়লোকের খাওয়ার জিনিসের ওপর ভ্যাট বাড়ালে কথা থাকত না। তাতে কোনো লাভ হলো না।
আজকের পত্রিকা: বাজেটে বড় রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু কর ফাঁকিবাজদের ধরতে কোনো কৌশলের কথা নেই কেন বাজেটে?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: সেখানেই তো কথা। এনবিআরকে চ্যালেঞ্জ দেওয়া উচিত ছিল—তোমাদের ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা তুলে দিতে হবে। তাহলে তারা নতুন করদাতা খুঁজে বের করত। যাঁরা আয়কর না দিয়ে ফাঁকিবাজি করেন, এনবিআর তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু করে না। তাঁরা আবার আয়কর না দিয়ে আপস করে দেনদরবার করেন। সেখানেও এনবিআরকে জবাবদিহির আওতায় আনা দরকার। আর কথা হলো, আয়কর না ওঠানোর কারণ, সমস্যা ও ঘাটতি কী, তা আমাদের জানাতে হবে। বিশেষ ক্ষমতা, বিশেষ সুবিধা—এসব কী? কথা হলো, আয়কর ওঠানোর দায়িত্ব তোমাদের, তোমরা সেটা করবে।
আর একটা বিষয় হলো, কালোটাকা সাদা করার জন্য ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরা হয়েছে। আর উপার্জিত অর্থ থেকে সর্বোচ্চ ট্যাক্স ধরা হয়েছে ৩০ শতাংশ। আর হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়ে শুধু ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে সাদা করতে পারবে। তাদের আসলে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। নতুবা তারা তো অবৈধভাবে কালোটাকা করতে উৎসাহিত হবে। নৈতিকতা ও আর্থিক বিবেচনায় এ কাজটা তো কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।
আজকের পত্রিকা: অর্থমন্ত্রী বলেছেন ছয় মাস পর মূল্যস্ফীতি কমবে, আদৌ কি এর সম্ভাবনা আছে?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০-এর কাছাকাছি। এটা কি আলাদিনের চেরাগ যে মূল্যস্ফীতি থাকবে না! খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ৪৬-৪৭ শতাংশ। এটা তো সারা দেশের ব্যাপার। হঠাৎ করে কি খাদ্যের দাম কমানো সম্ভব? নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম তো আর কমবে না। মিলের মালিক, চালকল ও চাতালের মালিক, পাইকার ও মধ্যস্বত্বভোগী তো আছে। গুদামে পণ্য আছে, কিন্তু বাজারে নেই। তাহলে দাম কমবে কেমন করে? মানে, এখানে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে না। এ কারণে মজুতদারেরা উৎসাহিত হচ্ছেন অপকর্ম করতে।
যদি বলা হতো, জিনিসপত্র মজুত করলে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আবার অল্প কিছু মানুষকে চাল আমদানির লাইসেন্স দেওয়া হলেও, বেশির ভাগ ব্যবসায়ীকে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এসব করলে তো মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না।
অন্যান্য ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্চ বাড়ানো হয়েছে। এতে বাসভাড়া বেড়ে যাবে, বাড়িভাড়া বেড়ে যাবে। তাহলে আপনি কীভাবে বলেন মূল্যস্ফীতি কমে যাবে? মূল্যস্ফীতি কমানোর কম্পোনেন্টগুলোর দাম বাড়ানো হয়েছে। এটা বাস্তবতাবিবর্জিত বক্তব্য হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি কমানোর আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু আশ্বাস পূরণ হবে না।
আজকের পত্রিকা: বাজেট পাসের পর কোন কোন বিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: প্রথমত, বাস্তবায়নের ব্যাপারে প্রত্যেক কর্মকর্তা, কর্মজীবীর কর্মদক্ষতা বাড়াতে হবে। তারপর তাদের সততা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মনিষ্ঠা বাড়াতে হবে। শুধু সরকারি কর্মকর্তা রুটিনমাফিক চাকরি করবেন আর তাঁরা যা নির্দেশ দেবেন আমরা তা দিয়ে দেব, সেটা হলে হবে না। দুর্নীতি কমাতে হবে। মনিটরিংটা বাড়াতে হবে। তাঁরা কী কাজ করছেন? তাঁদের দক্ষতাও দেখতে হবে। তা না হলে এসব প্রশাসনের লোকজন রুটিন কাজই করে যাবেন।
দুঃখের বিষয় হলো, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের একটা বিরাট অংশের মানুষ চলে গেছেন প্রশাসনে। কিন্তু তাঁরা যদি যথার্থভাবে কাজই না করেন, তাঁদের দরকারটা কী? তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
দ্বিতীয়ত, এতগুলো প্রকল্প গ্রহণের দরকার ছিল না। প্রকল্প হাতে নিয়ে দায়সারাভাবে কাজ করা হয়। তারপর দুই বছরের কাজ পাঁচ বছরে শেষ করে। আবার অনেক ক্ষেত্রে মানসম্পন্ন কাজও করা হয় না। প্রকল্প গ্রহণ করে দক্ষ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোকদের দিয়ে কাজ করানো উচিত। এরপর কাজের মনিটরিং করাও দরকার। যাঁরা কাজে দক্ষতা দেখাবেন এবং ভালো করবেন, তাঁদের পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে সরকারি প্রকল্পগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হবে এবং সরকারের রাজস্বটা ঠিকভাবে আসবে। এ জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাও দরকার।
একটা উদাহরণ দিই। স্বাস্থ্যব্যবস্থায় নৈরাজ্য বিরাজ করছে। দেশের অধিকাংশ হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম ঠিকভাবে ব্যবহৃত হয় না। অনেক হাসপাতালে এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, কেমোথেরাপিসহ নানা ধরনের প্রয়োজনীয় মেশিন নষ্ট। আমি এক হাসপাতালের পরিচালককে জিজ্ঞেস করলাম, এসব মেশিন নষ্ট কেন? তিনি বললেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।’ শুনে বললাম, এটা তো অদ্ভুত ব্যাপার! আপনি তাহলে জরুরি কাজ কীভাবে করবেন? এগুলো তো সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কোনো লক্ষণ নয়।
তাই যত দিন পর্যন্ত যথার্থভাবে মনিটরিং ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা না যাবে, তত দিন বাজেট বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন। এ কারণে আমাদের দেশে অনেক ক্ষেত্রে বাজেটের বাস্তবায়ন হয় না। এটাই আমাদের দেশের একটা বড় দুর্বল দিক। কাগজে-কলমে অনেক সুন্দর ও ভালো কথা লেখা থাকলেও কাজের বেলায় কিছুই হয় না।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর। বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ক্রিটিক্যাল ইস্যুজ ইন ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকস, কালেক্টেড পেপারস অন ইকোনমিক ইস্যুজসহ অর্থনীতির ওপর রচিত তাঁর কয়েকটি গ্রন্থ রয়েছে। ‘গভর্নরের স্মৃতিকথা’ নামে তাঁর একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ অন্যান্য খাতে বাজেট কতটা ভূমিকা রাখবে, তা নিয়ে তিনি আজকের পত্রিকার মাসুদ রানার সঙ্গে কথা বলেছেন।
আজকের পত্রিকা: আপনার মতে এবারের বাজেট কেমন হলো?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: সার্বিকভাবে আমি বলব, এবারের বাজেটে অনেক আশ্বাস আছে, কিন্তু আশ্বাস অনুযায়ী সাধারণ মানুষের কোনো প্রত্যাশা নেই। বাজেট বড় না করে এর আকার ছোট করেছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দেশের মানুষের মধ্যে চাপ বাড়াব না। কিন্তু খরচের মাত্রা কমেনি। কর আদায়ের বড় টার্গেট নিয়েছে, কিন্তু কীভাবে তা আদায় হবে, তা নিয়ে কোনো কথা নেই।
অপ্রয়োজনীয় ১ হাজার ২৮৫টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এতগুলো প্রকল্পের কোনো দরকারই ছিল না। সরকার এবারের বাজেটকে সাধারণ বললেও তা হয়নি। অর্থনীতিতে বর্তমানে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে—মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও বিনিময় হার এবং জ্বালানি। এসব ক্ষেত্রে সরকারের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। আবার ঘাটতি বাজেটের পুরোটাই আসবে ব্যাংক ও বৈদেশিক উৎস থেকে।
এমনিতেই ব্যাংকের অবস্থা খারাপ। আস্থাহীনতাসহ বিভিন্ন কারণে আমানতকারীদের অনেকে ব্যাংকে টাকা রাখছে না। আবার ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার অনেক বেড়ে যাচ্ছে। এ রকম অবস্থায় সরকারের ব্যাংকঋণের নির্ভরতা বেসরকারি খাতকে বাধাগ্রস্ত করবে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ঋণ পাবে না। ঘাটতি না রেখে এই সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ব্যয় অর্ধেক করা দরকার ছিল।
যদিও অর্থমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি কমার জন্য অপেক্ষা করতে বলেছেন। কিন্তু কীভাবে এটা কমবে, তার কোনো কথা নেই। এর জন্য সরবরাহ বাড়াতে হবে, মনিটরিং বাড়াতে হবে, ছোট-বড় শিল্পের পরিসর বাড়াতে হবে। রেমিট্যান্স না বাড়লে তো বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ বাড়বে না। রিজার্ভ না বাড়লে আমরা বিদেশে কোনো কিছু আমদানি করতে পারব না। তাহলে বিনিয়োগ কীভাবে আসবে?
জ্বালানির দর বাড়ানো-কমানো হচ্ছে। গত ১০ বছরে জ্বালানি অনুসন্ধানে কিছু না করে কেবল দাম বাড়ানো হয়েছে। সামনে জ্বালানি সরবরাহের জন্য যে তেল আনা হবে, তার ডলার কোথায়?
মূল যে তিনটা চ্যালেঞ্জ, সেটা সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ নেই। ব্যাংকের অবস্থা খারাপ। ব্যাংক নিয়ে কী করবে, তা নিয়ে কোনো কথাবার্তা নেই। পুঁজিবাজারের অবস্থাও খারাপ। সেটা নিয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, তা নিয়ে কোনো কথা নেই। পুঁজিবাজার উন্নয়নে কিছু করা হয়নি। উল্টো প্রথমবারের মতো ব্যক্তি পর্যায়ে মূলধনি মুনাফার ওপর কর আরোপ করা হয়েছে।
কর্মসংস্থানে সবচেয়ে ভালো ভূমিকা রাখে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত। এখন এই খাত ঋণ না পেলে কর্মসংস্থান হবে কী করে? আর ব্যবসা-বাণিজ্য না হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর আদায় করবে কীভাবে? ব্যবসা করতে না পারলে মানুষ কর, ভ্যাট দেবে কোত্থেকে? এর মানে মূল্যস্ফীতি কমবে না, আবার কর্মসংস্থানও বাড়বে না।
অপ্রিয় সত্যি হলেও অর্থনৈতিক এই কঠিন সময়ে জনবান্ধব, ব্যবসাবান্ধব নিয়ে যদি কঠিন পদক্ষেপ নিতেন, তাহলে ভালো হতো। আমি বলছি না এক বছরের মধ্যে সবকিছু বদলে ফেলতে হবে।
আমরা বাজেটের অনেক আগে থেকে নানা কথা বা প্রস্তাব দিয়েছি, কিন্তু সেসবের কিছু নেই।
আজকের পত্রিকা: আইএমএফের শর্ত মানতে গিয়ে নতুন নতুন খাতে কর বসানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ বাঁচবে কীভাবে?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: আমি জানি না আইএমএফের শর্ত মানা ঠিক হবে কি না। তবে আয়কর বাড়ান এবং ১ কোটি লোকের টিন আছে, তার মধ্যে ৫০ লাখ লোককে আয়করের আওতায় আনেন। গ্রাম-শহর মিলে প্রচুর টাকাওয়ালা ব্যবসায়ী আছেন, উপজেলা পর্যায়ে অনেক দোকানদার আছেন—এ রকম আরও অনেক খাতের ব্যবসায়ী আছেন, তাঁদের কাছ থেকে আয়কর তো তুলতে হবে। কিন্তু তার কোনো দিকনির্দেশনা নেই।
দেশে অনেক সামর্থ্যবান চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী আছেন। তাঁদের কাছ থেকে ট্যাক্স তুললে তো ভ্যাটের বোঝা সাধারণ মানুষের ওপরে পড়ত না। অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের ওপর ভ্যাট নেই; কিন্তু সাধারণ মানুষের ক্রয়কৃত জিনিসের ওপর ভ্যাট বসানো এবং বাড়ানো হচ্ছে। সাধারণ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। আবার ন্যাপথলিন, শুকনো মরিচ—এসবের ভ্যাট কমানো হয়েছে। এসবের কোনো মানে হয়! অনেক ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না।
আপনি আয়কর বাড়ান, তাহলে তো সাধারণ মানুষের ওপর চাপ পড়ে না। এ ক্ষেত্রে এনবিআরকে আরও কর্মঠ ও সক্রিয় হতে হবে। যাঁদের ট্যাক্স দেওয়ার সামর্থ্য আছে, তাঁদের ট্যাক্সের আওতায় আনতে হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের ওপর ভ্যাটের বোঝা বাড়ানোর কোনো দরকার ছিল না। গরিবের রুটির ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে লাভ কী? বড়লোকের খাওয়ার জিনিসের ওপর ভ্যাট বাড়ালে কথা থাকত না। তাতে কোনো লাভ হলো না।
আজকের পত্রিকা: বাজেটে বড় রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু কর ফাঁকিবাজদের ধরতে কোনো কৌশলের কথা নেই কেন বাজেটে?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: সেখানেই তো কথা। এনবিআরকে চ্যালেঞ্জ দেওয়া উচিত ছিল—তোমাদের ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা তুলে দিতে হবে। তাহলে তারা নতুন করদাতা খুঁজে বের করত। যাঁরা আয়কর না দিয়ে ফাঁকিবাজি করেন, এনবিআর তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু করে না। তাঁরা আবার আয়কর না দিয়ে আপস করে দেনদরবার করেন। সেখানেও এনবিআরকে জবাবদিহির আওতায় আনা দরকার। আর কথা হলো, আয়কর না ওঠানোর কারণ, সমস্যা ও ঘাটতি কী, তা আমাদের জানাতে হবে। বিশেষ ক্ষমতা, বিশেষ সুবিধা—এসব কী? কথা হলো, আয়কর ওঠানোর দায়িত্ব তোমাদের, তোমরা সেটা করবে।
আর একটা বিষয় হলো, কালোটাকা সাদা করার জন্য ১৫ শতাংশ ভ্যাট ধরা হয়েছে। আর উপার্জিত অর্থ থেকে সর্বোচ্চ ট্যাক্স ধরা হয়েছে ৩০ শতাংশ। আর হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়ে শুধু ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে সাদা করতে পারবে। তাদের আসলে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। নতুবা তারা তো অবৈধভাবে কালোটাকা করতে উৎসাহিত হবে। নৈতিকতা ও আর্থিক বিবেচনায় এ কাজটা তো কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।
আজকের পত্রিকা: অর্থমন্ত্রী বলেছেন ছয় মাস পর মূল্যস্ফীতি কমবে, আদৌ কি এর সম্ভাবনা আছে?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০-এর কাছাকাছি। এটা কি আলাদিনের চেরাগ যে মূল্যস্ফীতি থাকবে না! খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ৪৬-৪৭ শতাংশ। এটা তো সারা দেশের ব্যাপার। হঠাৎ করে কি খাদ্যের দাম কমানো সম্ভব? নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম তো আর কমবে না। মিলের মালিক, চালকল ও চাতালের মালিক, পাইকার ও মধ্যস্বত্বভোগী তো আছে। গুদামে পণ্য আছে, কিন্তু বাজারে নেই। তাহলে দাম কমবে কেমন করে? মানে, এখানে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে না। এ কারণে মজুতদারেরা উৎসাহিত হচ্ছেন অপকর্ম করতে।
যদি বলা হতো, জিনিসপত্র মজুত করলে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আবার অল্প কিছু মানুষকে চাল আমদানির লাইসেন্স দেওয়া হলেও, বেশির ভাগ ব্যবসায়ীকে এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এসব করলে তো মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না।
অন্যান্য ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্চ বাড়ানো হয়েছে। এতে বাসভাড়া বেড়ে যাবে, বাড়িভাড়া বেড়ে যাবে। তাহলে আপনি কীভাবে বলেন মূল্যস্ফীতি কমে যাবে? মূল্যস্ফীতি কমানোর কম্পোনেন্টগুলোর দাম বাড়ানো হয়েছে। এটা বাস্তবতাবিবর্জিত বক্তব্য হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি কমানোর আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু আশ্বাস পূরণ হবে না।
আজকের পত্রিকা: বাজেট পাসের পর কোন কোন বিষয়ে নজর দেওয়া প্রয়োজন?
সালেহউদ্দিন আহমেদ: প্রথমত, বাস্তবায়নের ব্যাপারে প্রত্যেক কর্মকর্তা, কর্মজীবীর কর্মদক্ষতা বাড়াতে হবে। তারপর তাদের সততা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মনিষ্ঠা বাড়াতে হবে। শুধু সরকারি কর্মকর্তা রুটিনমাফিক চাকরি করবেন আর তাঁরা যা নির্দেশ দেবেন আমরা তা দিয়ে দেব, সেটা হলে হবে না। দুর্নীতি কমাতে হবে। মনিটরিংটা বাড়াতে হবে। তাঁরা কী কাজ করছেন? তাঁদের দক্ষতাও দেখতে হবে। তা না হলে এসব প্রশাসনের লোকজন রুটিন কাজই করে যাবেন।
দুঃখের বিষয় হলো, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের একটা বিরাট অংশের মানুষ চলে গেছেন প্রশাসনে। কিন্তু তাঁরা যদি যথার্থভাবে কাজই না করেন, তাঁদের দরকারটা কী? তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
দ্বিতীয়ত, এতগুলো প্রকল্প গ্রহণের দরকার ছিল না। প্রকল্প হাতে নিয়ে দায়সারাভাবে কাজ করা হয়। তারপর দুই বছরের কাজ পাঁচ বছরে শেষ করে। আবার অনেক ক্ষেত্রে মানসম্পন্ন কাজও করা হয় না। প্রকল্প গ্রহণ করে দক্ষ ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন লোকদের দিয়ে কাজ করানো উচিত। এরপর কাজের মনিটরিং করাও দরকার। যাঁরা কাজে দক্ষতা দেখাবেন এবং ভালো করবেন, তাঁদের পুরস্কৃত করার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে সরকারি প্রকল্পগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়িত হবে এবং সরকারের রাজস্বটা ঠিকভাবে আসবে। এ জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনাও দরকার।
একটা উদাহরণ দিই। স্বাস্থ্যব্যবস্থায় নৈরাজ্য বিরাজ করছে। দেশের অধিকাংশ হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম ঠিকভাবে ব্যবহৃত হয় না। অনেক হাসপাতালে এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, কেমোথেরাপিসহ নানা ধরনের প্রয়োজনীয় মেশিন নষ্ট। আমি এক হাসপাতালের পরিচালককে জিজ্ঞেস করলাম, এসব মেশিন নষ্ট কেন? তিনি বললেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।’ শুনে বললাম, এটা তো অদ্ভুত ব্যাপার! আপনি তাহলে জরুরি কাজ কীভাবে করবেন? এগুলো তো সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কোনো লক্ষণ নয়।
তাই যত দিন পর্যন্ত যথার্থভাবে মনিটরিং ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা না যাবে, তত দিন বাজেট বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন। এ কারণে আমাদের দেশে অনেক ক্ষেত্রে বাজেটের বাস্তবায়ন হয় না। এটাই আমাদের দেশের একটা বড় দুর্বল দিক। কাগজে-কলমে অনেক সুন্দর ও ভালো কথা লেখা থাকলেও কাজের বেলায় কিছুই হয় না।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর। বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ক্রিটিক্যাল ইস্যুজ ইন ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকস, কালেক্টেড পেপারস অন ইকোনমিক ইস্যুজসহ অর্থনীতির ওপর রচিত তাঁর কয়েকটি গ্রন্থ রয়েছে। ‘গভর্নরের স্মৃতিকথা’ নামে তাঁর একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
১০ জুন ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর। বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ক্রিটিক্যাল ইস্যুজ ইন ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকস, কালেক্টেড পেপারস অন ইকোনমিক ইস্যুজসহ অর্থনীতির ওপর রচিত তাঁর কয়েকটি গ্রন্থ রয়েছে। ‘গভর্নরের স্মৃতিকথা’ নামে তাঁর একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
১০ জুন ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর। বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ক্রিটিক্যাল ইস্যুজ ইন ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকস, কালেক্টেড পেপারস অন ইকোনমিক ইস্যুজসহ অর্থনীতির ওপর রচিত তাঁর কয়েকটি গ্রন্থ রয়েছে। ‘গভর্নরের স্মৃতিকথা’ নামে তাঁর একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
১০ জুন ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর। বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। ক্রিটিক্যাল ইস্যুজ ইন ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকস, কালেক্টেড পেপারস অন ইকোনমিক ইস্যুজসহ অর্থনীতির ওপর রচিত তাঁর কয়েকটি গ্রন্থ রয়েছে। ‘গভর্নরের স্মৃতিকথা’ নামে তাঁর একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
১০ জুন ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫