Ajker Patrika

সারের জন্য দীর্ঘ লাইন কিনতে হচ্ছে চড়া দামে

জয়পুরহাট প্রতিনিধি
Thumbnail image

জয়পুরহাটে আলু রোপণ মৌসুমের শুরুতেই সার পেতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন আলুচাষিরা। এতে আগাম জাতের আলু চাষ ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ কৃষকদের। কৃষকেরা বলছেন, ডিলাররা সরকারনির্ধারিত মূল্যে সার বিক্রি করলেও তাঁদের অধীনে থাকা রিটেইলাররা (সাব-ডিলার) তা বিক্রি করছেন বেশি দামে। আগাম আলু চাষ করতে বাধ্য হয়েই তাঁরা সেই সার কিনছেন। 
এদিকে ডিলারদের ভাষ্য, স্থানীয় কৃষকেরা টিএসপি এবং ডিএপির সমপরিমাণ এমওপি সার আলুর জমিতে ব্যবহার করেন; কিন্তু ডিলারদের এমওপি সার বরাদ্দ দেওয়া হয় ওই দুই ধরনের সারের তিন ভাগের এক ভাগ। আবার বরাদ্দ দেওয়া এমওপি সার সরবরাহ করা হচ্ছে কম, তাই এ ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।

জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, জেলার কোথাও সারের কোনো সংকট নেই।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ডিলারদের দোকানে কৃষকদের ভিড়। তাঁরা কাঙ্ক্ষিত সার পাচ্ছেন না। তাঁরা এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) সার কিনতে বেশি সংকটে পড়েছেন।

সদরের মাধাইনগর গ্রামের কৃষক মোতাহার হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘আমি আমার সব জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করতে চাই; কিন্তু সারের জন্য ডিলারের দোকানের সামনে প্রতিদিন লাইনে দাঁড়াচ্ছি ১৫০-২০০ জন লোক। সার পাচ্ছেন ৫০ জন। তা হলে আমরা আলু চাষ করব কীভাবে?’

সদরের কিন্দুল গ্রামের কৃষক আব্দুল গফুর মোল্লা জানান, ডিলাররা ন্যায্যমূল্যে সার বিক্রি করলেও সাব-ডিলাররা বস্তাপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকা বেশি নিচ্ছেন, তাই ডিলারের দোকানে সার মিলছে না। আর সাব-ডিলারদের দোকানে সারের অভাব নেই। তিনি সদরের আমদই ইউনিয়নের বড়ইতলী বাজারের সাব-ডিলার কামরুলের কাছ থেকে প্রতি বস্তা এমওপি সার কিনেছেন ১ হাজার ৫৫০ টাকায় অথচ ওই সারের সরকারনির্ধারিত মূল্য ৭৫০ টাকা।

সদরের আমদই ইউনিয়নের মীরগ্রাম চৌমহনী বাজারের ডিলার মেসার্স ফজলুর রহমানের সহকারী ব্যবস্থাপক আনসার আলী জানান, তাঁরা নভেম্বর মাসে বিএডিসি থেকে ১১ দশমিক শূন্য ৫ টন এবং বেসরকারিভাবে ১৩ দশমিক সাত শূন্য টন এমওপি সার বরাদ্দ পেয়েছেন; কিন্তু পরিবহন-সংকটে বেসরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া সার এখনো পাননি। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিএডিসি থেকে তাঁদেরকে চার টন এমওপি সার সরবরাহ করা হয়েছে। তার মধ্যে দুই টন সার রিটেইলারদের দেওয়া হয়েছে। বাকি দুই টন থেকে প্রতিদিন ৫০ বস্তা এমওপি সার কৃষকদের দিতে বলা হয়েছে; কিন্তু কৃষকদের সার প্রয়োজন ২০০-২৫০ বস্তা।

সদরের বুম্বু ইউনিয়নের হিচমি বাজারের ডিলার মেসার্স মমতাজ উদ্দিন এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক তপন কুমার সাহা জানান, রিটেইলাররা অতিরিক্ত দাম নিয়ে সার বিক্রি করছেন। এমন খবর পেয়ে তাঁদেরকে আপাতত সার দেওয়া হচ্ছে না। কৃষকদের চাহিদা শেষ হলে রিটেইলারদের ফের সার দেওয়া হবে।

জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল করিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জেলায় এ পর্যন্ত যে পরিমাণ সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং যে পরিমাণ উত্তোলন করা হয়েছে; তার সঙ্গে আগের মাসে মজুত করা সার যোগ করলে দেখা যায় সারের মজুত পর্যাপ্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত